জল
পৃষ্ঠা ২০ (পাঠ – ৩ জল)
ক্রিয়াকলাপ: উপরের কথাগুলো থেকে কী বুঝতে পারলে?
প্রশ্ন: গীতা ও মিনাদের বাড়িতে ব্যবহৃত জল কোথা থেকে পায়?
উত্তর: মিনারা কুয়ো (কুয়ো) থেকে জল পায়। গীতারা জলের কল (ট্যাপ) থেকে জল পায়।
প্রশ্ন: গিতাদের বাড়িতে যে জলের কল খুললেই জল পায়, সেই জল কোথা থেকে আসে?
উত্তর: (পৃষ্ঠা ২১-এর তথ্যের ভিত্তিতে) নদী, হ্রদ, পুকুর, কুয়ো, নলকূপ ইত্যাদির জল পাম্পের সাহায্যে উঠিয়ে ট্যাঙ্কে জমা রাখা হয় এবং পরে নলের (পাইপের) সাহায্যে সেই জল কল পর্যন্ত পাঠানো হয়।
প্রশ্ন: মিনার মা জল ফিল্টারে কেনো ঢালছিলেন?
উত্তর: (পৃষ্ঠা ২৫-এর তথ্যের ভিত্তিতে) জলকে পরিষ্কার করার জন্য এবং জীবাণুমুক্ত করার প্রথম ধাপ হিসাবে মিনার মা জল ফিল্টারে ঢালছিলেন।
প্রশ্ন: মিনা ওরা কেনো জল ফুটিয়ে খায়?
উত্তর: (পৃষ্ঠা ২৫-এর তথ্যের ভিত্তিতে) জল ফুটালে জলের মধ্যে থাকা রোগ জীবাণু মারা যায়, তাই মিনা ওরা জল ফুটিয়ে খায়।
প্রশ্ন: আমাদের চারপাশের সবধরনের জল কেনো ব্যবহারের উপযোগী নয়?
উত্তর: কারণ সব জল ব্যবহারের উপযোগী নয়। নদী, বিল, পুকুর ইত্যাদির জলে আবর্জনা ফেলার ফলে জল নোংরা ও জীবাণুযুক্ত হতে পারে। মাটির নীচের জলেও প্রয়োজনের চেয়ে বেশি খনিজ লবণ মিশে থাকতে পারে।
—
পৃষ্ঠা ২১ (ভূ-গর্ভস্থ জল)
ক্রিয়াকলাপ: ভেবে লেখো
প্রশ্ন: নলকূপ, কুয়ো থেকেও আমরা জল পাই। এই জলগুলো কোথায় থাকে?
উত্তর: এই জলগুলো ভূ-গর্ভে বা মাটির নীচে সঞ্চিত হয়ে থাকে। বৃষ্টি, নদী, পুকুর ইত্যাদির জল চুঁইয়ে মাটির নীচে প্রবেশ করে এবং শিলাস্তরের খালি জায়গায় জমা হয়। এই জলকেই ভূ-গর্ভস্থ জল বলে।
—
পৃষ্ঠা ২২ (জলের উৎস)
ক্রিয়াকলাপ: এসো, তথ্য সংগ্রহ করি
প্রশ্ন: (ক) পানীয় জল কোথা থেকে সংগ্রহ করে? (খ) পানীয় জল শোধন করে খায় কি? যদি খায় তবে কোন প্রণালিতে শোধন করে?
উত্তর: (এটি ছাত্রছাত্রীদের নিজেদের এবং প্রতিবেশীদের পর্যবেক্ষণ করে পূরণ করতে হবে। নিচে একটি নমুনা দেওয়া হলো।)
নিজের ঘর – নলকূপ – হ্যাঁ, ফিল্টার করে এবং ফুটিয়ে।
প্রথম প্রতিবেশী – কুয়ো – হ্যাঁ, ফুটিয়ে খায়।
দ্বিতীয় প্রতিবেশী – অন্যান্য (সরকারি জল সরবরাহ) – হ্যাঁ, ফিল্টার ব্যবহার করে।
ক্রিয়াকলাপ: ভেবে লেখো
প্রশ্ন: ভূ-গর্ভের জল শুকিয়ে গেলে আমাদের কি কি অসুবিধা হতে পারে?
উত্তর: ভূ-গর্ভের জল ঘরোয়া কাজে, শিল্পদ্যোগে এবং জলসিঞ্চনে (চাষের কাজে) ব্যবহার করা হয়। এই জল শুকিয়ে গেলে পানীয় জলের অভাব দেখা দেবে, কল-কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে এবং চাষবাস করা অসম্ভব হয়ে পড়বে।
—
পৃষ্ঠা ২৪ (জলের অবস্থা ও দ্রবণীয়তা)
(এই পৃষ্ঠার ক্রিয়াকলাপগুলো পরীক্ষার পর্যবেক্ষণমূলক উত্তর)
ক্রিয়াকলাপ (কেটলি): তাপ পেলে জল জলীয় বাষ্পে পরিণত হয়।
ক্রিয়াকলাপ (সসপ্যান): জলীয় বাষ্প ঠাণ্ডা হলেই জলে পরিণত হয়।
ক্রিয়াকলাপ (লবণ): লবণ জলে গলে যায়।
—
পৃষ্ঠা ২৫ (জল দূষণ)
ক্রিয়াকলাপ: দলগতভাবে আলোচনা করে বলো
প্রশ্ন: জলে জিনিস গলে যাওয়ায় আমাদের কি ধরনের সুবিধা এবং কি ধরনের অসুবিধা হয়েছে?
উত্তর:
সুবিধা: আমরা জলে প্রয়োজনীয় জিনিস (যেমন লবণ, চিনি) গুলে শরবত বা অন্যান্য পানীয় তৈরি করতে পারি।
অসুবিধা: জলে আবর্জনা বা জীবাণু মিশে গেলে বা ক্ষতিকারক খনিজ লবণ গুলে গেলে জল দূষিত ও পানের অযোগ্য হয়ে পড়ে, যা খেলে নানা ধরনের রোগ হয়।
ক্রিয়াকলাপ: এসো, পরীক্ষা করে দেখি
প্রশ্ন: (চিনি, চা-পাতা, তেল, বালি, গুড়, আটা, চকের গুড়ো, মিছরি, মাটি, হলুদ, সাবান) – কোনগুলো জলে গলে যায় এবং কোনগুলো যায় না?
উত্তর:
জলে গলে যায় – চিনি, গুড়, মিছরি, সাবান, হলুদ (আংশিক), চকের গুড়ো (আংশিক)
জলে গলে যায় না – চা-পাতা, তেল, বালি, আটা (পুরোপুরি গলে না), মাটি (পুরোপুরি গলে না)
ক্রিয়াকলাপ: দলগতভাবে আলোচনা করে লেখো
প্রশ্ন: তোমাদের বিদ্যালয় ও বাড়ির পাশের উৎসসমূহে কি কি মিশ্রিত হয়ে থাকতে পারে?
উত্তর: মানুষের ফেলে দেওয়া আবর্জনা, রোগ-জীবাণু, অতিরিক্ত খনিজ লবণ, এবং বৃষ্টির জলে ধুলোকণা বা কার্বন ইত্যাদি মিশ্রিত হয়ে থাকতে পারে।
প্রশ্ন:
প্রশ্ন: তোমাদের অথবা তোমাদের বন্ধুর কখনও কোনো জলবাহিত রোগ হয়েছে কি? যদি হয়ে থাকে রোগটির নাম কী?
উত্তর: হ্যাঁ, আমার বন্ধুর আমাশয় হয়েছিল। (পাঠ্যপুস্তকে উল্লিখিত রোগ হলো— আমাশয়, কালাজ্বর, নানা ধরনের পেটের অসুখ)।
—
পৃষ্ঠা ২৬ (জল শোধন)
ক্রিয়াকলাপ: বালি ফিল্টার তৈরি করা
(এটি একটি হাতে-কলমে কাজ)
প্লাস্টিকের পাত্রের নিচে ছিদ্র করে তাতে কয়লা, ছোটো পাথর এবং বালি দিয়ে স্তর তৈরি করে বালি ফিল্টার বানানো যায়।
প্রশ্ন:
প্রশ্ন: তোমাদের অঞ্চলে সরকারি জল সরবরাহ ব্যবস্থা আছে কি?
উত্তর: (এটি শিক্ষার্থীর নিজস্ব এলাকার উপর নির্ভরশীল। উত্তর ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ হবে।)
—
পৃষ্ঠা ২৭ (জলের অপচয় ও সংরক্ষণ)
ক্রিয়াকলাপ: বোঝে লেখো
প্রশ্ন: কি কি উপায়ে জল সঞ্চয় করতে পারি?
উত্তর: আমরা নানা উপায়ে জল সঞ্চয় করতে পারি—
প্রয়োজন অনুযায়ী জল ব্যবহার করে এবং অপচয় বন্ধ করে।
একবার ব্যবহার করা জলকে পুনরায় অন্য কাজে ব্যবহার করে (যেমন সবজি ধোয়া জল গাছে দিয়ে)।
বৃষ্টির জল সংরক্ষণ করে।
ক্রিয়াকলাপ: তালিকা পূরণ
প্রশ্ন: তোমাদের বাড়িতে কি কি কাজে একবার ব্যবহৃত জলকে পুনরায় ব্যবহার করা হয় তা লক্ষ করে নীচের তালিকায় দেওয়া মতো লেখো।
উত্তর:
প্রথমবার ব্যবহৃত জল: চাল এবং সবজি ধোয়া জল।
দ্বিতীয়বার ব্যবহৃত জল: সেই জল বাগানের গাছে দেওয়া হয়।
—
পৃষ্ঠা ২৮ (অনুশীলনী)
১। উত্তর লেখো
(ক) আমাদের কী ধরনের জল খাওয়া উচিত?
উত্তর: আমাদের বিশুদ্ধ পানীয় জল খাওয়া উচিত। যদি জলে জীবাণু থাকে, তবে তা ফুটিয়ে খাওয়া উচিত।
(খ) জীবাণুযুক্ত জল খেলে কী হবে?
উত্তর: জীবাণুযুক্ত জল খেলে নানা ধরনের রোগ হয়, যেমন- আমাশয়, কালাজ্বর, নানা ধরনের পেটের অসুখ ইত্যাদি।
(গ) জল কীভাবে জীবাণুমুক্ত করতে পারি?
উত্তর: জল ফুটিয়ে জীবাণুমুক্ত করতে পারি। এছাড়া নগরের জল সরবরাহ ব্যবস্থায় ক্লোরিন ব্যবহার করেও জল জীবাণুমুক্ত করা হয়।
(ঘ) জলে গলে যায় এমন কয়েকটি জিনিসের নাম লেখো।
উত্তর: জলে গলে যায় এমন কয়েকটি জিনিস হলো— লবণ, চিনি, গুড়, মিছরি এবং সাবান।
(ঙ) নদী-উপনদী, সাগর, খাল-বিলের জলকে কীসে বাষ্পে পরিবর্তিত করে?
উত্তর: সূর্যের তাপ (সূর্যের তাপে) নদী-উপনদী, সাগর, খাল-বিলের জলকে বাষ্পে পরিবর্তিত করে।
২। শূন্যস্থান পূরণ করো-
(ক) শিলাবৃষ্টিতে বরফ থাকে।
(খ) সাগরের জল লবণাক্ত।
(গ) জল ফুটালে রোগের জীবাণু মরে।
(ঘ) তাপ পেলে জল জলীয় বাষ্পে পরিবর্তিত হয়।
(ঙ) জলীয় বাষ্প ঠাণ্ডা করে জলে পরিণত হয়।
৩। বাড়ির কাজ ছাড়াও আর অন্য কি কি কাজে জল ব্যবহার হয়?
উত্তর: বাড়ির কাজ ছাড়াও জল শিল্পদ্যোগ (কল-কারখানায়) এবং জলসিঞ্চন (কৃষিকাজে) ইত্যাদিতে ব্যবহার করা হয়।
৪। বেশি বৃষ্টি দিলে আমাদের কি কি অসুবিধা হয়?
উত্তর: (পৃষ্ঠা ২০-২৮ এর মধ্যে এই প্রশ্নের উত্তর সরাসরি দেওয়া নেই।)
৫। জলচক্রের একটি ছবি এঁকে সেখানে রং করো।
উত্তর: (এটি একটি আঁকার কাজ। শিক্ষার্থীরা পৃষ্ঠা ২৩-এর জলচক্রের ছবিটি দেখে আঁকবে।)
৬। দলগতভাবে আলোচনা করে বিদ্যালয়ের পানীয় জলের ব্যবস্থা সম্বন্ধে একটি প্রতিবেদন প্রস্তুত করো।
উত্তর: (এটি ছাত্রছাত্রীদের জন্য একটি দলগত প্রকল্প। তারা তাদের বিদ্যালয়ের পানীয় জলের উৎস, কল আছে কিনা, জল রাখার পাত্র ঢাকা থাকে কিনা ইত্যাদি বিষয় পর্যবেক্ষণ করে প্রতিবেদন লিখবে।)
