ভারত এবং উত্তরপূর্বাঞ্চলের ঐতিহ্য, ইতিহাস Chapter -5, Class -10, SEBA, Part -1

ভারত এবং উত্তরপূর্বাঞ্চলের ঐতিহ্য, Part -1

ভারত এবং উত্তরপূর্বাঞ্চলের ঐতিহ্য, Part -1

প্রশ্নগুলির সমাধান বাংলাতেই নিচে দেওয়া হলো:
অনুশীলনীর সমাধান
অতি সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও (Very Short Answer Questions)
১। সিন্ধু সভ্যতার পূর্ব সীমা গাঙ্গেয় উপত্যকার কোন স্থান অবধি বিস্তৃত ছিল?
উত্তর: গাঙ্গেয় উপত্যকার মিরাট পর্যন্ত।
২। সিন্ধু সভ্যতায় নাগরিক সংস্কৃতির বিকাশ কখন হয়েছিল?
উত্তর: খ্রিস্টপূর্ব ৪র্থ সহস্রাব্দে।
৩। ঋকবেদের আনুমানিক রচনা কাল কত?
উত্তর: খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০ সাল থেকে খ্রিস্টপূর্ব ১০০০ সাল পর্যন্ত কালপর্বকে ঋকবৈদিক যুগ বলা হয়।
৪। ভারতের রাষ্ট্রীয় প্রতীকের ‘সত্যমেব জয়তে’ এই বাক্যটি মূলত কোন গ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে?
উত্তর: মুণ্ডক উপনিষদ।
৫। প্রাচীন ভারতে রচিত রাজনীতি বিজ্ঞান বিষয়ক বিখ্যাত গ্রন্থটির নাম কী?
উত্তর: কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র।
৬। ‘বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য’ (Unity in Diversity) এই বাক্যাংশ কোন গ্রন্থের মাধ্যমে স্থায়িত্ব লাভ করেছে?
উত্তর: জহরলাল নেহেরুর ‘Discovery of India’ (ভারত সম্ভেদ)।
৭। ভারতের ভাস্কর্য শিল্পকলার কোন শৈলীতে গ্রিক-রোমান কলা-কৌশলের প্রয়োগ হয়েছিল?
উত্তর: গান্ধার শিল্পকলা।
৮। ভরত মুনির নাট্যশাস্ত্র কখন রচিত হয়েছিল?
উত্তর: খ্রিস্টপূর্ব ২০০ (দ্বিতীয় শতক) থেকে খ্রিস্টিয় ২০০ অব্দের মধ্যে।
৯। ভরতের নাট্যশাস্ত্রে কতটি শ্লোক আছে?
উত্তর: ৬০০০ শ্লোক।
১০। হেরাকা আন্দোলন কী?
উত্তর: হেরাকা আন্দোলন হলো স্বাধীনতা সংগ্রামী রানি গাইডালু কর্তৃক নাগাল্যান্ডের পরম্পরাগত ধর্মবিশ্বাস তথা সংস্কৃতি সংরক্ষণ ও পুনরায় প্রবর্তন করার উদ্দেশ্যে গড়ে তোলা একটি আন্দোলন।
১১। নাগাল্যান্ডের ‘হর্নবিল’ উৎসব কোন প্রাণীর নামে উৎসর্গিত?
উত্তর: ধনেশ পাখি (Hornbil)।
১২। ‘চপচর কূট’ কোন রাজ্যের পরম্পরাগত উৎসব?
উত্তর: মিজোরামের পরম্পরাগত উৎসব।
১৩। মিজো শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: পাহাড়ের বাসিন্দা।
১৪। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কোন রাজ্যে মাতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা প্রচলিত?
উত্তর: মেঘালয়।
১৫। মণিপুরি নৃত্যের মূল বিষয়বস্তু কী?
উত্তর: চৈতন্য মহাপ্রভুর শৈশব কৃষ্ণলীলা ইত্যাদির আধারে এই নৃত্য গড়ে উঠেছে।
১৬। অসমের প্রাচীন নাম কী?
উত্তর: প্রাগজ্যোতিষ এবং কামরূপ।
১৭। কোন বড়োমূলীয় শব্দ থেকে অসম নামটির উৎপত্তি হয়েছিল বলে অনুমান করা হয়?
