শব্দ, Chapter -13, Science, Class-8,SEBA
অনুশীলনী (Exercises)
1. শুদ্ধ উত্তর বেছে বের করো: শব্দ চলাচল করতে পারে
(a) শুধু গ্যাসীয় পদার্থে
(b) শুধু কঠিন পদার্থ
(c) শুধু তরল পদার্থ
(d) কঠিন, তরল ও গ্যাসীয় পদার্থ
উত্তর: (d) কঠিন, তরল ও গ্যাসীয় পদার্থ
2. নীচের আওয়াজগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম কম্পনাঙ্ক?
(a) মেয়ে বাচ্চা
(b) ছেলে বাচ্চা
(c) পুরুষ
(d) মহিলা
উত্তর: (c) পুরুষ (সাধারণত পুরুষদের আওয়াজের কম্পনাঙ্ক মহিলাদের এবং বাচ্চাদের আওয়াজের কম্পনাঙ্ক থেকে কম হয়)।
3. নীচের উক্তিগুলোর মধ্যে যেগুলো সত্যি তাতে T তে এবং যেগুলো মিথ্যা তাতে F তে টিক চিহ্ন দাও:
(a) বায়ুশূণ্যস্থানে শব্দ চলাচল করে না।
উত্তর: T (সত্য)
(b) প্রতি সেকেণ্ডে যেকোন কম্পমান বস্তুর দোলনের সংখ্যাকে তার পর্যায়কাল বলে।
উত্তর: F (মিথ্যা) (প্রতি সেকেণ্ডে দোলনের সংখ্যাকে কম্পনাঙ্ক বলে)।
(c) কম্পনের বিস্তার বেশি হলে শব্দ দুর্বল হয়।
উত্তর: F (মিথ্যা) (কম্পনের বিস্তার বেশি হলে শব্দ কোলাহলপূর্ণ বা জোরালো হয়)।
(d) মানুষের জন্য শ্রবণ শক্তির সীমা 20Hz থেকে 20,000Hz।
উত্তর: T (সত্য)
(e) কম্পনের কম্পনাঙ্ক কম হলে, তীক্ষ্ণতা বেশি হয়।
উত্তর: F (মিথ্যা) (কম্পনাঙ্ক কম হলে তীক্ষ্ণতাও কম হয়)।
(f) অবাঞ্চিত বা শ্রুতিযোগ্য নয় এমন শব্দকে সঙ্গীত বলে।
উত্তর: F (মিথ্যা) (এ ধরনের শব্দকে কোলাহল বলে)।
(g) শব্দ প্রদূষনের জন্য শ্রবণশক্তি কিছু পরিমাণে নষ্ট হয়।
উত্তর: T (সত্য)
4. উপযুক্ত শব্দ দিয়ে শূণ্যস্থান পূর্ণ করো।
(a) যেকোন বস্তু একবার দোলতে যে সময়সীমার দরকার তাকে পর্যায়কাল বলে।
(b) শব্দের উচ্চতা কম্পনের বিস্তার দ্বারা প্রকাশ করা যায়।
(c) কম্পানাঙ্কের একক হার্জ (Hz)।
(d) অবাঞ্চিত শব্দকে কোলাহল বলে।
(e) শব্দের তীক্ষ্ণতা কম্পনের কম্পনাঙ্ক দ্বারা প্রকাশ করা যায়।
5. একটি দোলক 4 সেকেণ্ডে 40 বার দোলা সম্পূর্ণ করে। দোলকটির পর্যায়কাল ও কম্পনাঙ্ক বের করো।
উত্তর:
দেওয়া আছে,
মোট সময় = 4 সেকেন্ড
মোট দোলন = 40 বার
কম্পনাঙ্ক (Frequency): প্রতি সেকেন্ডে মোট দোলনের সংখ্যাকে কম্পনাঙ্ক বলে।
কম্পনাঙ্ক = (মোট দোলন) / (মোট সময়)
কম্পনাঙ্ক = 40 / 4 = 10 Hz
পর্যায়কাল (Time Period): একটি পূর্ণ দোলনের জন্য প্রয়োজনীয় সময়কে পর্যায়কাল বলে।
পর্যায়কাল = (মোট সময়) / (মোট দোলন)
পর্যায়কাল = 4 / 40 = 0.1 সেকেন্ড
সুতরাং, দোলকটির কম্পনাঙ্ক 10 Hz এবং পর্যায়কাল 0.1 সেকেন্ড।
6. গড়ে প্রতি সেকেণ্ডে একটি মশা তার পাখাগুলো 500 বার কম্পন করে শব্দ উৎপন্ন করে। এই কম্পনের পর্যায়কাল কত?
উত্তর:
দেওয়া আছে,
প্রতি সেকেন্ডে কম্পন সংখ্যা = 500 বার
সুতরাং, কম্পনাঙ্ক (Frequency) = 500 Hz
আমরা জানি, পর্যায়কাল (Time Period) = 1 / কম্পনাঙ্ক
পর্যায়কাল = 1 / 500 = 0.002 সেকেন্ড
সুতরাং, এই কম্পনের পর্যায়কাল 0.002 সেকেন্ড।
7. নীচের বাদ্যযন্ত্রগুলোর কোন অংশ কম্পন করলে শব্দ উৎপন্ন হয়।
(a) ঢোল
(b) সেতার
(c) বাঁশী
উত্তর:
(a) ঢোল: ঢোলের শব্দ উৎপন্ন হয় তার টান করে বাঁধা পাতলা পর্দা বা চামড়ার কম্পনের ফলে (তবলার মতো)।
(b) সেতার: সেতারের শব্দ উৎপন্ন হয় এর তার -এর কম্পনের ফলে (বীণার মতো)।
(c) বাঁশী: বাঁশীর শব্দ উৎপন্ন হয় তার ভেতরের বায়ুপূর্ণ অংশ বা বায়ু স্তম্ভের কম্পনের ফলে।
8. কোলাহল শব্দ ও সঙ্গীতের মধ্যে পার্থক্য কি? সঙ্গীত কি কখনও বিরক্তিকর হয়।
উত্তর:
পার্থক্য: যে শব্দগুলি শ্রুতিমধুর নয় বা অপ্রীতিকর, সেগুলিকে কোলাহল (Noise) বলে। অন্যদিকে, যে শব্দগুলি শ্রুতিমধুর এবং শুনতে আনন্দদায়ক, সেগুলিকে সঙ্গীত (Musical sound) বলে।
সঙ্গীতের বিরক্তি: হ্যাঁ, সঙ্গীতও কখনও কখনও বিরক্তিকর হতে পারে। যদি কোনো সাংগীতিক শব্দ খুব জোরে বাজানো হয়, তবে তা সুরেলা থাকার বদলে কোলাহলে পরিণত হতে পারে এবং বিরক্তিকর লাগতে পারে।
9. তোমার পরিবেশে আছে এমন কিছু উৎসের তালিকা বানাও যেগুলো শব্দ প্রদূষণ করে।
উত্তর:
আমার পরিবেশে শব্দ প্রদূষণ করে এমন কিছু উৎস হলো:
* গাড়িঘোড়ার শব্দ (যেমন বাস, ট্রাক বা গাড়ির ভেঁপু)
* নির্মাণ কার্যের শব্দ বা মেশিনের শব্দ
* বিস্ফোরণের শব্দ
* বাড়িতে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির শব্দ, যেমন – টেলিভিশন, রেডিও, রান্নাঘরের সামগ্রী (মিক্সার গ্রাইন্ডার), কুলার বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রক মেশিন (Air Conditioners)।
10. কীভাবে শব্দের প্রদূষণে মানুষের ক্ষতি হয় বর্ণনা করো।
উত্তর:
আশেপাশে বেশি পরিমাণে কোলাহল বা শব্দ প্রদূষণ হলে মানুষের নানা ধরনের শারীরিক ক্ষতি হতে পারে।
* এর ফলে ঘুমের ব্যাঘাত বা ঘুম কম হওয়া (Insomnia) দেখা দেয়।
* উচ্চ রক্তচাপ (High blood pressure) এবং চিন্তা (Anxiety) মতো সমস্যা হতে পারে।
* যে ব্যক্তি বেশিরভাগ সময় উচ্চ শব্দের মধ্যে থাকেন, তার শ্রবণ শক্তি সাময়িকভাবে বা এমনকি স্থায়ীভাবে নষ্ট হয়ে যেতে পারে (Impairment of hearing)।
11. তোমার অভিভাবকরা একটি ঘর কিনতে চাইছেন। তারা একটি ঘর রাস্তার পাশে এবং আরেকটি ঘর রাস্তা থেকে কিছুটা ভেতরে দেখেছেন। তুমি তাদের কোনটি ঘর কিনতে পরামর্শ দেবে? তোমার উত্তরটির বর্ণনা দাও।
উত্তর:
আমি আমার অভিভাবকদের রাস্তা থেকে কিছুটা ভেতরে থাকা ঘরটি কিনতে পরামর্শ দেব।
কারণ: রাস্তার পাশের ঘরে শব্দ প্রদূষণ অনেক বেশি হবে। রাস্তায় চলাচলকারী গাড়িঘোড়ার শব্দ, ভেঁপু ইত্যাদি ক্রমাগত কোলাহলের সৃষ্টি করবে। এই ধরনের শব্দ প্রদূষণ স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, এর ফলে উচ্চ রক্তচাপ, ঘুমের সমস্যা এবং মানসিক চাপ হতে পারে। রাস্তা থেকে ভেতরের ঘরটিতে তুলনামূলকভাবে কোলাহল কম হবে, যা একটি শান্ত এবং স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করবে।
12. স্বরযন্ত্র (Larynx) এর ছবি আঁকো এবং এটির কাজ কি তোমরা নিজের ভাষায় লিখো।
উত্তর:
(পাঠ্যপুস্তকের 162 পৃষ্ঠায় চিত্র 13.8 -এ স্বরযন্ত্রের ছবি দেওয়া আছে।)
স্বরযন্ত্রের কাজ:
স্বরযন্ত্র বা ধ্বনিপ্রকোষ্ঠ (Voice box) মানুষের শব্দ উৎপন্নের প্রধান অঙ্গ। এটি শ্বাসনালীর উপরের অংশে অবস্থিত। এর ভেতরে দুটি স্বরতন্ত্রী (Vocal cords) টানটান করে লাগানো থাকে। যখন আমরা কথা বলার জন্য ফুসফুস থেকে বাতাসকে এই স্বরতন্ত্রীর মধ্য দিয়ে ঠেলে পাঠাই, তখন সেই বাতাসে স্বরতন্ত্রী দুটি কাঁপতে শুরু করে। এই কম্পনের ফলেই শব্দের সৃষ্টি হয়।
13. বিদ্যুৎ চমকানো ও বাজ পড়ার শব্দ আকাশে একই সঙ্গে হয়েছে এবং আমাদের থেকে সমান দূরত্বে। বিদ্যুৎ চমকানোর আগে দেখা গেল এবং ধ্বনি পরে শোনা গেল। কেন এরকম হলো ব্যাখ্যা করো?
উত্তর:
এই ঘটনাটি ঘটে কারণ আলো এবং শব্দের গতিবেগ সমান নয়। আলোর গতিবেগ শব্দের গতিবেগের চেয়ে অনেক অনেক বেশি।
বিদ্যুৎ চমকানো হলো আলো, যা প্রায় সঙ্গে সঙ্গে আমাদের চোখে এসে পৌঁছায়। কিন্তু বাজ পড়ার শব্দ (thunder) একটি শব্দতরঙ্গ, যা বায়ু মাধ্যমের মধ্য দিয়ে তুলনামূলকভাবে অনেক ধীর গতিতে ভ্রমণ করে। তাই, বিদ্যুৎ চমকানো এবং বাজ পড়ার ঘটনা একই সঙ্গে ঘটলেও, আলোর দ্রুত গতির জন্য আমরা চমকটি আগে দেখি এবং শব্দের ধীর গতির জন্য বাজের শব্দটি তার কিছুক্ষণ পরে শুনতে পাই।
