প্রত্যুপকার, Chapter- 6, Class-9, SEBA

প্রত্যুপকার, Chapter- 6, Class-9, SEBA


প্রত্যুপকার, Chapter- 6, Class-9, SEBA


ক্রিয়াকলাপ

**১। (ক) সঠিক উত্তর নির্বাচন করাে।**
(ক) প্রত্যুপকার গল্পটি কোন পুরুষে লেখা ?
**উত্তরঃ** ৩।প্রত্যুপকার গল্পটি উত্তম পুরুষে লেখা।
(খ) হস্তপদবদ্ধ ব্যক্তির নিবাস কোথায় ?
**উত্তরঃ** ২। হস্তপদবদ্ধ ব্যক্তির নিবাস ডেমাস্কস।
(গ) আলি ইবন আব্বস কোন দেশের লােক ?
**উত্তরঃ** ১। আলি ইবন আব্বাস বাগদাদ দেশের লােক।
(ঘ) খলিফার নাম কী ?
**উত্তরঃ** ৪। খলিফার নাম মামুন।

**(খ) সত্য ও অসত্য বেছে নাও ?**
১। আব্বস খলিফার বিরাগভাজন ছিলেন।
**উত্তরঃ** আববস খলিফার বিরাগভাজন ছিলেন- অসত্য।
২। খলিফা মহামতি ও অতি উন্নতচিত্ত পুরুষ ছিলেন।
**উত্তরঃ** খলিফা মহামতি ও অতি উন্নতচিত্ত পুরুষ ছিলেন- সত্য।
৩। পরদিন অপরাহ্নে আস খলিফার নিকট উপস্থিত হইলেন।
**উত্তরঃ** পরদিন অপরাহ্নে আবস খলিফার নিকট উপস্থিত হইলেন-অসত্য।
৪। এই পৃথিবীতে যত স্থান আছে ডেমাস্কস আমার সর্বাপেক্ষা প্রিয়।
**উত্তরঃ** এই পৃথিবীতে যতস্থান আছে ডেমাস্কস আমার সর্বাপেক্ষা প্রিয়- সত্য।

**(গ) পাঠ অবলম্বনে শূন্যস্থান পূর্ণ করাে-**
১। তিনি বলিলেন …………………………. আমার জন্মস্থান।
**উত্তরঃ** তিনি বলিলেন ডেমাস্কস আমার জন্মস্থান।
২। আপনি কৃপা করিয়া আমার ……………………..করুন।
**উত্তরঃ** আপনি কৃপা করিয়া আমার প্রাণরক্ষা করুন।
৩। সদাশয় আশ্রয়দাতা আমার হস্তে একটি ……………………. থলি দিলেন।
**উত্তরঃ** সদাশয় আশ্রয়দাতা আমার হস্তে একটি স্বর্ণমুদ্রার থলি দিলেন।
৪। তিনি ………………………. ডাকাইয়া প্রস্তুত হইতে আদেশ দিলেন।
**উত্তরঃ** তিনি ঘাতককে ডাকাইয়া প্রস্তুত হইতে আদেশ দিলেন।
৫। এক্ষণে আপনার যেরূপ…………………………… হয় করুন।
**উত্তরঃ** এক্ষণে আপনার যেরূপ অভিরুচি হয় করুন।



**২। অতি সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও-**
(ক) বাংলা গদ্যের জনক কাকে বলা হয় ?
**উত্তরঃ** বাংলা গদ্যের জনক বলা হয় ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে।
(খ) আব্বস প্রাণরক্ষা করার জন্য আশ্রয়দাতার বাড়িতে কতদিন ছিলেন ?
**উত্তরঃ** আব্বস প্রাণরক্ষা করার জন্য আশ্রয়দাতার বাড়িতে একমাসকাল ছিলেন।
(গ) তােমা হইতেই তাহার প্রাণরক্ষা হইল’ বক্তা কে ?
**উত্তরঃ** তােমা হইতেই তাহার প্রাণরক্ষা হইল- বক্তা হলেন খলিফা মামুন।
(ঘ) আপনকার নিবাস কোথায় ? – ‘আপনকার’ বলতে কাকে বােঝানাে হয়েছে ?
**উত্তরঃ** ‘আপনকার’ বলতে হস্তপদবদ্ধ খলিফার বন্দীকে বােঝানাে হয়েছে।
(ঙ) ‘প্রত্যুপকার’ পাঠের লেখক কে ?
**উত্তরঃ** ‘প্রত্যুপকার’ পাঠের লেখক হলেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর।
(চ) ‘প্রত্যুপকার’ গল্পে কে, কার প্রত্যুপকার করেছেন ?
**উত্তরঃ** ‘প্রত্যুপকার’ গল্পে আলি ইবন্ আব্বস তার দুর্দিনের আশ্রয়দাতার প্রত্যুপকার করেছেন।



**৩। ৩/৪ বাক্যে উত্তর দাও-**

(ক) পৃথিবীতে যত স্থান আছে ঐ স্থান আমার সর্বাপেক্ষা প্রিয়’- উক্তিটির যথার্থ বুঝিয়ে বল।
**উত্তরঃ** আলি ইবন আব্বাস একবার বাগদাদের খলিফা মামুনের সাথে ডেমাস্কসে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে সেখানকার পদচ্যুত শাসনকর্তার আক্রমণে প্রাণ বাঁচাতে একমাসকাল এক সম্ভ্রান্ত লােকের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় লাভ করেছিলেন। তারপর বাগদাদে সেই সম্ভ্রান্ত লােকেরই নির্দেশে তারই ঘােড়ায় চড়ে বাগদাদগামী একদল লােকের সাথে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। একটি স্বর্ণমুদ্রাভরা থলি আশ্রয়দাতা ভদ্রলােকের থেকে লাভ করেছিলেন। এই বিরল আতিথেয়তার জন্য আব্বসের কাছে ডেমাস্কস পৃথিবীতে যতস্থান আছে তার মধ্যে প্রিয়তম হয়ে উঠেছিলাে।

(খ) আপনার মনস্কাম পূর্ণ হইয়াছে’-কে, কাকে কোন প্রসঙ্গে এই কথা বলেছিলেন ?
**উত্তরঃ** উপরােক্ত উক্তি আলি ইবন আব্বস ডেমাস্কসবাসী এক বন্দীকে বলেছিলেন। সেই বন্দী আলির তত্ত্বাবধানে থাকাকালীন আলি তাকে তার ডেমাস্কসের ভয়ংকর কাহিনি শােনাতে শােনাতে তার প্রতি ডেমাস্কসের এক ভদ্রলােকের অসাধারণ করুণাময় আতিথেয়তার কথা বলেছিলেন। সেইসঙ্গে আলি সেই আশ্রয়দাতার প্রত্যুপকার করতে না-পারার জন্য আক্ষেপ করেছিলেন। সেই প্রসঙ্গে ডেমাস্কসবাসী সেই বন্দীই যে আলির আশ্রয়দাতা তা জানালেন এবং আলিকে আক্ষেপ করতে নিষেধ করেছিলেন।

(গ) লৌহশৃঙ্খল থেকে মুক্ত হবার পর বন্দী কীরূপ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছিলেন ?
**উত্তরঃ** লৌহশৃঙ্খল থেকে মুক্ত হবার পর বন্দী আববসকে দুঃখের সঙ্গে জানিয়েছিলেন যে, তিনি কতিপয় নীচ প্রকৃতির লােকের চক্রান্তে খলিফার বিষনজরে পড়ে বন্দী হয়েছেন। তিনি নিতান্তই হতাশ হয়ে প্রাণদণ্ডপ্রাপ্তির আশঙ্কা করে স্ত্রী, পুত্র, কন্যাদিগের ভবিতব্যের চিন্তা করছিলেন। এই দুরবস্থার প্রেক্ষিতে বন্দী আব্বাসকে প্রিয়জনকে সেই দুঃসংবাদ জানিয়ে দেবার জন্য অনুরােধ করেছিলেন।

(ঘ) বন্দীকে মুক্ত করার পর আব্বস তাকে কী বলেছিলেন ?
**উত্তরঃ** বন্দীকে মুক্ত করার পর আববস তাকে প্রাণনাশের আশঙ্কা করতে বারণ করলেন। পরন্তু তাকে স্বাধীন করে দিলেন। সেই সঙ্গে পাথেয়স্বরূপ সহস্র স্বর্ণমুদ্রার একটি থলি তার হাতে দিয়ে অবিলম্বে প্রস্থান করতে বলেন। আববস বন্দীকে তার পরিবারবর্গের সঙ্গে মিলিত হয়ে সংসারযাত্রা সম্পূর্ণ করতে উপদেশ দেন। আববস বন্দীকে জানালেন যে বন্দী মুক্তির জন্য তার উপরে খলিফার মর্মান্তিক ক্রোধ ও দ্বেষ জন্মাবে নিঃসন্দেহে তবুও বন্দীর প্রাণ বাঁচাতে পেরে আবস নিজের দুঃখকর পরিণতির জন্য দুঃখিত হবেন না।

(ঙ) আব্বসের প্রস্তাবে তিনি সম্মত হননি কেন ?
**উত্তরঃ** আব্বসের প্রস্তাবে তিনি রাজি হননি কেননা একদিন যার প্রাণরক্ষা করেছিলেন আজ তার প্রাণবিনাশের কারণ হওয়া তার পক্ষে অসম্ভব। উপরন্তু নীচ প্রকৃতি লােকের ঈর্ষাবশত শত্রুতার ফলেই তার প্রতি খলিফার মনােভাব ও সিদ্ধান্ত বদলাতে পারে। যদি আব্বসের চেষ্টা সফল নাও হয় তবুও তার কোনাে ক্ষোভ থাকবে না।

(চ) খলিফা যে উন্নত চিত্তের পুরুষ কীভাবে তার প্রমাণ পাওয়া যায়।
**উত্তরঃ** ডেমাস্কসবাসী বন্দী হয়ে পরদিন আবস ক্রুদ্ধ খলিফাকে কাতর অনুনয় করে বন্দী সম্পর্কে প্রকৃত ঘটনাটি সবিস্তারে বর্ণনা করেন। আববস বন্দীকে দয়াশীলকারী, ন্যায়পরায়ণ ও সদ্বিবেচক হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করে বন্দী যে কখনই দুরাচার নন একথা জানান। খলিফা তাঁর বন্দর প্রকৃত পরিচয় জানতে পেরে যৎপরােনাস্তি সন্তুষ্ট হয়ে তাঁকে উপহার সামগ্রী প্রদান করে সম্মানে বিদায় দেন। খলিফার এই ব্যবহারের মধ্য দিয়েই প্রমাণ পাওয়া যায় যে তিনি ছিলেন উন্নত চিত্তের পুরুষ।



**৪। নীচের প্রশ্নগুলির রচনামূলক উত্তর লেখাে।**
(ক) প্রত্যুপকার পাঠে কে, কীভাবে প্রত্যুপকার করেছে আলােচনা করাে।
**উত্তরঃ** ‘প্রত্যুপকার’ পাঠে আলি ইবন আব্বাস একজন সত্যিকারের কৃতজ্ঞ ও ন্যায়পরায়ণ মানুষের প্রতিচ্ছবি। তিনি এক সময় ডেমাস্কসে বিপদের মুখে পড়ে এক ভদ্রলোকের বাড়িতে আশ্রয় পান। সেই ভদ্রলোক তাকে এক মাস নিরাপদে রাখেন ও ঘোড়া, খাদ্যসামগ্রীসহ বাগদাদে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। পরবর্তীতে একদিন খলিফার নির্দেশে আব্বাস একটি বন্দীকে রক্ষার দায়িত্ব পান। বন্দীর বাসস্থান জানতে পেরে আব্বাস বুঝতে পারেন, এ-ই সেই আশ্রয়দাতা। তিনি আনন্দিত হয়ে বন্দীকে মুক্ত করেন ও স্বর্ণমুদ্রা দিয়ে পালাতে বলেন। কিন্তু সেই ভদ্রলোক পালাতে অস্বীকৃতি জানিয়ে খলিফার সামনে সত্য প্রকাশের পরামর্শ দেন। পরদিন আব্বাস খলিফার সামনে সেই ভদ্রলোকের দয়া ও মহত্বের কথা তুলে ধরেন। খলিফা প্রকৃত সত্য জানতে পেরে বন্দীকে মুক্ত করে সম্মাননা প্রদান করেন। এই ঘটনায় স্পষ্ট, আব্বাস তার আশ্রয়দাতার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সত্যিকার অর্থেই প্রত্যুপকার করেছেন। গল্পটির মাধ্যমে কৃতজ্ঞতা, ন্যায়বোধ ও মানবিক মূল্যবোধের উজ্জ্বল প্রকাশ ঘটে।

(খ) প্রত্যুপকার নামকরণের সার্থকতা আলােচনা করাে।
**উত্তরঃ** ‘প্রত্যুপকার’ গল্পের নামকরণ অত্যন্ত সার্থক ও যথাযথ। এ গল্পে আলি ইবন আব্বাস এক সময় বিপদে পড়ে ডেমাস্কসের এক ভদ্রলোকের কাছ থেকে আশ্রয় ও সাহায্য লাভ করেন। পরবর্তীকালে আব্বাস সেই ভদ্রলোককে বন্দী অবস্থায় পেয়ে প্রথমে চিনতে না পারলেও, তার পরিচয় জানার পর অতীত কৃতজ্ঞতা স্মরণ করে তাঁকে মুক্তি দেন এবং স্বর্ণমুদ্রা দিয়ে সম্মান জানান। কিন্তু সেই ভদ্রলোক পালাতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, সত্য ঘটনা খলিফাকে জানালে তাঁর অবস্থার পরিবর্তন হতে পারে। আব্বাস তখন খলিফার কাছে কাতর অনুরোধে সেই আশ্রয়দাতার মহানুভবতার কথা তুলে ধরেন। খলিফা ঘটনাটি শুনে সত্যতা উপলব্ধি করে বন্দীকে মুক্তি দেন ও সম্মাননা প্রদান করেন। এই কাহিনির মূল মর্ম হচ্ছে উপকারের উত্তরে উপকার বা কৃতজ্ঞ প্রতিদান, যা ‘প্রত্যুপকার’ নামটির মাধ্যমে নিখুঁতভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। সুতরাং গল্পটির শিরোনাম এর কেন্দ্রীয় ভাবনা ও নৈতিক বার্তাকে সফলভাবে উপস্থাপন করে।

(গ) ‘প্রত্যুপকার’ পাঠে আমার আলি ইবন আব্বস-এর চরিত্রটি ভালাে লাগে। অবশ্য দুটি চরিত্রই (বন্দী এবং আব্বস) যথেষ্ট নিপুণতার সঙ্গে চিত্রিত হয়েছে, তথাপি আলির চরিত্রটি তুলনামূলকভাবে আমাকে বেশি টানে।
**উত্তরঃ** ‘প্রত্যুপকার’ গল্পে আলি ইবন আব্বাসের চরিত্রটি আমার বিশেষভাবে ভালো লাগে। সাধারণত দেখা যায়, উপকার করার লোক অনেক থাকলেও উপকারের বদলে উপকার ফেরত দেওয়া মানুষ খুব কম। আলি ছিলেন একজন কৃতজ্ঞ, উদার ও সাহসী মানুষ। তিনি ডেমাস্কস শহরে এক ভদ্রলোকের বাড়িতে আশ্রয় পেয়েছিলেন এবং সেই ভদ্রলোক তাকে ঘোড়া ও স্বর্ণমুদ্রা দিয়ে নিজের শহরে ফিরে যেতে সাহায্য করেছিলেন। পরবর্তীতে সেই ভদ্রলোক খলিফার রোষে বন্দি হয়ে আব্বাসের হাতে পড়েন। আব্বাস তখন তার পরিচয় না জেনেই তার দুঃখ অনুভব করেন এবং যখন জানতে পারেন, এ-ই সেই আশ্রয়দাতা, তখন প্রাণের ঝুঁকি নিয়েও তাকে মুক্ত করতে সচেষ্ট হন। খলিফার কাছে বহু অনুরোধ করে তিনি তাঁর আশ্রয়দাতার মহত্ত্ব প্রতিষ্ঠা করেন। খলিফাও ন্যায়নিষ্ঠ ছিলেন, ফলে সেই ভদ্রলোককে মুক্তি দেন। আলির নিঃস্বার্থ কৃতজ্ঞতা ও সাহসিকতা এই চরিত্রটিকে আমার চোখে আরও উজ্জ্বল ও অনন্য করে তোলে।

(ঘ) আলি ইবন আব্বসের আশ্রয়দাতার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকার যথার্থ কারণ বিশ্লেষণ করাে।
**উত্তরঃ** আলি ইবন আববস নামে এক ব্যক্তি একদিন বিকেলে খলিফার সঙ্গে আলাপে মগ্ন ছিলেন। সেই সময় বন্দী অবস্থায় এক ব্যক্তিকে তার কাছে আনা হলে তিনি আববসকে নির্দেশ দিলেন বন্দীকে তার বাড়িতে রুদ্ধ করে রাখতে এবং পরদিন খলিফার নিকট উপস্থিত করতে। আব্বস খলিফার নির্দেশ যথাযথভাবে পালন করেন। বন্দীর পরিচয় জিজ্ঞাসা করায় তিনি জানতে পারেন ডেমাস্কসে বন্দীর বাসস্থান। আব্বসের মনে পড়ে যায় ডেমাস্কসের পদচ্যুত শাসনকর্তার আক্রমণে তিনি প্রাণরক্ষার আবেদন জানিয়ে এক সম্ভ্রান্ত ব্যক্তির বাড়িতে উপস্থিত হলে গৃহস্বামী তাকে শুধুমাত্র আশ্রয় প্রদান করেননি বিপদের মেঘ না-কাটা পর্যন্ত নির্ভয়ে ও নিরাপদে প্রায় মাসখানেক তাঁকে রেখেছিলেন। একদিন সুযােগ বুঝে বাগদাদে যাবার যাত্রীদের সঙ্গে তাকেও পাঠানাের ব্যবস্থা করেন। সঙ্গে সুসজ্জিত অশ্ব, খাদ্যসামগ্রী ও ভৃত্য ছিল। সেজন্য আকসের সবচেয়ে প্রিয়স্থান ছিল ডেমাস্কস। আরও প্রিয় ছিল ডেমাস্কসের সেই মহান আশ্রয়দাতা। আলি আব্বসের ডেমাস্কসের মহান আশ্রয়দাতার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকার এইটিই যথার্থ কারণ।

(ঙ) ডেমাস্কসবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রদর্শনের উদ্দেশ্য আব্বস খলিফাকে যে সব যুক্তি দেখিয়েছিলেন তা উল্লেখ করাে।
**উত্তরঃ** আলি ইবন আববস নামে এক ব্যক্তি একদিন বিকেলে খলিফার সঙ্গে আলাপে মগ্ন ছিলেন। সেই সময় বন্দী অবস্থায় এক ব্যক্তিকে তার কাছে আনা হলে তিনি আববসকে নির্দেশ দিলেন বন্দীকে তার বাড়িতে রুদ্ধ করে রাখতে এবং পরদিন খলিফার নিকট উপস্থিত করতে। আব্বস খলিফার নির্দেশ যথাযথভাবে পালন করেন। বন্দীর পরিচয় জিজ্ঞাসা করায় তিনি জানতে পারেন ডেমাস্কসে বন্দীর বাসস্থান। আব্বসের মনে পড়ে যায় ডেমাস্কসের পদচ্যুত শাসনকর্তার আক্রমণে তিনি প্রাণরক্ষার আবেদন জানিয়ে এক সম্ভ্রান্ত ব্যক্তির বাড়িতে উপস্থিত হলে গৃহস্বামী তাকে শুধুমাত্র আশ্রয় প্রদান করেননি বিপদের মেঘ না-কাটা পর্যন্ত নির্ভয়ে ও নিরাপদে প্রায় মাসখানেক তাঁকে রেখেছিলেন। একদিন সুযােগ বুঝে বাগদাদে যাবার যাত্রীদের সঙ্গে তাকেও পাঠানাের ব্যবস্থা করেন। সঙ্গে সুসজ্জিত অশ্ব, খাদ্যসামগ্রী ও ভৃত্য ছিল। সেজন্য আকসের সবচেয়ে প্রিয়স্থান ছিল ডেমাস্কস। আরও প্রিয় ছিল ডেমাস্কসের সেই মহান আশ্রয়দাতা। আলি আব্বসের ডেমাস্কসের মহান আশ্রয়দাতার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকার এইটিই যথার্থ কারণ।
৬। লেখক পরিচিতি
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮২০–১৮৯১) বাংলা গদ্যের জনক ও নবজাগরণের পথিকৃৎ। তাঁর জন্ম পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর জেলার বীরসিংহ গ্রামে। তিনি ছিলেন শিক্ষাবিদ, সমাজসংস্কারক, লেখক ও মানবতাবাদী চিন্তাবিদ।
তিনি সংস্কৃত কলেজে অধ্যয়ন করেন এবং অল্প বয়সেই ‘বিদ্যাসাগর’ উপাধি লাভ করেন। বাংলা শিক্ষার উন্নতি, নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা ও বিধবা বিবাহ প্রচলনে তাঁর ভূমিকা অনন্য।
তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলি হলো—
বর্ণপরিচয় (অংশ ১ ও ২)
বেতাল পঞ্চবিংশতি
উপন্যাস: শকুন্তলা, সীতার বনবাস, ব্রজবিলাস প্রভৃতি।
তিনি বাংলা গদ্যে সরলতা ও যুক্তিবোধ প্রতিষ্ঠা করেন। মানবিকতা, ন্যায়পরায়ণতা ও করুণাবোধ তাঁর লেখার প্রধান বৈশিষ্ট্য। ১৮৯১ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতায় তাঁর মৃত্যু হয়।


৭। ব্যাকরণ অংশ
(ক) শব্দার্থ —
বিরাগভাজন — রাগের পাত্র
নিবাস — বাসস্থান
সদাশয় — দয়ালু
আশ্রয়দাতা — যিনি বিপদে আশ্রয় দেন
বন্দী — কারাবদ্ধ ব্যক্তি
অভিরুচি — ইচ্ছা
প্রত্যুপকার — উপকারের প্রতিদান
খলিফা — মুসলমান শাসক
দুঃখকর — কষ্টদায়ক
মর্মান্তিক — হৃদয়বিদারক

(খ) সমার্থক শব্দ —
ডেমাস্কস — দামেস্ক
খলিফা — সম্রাট
প্রাণ — জীবন
দুঃখ — শোক
ভৃত্য — দাস
আশ্রয় — অবলম্বন
রোষ — ক্রোধ
কৃপা — অনুগ্রহ
সত্য — বাস্তব
শৃঙ্খল — বেড়ি

(গ) বিপরীতার্থক শব্দ —
সত্য — মিথ্যা
দয়া — নিষ্ঠুরতা
প্রিয় — অপ্রিয়
স্বাধীন — পরাধীন
বন্ধন — মুক্তি
সুখ — দুঃখ
দিন — রাত্রি
আশ্রয় — পরিত্যাগ
উপকার — অপকার
অভিরুচি — অনিচ্ছা

(ঘ) এক কথায় প্রকাশ —
যে উপকারের প্রতিদান দেয় — কৃতজ্ঞ
যে উপকারের প্রতিদান দেয় না — অকৃতজ্ঞ
বন্দী রাখার স্থান — কারাগার
যে প্রাণের ভয়ে থাকে — ভীতু
যে অন্যের দুঃখে দুঃখ পায় — সহানুভূতিশীল

(ঙ) ক্রিয়ার প্রকার —
তিনি ঘাতককে ডাকাইয়া প্রস্তুত হইতে আদেশ দিলেন। — কর্মবাচ্য
খলিফা বন্দীকে মুক্ত করলেন। — কর্তৃবাচ্য
বন্দীকে মুক্ত করা হয়েছে। — কর্মবাচ্য
আলি ইবন আব্বাস কৃতজ্ঞ ছিলেন। — নির্ব্যক্ত ক্রিয়া
বন্দী প্রার্থনা করিল। — কর্তৃবাচ্য

(চ) বাক্যরূপ পরিবর্তন —
আব্বাস বন্দীকে মুক্ত করলেন। — বন্দীকে আব্বাসের দ্বারা মুক্ত করা হলো।
খলিফা আদেশ দিলেন। — আদেশ খলিফার দ্বারা দেওয়া হলো।
তিনি স্বর্ণমুদ্রা দিলেন। — স্বর্ণমুদ্রা তাঁর দ্বারা দেওয়া হলো।
বন্দী আব্বাসকে ধন্যবাদ জানাল। — আব্বাস বন্দীর দ্বারা ধন্যবাদ পেলেন।
খলিফা পুরস্কার দিলেন। — পুরস্কার খলিফার দ্বারা দেওয়া হলো।

(ছ) বিশেষণ পদ নির্ণয় —
সদাশয় — দয়ালু
উন্নতচিত্ত — মহান মনের
প্রিয় — ভালোবাসার যোগ্য
ভীত — আতঙ্কগ্রস্ত
মহামতি — জ্ঞানী

(জ) বাক্য রচনা —
কৃতজ্ঞতা — কৃতজ্ঞতা মানুষের মহত্ত্বের পরিচায়ক।
বন্দী — বন্দীটি খলিফার সামনে আনা হলো।
আশ্রয় — বিপদে আমি বন্ধুর আশ্রয় পেয়েছিলাম।
দয়া — গরিবের প্রতি দয়া করা উচিত।
প্রাণ — সে প্রাণ দিয়ে সত্য রক্ষা করেছে।


Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *