সাপ এবং ব্যাং রাজা
নিচে “সাপ এবং ব্যাং রাজা” গল্পটির ভিত্তিতে সমস্ত প্রশ্ন ও উত্তরগুলি উপস্থাপন করা হলো—
—
পাঠভিত্তিক প্রশ্নাবলী ও উত্তর
প্রশ্ন ৪ (ক)
– বিষধর সাপটিকে ব্যাং রাজা কোথায় নিয়ে এসেছিল?
উত্তর: ব্যাং রাজা বিষধর সাপটিকে পাথরের পাহাড় থেকে তাদের রাজ্য পুকুরে নিয়ে এসেছিল।
প্রশ্ন ৪ (খ)
– বিষধর সাপটি ব্যাং রাজাকে কী শর্তের কথা বলেছিল?
উত্তর: বিষধর সাপটি ব্যাং রাজাকে শর্ত দিয়েছিল যে, ব্যাং রাজার সমস্যার সমাধান করে দেওয়ার বিনিময়ে রোজ একটি করে ব্যাং তাকে খেতে দিতে হবে।
—
প্রশ্ন ৫ (ক)
– রাজা এবং প্রজাদের মধ্যে কেন মতান্তর হয়েছিল?
উত্তর: ব্যাং রাজা তার রাজ্যে কিছু নিয়ম-কানুন চালু করেছিল, যার মধ্যে একটি ছিল—বিহু এলে রাজাই প্রথম গান গাইবে ও নাচবে এবং বাকি সবাই তার সাথে নাচবে। কয়েক দিন পর বসন্ত ঋতু আসায় ব্যাংগুলি রাজার আইন ভুলে গিয়ে আনন্দে গান গেয়ে নাচতে শুরু করে। এতে ব্যাং রাজা রেগে গিয়ে সভা ডাকে, কিন্তু মাতব্বররা রাজাকে বোঝানোর চেষ্টা করে। রাজা তাদের যুক্তি না মানায় রাজা ও প্রজাদের মধ্যে মতান্তর হয়।
প্রশ্ন ৫ (খ)
– ব্যাং রাজা ভবিষ্যতের জন্য কিছু নীতি-নিয়ম প্রণয়নের কথা কেন ভেবেছিল?
উত্তর: একদিন ব্যাং রাজা রোদ পোহাতে পোহাতে ভাবছিল যে সে মারা গেলে তার সন্তান রাজা হবে। তাই ভবিষ্যতের জন্য রাজ্যের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কিছু নীতি-নিয়ম প্রণয়ন করার কথা সে ভেবেছিল।
প্রশ্ন ৫ (গ)
– ব্যাং রাজা কেন সংকটে পড়েছিল?
উত্তর: প্রজাদের উপর প্রতিশোধ নিতে ব্যাং রাজা বিষধর সাপকে পুকুরে ডেকে এনেছিল। সাপটি রোজ একটি করে ব্যাং খাওয়ার শর্ত দিয়েছিল। কিছুদিনে সব ব্যাং নিঃশেষ হয়ে গেলে ক্ষুধায় সাপ ব্যাং রাজাকেই খেতে চাইলে রাজা চরম সংকটে পড়ে যায়।
—
কে, কাকে, কেন বলেছিল
প্রশ্ন ৬ (ক)
– “বিহু এলে আমিই প্রথম গান গাইব ও নাচব।”
উত্তর:
– কে বলেছিল: ব্যাং রাজা
– কাকে বলেছিল: প্রজাদের (ব্যাংদের)
– কেন বলেছিল: রাজ্য পরিচালনার জন্য নিয়ম প্রণয়ন করতে গিয়ে সভায় এই নিয়মটি ঘোষণা করেছিল।
প্রশ্ন ৬ (খ)
– “এসব ঋতুর বা উৎসবের গান। যারা গাইছে গাইতে থাকুক। আমরাও কি উৎসবের আনন্দ অনুভব করছি না।”
উত্তর:
– কে বলেছিল: মাতব্বররা
– কাকে বলেছিল: ব্যাং রাজাকে
– কেন বলেছিল: প্রজারা আনন্দে গান গাইতে শুরু করলে রাজা রেগে গেলে, মাতব্বররা তাকে বোঝাতে এই কথা বলেছিল।
প্রশ্ন ৬ (গ)
– “আমার মতো শক্তিশালী কাউকেই তুই পাবি না।”
উত্তর:
– কে বলেছিল: বিষধর সাপ
– কাকে বলেছিল: ব্যাং রাজাকে
– কেন বলেছিল: নিজেকে শক্তিশালী প্রমাণ করে ব্যাং রাজাকে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিতে এই কথা বলেছিল।
প্রশ্ন ৬ (ঘ)
– “এসব জানি না। তুমিই তো আমাকে এখানে ডেকে এনেছিলে।”
উত্তর:
– কে বলেছিল: বিষধর সাপ
– কাকে বলেছিল: ব্যাং রাজাকে
– কেন বলেছিল: সব ব্যাং খেয়ে ফেলার পর খাবার না পেয়ে ব্যাং রাজাকে হুমকি দেওয়ার সময় এই কথা বলেছিল।
—
ব্যাকরণ ও অন্যান্য প্রশ্ন
প্রশ্ন ৭
– “অগ্র-পশ্চাৎ বিবেচনা না করে কাজ করলে নিজেরই বিপদ হয়।” – শিক্ষকের সাহায্যে বাক্যটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: এই বাক্যের অর্থ হলো, কাজ করার আগে তার ফলাফল নিয়ে চিন্তা না করলে তা নিজের জন্যই বিপদ ডেকে আনতে পারে।
ব্যাং রাজা প্রজাদের উপর প্রতিশোধ নিতে ভেবে না দেখেই সাপকে ডেকেছিল, যার ফলে শেষে নিজের জীবনই বিপদের মুখে পড়ে। তাই কাজ করার আগে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ভালোভাবে বিবেচনা করা জরুরি।
—
প্রশ্ন ৯
– লোককথাটিতে যে সব সর্বনাম পদ রয়েছে সেগুলি লেখো–
উত্তর: আমি, আমার, আমরা, তারা, সে, তাকে, তুই, তোকে, এসব, যে, তাদের, তাঁরা ইত্যাদি।
—
প্রশ্ন ১১
– উপযুক্ত সংযোজক অব্যয় বসিয়ে খালি জায়গা পূর্ণ করো–
উত্তর:
(ক) আমি বই মেলায় যাব, আর লোককথার বই কিনব।
(খ) যদি বৃষ্টি হয় তবে এবার ফসল ভালো হবে।
(গ) সবার চাইতে ভালো পাঁউরুটি আর ঝোলাগুড়।
(ঘ) আমি খেলতে যাব নতুবা ঘরে বসে বই পড়ব।
—
প্রশ্ন ১২ (ক)
– ব্যাং কারে ভয় পায়।
– চিবিয়ে নয় গিলে খায়।
উত্তর: সাপ।
প্রশ্ন ১২ (খ)
– বাঘের মতো লাফায়, কুকুরের মতো বসে,
– টুক করে জলে ডোবে, তুলার মতো ভাসে।
উত্তর: ব্যাঙ।
—
প্রশ্ন ১২ (গ)
– লোককথাটিতে একটি তিন অক্ষরের শব্দ আছে, যে শব্দটির–
প্রথম ও দ্বিতীয় অক্ষর মিলে খাজনা বা রাজস্ব বোঝায়।
প্রথম ও তৃতীয় অক্ষর মিলে কী পরিমাণ বা কী সংখ্যক বোঝায়।
দ্বিতীয় ও তৃতীয় অক্ষর মিলে ব্যাপৃত বা নিযুক্ত থাকা বোঝায়।
তৃতীয় ও দ্বিতীয় অক্ষর মিলে দুই-এর মধ্যে তুলনা বোঝায়।
উত্তর: শব্দটি হলো “নিয়ম”।
—
প্রশ্ন ১৫
– “বিষধর সাপটি রোজ একটি করে ব্যাং খাওয়ার ফলে একসময় পুকুরের সব ব্যাং নিঃশেষ হয়ে গেল। একদিন ক্ষুধায় কাতর হয়ে সাপটি এসে তাকে খাবার জোগাড় করে দিতে বলল। নাহলে সে ব্যাং রাজাকে খেয়ে ফেলবে বলে জানাল। এ কথা শুনে ব্যাং রাজা সংকটে পড়ল এবং সাপের কবল থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় চিন্তা করতে লাগল।”
– ব্যাং রাজা সাপের কবল থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পেরেছিল বলে তোমাদের মনে হয়?
উত্তর: গল্পে ব্যাং রাজা রক্ষা পেয়েছিল কিনা স্পষ্টভাবে বলা হয়নি। লোককথার মূল নীতিশিক্ষা “অগ্র-পশ্চাৎ বিবেচনা না করে কাজ করলে নিজেরই বিপদ হয়”—এটি দেখায় যে রাজা নিজের ভুল সিদ্ধান্তের ফল ভুগেছিল।
তবে কল্পনাভিত্তিকভাবে বলা যায়—
– যদি রাজা রক্ষা না পেয়ে থাকে, তবে এটি তার অদূরদর্শিতার পরিণতি।
– আর যদি রক্ষা পেয়ে থাকে, তবে হয়তো বুদ্ধি খাটিয়ে সাপকে ফাঁদে ফেলে তাড়িয়ে দিয়েছিল।
