আমাদের পারিপার্শ্বিক পদার্থ কি বিশুদ্ধ?, Chapter -2, Class-9, SEBA

আমাদের পারিপার্শ্বিক পদার্থ কি বিশুদ্ধ?, Chapter -2

এখানে অনুশীলনীতে থাকা সমস্ত প্রশ্ন এবং তাদের উত্তর দেওয়া হল:
অনুশীলনী
প্রশ্ন ১। নিম্নলিখিত গুলোকে পৃথক করার জন্য কোন পৃথকীকরণ পদ্ধতি ব্যবহার করবে?
(a) সোডিয়াম ক্লরাইডের জলীয় দ্রবণ থেকে সোডিয়াম ক্লরাইড।
(b) সোডিয়াম ক্লরাইড ও এমোনিয়াম ক্লরাইডের মিশ্রণ থেকে এমোনিয়াম ক্লরাইড।
(c) মোটর গাড়ীর ইঞ্জিন তেলে ধাতুর ছোট ছোট টুকরা।
(d) ফুলের পাপড়ির নির্য্যাস (extract) থেকে বিভিন্ন রঞ্জক পদার্থ।
(e) দই থেকে মাখন।
(f) জল থেকে তেল।
(g) চা থেকে চাপাতা।
(h) বালি থেকে লোহার পিন।
(i) তুষ (husk) থেকে ভুট্টার দানা।
(j) জলে প্রলম্বিত থাকা বালির সূক্ষ্ম কণাগুলো।
উত্তর:
(a) বাষ্পীভবন (Evaporation) বা স্ফটিকীকরণ (Crystallisation)।
(b)  ঊর্ধ্বপাতন (Sublimation)।
(c) পরিস্রাবন (Filtration)।
(d) বর্ণলিখন (Chromatography)।
(e) অপকেন্দ্রণ (Centrifugation)।
(f) পৃথকীকরণ ফানেল (Separating funnel) ব্যবহার করে।
(g) পরিস্রাবন (Filtration)।
(h) চৌম্বক পৃথকীকরণ (Magnetic separation) (চুম্বকের সাহায্যে)।
(i) চালনি দিয়ে চালা (Sieving) বা হাত দিয়ে বাছা।
(j) পরিস্রাবন (Filtration) বা থিতানো (Sedimentation)।
প্রশ্ন ২। চা তৈরীর ধাপগুলোর নাম লিখ। নিম্নোক্ত শব্দগুলি ব্যবহার করবে দ্রবণ, দ্রাবক, দ্রাব্য, দ্রবীভূত, দ্রবণীয়, অদ্রবণীয়, পরিশ্রুত এবং অবশেষ।
উত্তর:
চা প্রস্তুত করার জন্য, প্রথমে একটি পাত্রে দ্রাবক হিসাবে জল নেওয়া হয়। জল গরম করে তাতে দ্রাব্য হিসাবে চিনি যোগ করা হয়। চিনি দ্রবণীয় হওয়ায় জলে দ্রবীভূত হয়ে একটি সমসত্ব দ্রবণ তৈরি করে। এরপর, এতে চাপাতা যোগ করা হয়, যা জলে অদ্রবণীয়। মিশ্রণটিকে একটি ছাঁকনি দিয়ে পরিস্রাবন করা হলে, ছাঁকনির উপরে অবশেষ হিসাবে অদ্রবণীয় চাপাতা জমা হয় এবং পাত্রে পরিশ্রুত হিসাবে চা সংগ্রহ করা হয়।
প্রশ্ন ৩। প্রজ্ঞা বিভিন্ন উষ্ণতায় তিনটি বিভিন্ন পদার্থের দ্রাব্যতা পরীক্ষা করল এবং নিম্নোক্ত তথ্য সংগ্রহ করল। (100 গ্রাম সংম্পৃক্ত দ্রবণ তৈরী করতে কত গ্রাম পদার্থ লাগবে সেই হিসাবে গণনার ফলাফল নীচের তালিকাতে দেখানো হলো।)
(তথ্য সারণী)
(a) 313 k উষ্ণতার 50 গ্রাম জলে পটাশিয়াম নাইট্রেটের সম্পৃক্ত দ্রবণ তৈরী করতে কী পরিমাণ পটাশিয়াম নাইট্রেট লাগবে?
(b) প্রজ্ঞা 353 k উষ্ণতায় পটাশিয়াম ক্লরাইডের একটি সম্পৃক্ত দ্রবণ তৈরী করে সাধারণ উষ্ণতায় ঠান্ডা হওয়ার জন্য রেখে দিয়েছিল। দ্রবণটি ঠান্ডা হয়ে গেলে সে কী লক্ষ্য করবে? ব্যাখ্যা কর।
(c) 293 k উষ্ণতায় প্রত্যেকটি লবণের দ্রাব্যতা নির্ণয় কর। এই উষ্ণতার কোন লবণের দ্রাব্যতা সবচেয়ে বেশী?
(d) লবণের দ্রাব্যতার উপর উষ্ণতা পরিবর্তনের কী প্রভাব ঘটে?
উত্তর:
(a) তালিকা অনুযায়ী, 313 K উষ্ণতায় 100 গ্রাম জলে পটাশিয়াম নাইট্রেট দ্রবীভূত হয় 62 গ্রাম।
সুতরাং, 50 গ্রাম জলে পটাশিয়াম নাইট্রেট লাগবে = (62 \div 100) \times 50 = 31 গ্রাম।
(b) 353 K উষ্ণতায় পটাশিয়াম ক্লরাইডের দ্রাব্যতা হল 54 গ্রাম, এবং 293 K (সাধারণ উষ্ণতা) এ দ্রাব্যতা হল 35 গ্রাম। যেহেতু উষ্ণতা কমলে কঠিন পদার্থের দ্রাব্যতা হ্রাস পায়, তাই দ্রবণটি ঠান্ডা হয়ে গেলে অতিরিক্ত পটাশিয়াম ক্লরাইড (54 – 35 = 19 গ্রাম, যদি 100 গ্রাম জলে দ্রবণটি প্রস্তুত করা হয়) পাত্রের নীচে কঠিন স্ফটিক হিসাবে জমা হবে।
(c) 293 K উষ্ণতায় লবণগুলির দ্রাব্যতা হল:
* পটাশিয়াম নাইট্রেট: 32
* সোডিয়াম ক্লরাইড: 36
* পটাশিয়াম ক্লরাইড: 35
* এমোনিয়াম ক্লরাইড: 37
   এই উষ্ণতায় এমোনিয়াম ক্লরাইড -এর দ্রাব্যতা সবচেয়ে বেশী (37)।
(d) তালিকা থেকে দেখা যায় যে, উষ্ণতা বৃদ্ধি পেলে সমস্ত লবণগুলির দ্রাব্যতা বৃদ্ধি পায়। সোডিয়াম ক্লরাইডের ক্ষেত্রে এই বৃদ্ধি খুবই সামান্য হলেও অন্যান্য লবণগুলির ক্ষেত্রে দ্রাব্যতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়।
প্রশ্ন ৪। উদাহরণসহ নিম্নোক্ত অবস্থাগুলো ব্যাখ্যা কর
(a) সম্পৃক্ত দ্রবণ।
(b) বিশুদ্ধ দ্রব্য।
(c) কলয়ড।
(d) প্রলম্বন।
উত্তর:
(a) সম্পৃক্ত দ্রবণ: কোনো নির্দিষ্ট উষ্ণতায়, একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ দ্রাবকে সর্বাধিক যে পরিমাণ দ্রাব্য দ্রবীভূত হতে পারে, সেই পরিমাণ দ্রাব্য দ্রবীভূত থাকলে দ্রবণটিকে সম্পৃক্ত দ্রবণ বলে। যেমন, 293 K উষ্ণতায় 100 গ্রাম জলে 36 গ্রাম সোডিয়াম ক্লরাইড দ্রবীভূত করলে একটি সম্পৃক্ত দ্রবণ তৈরি হয়।
(b) বিশুদ্ধ দ্রব্য: যে দ্রব্য কেবল এক ধরণের কণা দ্বারা গঠিত এবং যাকে কোনো ভৌতিক প্রক্রিয়া দ্বারা অন্যান্য পদার্থে পৃথক করা যায় না, তাকে বিশুদ্ধ দ্রব্য বলে। উদাহরণ: চিনি, লোহা, জল।
(c) কলয়ড: কলয়ড হল এক প্রকার অসমসত্ব মিশ্রণ, যার কণাগুলি দ্রবণের কণার চেয়ে বড় কিন্তু প্রলম্বনের কণার চেয়ে ছোট হয়। এই কণাগুলি খালি চোখে দেখা যায় না, কিন্তু এগুলি আলোকরশ্মিকে বিচ্ছুরিত করতে পারে (টিণ্ডেল প্রভাব)। উদাহরণ: দুধ, কুয়াশা।
(d) প্রলম্বন: প্রলম্বন হল একটি অসমসত্ব মিশ্রণ, যেখানে দ্রাব্য পদার্থের কঠিন কণাগুলি দ্রাবকে দ্রবীভূত না হয়ে ভাসমান অবস্থায় থাকে। এই কণাগুলিকে খালি চোখে দেখা যায়। উদাহরণ: জলে চকের গুঁড়োর মিশ্রণ।
প্রশ্ন ৫। নিম্নোক্তগুলিকে সমসত্ব অথবা অসমসত্ব মিশ্রণে ভাগ কর
সোডাওয়াটার, কাঠ, বায়ু, মাটি, ভিনিগার, পরিশ্রুত চা।
উত্তর:
* সমসত্ব মিশ্রণ: সোডাওয়াটার, বায়ু, ভিনিগার, পরিশ্রুত চা।
* অসমসত্ব মিশ্রণ: কাঠ, মাটি।
প্রশ্ন ৬। তোমাকে প্রদত্ত বর্ণবিহীন তরলটি যে বিশুদ্ধ জল তা তুমি কী ভাবে নিশ্চিত করে বলবে?
উত্তর:
বিশুদ্ধ পদার্থের নির্দিষ্ট স্ফুটনাঙ্ক থাকে। আমরা প্রদত্ত তরলটির স্ফুটনাঙ্ক নির্ণয় করব। যদি তরলটি প্রমাণ বায়ুমণ্ডলীয় চাপে ঠিক 100^\circ C (373 K) উষ্ণতায় ফুটতে শুরু করে এবং সমস্ত তরল বাষ্পীভূত না হওয়া পর্যন্ত উষ্ণতা স্থির থাকে, তবে এটি বিশুদ্ধ জল। যদি স্ফুটনাঙ্ক 100^\circ C থেকে ভিন্ন হয় বা উষ্ণতা স্থির না থাকে, তবে এটি অশুদ্ধ।
প্রশ্ন ৭। নিম্নোক্তগুলোর মধ্যে কোনগুলো “বিশুদ্ধ দ্রব্য” শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত?
উত্তর:
(a) বরফ (জল, একটি যৌগ)
(c) লোহা (মৌল)
(d) হাইড্রক্লরিক এসিড (একটি যৌগ)
(e) কেলসিয়াম অক্সাইড (একটি যৌগ)
(f) পারদ (মার্কারী) (মৌল)
(ব্যাখ্যা: দুধ, ইট, কাঠ, এবং বায়ু হল মিশ্রণ।)
প্রশ্ন ৮। নিম্নোক্ত দ্রব্যগুলোর মধ্যে কোনগুলো দ্রবণ?
উত্তর:
(b) সাগরের জল
(c) বায়ু
(e) সোডা ওয়াটার
(ব্যাখ্যা: মাটি এবং কয়লা অসমসত্ব মিশ্রণ।)
প্রশ্ন ৯। নিম্নোক্ত দ্রব্যগুলোর মধ্যে কোনটি টিন্ডেল প্রভাব (Tyndall effect) প্রদর্শন করে?
উত্তর:
(b) দুধ
(d) শ্বেতসার দ্রবণ (Starch Solution)
(ব্যাখ্যা: টিণ্ডেল প্রভাব কলয়ডীয় দ্রবণ (যেমন দুধ ও শ্বেতসার দ্রবণ) দ্বারা প্রদর্শিত হয়, কিন্তু প্রকৃত দ্রবণ (যেমন নুনের দ্রবণ বা কপার সালফেট দ্রবণ) দ্বারা প্রদর্শিত হয় না।)
প্রশ্ন ১০। নিম্নোক্তগুলোকে মৌল, যৌগ ও মিশ্রণে ভাগ কর
উত্তর:
* মৌল: (a) সোডিয়াম, (d) রূপা, (f) টিন, (g) সিলিকন।
* যৌগ: (e) কেলসিয়াম কার্বনেট, (k) মিথেন, (l) কার্বন ডাই অক্সাইড।
* মিশ্রণ: (b) মাটি, (c) চিনির দ্রবণ, (h) কয়লা, (i) বায়ু, (j) সাবান, (m) রক্ত।
প্রশ্ন ১১। নিম্নোক্ত প্রক্রিয়াগুলোর মধ্যে কোনগুলো রাসায়নিক বিক্রিয়া?
উত্তর:
(a) উদ্ভিদের বৃদ্ধি
(b) লোহায় মরিচা ধরা
(d) খাদ্য রন্ধন
(e) খাদ্যের পরিপাক
(g) মোমের প্রজ্বলন (মোমের দহন একটি রাসায়নিক পরিবর্তন)
(ব্যাখ্যা: লৌহচূর্ণ ও বালি মিশ্রিত করা এবং জলের হিমায়ন হল ভৌতিক পরিবর্তন।)

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *