পাঠ – ১: ও আমার দেশের মাটি, Class 5, Chapter 1, Bengali, SEBA New Book, Bengali Medium

কবি – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
ক – পাঠভিত্তিক (পৃষ্ঠা ২)
উত্তর দাও।
(ক) কবি দেশের মাটিকে প্রণাম করছেন কেন?
উত্তর: কবি দেশের মাটিকে প্রণাম করছেন কারণ এই মাটির উপরেই তিনি মাথা ঠেকান। কবি এই দেশকে বিশ্বমাতার আঁচলের সাথে তুলনা করেছেন, যা সকল সন্তানকে আশ্রয় দেয়।
(খ) দেশের মাটির কোন মূর্তি কবির মনে গাঁথা?
উত্তর: দেশের মাটির শ্যামলবরণ (সবুজ রঙের) কোমল মূর্তি কবির মনে (মর্মে) গাঁথা।
(গ) দেশের মাটি আমাদের কী কী দিয়েছে?
উত্তর: দেশের মাটিতেই আমাদের জন্ম এবং এই মাটিতেই আমাদের মৃত্যু হয়। দেশের মাটি আমাদের মুখে অন্ন তুলে দেয় এবং শীতল জল দিয়ে আমাদের তৃষ্ণা মেটায়।
(ঘ) কবি দেশের মাটিকে “মাতার মাতা” বলেছেন কেন?
উত্তর: দেশের মাটি আমাদের মায়ের মতো অন্ন-জল দিয়ে পালন করে। তাছাড়াও, এই মাটি ‘সকল-সহা’ (সবকিছু সহ্য করে) এবং ‘সকল-বহা’ (সবার ভার বহন করে), তাই কবি এই মাটিকে “মাতার মাতা” বলেছেন।
শূন্যস্থান পূর্ণ করো।
(ক) তোমাতে বিশ্বময়ীর, তোমাতে বিশ্বমায়ের আঁচল পাতা।।
(খ) তুমি যে সকল-সহা সকল-বহা মাতার মাতা।।
(গ) আমার জনম গেল বৃথা কাজে,
(ঘ) আমি কাটানু দিন ঘরের মাঝে-
শিক্ষক/শিক্ষয়িত্রীর সাহায্য নিয়ে নীচের পংক্তিগুলোর তাৎপর্য শেখো।
(ক) তোমাতে বিশ্বময়ীর, তোমাতে বিশ্বমায়ের আঁচল পাতা।।
তাৎপর্য: এই পংক্তিতে কবি দেশকে বিশ্বজননীর সঙ্গে তুলনা করেছেন। যেমন মা তার আঁচল পেতে সন্তানকে রক্ষা করেন, ঠিক তেমনই দেশের মাটিও তার সমস্ত সন্তানকে (নাগরিকদের) আশ্রয় দেয় ও রক্ষা করে।
(খ) ও মা, অনেক তোমার খেয়েছি গো, অনেক নিয়েছি মা-
তাৎপর্য: কবি কৃতজ্ঞতার সাথে স্বীকার করছেন যে তিনি দেশমাতার কাছ থেকে অনেক কিছু—অন্ন, জল, আশ্রয়—পেয়েছেন। দেশমাতা নিঃস্বার্থভাবে আমাদের পালন করেন।
(গ) তুমি বৃথা আমায় শক্তি দিলে শক্তিদাতা।।
তাৎপর্য: কবি আক্ষেপ করে বলছেন যে দেশমাতা (শক্তিদাতা) কবিকে যে শক্তি দিয়েছেন, তা বৃথা গেল। কারণ কবি সেই শক্তি দেশের কাজে লাগাতে পারেননি, তিনি ‘ঘরের মাঝে’ (ব্যক্তিগত গণ্ডিতে) দিন কাটিয়েছেন।
কবিতার মূল কথাগুলো বলো ও লেখো।
উত্তর: ‘ও আমার দেশের মাটি’ কবিতায় কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর দেশমাতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রকাশ করেছেন। তিনি দেশের মাটিকে প্রণাম জানিয়েছেন, কারণ এই মাটি বিশ্বমাতার মতোই আশ্রয়দাত্রী। এই মাটির শ্যামল রূপ কবির হৃদয়ে গাঁথা। দেশের মাটি আমাদের অন্ন, জল ও আশ্রয় দেয়; এখানেই আমাদের জন্ম ও মৃত্যু। কবি এই মাটিকে ‘সকল-সহা’ ও ‘মাতার মাতা’ বলেছেন। তবে কবি আক্ষেপ করেছেন যে, দেশের কাছ থেকে এত কিছু পেয়েও তিনি দেশের জন্য কিছু করতে পারেননি, তাঁর শক্তি বৃথা গেছে।
খ- ভাষা-অধ্যয়ন (ব্যবহারিক ব্যাকরণ) (পৃষ্ঠা ৩)
এভাবে স্বরচিহ্ন যোগ হয়ে রূপ-পরিবর্তন ঘটে সেরকম কয়েকটি শব্দ লেখো।
(উদাহরণ- বিশ্বময় -> বিশ্বময়ী)
উত্তর:
* সুন্দর -> সুন্দরী
* কুমার -> কুমারী
* নদ -> নদী
* দেব -> দেবী
* চঞ্চল -> চঞ্চলা
…ইন্দ্রজিৎ—
উত্তর: ইন্দ্রজিৎ = ই + ন্ + দ্ + র + অ + জ্ + ই + ত্ + অ
পাঠে বিশ্বময়ী, শ্যামল, মর্ম, অন্ন, বৃথা, শক্তি, মূর্তি, আঁচল, দুঃখ, গাঁথা শব্দগুলো পেয়েছি। এগুলো ভেঙে লেখো।
উত্তর:
* বিশ্বময়ী = ব্ + ই + শ্ + ব্ + অ + ম্ + অ + য়্ + ঈ
* শ্যামল = শ্ + য্ + আ + ম্ + অ + ল্ + অ
* মর্ম = ম্ + অ + র + ম্ + অ
* অন্ন = অ + ন্ + ন্ + অ
* বৃথা = ব্ + ঋ + থ্ + আ
* শক্তি = শ্ + অ + ক্ + ত্ + ই
* মূর্তি = ম্ + ঊ + র + ত্ + ই
* আঁচল = আঁ + চ্ + অ + ল্ + অ
* দুঃখ = দ্ + উ + ঃ + খ্ + অ
* গাঁথা = গ্ + আঁ + থ্ + আ
দলে আলোচনা করে সমার্থক বা প্রতিশব্দ লেখো।
উত্তর:
* মা – জননী, মাতা, অম্বা
* অন্ন – ভাত, আহার, খাদ্য
* জল – নীর, বারি, পানি
* দেহ – শরীর, গা, তনু
* ঘর – গৃহ, আলয়, নিবাস
* দিন – দিবা, দিবস, দিনমান
(পৃষ্ঠা ৪)
নীচের শব্দগুলোর বিপরীত অর্থের শব্দ কবিতাটিতে আছে। তোমরা খুঁজে বের করো ও লেখো।
উত্তর:
* বিদেশ – দেশ
* কঠিন – কোমল
* উষ্ণ – শীতল
* মরণ – জনম
* বাইরে – মাঝে
* সুখ – দুঃখ
* পিঠ – বুক (কবিতায় ‘বুকে’ আছে)
নীচের শব্দগুলো দিয়ে বাক্য রচনা করো।
উত্তর:
* আঁচল – মা তার সন্তানকে স্নেহের আঁচলে ঢেকে রাখলেন।
* বিশ্বময়ী – মা দুর্গা বিশ্বময়ী রূপে পূজিত হন।
* কোমল – শিশুটির গাল খুব কোমল।
* অন্ন – দেশের মাটি আমাদের অন্ন দেয়।
* শক্তি – দেশের সেবা করার জন্য ঈশ্বর আমাদের শক্তি দিন।
নীচের অংশ দুটোকে দাগ টেনে মেলাও।
উত্তর:
* শ্যামলবরন – যার রং সবুজ
* শক্তিদাতা – যিনি শক্তি দেন
* বিশ্বমাতা – (সঠিক জোড়াটি তালিকায় নেই, তবে কবিতার ভাব অনুযায়ী এটি ‘বিশ্বময়ী’ বা ‘বিশ্বমায়ের’-এর সাথে সম্পর্কিত)
* সর্বংসহা – যিনি সব সহ্য করেন
গ- জ্ঞান-সম্প্রসারণ (পৃষ্ঠা ৫)
ওপরের কবিতাটির অর্থ বুঝে নিয়ে নীচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
(মুহম্মদ ইকবাল-এর ‘সারে জাহাঁ সে আচ্ছা’ কবিতা বিষয়ক)
(ক) ‘হিন্দুস্তাঁ’ মানে কোন দেশ?
উত্তর: ‘হিন্দুস্তাঁ’ মানে ভারত দেশ।
(খ) সেই দেশের পর্বতগুলো কেমন?
উত্তর: সেই দেশের পর্বতগুলো সবচেয়ে উঁচু এবং সেগুলি আকাশের ছায়াস্বরূপ।
(গ) সেখানে নদীগুলো কোথায় খেলে বেড়ায়?
উত্তর: সেখানে হাজার হাজার নদী হিন্দুস্তানের কোলে খেলে বেড়ায়।
(ঘ) এখানে ‘বুলবুল’ বলতে কাদের বোঝানো হচ্ছে?
উত্তর: এখানে ‘বুলবুল’ বলতে হিন্দুস্তানের (ভারতের) অধিবাসীদের বোঝানো হচ্ছে।
(পৃষ্ঠা ৭)
(ড° ভূপেন হাজরিকা-এর ‘অসম আমার রূপহী’ কবিতা বিষয়ক)
(ক) এখানে ‘সূর্য ওঠা দেশ’ বলতে কোন রাজ্যকে বোঝানো হচ্ছে?
উত্তর: এখানে ‘সূর্য ওঠা দেশ’ বলতে অসম রাজ্যকে বোঝানো হচ্ছে।
(খ) কবি এখানে ‘আই’ বলে কাকে সম্বোধন করেছেন?
উত্তর: কবি এখানে ‘আই’ (মা) বলে অসম দেশকে (অসম মাতাকে) সম্বোধন করেছেন।
আলোচনা চক্রের আয়োজন করে নিজের মতামত ব্যক্ত করো।
‘শ্যামলবরন কোমল মূর্তি’ অর্থাৎ প্রকৃতির সবুজ পরিবেশ— কীভাবে এই সবুজ পরিবেশ রক্ষা করা যায়?
উত্তর: প্রকৃতির সবুজ পরিবেশ রক্ষা করা আমাদের সকলের দায়িত্ব। এই ‘শ্যামলবরন কোমল মূর্তি’ রক্ষা করার জন্য আমরা কয়েকটি পদক্ষেপ নিতে পারি:
* বৃক্ষরোপণ: খালি জায়গায় এবং রাস্তার পাশে প্রচুর পরিমাণে গাছ লাগাতে হবে।
* বৃক্ষচ্ছেদন বন্ধ: অকারণে গাছ কাটা বন্ধ করতে হবে এবং এই বিষয়ে কঠোর আইন প্রণয়ন করতে হবে।
* দূষণ কমানো: প্লাস্টিক ব্যবহার কমানো, আবর্জনা নির্দিষ্ট স্থানে ফেলা এবং কলকারখানার দূষণ নিয়ন্ত্রণ করে আমরা পরিবেশকে সবুজ রাখতে পারি।
* জলাশয় রক্ষা: নদী, পুকুর ইত্যাদি পরিষ্কার রাখতে হবে, কারণ জল মাটিকে উর্বর রাখে এবং গাছপালাকে বাঁচিয়ে রাখে।
