বাতাস , ঝড়বৃষ্টি  ও ঘূর্ণিবাত, Chapter-8, Class-7,  Science, SEBA

বাতাস , ঝড়বৃষ্টি  ও ঘূর্ণিবাত,Chapter-8, Class-7,  Science,SEBA

বাতাস , ঝড়বৃষ্টি  ও ঘূর্ণিবাত,Chapter-8, Class-7,  Science,SEBA

অনুশীলনী (Exercises)
১। নিম্নলিখিত উক্তিগুলোর শূন্যস্থান পূর্ণ করো:
(ক) বাতাস হল বায়ুর প্রবাহমান অবস্থা।
(খ) পৃথিবীপৃষ্ঠে অসমান উত্তাপের ফলে বতাসের সৃষ্টি হয়।
(গ) গরম বাতাস উপরের দিকে উঠে এবং ঠান্ডা বাতাস পৃথিবী পৃষ্ঠে নীচের দিকে আসে।
(ঘ) উচ্চ চাপযুক্ত অঞ্চল থেকে বায়ু নিম্ন চাপযুক্ত অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হয়।

২। কোন একটি স্থানের বায়ুর দিক নির্দেশ করার দুটো পদ্ধতি আলোচনা করো।
উত্তর: কোনো স্থানের বায়ুর দিক নির্দেশ করার দুটি পদ্ধতি হলো:
১. সাধারণ পর্যবেক্ষণ: হাতে শুকনো ধুলো বা হালকা কাগজের টুকরো নিয়ে ছেড়ে দিলে তা যেদিকে উড়ে যাবে, সেটিই হবে বাতাসের প্রবাহের দিক।
২. বায়ু-মোরগ (Wind Vane): এই যন্ত্রটি সাধারণত ছাদের উপর লাগানো থাকে। এতে একটি তীরের মতো অংশ থাকে, যা বাতাসের চাপে ঘুরে গিয়ে বাতাসের প্রবাহের সঠিক দিক (যেমন: উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব, পশ্চিম) নির্দেশ করে।

৩। বায়ু চাপ দেয় এই কথাটি বোঝানোর জন্য দুটো পরীক্ষার উল্লেখ করো (পাঠ্য বইয়ের বাইরে)।
উত্তর: বায়ু চাপ দেয়, তা বোঝানোর জন্য দুটি পরীক্ষা নিচে দেওয়া হলো:
১. গ্লাস ও কার্ডবোর্ডের পরীক্ষা: একটি কাঁচের গ্লাস জল দিয়ে কানায় কানায় পূর্ণ করতে হবে। এরপর একটি শক্ত কার্ডবোর্ড দিয়ে গ্লাসের মুখটি চেপে ঢেকে দিতে হবে। এবার সাবধানে গ্লাসটিকে উল্টে ধরলে দেখা যাবে, কার্ডবোর্ডটি নিচে পড়ে যাচ্ছে না এবং জলও পড়ছে না। এর কারণ হলো, বায়ুমণ্ডল নীচ থেকে কার্ডবোর্ডটির উপর যে ঊর্ধ্বমুখী চাপ প্রয়োগ করে, তা গ্লাসের জলের নিম্নমুখী চাপের চেয়ে বেশি।
২. স্ট্র (Straw) দিয়ে জল তোলা: একটি গ্লাসের জলে স্ট্র ডোবালে এবং স্ট্র-এর উপরের মুখটি আঙুল দিয়ে শক্ত করে বন্ধ করে স্ট্রটি জল থেকে তুলে আনলে দেখা যায় যে, স্ট্র-এর ভেতরের জল নিচে পড়ছে না। এর কারণ হলো, স্ট্র-এর নীচের খোলা মুখে বাতাস ঊর্ধ্বমুখী চাপ দিয়ে জলকে ধরে রাখে।

৪। তুমি একটি বাড়ি কিনতে চাইছ। তুমি কি এখন একটি বাড়ি কিনতে চাইবে যেখানে শুধু জানালা আছে কিন্তু কোন ভেন্টিলেটার নেই? (তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দেখাও)
উত্তর: না, আমি এমন একটি বাড়ি কিনতে চাইব না যেখানে শুধু জানালা আছে কিন্তু কোনো ভেন্টিলেটর বা ঘুলঘুলি নেই।
কারণ: আমরা জানি, গরম বাতাস ঠান্ডা বাতাসের তুলনায় হালকা হয় এবং উপরের দিকে উঠে যায়। ঘরের ভেতরে আমাদের নিঃশ্বাসের বাতাস বা অন্যান্য কারণে উৎপন্ন গরম বাতাস হালকা হওয়ায় তা ঘরের উপরের দিকে জমা হয়। ভেন্টিলেটর বা ঘুলঘুলি সাধারণত ঘরের উপরের দিকে থাকে। এর ফলে, এই গরম ও দূষিত বাতাস ভেন্টিলেটর দিয়ে সহজেই বাইরে বেরিয়ে যেতে পারে এবং জানালা দিয়ে অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা ও তাজা বাতাস ঘরে প্রবেশ করতে পারে। ভেন্টিলেটর না থাকলে ঘরের গরম বাতাস ঠিকমতো বেরোতে পারবে না, ফলে ঘরের মধ্যে বায়ুচলাচল ব্যাহত হবে এবং ঘরটি অস্বাস্থ্যকর ও গুমোট হয়ে থাকবে।

৫। ব্যানার ও বিজ্ঞাপনপত্র আটকানোর তক্তার বেড়ায় কেন ছিদ্র রাখা হয় ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: আমরা জানি বায়ু চাপ প্রয়োগ করে। ব্যানার বা বিজ্ঞাপনপত্র আটকানোর তক্তাগুলো আকারে অনেক বড় হয়। যখন প্রবল বেগে বাতাস বয়, তখন এই ব্যানার বা তক্তা বাতাসে বাধা সৃষ্টি করে। এর ফলে বাতাস সেই ব্যানার বা তক্তার উপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করে। এই অতিরিক্ত চাপের কারণে ব্যানারটি ছিঁড়ে যেতে পারে অথবা পুরো তক্তাটি ভেঙে পড়ে যেতে পারে।
ব্যানার বা তক্তার বেড়ায় ছিদ্র রাখা হলে সেই ছিদ্রগুলির মধ্য দিয়ে বাতাস সহজেই প্রবাহিত হতে পারে, অর্থাৎ বাতাস বাধা পায় না। এর ফলে বাতাসের চাপ অনেক কমে যায় এবং ঝোড়ো বাতাসেও ব্যানার বা বিজ্ঞাপনপত্রটি সুরক্ষিত থাকে ও কম ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

৬। তোমার গ্রামে বা শহরে যদি ঘূর্ণিবাত বয়ে যায় তবে তুমি কীভাবে তোমার প্রতিবেশীকে সাহায্য করবে?
উত্তর: আমার গ্রামে বা শহরে ঘূর্ণিবাত বয়ে গেলে আমি নিম্নলিখিত উপায়ে আমার প্রতিবেশীদের সাহায্য করব:
* সবাইকে আবহাওয়া দপ্তরের দেওয়া ঘূর্ণিবাতের সতর্কবার্তা সম্বন্ধে সচেতন করব এবং আতঙ্কিত না হয়ে শান্ত থাকতে বলব।
* আমার প্রতিবেশীদের, বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের, দ্রুত নিকটবর্তী আশ্রয় শিবিরে বা কোনো সুরক্ষিত পাকা বাড়িতে পৌঁছাতে সাহায্য করব।
* তাঁদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী, গবাদি পশু ইত্যাদি সুরক্ষিত স্থানে সরিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করব।
* তাঁদের কাছে পুলিশ, দমকল বাহিনী ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মতো জরুরি পরিষেবার ফোন নম্বর আছে কিনা তা নিশ্চিত করব এবং না থাকলে তা দেব।
* ঘূর্ণিবাতের পরে, তাঁদের খোঁজখবর নেব এবং পানীয় জল, খাবার বা প্রাথমিক চিকিৎসায় যথাসাধ্য সহযোগিতা করব।

৭। আসন্ন ঘূর্ণিবাতের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন?
উত্তর: আসন্ন ঘূর্ণিবাতের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নিম্নলিখিত ব্যবস্থাগুলো নেওয়া প্রয়োজন:
১. সতর্কবার্তা অনুসরণ: আবহাওয়া দপ্তর থেকে রেডিও, দূরদর্শন বা সংবাদপত্রের মাধ্যমে প্রচারিত সমস্ত সতর্কবার্তা মন দিয়ে শোনা এবং সেগুলোকে অবজ্ঞা না করা।
২. সুরক্ষিত স্থানে আশ্রয়: যত দ্রুত সম্ভব বাড়িঘর ছেড়ে সরকারি আশ্রয় শিবির বা কোনো মজবুত পাকা দালানে আশ্রয় নেওয়া।
৩. জরুরি সামগ্রী সঞ্চয়: আপৎকালীন সময়ের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে শুকনো খাবার এবং পানীয় জল সঞ্চয় করে রাখা।
৪. জরুরি ফোন নম্বর: পুলিশ, দমকল বাহিনী, স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং উদ্ধারকারী দলের প্রয়োজনীয় ফোন নম্বর একটি জলরোধী ব্যাগে নিজের কাছে রাখা।
৫. বৈদ্যুতিক সাবধানতা: ঘরের মেইন সুইচ বন্ধ রাখা এবং কোনো ভেজা সুইচ বা খোলা বিদ্যুতের তার স্পর্শ না করা।
৬. নিরাপত্তা: গবাদি পশু ও মূল্যবান সামগ্রী সুরক্ষিত স্থানে সরিয়ে রাখা। বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে জলের মধ্য দিয়ে গাড়ি না চালানো।


৮। নীচের কোন জায়গাটি ঘূর্ণিবাতের প্রভাব থেকে মুক্ত?
(i) চেন্নাই (ii) ম্যাঙ্গালুরু (ম্যাঙ্গালোর) (iii) অমৃতসর (iv) পুরী
উত্তর: (iii) অমৃতসর।

৯। নীচের কোন উক্তিটি শুদ্ধ।
(i) শীতকালে বাতাস স্থলভাগ থেকে সমুদ্রের দিকে প্রবাহিত হয়।
(ii) গ্রীষ্মকালে বাতাস স্থলভাগ থেকে সমুদ্রের দিকে প্রবাহিত হয়।
(iii) উচ্চাপযুক্ত বায়ুর সাথে প্রবল বেগে চারদিক ঘুরিয়ে যখন বাতাস প্রবাহিত হয় তখন ঘূর্ণিবাতের সৃষ্টি হয়।
(iv) ভারতবর্ষের সমুদ্র উপকূলবর্তী স্থানে ঘূর্ণিবাতের সম্ভাবনা কম।
উত্তর: (i) শীতকালে বাতাস স্থলভাগ থেকে সমুদ্রের দিকে প্রবাহিত হয়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *