পাঠ – ১২: চরণে প্রণাম, Class 5, Chapter 12,

পাঠ – ১২: চরণে প্রণাম, Class 5, Chapter 12, Bengali, SEBA New Book, Bengali Medium

Next chapter 

 

কবি – যোগেন্দ্রনাথ সরকার

ক – পাঠভিত্তিক (পৃষ্ঠা ১০৩)

উত্তর লেখো।

(ক) ছোটো পাখি কোথা থেকে মিষ্ট গান শিখলো?

উত্তর: যাঁর কৃপায় (ঈশ্বরের কৃপায়) পাখি এই সুন্দর জগৎ দেখতে পেয়েছে, তিনিই তাকে মিষ্ট গান শিখিয়েছেন।

(খ) রাঙা ফুলের মুখে হাসি কে দিয়েছেন?

উত্তর: যিনি ফুলকে এই জগতে এনেছেন (অর্থাৎ ঈশ্বর), তিনিই রাঙা ফুলের মুখে হাসি (সৌন্দর্য) দিয়েছেন।

(গ) খুকুরানি বিছানায় শিয়রের কাছে কে বসে থাকেন?

উত্তর: খুকুরানি যখন বিছানায় ঘুমায়, তখন স্বয়ং জগৎ-জননী (মা) তার শিয়রের কাছে বসে থাকেন।

কবিতার কথাগুলো নিজের মতো করে লেখো।

উত্তর: একটি শিশু ছোটো পাখিকে জিজ্ঞাসা করছে সে এত মিষ্টি গান কোথা থেকে শিখল। সে রাঙা ফুলকে জিজ্ঞাসা করছে তার মুখে এত সুন্দর হাসি কে দিল। সে খুকুরানিকে (ছোটো মেয়ে) জিজ্ঞাসা করছে কে তাকে এত মিষ্টি করে হাসতে শিখিয়েছে। শিশুটি যখন রাতে ঘুমায়, তখন জগৎ-জননী তার শিয়রে বসে থাকেন। শিশুটি বুঝতে পারে যে, ফুল, পাখি বা খুকুরানি—সকলকেই ঈশ্বর এত সুন্দর গুণ দিয়েছেন। যার ভালোবাসা এত গভীর, সেই ঈশ্বরের চরণে শিশুটি কোটি কোটি প্রণাম জানায়।

নীচের শব্দগুলোর অর্থ শব্দ-সম্ভার থেকে লেখো।

* কৃপা – দয়া

* ক্ষুদ্র – খুব ছোটো

* শিয়রে – মাথার কাছে

* জগৎ – পৃথিবী

* জননী – মা

* স্থল – মাটি বা ডাঙ্গা

শিক্ষক/শিক্ষয়িত্রীর কাছ থেকে নীচের পংক্তিগুলোর তাৎপর্য বুঝে নিয়ে লেখো।

‘ফুল, পাখি, খুকুরানি তোমরা সকলে

কত ভালো কথা আজ আমারে শুনালে।

সকলের প্রতি এত ভালোবাসা যাঁর,

চরণে তাঁহার কোটি প্রণাম আমার।’

তাৎপর্য: এই পংক্তিগুলিতে কবি (শিশুটির মাধ্যমে) বুঝাতে চেয়েছেন যে, ফুল, পাখি এবং খুকুরানি—এরা সকলেই ঈশ্বরের অপূর্ব সৃষ্টি। এদের সৌন্দর্য, মিষ্টি গান ও নির্মল হাসি দেখে কবি উপলব্ধি করেছেন যে ঈশ্বর বা সৃষ্টিকর্তা এদের সকলকে কত ভালোবেসে সৃষ্টি করেছেন। যিনি তাঁর সৃষ্টির প্রতি এত ভালোবাসা রাখেন, তিনি কত মহান! তাই কবি সেই মহান সৃষ্টিকর্তার চরণে ভক্তিভরে কোটি প্রণাম জানিয়েছেন।

খ – ভাষা-অধ্যয়ন (ব্যবহারিক ব্যাকরণ) (পৃষ্ঠা ১০৪)

বাক্য রচনা করো।

* জল-স্থল: বর্ষাকালে চারিদিক জল-স্থল একাকার হয়ে যায়।

* খুকুরানি: খুকুরানি একা একা খেলা করছে।

* জগৎ-জননী: মা জগৎ-জননী রূপে আমাদের রক্ষা করেন।

* রাঙা ফুল: গাছটিতে কী সুন্দর রাঙা ফুল ফুটেছে!

* মিষ্ট গান: ছোটো পাখিটি রোজ সকালে মিষ্ট গান শোনায়।

নীচের শব্দগুলোর সমার্থক শব্দ লেখো। (দলে আলোচনা করো)

* উদাহরণ— ফুল – পুষ্প, কুসুম

* পাখি – পক্ষী, বিহগ

* অন্ধকার – আঁধার, তিমির

* রাত – রজনী, রাত্রি

* জগৎ – পৃথিবী, বিশ্ব

‘ক’ বর্গ থেকে ‘প’ বর্গ… কোন বর্ণ আছে লক্ষ করো।

(এই প্রশ্নটি বর্ণমালার বর্গগুলি পূরণ করার জন্য।)

* ক-বর্গ : ক খ গ ঘ ঙ

* চ-বর্গ : চ ছ জ ঝ ঞ

* ট-বর্গ : ট ঠ ড ঢ ণ

* ত-বর্গ : ত থ দ ধ ন

* প-বর্গ : প ফ ব ভ ম

(পৃষ্ঠা ১০৫)

উদাহরণে যে ভাবে দেখানো হয়েছে সেভাবে নীচের শব্দগুলোর অর্থ প্রকাশ করে বাক্য রচনা করো।

* (যমুন, শয্যা (বিছানা)) – তোরা শয্যা ত্যাগ কর।

* সজ্যা (সাজ (পোশাক)) – যুদ্ধের সজ্যায় সজ্জিত হয়ে সৈনিক রওনা হল।

* কটি (কোমর) – মেয়েটি কটিতে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

* কোটি (একশো লক্ষ) – তিনি মন্দিরে এক কোটি টাকা দান করেছেন।

* রাঙা (রঙিন) – মা মেয়েকে একটি রাঙা শাড়ি কিনে দিয়েছেন।

* রাঙ্গা (রাং) – কামার রাঙ্গা দিয়ে ভাঙা বাসন জুড়ে দিল।

গ – জ্ঞান-সম্প্রসারণ (পৃষ্ঠা ১০৬)

কবি বলেছেন— ‘সকলের প্রতি এত ভালোবাসা যাঁর, চরণে তাঁহার কোটি প্রণাম আমার।’

কবি এখানে সকলের প্রতি ভালোবাসার কথা বলেছেন। তুমি তাঁর ভালোবাসার কথা বুঝতে পার কি? সেই ভালোবাসার কথা তুমি অনুভব করো এবং সেই অনুভূতিগুলো নিজের খাতায় লেখো।

(নমুনা উত্তর):

কবি এখানে ঈশ্বর বা সৃষ্টিকর্তাকে প্রণাম জানিয়েছেন, যিনি ফুল, পাখি এবং খুকুরানি সকলকেই ভালোবেসে সৃষ্টি করেছেন। আমিও ঈশ্বরের ভালোবাসা অনুভব করি।

সকালে যখন পাখির ডাকে ঘুম ভাঙে, তখন ঈশ্বরের ভালোবাসার কথা মনে হয়। বাগানের সুন্দর ফুলগুলো যখন দেখি, বা মা যখন আদর করে শিয়রে বসে থাকেন, তখনও আমি ঈশ্বরের ভালোবাসা অনুভব করি। ঈশ্বর আমাদের এই সুন্দর পৃথিবী, আলো, বাতাস, জল—সবকিছু দিয়েছেন। তিনি আমাদের মা-বাবা দিয়েছেন, বন্ধু দিয়েছেন। এই সবকিছুই তাঁর ভালোবাসার প্রকাশ। তাই আমার মনও কবির মতো সেই মহান ঈশ্বরের চরণে প্রণাম জানাতে চায়।

ঘ – প্রকল্প (পৃষ্ঠা ১০৬)

• তোমার পরিচিত একটি পাখির বিষয়ে রচনা লেখো।

(নমুনা উত্তর: টিয়া পাখি)

আমার পরিচিত একটি পাখি হলো টিয়া। টিয়া পাখির গায়ের রঙ সবুজ আর ঠোঁট দুটি টুকটুকে লাল ও বাঁকানো হয়। এরা সাধারণত গাছের কোটরে বা পুরোনো বাড়ির দেওয়ালে গর্ত করে বাসা বাঁধে। টিয়া পাখি ফল, শস্যদানা এবং কাঁচা লঙ্কা খেতে খুব ভালোবাসে। এদের ডাক খুব মিষ্টি হয়। অনেকে টিয়া পাখি পোষে এবং তাদের কথা বলাও শেখায়।

 

• তোমার পরিচিত একটি পাখির ছবি আঁকো।

(এটি ছাত্রছাত্রীদের নিজেদের আঁকার কাজ।)

• ওপরের ছবিটি দেখে একটি গল্প লেখো।

(নমুনা উত্তর):

এক বনে একটি গাছে টুনটুনি পাখি তার দুটি ছোটো বাচ্চা নিয়ে থাকত। একদিন মা টুনটুনি খাবারের খোঁজে বাইরে গেছে, এমন সময় খুব জোরে বৃষ্টি আর ঝড় শুরু হলো। ছোটো বাচ্চা দুটি ভয়ে কিচিরমিচির করতে লাগল। মা পাখিটি অনেক কষ্টে ভিজে ভিজে বাসায় ফিরে এল। সে তার দুই ডানা দিয়ে বাচ্চা

দুটিকে ঢেকে রাখল। মায়ের আদর পেয়ে বাচ্চা দুটি শান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়ল।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *