ক- পাঠভিত্তিক
উত্তর দাও
(ক) কোন আহোম মহিলা মোগলের সঙ্গে যুদ্ধ করে প্রাণ দিয়েছিলেন?
উত্তর: বীরাঙ্গনা মুলাগাভরু মোগলের সঙ্গে যুদ্ধ করে প্রাণ দিয়েছিলেন।
(খ) কোন আহোম রাজার রাজত্বকালে ‘কলিয়াবর যুদ্ধ’ হয়েছিল?
উত্তর: আহোম রাজা স্বর্গদেউ চুহুংমুঙ বা স্বর্গ নারায়ণের রাজত্বকালে ‘কলিয়াবর যুদ্ধ’ হয়েছিল।
(গ) মুলাগাভরুর স্বামীর নাম কী ছিল?
উত্তর: মুলাগাভরুর স্বামীর নাম ছিল ফ্রাচেংমুং বরগোঁহাই।
(ঘ) কবচ কাপড় কী?
উত্তর: রাতের মধ্যে সুতা কেটে তৈরি করা কাপড়কে ‘কবচ কাপড়’ বলা হয়। আহোম সমাজে বিশ্বাস ছিল যে এই কাপড় পরে যুদ্ধে গেলে জয়লাভ হয়।
উত্তর বলো ও লেখো।
(ক) হেংদাঙ কী?
উত্তর: হেংদাঙ হলো বিশাল তরবারির মতো একপ্রকার ধারালো অস্ত্র, যা আহোমদের মধ্যে প্রচলিত ছিল।
(খ) মুলাগাভরুর স্বামী ফ্রাচেংমুং বুরগোহাঁই যুদ্ধে যাবার সময় তাঁর কাছে কী চেয়েছিলেন?
উত্তর: মুলাগাভরুর স্বামী ফ্রাচেংমুং বুরগোহাঁই যুদ্ধে যাবার সময় তাঁর কাছে ‘কবচ কাপড়’ চেয়েছিলেন।
(গ) মুলাগাভরুর কীভাবে মৃত্যু হয়েছিল?
উত্তর: মোগল সেনাপতি তুর্বকের সঙ্গে মুখোমুখি যুদ্ধে তুর্বকের অস্ত্রের আঘাতেই মুলাগাভরু হাতির পিঠ থেকে ভূপতিত হন এবং তাঁর মৃত্যু হয়।
কে, কেন এবং কখন নীচের উক্তিগুলো করেছিলেন বলো।
(ক) “আমি আর দেরি করতে পারছি না। যুদ্ধের জন্য সব সরঞ্জাম তৈরি হয়েছে। আমি তুর্বককে ‘কবচ কাপড়’ ছাড়াই বিতাড়িত করতে পারব”।
উত্তর: – কে: এই উক্তিটি ফ্রাচেংমুং বরগোঁহাই তাঁর পত্নী মুলাগাভরুকে করেছিলেন।
* কখন ও কেন: যখন মুলাগাভরু নিজস্ব সমস্যার জন্য রাতের মধ্যে ‘কবচ কাপড়’ তৈরি করে দিতে পারেননি এবং বরগোঁহাইকে যুদ্ধে যেতে বাধা দিয়েছিলেন, তখন যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত বরগোঁহাই এই কথাটি বলেছিলেন।
(খ) ‘রাতের মধ্যে কবচ কাপড় বুনে না দেওয়ার জন্যই আমার স্বামীর এ দশা হল।’
উত্তর: – কে: এই কথাটি মুলাগাভরু নিজে ভেবেছিলেন।
* কখন ও কেন: যখন তিনি যুদ্ধে তাঁর স্বামী ফ্রাচেংমুং বরগোঁহাইয়ের মৃত্যুর খবর পেলেন, তখন শোকে ভেঙে পড়ে তিনি এই কথাটি ভেবেছিলেন।
সংক্ষেপে পরিচিতি লেখো-
* মুলাগাভরু: মুলাগাভরু ছিলেন আহোম মন্ত্রী ফ্রাচেংমুং বরগোঁহাইয়ের পত্নী। তিনি একজন বীরাঙ্গনা ছিলেন যিনি স্বামীর মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে হাতে হেংদাঙ নিয়ে হাতির পিঠে চড়ে মোগল সেনাপতি তুর্বকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন এবং যুদ্ধক্ষেত্রে প্রাণ দিয়েছিলেন।
* স্বর্গদেউ চুহুংমুং: তিনি একজন আহোম রাজা ছিলেন, তাঁকে স্বর্গ নারায়ণ নামেও জানা যায়। তাঁর রাজত্বকালেই মুসলমানরা তুর্বকের নেতৃত্বে প্রথম অসম আক্রমণ করে এবং কলিয়াবরের যুদ্ধ সংঘটিত হয়।
* ফ্রাচেংমুং বরগোঁহাই: তিনি আহোম রাজা স্বর্গদেউ চুহুংমুঙের একজন মন্ত্রী এবং বীরাঙ্গনা মুলাগাভরুর স্বামী ছিলেন। কলিয়াবরের যুদ্ধে তিনি প্রধান সেনাপতিরূপে নির্বাচিত হন এবং মোগল সেনাপতি তুর্বকের সঙ্গে যুদ্ধ করে মৃত্যুবরণ করেন।
প্রশ্ন: পাঠ থেকে খুঁজে নিয়ে শূন্যস্থানে উপযুক্ত শব্দ বসাও।
উত্তর: এরপর স্বর্গদেউ অন্য একজন মন্ত্রী ফ্রাচেংমুং বরগোঁহাইকে প্রধান সেনাপতিরূপে নির্বাচিত করে তুর্বককে প্রতিহত করতে আদেশ দিলেন। মুলাগাভরু এই বরগোঁহাইয়েরই পত্নী।
প্রশ্ন: এভাবে ক্ল, গ্ল, প্ল, ফ্ল, শ্ল, ব্ল, হ্র এই যুক্তবর্ণগুলোকে ভেঙে পড়ো এবং লিখতে শেখো।
উত্তর:
* ক্ল = ক + ল
* গ্ল = গ + ল
* প্ল = প + ল
* ফ্ল = ফ + ল
* শ্ল = শ + ল
* ব্ল = ব + ল
* হ্র = হ + র (্র)
প্রশ্ন: নীচের বাক্যগুলো পড়ো এবং সর্বনাম পদগুলো বের করে লেখো। কোন বিশেষ্য পদের পরিবর্তে সর্বনাম পদের ব্যবহার করা হয়েছে, তা পাশে উল্লেখ করো।
* সেই – ‘তারাপুর’ (গ্রাম) বিশেষ্য পদের পরিবর্তে বসেছে।
* ও – ‘নমিতা’ বিশেষ্য পদের পরিবর্তে বসেছে।
* ওর – ‘নমিতা’ বিশেষ্য পদের পরিবর্তে বসেছে।
* তাঁকে – ‘দাদু’ (গ্রাম-প্রধান) বিশেষ্য পদের পরিবর্তে বসেছে।
* উনি – ‘দাদু’ (গ্রাম-প্রধান) বিশেষ্য পদের পরিবর্তে বসেছে।
* তাঁদের – ‘গ্রামবাসী’ বিশেষ্য পদের পরিবর্তে বসেছে।
প্রশ্ন: এখন নীচের শব্দগুলোর সমার্থক শব্দ লেখো।
উত্তর:
* পত্নী – স্ত্রী, সহধর্মিণী, জায়া
* রণ – যুদ্ধ, লড়াই, সংগ্রাম
* শোক – দুঃখ, কষ্ট, বেদনা
* পৃথিবী – ধরা, বসুন্ধরা, ধরণী
* নদী – তটিনী, স্রোতস্বিনী, প্রবাহিণী
প্রশ্ন: বাক্য রচনা করো।
উত্তর:
* বীরত্ব – মুলাগাভরুর বীরত্ব ইতিহাসে লেখা আছে।
* যুদ্ধ – কলিয়াবরের যুদ্ধ ছিল এক ভীষণ লড়াই।
* দৃঢ়প্রতিজ্ঞ – মুলাগাভরু স্বামীর মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন।
* তুমুল – দুই পক্ষের মধ্যে তুমুল যুদ্ধ শুরু হল।
* চিরস্মরণীয় – বীরাঙ্গনাদের আত্মত্যাগ চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
* মহীয়ান – মুলাগাভরুর বীরত্ব অসমভূমিকে মহীয়ান করেছে।
গ- জ্ঞান-সম্প্রসারণ
প্রশ্ন: দলে আলোচনা করে উত্তর দাও।
প্রশ্ন: কলিয়াবর বর্তমান কোন জেলায় অবস্থিত?
উত্তর: কলিয়াবর বর্তমান অসমের নগাঁও জেলায় অবস্থিত।
প্রশ্ন: সেই বীরের বিষয়ে কী জানো লেখো। (বীর লাচিত)
উত্তর: বীর লাচিত বরফুকন ছিলেন একজন মহান আহোম সেনাপতি। তিনি মহাপরাক্রমী মোগল সেনাপতি রামসিংহকে শরাইঘাটের যুদ্ধে পরাস্ত করেছিলেন। তাঁর অসাধারণ বীরত্ব, সাহস এবং দেশপ্রেমের জন্য তিনি বিখ্যাত। তিনি নিজের কর্তব্যের কাছে আত্মীয়কেও ক্ষমা করেননি (“দেশতকৈ মোমাই ডাঙৰ নহয়” – দেশ মামার চেয়ে বড় নয়)।