উত্তর: আহোমদের পূর্বজ বাসিন্দা বোড়োরা তাদের অঞ্চলটিকে ‘আ-চা-ম’ বা ‘হা-চোম’ নামে নামাঙ্কন করত, এই শব্দটির সংস্কৃতকরণের মাধ্যমে অসম নামের উৎপত্তি হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
১৮। চর্যাপদ মানে কী?
উত্তর: খ্রিস্টীয় দশম শতাব্দী থেকে চতুর্দশ শতাব্দী পর্যন্ত কাল জুড়ে অসমের লিখিত সাহিত্য বলতে গেলে কেবল সহজযান-পন্থী গীতের কথাই বলতে হয়, এগুলিকেই চর্যাপদ বলা হয়।
১৯। চর্যাপদ কখন রচিত হয়েছিল?
উত্তর: খ্রিস্টীয় দশম শতাব্দী থেকে চতুর্দশ শতাব্দী (১০০০-১৪০০ খ্রি.) পর্যন্ত কাল জুড়ে।
২০। মাধব কন্দলি কার পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করে সপ্তকাণ্ড রামায়ণ অনুবাদ করেছিলেন?
উত্তর: বরাহি রাজা মহামাণিক্যের।
২১। অসমের গদ্য সাহিত্যের সূচনা কে করেছিলেন?
উত্তর: ভট্টদেব।
২২। জিকির ও জারি কে রচনা করেছিলেন?
উত্তর: সুফি সাধক আজান পীর (শাহ মিলন)।
২৩। আজান পীর কে?
উত্তর: শাহ মিলন, যিনি স্বর্গদেব (মহারাজ) গদাধর সিংহের আমলে অসমে আগমন করেছিলেন এবং সুফি সাধক হিসেবে খ্যাতিলাভ করেছেন।
২৪। আজান পীর কখন অসমে এসেছিলেন?
উত্তর: স্বর্গদেব (মহারাজ) গদাধর সিংহের আমলে।
২৫। দ-পর্বতীয়ার শিলার তোরণ কখন নির্মিত হয়েছিল?
উত্তর: গুপ্ত যুগের প্রভাবে খ্রিস্টীয় ষষ্ঠ শতকে (৫০১-৬০০ খ্রি.)।
২৬। চাংরুং ফুকন কোন দায়িত্বে ন্যস্ত ছিলেন?
উত্তর: আহোম শাসন ব্যবস্থায় মঠ-মন্দির, রাস্তা-ঘাট, প্রাসাদ, ঘর-দুয়ার ইত্যাদির নির্মাণ কার্য, মাপ-জোখ ইত্যাদি দেখাশোনা করার জন্য চাংরুং ফুকন নামে একজন কর্মকর্তা ছিলেন।
২৭। লোকসংগীতে অবদানের জন্য অসমের কোন শিল্পীকে পদ্মশ্রী সম্মান প্রদান করা হয়েছিল?
উত্তর: পদ্মশ্রী প্রতিমা পাণ্ডে বরুয়া।
২৮। অসমের প্রথম সংবাদপত্রটির নাম কী?
উত্তর: ‘অরুণোদয়’।
২৯। অস্ট্রিক নৃগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জনজাতিটির নাম কী?
উত্তর: মেঘালয়ের খাসিয়ারা।
৩০। রচয়িতাদের নাম লেখো
(ক) অর্থশাস্ত্র: কৌটিল্য।
(খ) হস্তিবিদ্যার্ণব: সুকুমার বরকাইত।
(গ) কীর্তন: শংকরদেব।
(ঘ) নামঘোষা: মাধবদেব।
(ঙ) চোরধরা পিম্পরা গুচোয়া: মাধবদেব (ঝুমুরা)।
(চ) কালীয়দমন: শংকরদেব (অঙ্কীয়া নাট)।
(ছ) রামবিজয়: শংকরদেব (অঙ্কীয়া নাট)।
(জ) কথাগীতা: ভট্টদেব।
(ঞ) ভারত সম্ভেদ: জহরলাল নেহরু (Discovery of India)।
(ঝ) রাজতরঙ্গিণী: কহ্ণণ।
সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও (Short Answer Questions)
১। খ্রিস্টীয় ষষ্ঠ শতকের পর ভারতে এসেছে এমন দুটি বিদেশী জাতির নাম লেখো।
উত্তর: খ্রিস্টপূর্ব ৬০০ অব্দে পারসি আক্রমণের পর গ্রিক, শক, হুন, তুর্কি-আফগান, মোগল, পর্তুগিজ, ওলন্দাজ, ফরাসি, ব্রিটিশ প্রভৃতি লোকেদের আগমন ঘটেছিল। যেকোনো দুটি হলো:
* তুর্কি-আফগান।
* মোগল।
২। সিন্ধু উপত্যকায় আবিষ্কৃত এবং ধর্মীয় উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত দুটি মূর্তির নাম লেখো।
উত্তর: সিন্ধু সভ্যতার নানা স্থানে আবিষ্কৃত ধর্মীয় উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত বলে অনুমান করা হয় এমন দুটি মূর্তি হলো:
* পশুপতি সদৃশ মূর্তি।
* মাতৃদেবীর মূর্তি।
* এছাড়াও, শিবলিঙ্গ আকৃতির পোড়া মাটির সামগ্রী এবং স্বস্তিকা ছাপ মোহর পাওয়া গেছে।
৩। অস্ট্রিকরা ভারতীয় সংস্কৃতি জগতে যে-অবদান রেখেছে তার মধ্যে থেকে যে-কোনো দুটি অবদানের উল্লেখ করো।
উত্তর: অস্ট্রিকগোষ্ঠীর লোকেরা ভারতীয় সভ্যতা সংস্কৃতির ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত দুটি অবদান জুগিয়েছিল:
* ধান চাষ এবং ইক্ষু থেকে গুড় তৈরি করার কৌশল উদ্ভাবন করেছিল।
* কাপাস থেকে সুতো তৈরি করে কাপড়-বোনা উদ্ভাবন করেছিল।
* এছাড়াও, ধর্মীয় পরম্পরায় সিঁদূরের ব্যবহার, হলুদের ব্যবহার, হাতিকে পোষ মানানোর রীতির উদ্ভাবনও অস্ট্রিকরাই করেছিল।
৪। ভারতীয় সংস্কৃতি জগতের বর্ণাঢ্যতায় ভৌগোলিক পরিবেশের ভূমিকা বর্ণনা করো?
উত্তর: বর্ণাঢ্য ভারতীয় সংস্কৃতির উৎপত্তি তথা সংরক্ষণ করার ক্ষেত্রে দেশটির বিশালতা এবং বিভিন্ন ভৌগোলিক পরিস্থিতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। যেমন:
* উর্বর ভূমি ও সুব্যবস্থা: কৃষি উপযোগী উর্বর ভূমি, যাতায়াত এবং যোগাযোগের জন্য সুব্যবস্থা এবং প্রাকৃতিক সম্পদের গুণগত মানের জন্য কোনো কোনো অঞ্চল আর্থিকভাবে স্বচ্ছল তথা অগ্রসর হয়েছে, ফলে অন্য সংস্কৃতির সঙ্গে নিয়ত সংসর্গ সম্ভবপর হয়েছে।
* বিচ্ছিন্নতা: আবার অন্য কোনো অঞ্চল হয়তো এই সুবিধাগুলোর অভাবে বিচ্ছিন্ন, কষ্টসাধ্য জীবনযাপনকে মেনে নিতে বাধ্য হয়েছে, যার ফলে তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি স্বতন্ত্রভাবে সংরক্ষিত হয়েছে। এইভাবেই ভৌগোলিক বৈচিত্র্য সাংস্কৃতিক বৈচিত্র সৃষ্টিতে প্রেরণা জুগিয়েছে।
৫। বেদের চারটি সংহিতার নাম লেখো।
উত্তর: বেদের চারটি সংহিতা হলো:
* ঋকবেদ।
* যজুঃ (যজুর্বেদ)।
* সাম (সামবেদ)।
* অথর্ব (অথর্ববেদ)।
৬। সম্রাট অশোকের দ্বাদশ মুখ্য শিলালিপিতে ধর্মীয় উদারতা বিষয়ে কী কথা লেখা আছে?
উত্তর: সম্রাট অশোকের গিরনার শিলালিপির ১২ নং শিলালেখে বলা হয়েছে যে, কেউই একমাত্র নিজের ধর্মকে প্রশংসা এবং অপরের ধর্মকে হীন বলে চিহ্নিত করা উচিত নয়। বরং সকল ধর্মের সার গ্রহণ করে সমন্বয়ের পথ অবলম্বন করা উচিত।
৭। সাংস্কৃতিক বহুত্ববাদ মানে কী?
উত্তর: সাংস্কৃতিক বহুত্ববাদ (Multiculturalism) হলো কোনো একটি সমাজের সাংস্কৃতিক বিভিন্নতা এবং তার প্রতি যে শ্রদ্ধার ভাব রয়েছে তাকেই বোঝায়। ভারতে বিভিন্ন অঞ্চলের জাতি-উপজাতি তাদের ভিন্ন ভিন্ন স্বকীয় কৃষ্টি সংস্কৃতির সংরক্ষণ করে এবং একই সঙ্গে অপরের কৃষ্টি সংস্কৃতির সঙ্গে সহমর্মিতা ও সম্মানের ভাব পোষণ করে, যা এই বহুত্ববাদের উদাহরণ।
৮। ভারতের প্রাচীন যুগের দুজন বিজ্ঞানীর নাম লেখো।
উত্তর: প্রাচীন ভারতের দুজন বিজ্ঞানী হলেন:
* আর্যভট্ট।
* বরাহমিহির।
* এছাড়া মহর্ষি ভরদ্বাজ, ব্রহ্মগুপ্ত, প্রথম ও দ্বিতীয় ভাস্করাচার্য-ও ছিলেন।
৯। প্রাচীন ভারতের দুটি চিকিৎসা-শাস্ত্রের নাম লেখো।
উত্তর: প্রাচীন ভারতের দুটি চিকিৎসা-শাস্ত্র হলো:
* চরক সংহিতা।
* সুশ্রুত সংহিতা।
১০। ভারতীয় চিত্রকলাকে কী কী ভাগে ভাগ করা যায়?
উত্তর: প্রাচীন ভারতের চিত্রকলার ঐতিহ্যকে দুটি প্রধান ভাগে ভাগ করা যায়:
* বৃহদাকার দেয়ালচিত্র।
* ক্ষুদ্রাকার চিত্র।
১১। চিত্রকলার পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন এমন দুজন মোগল বাদশাহের নাম লেখো।
উত্তর: মোগল যুগে ক্ষুদ্রাকার চিত্রশিল্পের বহুল চর্চা হয়েছিল যে সম্রাটদের পৃষ্ঠপোষকতায়, তাদের মধ্যে দুজন হলেন:
* আকবর।
* জাহাঙ্গির।
* এছাড়াও শাহজাহানও পৃষ্ঠপোষকতা করেছিলেন।
১২। ক্ষুদ্রাকার চিত্রযুক্ত অসমের দুখানি সাঁচিপাতার পুথির নাম লেখো।
উত্তর: অসমে সত্রীয়া সৃষ্টিতে ক্ষুদ্রাকৃতির পুথিচিত্রের অনুরূপ যে পরম্পরা ছিল, তার দুটি উদাহরণ:
* হস্তীবিদ্যার্ণব।
* চিত্র ভাগবত।
* এছাড়াও আনন্দলহরী, গীতগোবিন্দ, কুমার হরণ, শঙ্খচূড় বধ, লব-কুশের যুদ্ধ ইত্যাদি সচিত্র পুথি ছিল।
১৩। হস্তিবিদ্যার্ণব গ্রন্থটির দুজন চিত্রকরের নাম লেখো।
উত্তর: হস্তীবিদ্যার্ণব পুথিতে যে দুই চিত্রকর চিত্রসমূহ অঙ্কন করেছিলেন, তারা হলেন:
* দিলওয়ার।
* দোসাই।
১৪। জুম চাষ বলতে কী বোঝ?
উত্তর: জুম চাষ হলো এক প্রকার কৃষি পদ্ধতি যা পাহাড়ি অঞ্চলের কষ্টসাধ্য জীবিকা ও জীবনযাত্রার সঙ্গে জড়িত। মেঘালয়সহ অন্যান্য পাহাড়ি রাজ্যবাসীর একাংশ এই চাষে নিয়োজিত। এটি মূলত একটি স্থানান্তরযোগ্য চাষ যেখানে একটি নির্দিষ্ট জমিতে অল্প সময়ের জন্য চাষ করার পর সেই জমিকে কিছু বছরের জন্য ফেলে রাখা হয় এবং নতুন জমিতে চাষ করা হয়।
১৫। জেং বিহু মানে কী?
উত্তর: জেং বিহু হলো উজান অসমের মহিলারা নির্জন স্থানে, পুরুষ লোকে না-দেখার মতো করে, নিজেদের মধ্যে যে বিহু উৎসব আয়োজন করে, তাকে বলে।
১৬। ওজাপালির দুটি ভাগের নাম লেখো।
উত্তর: ওজাপালির দুটি ভাগ হলো:
* ব্যাসর ওজা।
* সুকনান্নি ওজা।
১৭। প্রাচীন ভারতবর্ষের দুজন দার্শনিকের নাম লেখো।
উত্তর: প্রাচীন ভারতবর্ষের দুজন দার্শনিক হলেন:
* কপিল।
* পতঞ্জলি।
* এছাড়াও গৌতম, বাৎসায়ন, কণাদ, জৈমিনি, রামানুজ, মধ্বাচার্য-ও ছিলেন।
১৮। আহোম রাজত্ব কালে রচিত দুখানি বুরঞ্জির নাম লেখো।
উত্তর: আহোম রাজত্ব কালে রচিত ‘বুরঞ্জি’ সাহিত্য অসমের সাহিত্য ভাণ্ডারে এক গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন। দুটি বুরঞ্জি হলো:
* দেওধাই বুরঞ্জি।
* তুংখুঙিয়া বুরঞ্জি।
* এছাড়াও কছারি বুরঞ্জি, জয়ন্তীয়া বুরঞ্জি, ত্রিপুরা বুরঞ্জি, পদ্য বুরঞ্জি, পাদশাহ বুরঞ্জি ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
১৯। বিহুর সমধর্মী নিম্ন অসমে উদ্যাপিত দুটি স্থানীয় উৎসবের উল্লেখ করো।
উত্তর: বহাগ বিহুর (বৈশাখ/বোশেখ) সমধর্মী হিসেবে উদযাপিত নিম্ন অসমে প্রচলিত দুটি উৎসব:
* দরং জেলার দেউল।
* পুরনো কামরূপের ভথেলি।
* এছাড়াও স’রি বা সুয়েরি (হুয়েরি), দহর ফুরোয়া, বার গোপাল উলিওয়া (যাত্রা করা) এবং পুরনো গোয়ালপাড়া জিলার বাঁশপূজা উল্লেখযোগ্য।
২০। দরঙের দুরকম লোকনৃত্যের নাম লেখো।
উত্তর: দরং জিলায় প্রচলিত দুরকম লোকনৃত্য হলো:
* ঢেপাটুলিয়া।
* বরঢুলিয়া।
* দেওধনি নৃত্যও দরং জিলায় প্রচলিত।
২১। ভারতের প্রধান নৃগোষ্ঠীগুলি কী কী?
উত্তর: জনপ্রিয় এক তত্ত্ব অনুসারে, ভারতে প্রবেশকারী প্রধান নৃগোষ্ঠীগুলি হলো:
* নিগ্রো গোষ্ঠী (প্রত্নপ্রস্তর যুগের সংস্কৃতি নিয়ে)।
* প্রোটো-অস্ট্রলয়ড অথবা অস্ট্রিকরা (নব্য প্রস্তর যুগের সংস্কৃতি নিয়ে)।
* দ্রাবিড়গণ (অথবা মেডিটেরেনিয়ান)।
* নর্ডিক-গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত আর্যভাষী লোকেদের একটি দল (বৈদিক সংস্কৃতির নির্মাতা)।
* মঙ্গোলীয় গোষ্ঠী।
* মধ্য এশিয়া থেকে পশ্চিমের প্রশস্ত মস্তিষ্ক (ওয়েস্টার্ন ব্রেসিসেফালিক) গোষ্ঠী।
২২। ভারতীয় সংস্কৃতিতে অনৈক্যের মধ্যে ঐক্য সাধনে কোন তিনটি কারকের ভূমিকা আছে উল্লেখ করো।
উত্তর: ভারতীয় সংস্কৃতিতে বিভেদের মধ্যে ঐক্য (Unity in Diversity) এই আত্মীয়তা সৃষ্টির ক্ষেত্রে বিভিন্ন কারকের ভূমিকা আছে। তিনটি কারক হলো:
* হিন্দুধর্মের স্বকীয় বহুত্ববাদী আদর্শ তথা উদারতা।
* বিভিন্ন সময়ে গড়ে ওঠা সাম্রাজ্যগুলোর একতার ইতিহাস।
* বিভিন্ন যুগের শাসকদের ধর্মীয় তথা সাংস্কৃতিক উদারতা।
* এছাড়াও রামায়ণ এবং মহাভারত গ্রন্থ দুটি বৃহত্তর সাংস্কৃতিক পরিবার সৃষ্টিতে সাহায্য করেছে।
২৩। প্রাচীন ভারতের স্থাপত্য নিদর্শনগুলিকে প্রধানত কী কী ভাগে ভাগ করা হয়েছে?
উত্তর: প্রাচীন কালে শিলানির্মিত মঠ-মন্দিরগুলোর নির্মাণ শৈলীকে মূলত তিন ভাগে বিভক্ত করা যায়:
* ভারতীয় নাগর শৈলী।
* দক্ষিণ ভারতীয় দ্রাবিড় শৈলী।
* ওয়েসর শৈলী (বিন্ধ্য ও কৃষ্ণানদীর মধ্যবর্তী অঞ্চলে উপলব্ধ)।
২৪। UNESCO র দ্বারা বিশ্ব ঐতিহ্য ক্ষেত্র হিসাবে তালিকাভুক্ত ভারতের তিনটি স্থাপত্যের উল্লেখ করো।
উত্তর: রাষ্ট্রসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান এবং সাংস্কৃতিক সংস্থা (UNESCO) কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্য-ক্ষেত্র হিসেবে তালিকাভুক্ত তিনটি স্থাপত্য:
* সাঁচির স্তূপ।
* অজন্তার গুহাসমূহ।
* তাজমহল।
২৫। ভারতের ভাস্কর্য শিল্পের ক্ষেত্রে কী কী মূর্তি নির্মাণ করতে দেখা যায়?
উত্তর: ভারতের ভাস্কর্যসমূহে নিম্নলিখিত মূর্তিগুলি পরিলক্ষিত হয়:
* গৌতম বুদ্ধ, মহাবীর, হিন্দু দেব-দেবী।
* যক্ষ-যক্ষিণী, অপ্সরা।
* হিন্দু তথা বৌদ্ধধর্মের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন জীবজন্তুর মূর্তি।
২৬। ভারতের ভাস্কর্য শিল্পকলার তিনটি প্রধান শৈলী কী কী?
উত্তর: শৈলীগত পার্থক্য ও বৈশিষ্ট্যের আধারে গড়ে ওঠা ভাস্কর্য শিল্পকলাকে তিনটি প্রধান ভাগে ভাগ করা যায়:
* গান্ধার শিল্পকলা।
* মথুরা শিল্পকলা।
* অমরাবতী শিল্পকলা।
২৭। দেয়াল চিত্রের নিদর্শন মেলে ভারতের এমন তিনটি স্থানের নাম উল্লেখ করো।
উত্তর: বৌদ্ধ, জৈন, হিন্দু ধর্মের বিষয়বস্তুকে অবলম্বন করে দেয়াল চিত্র অঙ্কিত হয়েছে এমন তিনটি স্থান:
* অজন্তা (মহারাষ্ট্র)।
* বাঘ (মধ্য প্রদেশ)।
* চিত্তনায়াচল (তামিলনাডু)।
* এছাড়াও আরমামলাই (তামিলনাডু) উল্লেখযোগ্য।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *