ঘর্ষণ,Chapter -12, Science, Class-8 ,SEBA
অনুশীলনী
১) শূন্যস্থান পূরণ করো –
(ক) দুটো পৃষ্ঠদেশের তলা ঘর্ষণের ফলে তাদের আপেক্ষিক গতিকে বাধা দেয়। (খ) ঘর্ষণ পৃষ্ঠদেশগুলোর মসৃণতা বা প্রকৃতির উপর নির্ভরশীল। (গ) ঘর্ষণের ফলে তাপ উৎপন্ন হয়। (ঘ) ক্যারাম বোর্ডে পাউডার ছিটিয়ে দিলে ঘর্ষণ কমে যায়। (ঙ) পিচ্ছিল ঘর্ষণ স্থিতি ঘর্ষণের তুলনায় কম।
২) চারজন ছাত্রছাত্রী ঘূর্ণি, স্থিতি ও পিচ্ছিল ঘর্ষণ বলের মাত্রা অধঃক্রমে সাজাতে বললে সঠিক ক্রম হবে – (ক) ঘূর্ণি, স্থিতি, পিচ্ছিল (খ) ঘূর্ণি, পিচ্ছিল, স্থিতি (গ) স্থিতি, পিচ্ছিল, ঘূর্ণি (ঘ) পিচ্ছিল, স্থিতি, ঘূর্ণি
সঠিক উত্তর: (গ) স্থিতি, পিচ্ছিল, ঘূর্ণি
ব্যাখ্যা: স্থির অবস্থার বস্তুকে চলতে শুরু করানোর জন্য যে ঘর্ষণ বল অতিক্রম করতে হয়, সেটিই স্থিতি ঘর্ষণ এবং এটি সবচেয়ে বেশি। চলমান অবস্থায় থাকা বস্তুর ঘর্ষণ বল (পিচ্ছিল ঘর্ষণ) স্থিতি ঘর্ষণের তুলনায় কম। আর গড়িয়ে চলা বস্তুর ঘর্ষণ বল (ঘূর্ণি ঘর্ষণ) সবচেয়ে কম। তাই ক্রম হবে — স্থিতি ঘর্ষণ > পিচ্ছিল ঘর্ষণ > ঘূর্ণি ঘর্ষণ।
৩) এলিজা তার খেলনা গাড়িটি মারবেলের শুকনো মেঝেতে, ভেজা মেঝেতে, খবরের কাগজে ও টাওয়েল বিছিয়ে চালিয়েছিল। ঘর্ষণ বলের ঊর্দ্ধক্রম (কম থেকে বেশি) হবে – (ক) মারবেলের ভেজা মেঝে, মারবেলের শুকনো মেঝে, খবরের কাগজ, টাওয়েল (খ) খবরের কাগজ, টাওয়েল, মারবেলের শুকনো মেঝে, মারবেলের ভেজা মেঝে (গ) টাওয়েল, খবরের কাগজ, মারবেলের শুকনো মেঝে, মারবেলের ভেজা মেঝে (ঘ) মারবেলের ভেজা মেঝে, মারবেলের শুকনো মেঝে, টাওয়েল, খবরের কাগজ
সঠিক উত্তর: (ক) মারবেলের ভেজা মেঝে, মারবেলের শুকনো মেঝে, খবরের কাগজ, টাওয়েল
ব্যাখ্যা: যত মসৃণ হবে, ঘর্ষণ তত কম হবে। ভেজা মারবেলের মেঝে সবচেয়ে মসৃণ, তাই ঘর্ষণ সর্বনিম্ন। এরপর শুকনো মারবেল, তারপর খবরের কাগজ, আর টাওয়েল সবচেয়ে অমসৃণ, তাই ঘর্ষণ সর্বাধিক।
৪) যদি লেখার টেবিল একটু কাত হয়ে যায় এবং বইগুলো নিচের দিকে সরে যেতে শুরু করে, তাহলে ঘর্ষণ বলের দিক হবে —
উত্তর: বইগুলো ঢালু তলের নিচের দিকে সরে যায়, তাই ঘর্ষণ বলের দিক হবে ঢালু তলের উপরের দিকে।
৫) মারবেলের মেঝেতে যদি সাবান জল পড়ে যায়, তাহলে হাঁটতে কষ্ট হবে।
Ans. কারণ: সাবান জল মেঝের উপর একটি পিচ্ছিল স্তর তৈরি করে যা মেঝেকে খুব মসৃণ করে তোলে। মসৃণতা বাড়লে ঘর্ষণ কমে যায়। হাঁটার জন্য জুতো ও মেঝের মধ্যে যথেষ্ট ঘর্ষণ প্রয়োজন, যা পা পিছলে যাওয়া রোধ করে। ঘর্ষণ কমে গেলে পা পিছলে যায়, ফলে হাঁটা কঠিন হয়।
৬) খেলোয়াড়রা স্পাইক লাগানো জুতো ব্যবহার করে কারণ এতে ঘর্ষণ বল বৃদ্ধি পায়।
Ans.স্পাইক বা খাঁজ মাটিকে শক্তভাবে আঁকড়ে ধরে। ফলে ঘর্ষণ বাড়ে এবং দৌড়ানো, দিক পরিবর্তন করা বা হঠাৎ থামার সময় খেলোয়াড়রা পিছলে যায় না। এতে চলাফেরা নিরাপদ হয় এবং খেলার দক্ষতা বাড়ে।
৭) ইকবাল একটি হালকা বাক্স আর সীমা একটি ভারি বাক্স ঠেলল। সীমাকে বেশি বল প্রয়োগ করতে হবে।
Ans. কারণ: ঘর্ষণ বল নির্ভর করে পৃষ্ঠদ্বয়ের পরস্পরের উপর কত জোরে চাপছে তার উপর। ভারি বাক্স মেঝেতে বেশি চাপ সৃষ্টি করে, ফলে ঘর্ষণ বল বাড়ে। তাই ভারি বাক্স ঠেলতে বেশি বল লাগে।
৮) পিচ্ছিল ঘর্ষণ স্থিতি ঘর্ষণের তুলনায় কম।
Ans. কারণ: ঘর্ষণ সৃষ্টি হয় পৃষ্ঠের অমসৃণতা একে অপরের সাথে খাপ খাওয়ার জন্য। স্থির অবস্থায় অমসৃণতাগুলো ভালোভাবে লেগে থাকে, তাই সেটি অতিক্রম করতে বেশি বল লাগে — এটিই স্থিতি ঘর্ষণ। কিন্তু যখন বস্তুটি চলতে শুরু করে, তখন এই সংলগ্নতা বা খাপ খাওয়া পুরোপুরি ঘটে না, ফলে ঘর্ষণ কম হয় — এটিই পিচ্ছিল ঘর্ষণ।
৯) ঘর্ষণ একদিকে বন্ধু, অন্যদিকে শত্রু।
Ans. ঘর্ষণ বন্ধু: – হাঁটা ও চলাফেরা সম্ভব হয় ঘর্ষণের কারণে। – গাড়ির ব্রেক কাজ করে ঘর্ষণের জন্য। – কলম বা চক দিয়ে লেখা যায় ঘর্ষণের কারণে। – বস্তু ধরে রাখা ও নির্মাণকাজও ঘর্ষণের সাহায্যে হয়।
ঘর্ষণ শত্রু: – ঘর্ষণে জুতো, স্ক্রু, রেলিং ইত্যাদির ক্ষয় ঘটে। – যন্ত্রে তাপ উৎপন্ন হয়, শক্তি অপচয় হয়। – যন্ত্রের কার্যক্ষমতা কমে যায়, তাই ঘর্ষণ কমাতে তেল বা পিচ্ছিলক ব্যবহার করা হয়।
১০) তরলে চলমান বস্তুদের নির্দিষ্ট আকৃতি দেওয়া হয় তরল ঘর্ষণ কমানোর জন্য।
Ans. তরল ঘর্ষণ জল ও বায়ু উভয়ের মধ্যেই কাজ করে। এই ঘর্ষণ অতিক্রম করতে শক্তি ব্যয় হয়। তাই বস্তুকে এমনভাবে তৈরি করা হয় যাতে ঘর্ষণ কম হয়। এই ধারারেখা আকৃতিকে বলা হয় সরলরেখা আকৃতি বা প্রবাহরেখা আকৃতি। মাছ ও পাখির শরীর এই আকৃতির উদাহরণ। এই আকৃতি গ্রহণ করলে বিমান, জাহাজ প্রভৃতি কম শক্তিতে দ্রুত চলতে পারে।
