অ্যান ফ্রাঙ্কের ডায়েরি,Chapter – 3, Class – 8, SEBA, New Syllabus

অ্যান ফ্রাঙ্কের ডায়েরি

পাঠভিত্তিক প্রশ্নোত্তর

১। পাঠটি মনোযোগ সহকারে পড়ো এবং নীচের প্রশ্নগুলোর উত্তর বলো ও লেখো।

(ক) জন্মসূত্রে অ্যান ফ্রাঙ্ক কোন সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত ছিল?
উত্তর: জন্মসূত্রে অ্যান ফ্রাঙ্ক ইহুদি সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত ছিল।

(খ) অ্যান ফ্রাঙ্কের পিতা-মাতার নাম কী?
উত্তর: অ্যান ফ্রাঙ্কের পিতার নাম ওট্টো ফ্রাঙ্ক এবং মাতার নাম এডিথ ফ্রাঙ্ক।

(গ) নাজি বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা পেতে অ্যানের পিতা কোথা থেকে কোথায় গিয়েছিলেন?
উত্তর: নাজি বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা পেতে অ্যানের পিতা জার্মানির ফ্রাঙ্কফুবুট থেকে নেদারল্যান্ডের আমস্টারডামে গিয়েছিলেন।

(ঘ) তিনি কোথায় আত্মগোপন করেছিলেন? কেন?
উত্তর: ওট্টো ফ্রাঙ্কের পরিবার তাঁরই কার্যালয়ের ওপর তলার এক ছোট্ট গোপন কক্ষে আত্মগোপন করেছিলেন। জার্মান বাহিনীর বাধ্যতামূলক শ্রমদানের জন্য বড়ো মেয়েকে ডাকা এবং এতে সমূহ বিপদের সম্ভাবনা ও জীবন সংশয় দেখে তাঁরা আত্মগোপন করেছিলেন।

(ঙ) অ্যান ফ্রাঙ্ক কোন তারিখ থেকে কোন তারিখ পর্যন্ত ডায়েরি লিখেছিল?
উত্তর: অ্যান ফ্রাঙ্ক ১৯৪২ সালের ১২ জুনে তার তেরোতম জন্মদিনের দিন থেকে শুরু করে ১৯৪৪ সালের ১ আগস্ট পর্যন্ত ডায়েরি লিখেছিল।

(চ) অ্যান কেন ডায়েরি লিখতে শুরু করেছিল?
উত্তর: অ্যান ডায়েরি লিখতে শুরু করেছিল কারণ তার কোনো প্রকৃত বন্ধু ছিল না। তার হৃদয়ে পুঞ্জীভূত সব কথা উজাড় করে প্রকাশ করার জন্য লেখাটা তার কাছে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ছিল। সে ডায়েরিটিকে তার প্রকৃত বন্ধু হিসেবে গণ্য করতে চেয়েছিল।

(ছ) কেন অ্যান তার ডায়েরি সম্পাদনা করেছিল?
উত্তর: ১৯৪৪ সালের মার্চ মাসে নির্বাসিত নেদারল্যান্ড সরকারের এক সদস্যের রেডিয়ো সম্প্রচার শুনে অ্যান তার ডায়েরি সম্পাদনা করেছিল। উক্ত সম্প্রচারে ঘোষণা করা হয়েছিল যে যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর নেদারল্যান্ডবাসীদের যুদ্ধের সময়কার দুঃখ-কষ্টের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে এবং চিঠি-পত্র ও ডায়েরির কথা বিশেষভাবে উল্লিখিত ছিল। এই ঘোষণা শুনে অ্যান সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে যুদ্ধশেষে সে তার ডায়েরির ভিত্তিতে একটি গ্রন্থ প্রকাশ করবে, তাই সে তার পুরোনো লেখার কিছুটা পরিবর্তন এবং সম্পাদনা করে আবার নতুন করে লিখেছিল।

(জ) অ্যান নিজেকে নিঃসঙ্গ বলে কেন অনুভব করেছিল?
উত্তর: অ্যান নিজেকে নিঃসঙ্গ বলে অনুভব করেছিল কারণ তার অনেক পরিচিত বন্ধু-বান্ধব, পরিবার এবং একটি সুন্দর বাড়ি থাকা সত্ত্বেও তার একজনও প্রকৃত বন্ধু ছিল না। সে বন্ধুদের সঙ্গে গতানুগতিকভাবে কথা-বার্তা বলত, কিন্তু অন্তর উজাড় করে সব কথা আদান-প্রদান করতে পারত না এবং তাদের বেশি কাছাকাছি যেতে পারত না।

২। পাঠ থেকে কঠিন শব্দগুলো খুঁজে বের করে তোমার খাতায় লেখো এবং শব্দগুলোর অর্থ শব্দ-সম্ভার বা অভিধান থেকে দেখে শব্দের পাশে লিখে শেখো।

উত্তর: (শিক্ষার্থীদের নিজেদের করার জন্য)

দিনলিপি — ডায়েরি, রোজকার ঘটনা লেখা খাতা

উৎকর্ষ — উন্নতি, শ্রেষ্ঠত্ব

সার্থক — সফল, উপযুক্ত

প্রতিফলিত — প্রতিবিম্বিত, কোনো কিছুর চিত্র বা ছাপ দেখা যাওয়া

ঐতিহাসিক — ইতিহাস-সংক্রান্ত, অতীতের

উপলব্ধি — ভালোভাবে বোঝা, চেতনা

অনুপ্রেরণা — উৎসাহ, কোনো কাজ করার জন্য মনের আবেগ

মনন — চিন্তা, ধ্যান, বুদ্ধি

উন্মোচিত — প্রকাশিত, খোলা হয়েছে এমন

সংক্ষিপ্ত — ছোটো, কম সময়ের বা পরিসরের

বর্বর — নৃশংস, অসভ্য

নৃশংসভাবে — অত্যন্ত নিষ্ঠুরভাবে

নিষ্পেষণ — অত্যাচার, পীড়ন, দলন

দুর্বিসহ — সহ্য করা কঠিন এমন

বিপর্যয় — বিপদ, দুর্গতি

বিসংকল্প — দৃঢ় প্রতিজ্ঞা, মনস্থির

নিপুণভাবে — দক্ষতার সঙ্গে, খুব ভালোভাবে

অবরুদ্ধ — বাধাগ্রস্ত, আটক

আত্মগোপন — লুকিয়ে থাকা, নিজেদের গোপন করে রাখা

পরিত্যক্ত — ফেলে রাখা, বর্জন করা হয়েছে এমন

গ্রন্থাকারে — বই আকারে

তুমুল — প্রচণ্ড, ভীষণ

নির্বাসিত — দেশ থেকে বিতাড়িত

অধিগৃহীত — দখল করা হয়েছে এমন

উজাড় — সম্পূর্ণরূপে খালি করা বা ঢেলে দেওয়া

পুঞ্জীভূত — জমা হওয়া, স্তূপীকৃত

প্রবাদ — জনশ্রুতি, প্রচলিত কথা

আড়ম্বরে — জাঁকজমকের সঙ্গে

উৎসর্গ — কোনো উদ্দেশ্যে অর্পণ করা বা দেওয়া



৩। প্রসঙ্গের সঙ্গে সংগতি রেখে ব্যাখ্যা করো – “মানুষের চাইতে কাগজের ধৈর্য বেশি।”

Ans.অ্যান ফ্রাঙ্কের ডায়েরিতে উক্তিটি গভীর তাৎপর্য বহন করে। অ্যান বোঝাতে চেয়েছে, মানুষ সীমিত ধৈর্যের অধিকারী—সব কথা শোনার সময়, মনোযোগ বা সহানুভূতি তাদের থাকে না। কিন্তু কাগজ নীরব শ্রোতা; লেখকের সব দুঃখ, ভয়, আশা, কষ্ট ও ভাবনা কোনো অভিযোগ ছাড়াই ধারণ করে। অ্যানের জীবনে প্রকৃত বন্ধুর অভাব ছিল, তাই সে অনুভব করেছিল কাগজই একমাত্র সত্তা যে তার সব কথা নীরবে শুনে ও সংরক্ষণ করে। সেই কারণেই সে তার ডায়েরিকে কল্পিত বন্ধু ‘কিটি’ হিসেবে গ্রহণ করেছিল। এভাবেই কাগজ মানুষের চেয়ে অধিক ধৈর্যশীল ও সহানুভূতিশীল বলে অ্যানের মনে হয়েছিল।




৪। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পটভূমিকায় জার্মানের নাজি শাসনে অ্যান ফ্রাঙ্কের পরিবারের বিপর্যয় বর্ণনা করো।

Ans.অ্যান ফ্রাঙ্কের পরিবার ছিল জার্মান ইহুদি। হিটলারের নেতৃত্বে নাজি শাসন ইহুদিদের ওপর নির্মম নির্যাতন শুরু করলে তারা ১৯৩৩ সালে জার্মানি ছেড়ে নেদারল্যান্ডে আশ্রয় নেয়। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নেদারল্যান্ডেও নাজি দখলদারিত্ব শুরু হয়। ইহুদিদের স্কুল, স্বাধীনতা, এমনকি পরিচয়ের ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। ১৯৪২ সালে বাধ্যতামূলক শ্রমের ভয় থেকে তারা আত্মগোপন করে। দু’বছর পর ১৯৪৪ সালে ধরা পড়ে অ্যান ও তার পরিবারকে বন্দী শিবিরে পাঠানো হয়। সেখানে অমানবিক নির্যাতনে অ্যান ও তার দিদি ১৯৪৫ সালে মারা যায়। কেবল ওট্টো ফ্রাঙ্ক জীবিত ফিরে আসেন।




৫। অ্যান ফ্রাঙ্কের ডায়েরি লেখার প্রেক্ষাপটটি দলে আলোচনা করে লেখো।

Ans.অ্যান ফ্রাঙ্কের ডায়েরি লেখার প্রেক্ষাপট ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন ইহুদি-নির্যাতনের ভয়ঙ্কর সময়। জন্মসূত্রে ইহুদি হওয়ায় তার পরিবার জার্মানি থেকে নেদারল্যান্ডে পালায়। পরে নাজি বাহিনী নেদারল্যান্ডও দখল করলে তারা আত্মগোপনে বাধ্য হয়। অবরুদ্ধ অবস্থায় অ্যানের মধ্যে গভীর নিঃসঙ্গতা জন্ম নেয়। প্রকৃত বন্ধুর অভাব ও মনের কথা প্রকাশের আকাঙ্ক্ষা থেকেই সে লেখা শুরু করে। জন্মদিনে পাওয়া একটি খাতাকেই ডায়েরি বানিয়ে সে তার কল্পিত বন্ধু “কিটি”র উদ্দেশে লেখা শুরু করে। অবরুদ্ধ জীবন, ভয়, আশা, দুঃখ—সব অনুভূতি তার ডায়েরিতেই আশ্রয় পায়।




৬। ‘কিটি’ কে? অ্যান ফ্রাঙ্ক কিটিকে বন্ধু হিসেবে কেন গণ্য করেছিল, বুঝিয়ে লেখো।

Ans.‘কিটি’ হলো অ্যান ফ্রাঙ্কের ডায়েরির নাম, যাকে সে কল্পিত বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করেছিল। অ্যানের জীবনে প্রকৃত কোনো ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল না—যার কাছে সে মনের কথা বলতে পারবে। তাই নিজের ডায়েরিকেই সে বন্ধু করে নেয়। কাগজের ধৈর্য ও নীরবতা তাকে মুগ্ধ করেছিল, কারণ কাগজ তার কথা বিচার বা বাধা না দিয়েই গ্রহণ করত। আত্মগোপনের নিঃসঙ্গ সময়ে কিটি-ই ছিল তার একমাত্র সঙ্গী ও শ্রোতা। সে কিটির কাছে নিজের ভয়, আশা, কষ্ট ও অনুভূতিগুলো অকপটে প্রকাশ করতে পারত। তাই কিটি তার কাছে হয়ে ওঠে একমাত্র সত্যিকার বন্ধু।






খ- ভাষা-অধ্যয়ন (ব্যবহারিক ব্যাকরণ)

৭। এবার নিম্নলিখিত বাক্যগুলো থেকে ক্রিয়াপদ খুঁজে বের করো।

(ক) তারা মন্টেসরি স্কুল ছেড়ে ইহুদি বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে বাধ্য হয়।

ক্রিয়াপদ: বাধ্য হয়


(খ) ওট্টোর পরিবার তাঁরই কার্যালয়ের ওপর তলার এক ছোটো গোপন কক্ষে আত্মগোপন করে।

ক্রিয়াপদ: আত্মগোপন করে


(গ) কিন্তু এখানেও তাদের জীবনের ওপর নেমে আসে বিপর্যয়।

ক্রিয়াপদ: নেমে আসে


(ঘ) অ্যানদের দুই বোনকে পাঠান হয় বার্ডেন-বেলসেন-এর শিবিরে।

ক্রিয়াপদ: পাঠান হয়


(ঙ) বনলতা ও তরুলতা দুই বোনই অসুস্থ।

ক্রিয়াপদ: হয় (উহ্য অর্থে—‘অসুস্থ হয়’)


৮। নিম্নলিখিত বাক্যগুলো থেকে ধাতু খুঁজে বের করো।

(ক) বাঘা যতীন ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে বাঘের মতো গর্জে উঠেছিলেন।

ধাতু: গর্জ্, উঠ


(খ) বইটা আবার কার কাছে পাঠাবে?

ধাতু: পাঠা


(গ) বড়োবাবু খুব ধমকাচ্ছেন।

ধাতু: ধম্কা


(ঘ) মাছি ভনভন করছে।

ধাতু: ভনভন, কর্


(ঙ) এখন খেলা বন্ধ করো, পড়তে বসো।

ধাতু: কর্, পড়, বস্


১০। ওপরের শব্দগুলোকে সন্ধি-বিচ্ছেদ করে দেখানো হল, গঠিত শব্দটি শূন্যস্থানে লেখো।

চলৎ + চিত্র — চলচ্চিত্র

উৎ + লেখ — উল্লেখ

নিঃ + সঙ্গ — নিঃসঙ্গ

দুঃ + ভাগ্য — দুর্ভাগ্য


১১। সন্ধি করো।

(ক) ব্যঞ্জনবর্ণ + স্বরবর্ণ

দিক্ + অন্ত — দিগন্ত

সৎ + চরিত্র — সচ্চরিত্র


(খ) ব্যঞ্জনবর্ণ + ব্যঞ্জনবর্ণ

বাক্ + ধারা — বাগ্ধারা

শম্ + কর — শঙ্কর


১২। সন্ধি-বিচ্ছেদ করো।

জগদীশ — জগৎ + ঈশ

মৃন্ময় — মৃৎ + ময়

উল্লাস — উৎ + লাস

উন্নয়ন — উৎ + নয়ন

কৃষ্টি — কৃষ্ + তি

আচ্ছাদন — আ + ছাদন

উচ্চারণ — উৎ + চারণ

উজ্জ্বল — উৎ + জ্বল

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *