বৈজ্ঞানিক মানসিকতা এবং আমাদের সমাজ
বৈজ্ঞানিক মানসিকতা এবং আমাদের সমাজ থেকে সমস্ত প্রশ্নের উত্তর নিচে দেওয়া হলো। পাঠ -6
পাঠভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর (Page 4-5)
২। নীচের প্রশ্নগুলোতে ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ লেখো-
(ক) মানুষ স্বাভাবিকভাবেই কৌতূহলী। হ্যাঁ
(খ) কিছুসংখ্যক প্রাচীন রীতি-নীতির সঙ্গে বৈজ্ঞানিক কারণও জড়িত থাকে। হ্যাঁ
(গ) বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে প্রচারিত রাশিফল সম্পূর্ণ বিজ্ঞানসম্মত। না
৩। নীচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও-
(ক) বৈজ্ঞানিক মন ও মানসিকতা বলতে কী বোঝায়?
Ans. বৈজ্ঞানিক মন হলো সেই কৌতূহলী মন, যা অন্য কেউ বলছে বলেই কোনো কথা গ্রহণ না করে প্রতিটি বিষয়কে বিচার-বিবেচনা করে দেখে। প্রতিটি কথার কারণ– কেন পারে বা কেন পারে না– তা চিন্তা-ভাবনা করে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। বৈজ্ঞানিক মন দেখিয়ে দেওয়া পথে এগিয়ে যাওয়াকেই বৈজ্ঞানিক মানসিকতা বলে।
(খ) সাপে কামড় দিলে আমাদের কী করা উচিত?
Ans.সাপে কামড় দিলে আমাদের উচিত তাড়াতাড়ি ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া। ঝাড়-ফুঁক বা ওঝার কাছে নিয়ে যাওয়া উচিত নয়।
(গ) কেন আমাদের সমাজ থেকে অন্ধবিশ্বাসগুলো দূর করতে হবে?
Ans. অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কার সমাজের প্রভূত ক্ষতিসাধন করে। ব্যক্তি হিসেবে এবং সমাজ হিসেবে উন্নতি করতে হলে আমাদের অন্ধবিশ্বাসগুলো ছাড়তেই হবে। সমাজ থেকে কুসংস্কার দূর করা গেলে সমাজটি সর্বাঙ্গসুন্দর হবে।
৪। নীচের “ক” অংশের শব্দের সঙ্গে “খ” অংশের অর্থ মিলিয়ে দাও-
ঐতিহ – প্রাচীনকাল থেকে প্রচলিত নীতি
অনুসন্ধিৎসু – কৌতূহলী
স্বাস্থ্যসম্মত – স্বাস্থ্যকর যা
যুক্তিনিষ্ঠ – যুক্তি থাকা
বিরল – পাওয়া দুষ্কর
বিকল্প – একটির বদলে আরেকটি
৫। নীচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও-
(ক) বাইরে থেকে বেরিয়ে আসার পর সেই কাপড়েই রান্নাঘরে ঢুকতে না দেওয়া কি কোনো কুসংস্কার? এই কাজের পেছনে কী ধরনের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা লুকিয়ে রয়েছে?
Ans . বাইরে থেকে বেরিয়ে আসার পর সেই কাপড়েই রান্নাঘরে ঢুকতে না দেওয়াটা কুসংস্কার নয়।
এর পেছনে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা হলো: বাইরে থেকে ঘুরে এলে আমাদের শরীরে ধুলো-বালি ইত্যাদি সহ নানা ধরনের জীবাণু আসতে পারে। তাই কাপড়-চোপড় পালটে হাত-পা পরিচ্ছন্ন হয়ে রান্নাঘরে প্রবেশ করা স্বাস্থ্যসম্মত বিষয়।
(খ) বৈজ্ঞানিক মানসিকতার অধিকারী হতে হলে ব্যক্তির শিক্ষিত হওয়াটা জরুরি? শিক্ষিত না হয়েও মানুষ কীভাবে বৈজ্ঞানিক মানসিকতার অধিকারী হতে পারেন?
Ans. বৈজ্ঞানিক মানসিকতার অধিকারী হতে গেলে যে বিজ্ঞান নিয়ে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে, সেরকম কোনো কথা নেই।
একজন নিরক্ষর মানুষও বৈজ্ঞানিক মনের অধিকারী হতে পারেন। কেবল তাঁর প্রতিটি কথা বা ঘটনার কারণগুলো যুক্তিনিষ্ঠভাবে বিবেচনা করে দেখার মতো একটি মন থাকতে হবে। যুক্তি দিয়ে সবকিছু দেখতে হবে।
(গ) বৈজ্ঞানিক মানসিকতা সম্পর্কে তোমার কী ধারণা হলো পাঠটি অবলম্বনে তুলে ধরো।
Ans. পাঠটি অবলম্বনে বৈজ্ঞানিক মানসিকতা সম্পর্কে আমার ধারণা হলো: বৈজ্ঞানিক মানসিকতা হলো কৌতূহলী মনকে কাজে লাগিয়ে প্রতিটি বিষয়কে যুক্তি ও বিচার-বিবেচনা করে দেখা। অন্ধবিশ্বাস বা কুসংস্কারের বশবর্তী না হয়ে, প্রাচীনকাল থেকে চলে আসা কিন্তু বৈজ্ঞানিক ভিত্তি না থাকা বিষয়গুলো বর্জন করাই হলো বৈজ্ঞানিক মানসিকতা। এর ফলে সমাজ থেকে কুসংস্কার দূর করে সামগ্রিকভাবে সমাজের উন্নতি করা সম্ভব।
(ঘ) সমাজ থেকে অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কার কেন বর্জন করা প্রয়োজন?
Ans. সমাজ থেকে অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কার বর্জন করা প্রয়োজন কারণ:
এটি সমাজের প্রভূত ক্ষতিসাধন করে।
অন্ধবিশ্বাসীদের মন মন্ত্রকে গুরুত্ব দেয়, যার ফলে আধুনিক যুগেও মানুষ সঠিক চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হয়।
সমাজকে উন্নতির শিখরে আরোহণ করতে হলে এবং সামগ্রিকভাবে উন্নতি করতে হলে অন্ধবিশ্বাসগুলো ছাড়তেই হবে।
অন্ধবিশ্বাসের বৃহৎ গাছটিকে যত্ন ও সার দিয়ে বড়ো করা হলে সমাজটিকে অন্ধবিশ্বাসের গভীরে শিকড় গেড়ে বসা থেকে মুক্ত করা যাবে না।
(ঙ) বৈজ্ঞানিক মানসিকতার অধিকারী হতে গেলে কী ধরনের মন থাকা দরকার?
Ans. বৈজ্ঞানিক মানসিকতার অধিকারী হতে গেলে একটি সংস্কারমুক্ত বৈজ্ঞানিক মন থাকা একান্ত প্রয়োজন, যা যুক্তিনিষ্ঠভাবে প্রতিটি কথা বা ঘটনার কারণগুলো বিবেচনা করে দেখতে পারে। এটি মূলত একটি কৌতূহলী মন।
ভাষা-অধ্যয়ন (Page 6-7)
৬। ‘বিজ্ঞান’ থেকে ‘বৈজ্ঞানিক’ – এই নিয়মে বিশেষণ গঠন
শরীর – শারীরিক
ইতিহাস – ঐতিহাসিক
দিন – দৈনিক
বাণিজ্য – বাণিজ্যিক
ভূগোল – ভৌগোলিক
৭। ‘অ’উপসর্গ যুক্ত করে বিপরীত শব্দ তৈরি
বৈজ্ঞানিক – অবৈজ্ঞানিক
সময় – অসময়
সাধু – অসাধু
ন্যায় – অন্যায়
ক্লান্ত – অক্লান্ত
শান্ত – অশান্ত
জ্ঞান – অজ্ঞান
৮। গুণবাচক বিশেষ্য রূপ
সরল – সরলতা
দুর্বল – দুর্বলতা
নম্র – নম্রতা
ভদ্র – ভদ্রতা
দৃঢ় – দৃঢ়তা
উচ্চ – উচ্চতা
৯। পাঠে ব্যবহৃত বহুবচন পদগুলো
মানুষরা
ধারণাগুলো
পত্র-পত্রিকায়
চ্যানেলগুলোতে
শাখাগুলো
অঞ্চলগুলোতে
অন্ধবিশ্বাসগুলো
কথাগুলো
ছোটো-ছোটো কথাগুলো
ছেলে-মেয়েদের
জ্ঞান সম্প্রসারণ (Page 7-8)
৯। ভাই এবং বোনের এই কাজটির মধ্যে কার কাজে বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে যুক্তিসহ উত্তর দাও। তুমি ঐ জায়গায় থাকলে কী করবে।
ভাই এবং বোনের এই কাজটির মধ্যে বোনের কাজে বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে।
বোনের কাজ: বোন বিড়াল রাস্তা পেরোনোর কুসংস্কারে বিশ্বাস না করে ঠিক সময়ে বাসে উঠে বিদ্যালয়ে চলে যায়। এর ফলে সে সময়মতো পরীক্ষা দিতে পারে এবং ভালো ফলাফল করে। বিড়াল রাস্তা পার হওয়া কোনো বৈজ্ঞানিক ঘটনা নয়, এটি একটি ভিত্তিহীন কুসংস্কার মাত্র।
ভাইয়ের কাজ: ভাই কাকুর মুখে শোনা কুসংস্কারের বশবর্তী হয়ে যাত্রা করার সময় বিড়ালকে সামনে দেখে দাঁড়িয়ে যায়। এর ফলে সে দেরি করে বিদ্যালয়ে পৌঁছায় এবং পরীক্ষায় ভালো করে উত্তর করতে পারেনি। এটি অন্ধবিশ্বাস ও অবৈজ্ঞানিক মানসিকতার পরিচায়ক।
আমি ঐ জায়গায় থাকলে কী করতাম:
আমি ঐ জায়গায় থাকলে বোনের মতোই কাজ করতাম। কুসংস্কারকে উপেক্ষা করে সাথে সাথে বাসে উঠে যেতাম। কারণ যুক্তিনিষ্ঠভাবে দেখলে, একটি বিড়াল রাস্তা পার হলে মানুষের ভাগ্যে কোনো বিপদ আসে না। সময়মতো বিদ্যালয়ে পৌঁছে শান্ত মনে পরীক্ষা দেওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ।
