পাঠ-৮ : প্রশ্ন
কবিতা : ভগবান, তুমি যুগে যুগে দূত পাঠায়েছ বারে বারে (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)
—
ক – পাঠভিত্তিক
৩। উত্তর বলো ও লেখো।
(ক) ভগবান যুগে যুগে কাছে কাদের, কেন এবং কোথায় দূত পাঠায়েছেন?
Ans– ভগবান যুগে যুগে মহাপুরুষ ও মনীষীদের দূত রূপে দয়াহীন সংসারে পাঠিয়েছেন। তাঁদের পাঠানোর উদ্দেশ্য হলো মানুষকে প্রেম, ক্ষমা ও ভালোবাসার বাণী প্রচার করে বিভ্রান্ত ও বিশৃঙ্খল সমাজ-জীবনকে উদ্ভাসিত করা।
(খ) কেন তাঁরা বরণীয় ও স্মরণীয়?
Ans– মহাপুরুষ ও মনীষীরা মানুষকে প্রেম, ক্ষমা ও ভালোবাসার শাশ্বত বাণী শুনিয়েছেন এবং জীবনের উদ্দেশ্য হিসেবে বিভ্রান্ত ও বিশৃঙ্খল সমাজ-জীবনকে উদ্ভাসিত করেছেন, তাই তাঁরা বরণীয় ও স্মরণীয়।
(গ) আমাদের কণ্ঠ কেন আজ রুদ্ধ?
Ans– সমাজে গোপন হিংসা, শক্তের অপরাধ এবং বিচারের বাণীর নীরব কান্না দেখে কবির মন গভীর যন্ত্রণায় ভরে উঠেছে। সেই দুঃসহ পরিস্থিতি দেখে কবি চরম হতাশা ও বেদনায় বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছেন, তাই তাঁর কণ্ঠ আজ রুদ্ধ।
(ঘ) আমরা অশ্রুজলে ভগবানকে কী শুধাই?
Ans– কবি অশ্রুজলে ভগবানকে শুধিয়েছেন—যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো, তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
—
৪। কবিতা থেকে উপযুক্ত শব্দ বেছে নিয়ে শূন্যস্থান পূর্ণ করো।
(ক) বরণীয় তারা স্মরণীয় তারা, তবুও বাহির-দ্বারে আজি দুর্দিনে ফিরানু তাদের ব্যর্থ নমস্কারে।।
(খ) যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো, তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
—
৬। বাক্য রচনা করো।
বিদ্বেষ – মন থেকে সব বিদ্বেষ দূর করা উচিত।
ব্যর্থ – আমাদের চেষ্টা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়নি।
কপট – কপট মানুষের কাছ থেকে সর্বদা দূরে থাকা ভালো।
রুদ্ধ – আনন্দে তার কণ্ঠস্বর রুদ্ধ হয়ে এল।
নিষ্ফল – পরিশ্রম না করলে সব চেষ্টাই নিষ্ফল হয়।
—
৭। বাক্যের নিম্নরেখ শব্দের অর্থ বন্ধনীর ভেতর থেকে বেছে নিয়ে লেখো।
(ক) অন্তর হতে বিদ্বেষবিষ নাশো।
– হিংসা
(খ) বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে।
– নির্জনে
(গ) লুপ্ত করেছে আমার ভুবন দুঃস্বপনের তলে।
– বিনষ্ট
—
৮। প্রসঙ্গের সঙ্গে সংগতি রেখে ব্যাখ্যা করো।
(ক) বরণীয় তারা স্মরণীয় তারা, তবুও বাহির-দ্বারে
আজি দুর্দিনে ফিরানু তাদের ব্যর্থ নমস্কারে।।
Ans– মহাপুরুষেরা যুগে যুগে পৃথিবীতে প্রেম, ক্ষমা ও ভালোবাসার বার্তা নিয়ে এসেছেন, তাই তাঁরা বরণীয় ও স্মরণীয়। কিন্তু বর্তমান দুর্দিনে মানুষ তাঁদের সেই বাণী উপেক্ষা করে হিংসা ও বিদ্বেষে মত্ত। ফলে কবির মনে হয়, এই সময় তাঁদের মহান শিক্ষাকে সমাজ ব্যর্থ নমস্কারে ফিরিয়ে দিয়েছে, অর্থাৎ তাঁদের বাণী সমাজে কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি।
(খ) আমি যে দেখিনু তরুণ বালক উন্মাদ হয়ে ছুটে
কী যন্ত্রণায় মরেছে পাথরে নিষ্ফল মাথা কুটে।।
Ans– কবি সমাজের অসহনীয় অবিচার ও শক্তের অপরাধের নির্মমতা দেখেছেন। এর প্রতিকার করতে না পেরে যেন এক তরুণ বালক উন্মত্তের মতো ছুটে বেড়াচ্ছে। সে যেন তার ব্যর্থ ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করতে পাথরের ওপর মাথা কুটে প্রাণ দিচ্ছে—যা চরম যন্ত্রণার ও হতাশার প্রতীক। এই দৃশ্য সমাজের গভীর বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্যের ইঙ্গিত দেয়।
—
খ – ভাষা-অধ্যয়ন (ব্যবহারিক ব্যাকরণ)
৯। নীচের শব্দগুলোর সমার্থক শব্দ লেখো।
ক্ষমা – মার্জনা, পরিহার, রেহাই
বিদ্বেষ – হিংসা, ঘৃণা, দ্বেষ
ভুবন – জগৎ, পৃথিবী, বিশ্ব
সংগীত – গান, লহরী, সুর
—
১০। নীচের শব্দগুলোর বিপরীতার্থক শব্দ লেখো।
বালক – বালিকা, বৃদ্ধ
দুর্দিন – সুদিন
অমাবস্যা – পূর্ণিমা
বিচার – অবিচার
—
১১। কবিতা থেকে উপযুক্ত শব্দ বেছে নিয়ে সন্ধি-বিচ্ছেদ করো।
সংগীত – সম্ + গীত
নিঃসহায়ে – নিঃ + সহায়ে
অশ্রুজলে – অশ্রু + জলে
—
১৩। এক কথায় প্রকাশ করো।
স্মরণের যোগ্য যিনি – স্মরণীয়
দয়া নাই যার – দয়াহীন
যার প্রতিকার নেই – প্রতিকারহীন
সহায় নেই যার – নিঃসহায় (বা অসহায়)
যা লুকিয়ে রাখা হয় – গোপন (বা লুপ্ত)
—
১৭। নীচে পদ্যের শব্দগুলোকে গদ্যরূপে লেখো।
ফিরানু – ফিরালাম / ফিরিয়ে দিলাম
ছায়ে – ছায়ায়
হেনেছে – আঘাত করেছে
দেখিনু – দেখলাম
শুধাই – জিজ্ঞেস করি
আজিকে – আজ
—
১৯। নীচের বাক্যগুলো থেকে উদ্দেশ্য ও বিধেয় ভাগ করে দেখাও।
ভগবান, তুমি যুগে যুগে দূত পাঠায়েছ বারে বারে। – উদ্দেশ্য : তুমি, বিধেয় : যুগে যুগে দূত পাঠায়েছ বারে বারে।
মহৎ লোকেরা বরণীয় ও স্মরণীয়। – উদ্দেশ্য : মহৎ লোকেরা, বিধেয় : বরণীয় ও স্মরণীয়।
বালক উন্মাদ হয়ে ছুটে। – উদ্দেশ্য : বালক, বিধেয় : উন্মাদ হয়ে ছুটে।
মুক্তি এখন কবিতা পড়ছে। – উদ্দেশ্য : মুক্তি, বিধেয় : এখন কবিতা পড়ছে।
—
২০। নীচের একপদী শব্দগুলোকে এক কথায় প্রকাশ করো।
দয়া নাই যার – দয়াহীন
বরণের যোগ্য যিনি – বরণীয়
স্মরণের যোগ্য যিনি – স্মরণীয়
প্রতিকার নাই যার – প্রতিকারহীন
সহায় নাই যার – নিঃসহায়
