আমাদের মৌলিক কর্তব্যর ভিতরের এবং অনুশীলনীর প্রশ্নোত্তর
এখানে আমাদের মৌলিক কর্তব্যর প্রশ্ন ও উত্তরগুলি সমাধান করা হলো।
অনুশীলনী (পৃষ্ঠা ১১৭-১১৮)
১। সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও-
(ক) নাগরিকদের কর্তব্য বলতে কী বোঝ?
উত্তর: সংবিধান নাগরিকদের ব্যক্তিত্বের বিকাশ ও সাধারণ জীবনযাপনের জন্য কিছু সুযোগ-সুবিধা বা অধিকার প্রদান করেছে। এই অধিকারগুলো যথাযথভাবে ভোগ করার পাশাপাশি নাগরিকদেরও রাষ্ট্রের প্রতি কিছু দায়িত্ব পালন করতে হয়। নাগরিকদের এই দায়িত্বগুলোকেই মৌলিক কর্তব্য বলা হয়।
(খ) ২০০২ খ্রিস্টাব্দে নাগরিকদের জন্য সংযোজিত কর্তব্য কোনটি?
উত্তর: ২০০২ খ্রিস্টাব্দে ৮৬তম সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে যে কর্তব্যটি সংযোজিত হয়েছিল, তা হলো ৬ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুদের জন্য তাদের পিতামাতা বা অভিভাবকদের পক্ষ থেকে শিক্ষার সুযোগ প্রদান করা।
(গ) জাতীয় পতাকাকে আমাদের কেন সম্মান জানান উচিত?
উত্তর: জাতীয় পতাকা একটি দেশের সম্মানের প্রতীক। দেশের সার্বভৌমত্ব, ঐক্য এবং গৌরবের প্রতিনিধিত্ব করে বলেই জাতীয় পতাকাকে আমাদের সম্মান জানানো উচিত।
(ঘ) বিদ্যালয়ে শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য তোমাদের কর্তব্য কী?
উত্তর: বিদ্যালয়ে শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য আমাদের কর্তব্য হলো:
* শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সম্মান করা এবং তাদের নির্দেশ মেনে চলা।
* বিদ্যালয়ের নিয়মকানুন সঠিকভাবে পালন করা।
* সহপাঠীদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করা এবং ঝগড়া-বিবাদ এড়িয়ে চলা।
* বিদ্যালয়ের সম্পত্তির যত্ন নেওয়া এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা।
২। সংবিধানে উল্লিখিত যে কোনো পাঁচটি কর্তব্যের বিষয়ে লেখো।
উত্তর: সংবিধানে উল্লিখিত পাঁচটি কর্তব্য নিচে উল্লেখ করা হলো:
* সংবিধান মেনে চলা: সংবিধানকে মান্য করা এবং তার আদর্শসমূহ, জাতীয় পতাকা ও জাতীয় সংগীতের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো প্রত্যেক নাগরিকের কর্তব্য।
* ভারতের ঐক্য ও সংহতি রক্ষা করা: ভারতবর্ষের সার্বভৌমত্ব, ঐক্য ও সংহতি রক্ষা করার জন্য সর্বদা সচেষ্ট থাকা উচিত।
* প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষা করা: বন, হ্রদ, নদী ও বন্যপ্রাণীসহ প্রাকৃতিক পরিবেশের উন্নতি এবং রক্ষা করা এবং সকল জীবিত প্রাণীর প্রতি দয়াশীল থাকা আমাদের কর্তব্য।
* সর্বজনীন সম্পত্তি রক্ষা করা: দেশের সর্বজনীন সম্পত্তি, যেমন—কার্যালয়, ব্যাঙ্ক, চিকিৎসালয় ইত্যাদি রক্ষা করা এবং হিংসাত্মক কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকা উচিত।
* বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলা: সমাজের কুসংস্কার দূর করে সকল নাগরিকের মধ্যে বিজ্ঞানসম্মত দৃষ্টিভঙ্গি, মানবতাবোধ এবং অনুসন্ধিৎসার বিকাশ ঘটানো প্রয়োজন।
৩। এন সি সি এবং স্কাউট গাইডের মধ্য দিয়ে কী কী গুণ বিকশিত হবে, লেখো।
উত্তর: এন সি সি (NCC) এবং স্কাউট-গাইডের মতো কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করলে শিশুদের মনে দেশপ্রেম জাগ্রত হওয়ার পাশাপাশি তাদের মধ্যে শৃঙ্খলাবোধ, ধৈর্য, সহানুভূতি এবং দেশসেবার মনোভাবের মতো মহান গুণাবলি বিকশিত হয়।
৪। প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষা করার জন্য আমাদের কী কী করা উচিত?
উত্তর: প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষা করার জন্য আমাদের নিম্নলিখিত কাজগুলো করা উচিত:
* প্রচুর পরিমাণে বৃক্ষ রোপণ করা এবং গাছ কাটা বন্ধ করা।
* নদ-নদী, হ্রদ, বনাঞ্চল ইত্যাদি দূষণের হাত থেকে রক্ষা করা এবং সেগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ করা।
* পাহাড় কাটা বন্ধ করা, কারণ এটি পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে।
* পরিবেশ রক্ষার বিষয়ে নিজেকে এবং অন্যকেও উৎসাহিত করা।
৫। শূন্যস্থান পূর্ণ করো-
(ক) আমাদের দেশের জাতীয় সংগীত ৫২ সেকেন্ডের মধ্যে সমাপ্ত করতে হয়।
(খ) জাতীয় পতাকা উত্তোলন করার সময় দাঁড়িয়ে সম্মান জানানো হয়।
(গ) ৬-১৪ বছরের সকল শিশুকেই প্রাথমিক শিক্ষা লাভের সুবিধা প্রদান করা উচিত।
(ঘ) ভারতীয় সংবিধানে বর্তমানে মোট ১১ প্রকার কর্তব্যের উল্লেখ আছে।
৬। শুদ্ধ উত্তরটি বেছে বের করো-
(ক) রাষ্ট্রীয় প্রতীকের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা উচিত।
(খ) নালা-নর্দমায় প্লাস্টিকের ব্যাগ, আবর্জনা ইত্যাদি ফেলা উচিত নয়।
(গ) বন্যা রোধে বৃক্ষরোপণ অতি জরুরি।
(ঘ) শান্তি স্থাপনের জন্য হিংসাত্মক কার্যকলাপ পরিহার করা প্রয়োজন।
(ঙ) দেশসেবায় এগিয়ে আসা উচিত।
৭। জনসাধারণের মধ্যে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলার জন্য দুটি বিশেষ কাজের বিষয়ে বর্ণনা করো।
উত্তর: জনসাধারণের মধ্যে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলার জন্য দুটি বিশেষ কাজ হলো:
* শিক্ষার প্রসার: শিক্ষার মাধ্যমে সমাজের গভীরে থাকা কুসংস্কার ও অন্ধবিশ্বাস দূর করা সম্ভব। শিক্ষাই মানুষকে যুক্তিবাদী করে তোলে এবং সমাজে বিজ্ঞানসম্মত চিন্তাভাবনার প্রসার ঘটায়।
* সচেতনতা বৃদ্ধি: আজকের যুগেও অনেকে অন্ধবিশ্বাসের কারণে প্রাণ হারায়। তাই বিভিন্ন গণমাধ্যম, আলোচনা সভা এবং কর্মশালার মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করে তুলতে হবে, যাতে তারা কোনো ঘটনাকে বিচার-বিশ্লেষণ ছাড়া বিশ্বাস না করে এবং একটি সুস্থ ও বিজ্ঞানমনস্ক সমাজ গড়ে তুলতে পারে।
৮। অসমের যে কোনো পাঁচজন স্বাধীনতা সংগ্রামীর ফটোসহ জীবনী সংগ্রহ করে একটি অ্যালবাম প্রস্তুত করো।
উত্তর: (এটি একটি প্রকল্পভিত্তিক কাজ। এখানে পাঁচজন স্বাধীনতা সংগ্রামীর নাম দেওয়া হলো, যাদের জীবনী ও ছবি সংগ্রহ করে অ্যালবাম তৈরি করা যেতে পারে।)
* মণিরাম দেওয়ান
* কনকলতা বরুয়া
* কুশল কোঁয়র
* গোপীনাথ বরদলৈ
* ভোগেশ্বরী ফুকননী
ক্রিয়াকলাপ (পৃষ্ঠা ১১৫)
• পাহাড় কাটলে কী হয়?
উত্তর: পাহাড় কাটলে ভূমি ক্ষয় হয়, যার ফলে বর্ষাকালে ভূমিধসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশঙ্কা বেড়ে যায়। এছাড়া, পাহাড়ের গাছপালা কেটে ফেলার কারণে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয় এবং বন্যপ্রাণীদের বাসস্থান ধ্বংস হয়।
• গাছপালা কেটে নিঃশেষ করলে কী হবে?
উত্তর: গাছপালা কেটে নিঃশেষ করলে পরিবেশে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে যাবে, যা গোলকীয় উষ্ণতা (Global Warming) বৃদ্ধি করবে। এর ফলে খরা, বন্যা, অ্যাসিড বৃষ্টির মতো সমস্যা সৃষ্টি হবে এবং পৃথিবীর জীবজগতের অস্তিত্ব সংকটের মুখে পড়বে।
