সাগর-মহাসাগর, Chpater -6 ,Class -8, SEBA

পাঠ্যবইয়ের ভিতরের এবং অনুশীলনীর প্রশ্নোত্তর


সাগর-মহাসাগর: প্রশ্ন ও উত্তর (পৃষ্ঠা ৩৭ – ৪৩)

প্রশ্ন ১. পৃথিবীকে কেন নীল গ্রহ বলা হয় লেখো।
উত্তর ১. ভূ-পৃষ্ঠের ৭১ শতাংশে জলমণ্ডল বিস্তৃত—আমাদের পৃথিবীর অধিকাংশ স্থান জলমগ্ন বলেই একে নীল গ্রহ বলা হয়।

প্রশ্ন ২. ভারতের সীমা ছুয়ে থাকা উপসাগরটির নাম কী?
উত্তর ২. ভারতের সীমা ছুয়ে থাকা উপসাগরটির নাম হল বঙ্গোপসাগর।

প্রশ্ন ৩. উৎপত্তির সময় পৃথিবী কী অবস্থায় ছিল লেখো।
উত্তর ৩. উৎপত্তির সময় থেকে বহুকাল পর্যন্ত পৃথিবী একটি উত্তপ্ত গ্যাসের পিণ্ড রূপে ছিল।

প্রশ্ন ৪. পৃথিবীর উপরিভাগের উঁচু নিচু আবরণ কী করে সৃষ্টি হল লেখো।
উত্তর ৪. তাপ বিকিরণ করে করে পৃথিবী শীতল ও সংকুচিত হতে আরম্ভ করে—ক্রমে পদার্থগুলো তরল এবং কঠিন অবস্থায় পৌঁছোয় এবং ক্রমশ সঙ্কুচিত হতে হতে পৃথিবীর উপরিভাগে উঁচু নিচু আবরণ সৃষ্টি হয়।

প্রশ্ন ৫. নিরক্ষীয় অঞ্চলের মহাসাগরের জলভাগ কেন সহজে গরম হয় লেখো।
উত্তর ৫. নিরক্ষীয় অঞ্চলে সূর্যের তাপ সোজাসুজি পড়ার জন্য এই অংশে মহাসাগরের জলের উত্তাপ তুলনামূলকভাবে বেশি হয়।

প্রশ্ন ৬. পৃথক পৃথক উষ্ণতার দুটি মহাসাগরীয় স্রোত একত্রিত হওয়া স্থান ধীরে ধীরে উঁচু হয়ে উঠতে দেখা যায়—কথাটি ব্যাখ্যা করো।
উত্তর ৬. গরম জলের স্রোতের সংস্পর্শে আসার সঙ্গে সঙ্গে শীতল জলের স্রোতের তুষারখণ্ডগুলো গলতে আরম্ভ করে—তখন ঐ তুষার খণ্ডের ভেতরের শিলা, মাটি, এবং আবর্জনা সমুদ্র গর্ভে জমা হতে আরম্ভ করে—এই প্রক্রিয়া গভীরতা হ্রাস করে স্থানটি উঁচু করে তোলে।

প্রশ্ন ৭. সাগরের ঢেউ সৃষ্টি হওয়ার কারণগুলো কী কী?
উত্তর ৭. সাগরের ঢেউ সৃষ্টি হওয়ার কারণগুলো হল—
* সাগরের উপর দিয়ে প্রবাহিত বায়ুর চাপ।
* সাগরের তলদেশে উৎপত্তি হওয়া ভূমিকম্প।
* আগ্নেয়গিরির উদ্‌দ্গীরণ এবং জোয়ার-ভাটা।
*
প্রশ্ন ৮. আগ্নেয় বলয় বলতে কী বোঝ?
উত্তর ৮. প্রশান্ত মহাসাগরের চারদিকে যে অঞ্চলে ঘন ঘন ভূমিকম্প এবং আগ্নেয়গিরির উদ্‌দ্গীরণ হয়, সেই অঞ্চলকে প্রশান্ত মহাসাগরীয় আগ্নেয় বলয় (Ring of Fire) বলা হয়।

প্রশ্ন ৯. সুনামির উচ্চতা এবং গতিবেগ সাধারণত কত হয়?
উত্তর ৯. সুনামির উচ্চতা সাধারণত ১৫ মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে—সুনামির গতিবেগ ঘন্টায় ৭০০ কিলোমিটারেও বেশি হয়।

প্রশ্ন ১০. পৃথিবীর উপরে চন্দ্রের আকর্ষণের প্রভাব অধিক—এর কারণ দেখাও।
উত্তর ১০. পৃথিবীর তুলনায় চন্দ্র ছোটো হলেও কাছে থাকার জন্য পৃথিবীর উপর এর আকর্ষণের প্রভাব অধিক—কারণ পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্ব চন্দ্রের দূরত্বের তুলনায় বহুগুণ বেশি।

প্রশ্ন ১১. মুখ্য জোয়ারের উৎপত্তির কারণ কী?
উত্তর ১১. মুখ্য জোয়ারের উৎপত্তির প্রধান কারণ হল পৃথিবীর উপর চন্দ্রের আকর্ষণ—পৃথিবী আবর্তন করার সময় এর যে অংশ চন্দ্রের মুখোমুখি হয়, সেখানে এই আকর্ষণের প্রভাবে জলভাগ ফুলে উঠে মুখ্য জোয়ারের সৃষ্টি করে।

প্রশ্ন ১২. নদীর মোহনা এবং জোয়ার-ভাঁটার মধ্যে সম্পর্ক বিচার করো।
উত্তর ১২. জোয়ারের ঢেউ নদীর মোহনায় জমা হওয়া পলি ভাসিয়ে নিয়ে যায়—ফলে অগভীর মোহনা অঞ্চলে অবস্থিত বন্দরে সহজে জাহাজ চলাচল করতে পারে—জোয়ারের প্রভাব পড়ে এমন নদীর মোহনায় প্রচুর মাছ পাওয়া যায়।

প্রশ্ন ১৩. বেনথোজ শ্রেণির সাগরের জীবের বৈশিষ্ট্য কী?
উত্তর ১৩. বেনথোজ শ্রেণির জীবেরা অগভীর জলে বাস করে—এরা চলাচল না করে একই স্থানে থাকে (যেমন: স্পঞ্জ, প্রবাল) অথবা অতি কম পরিমাণে চলাচল করে (যেমন: কাঁকড়া, শামুক)।

প্রশ্ন ১৪. প্লবক এবং মৎস্য ক্ষেত্রের সঙ্গে সম্পর্ক বিচার করো।
উত্তর ১৪. প্ল্যাঙ্কটন বা প্লবক হল মাছ এবং অন্যান্য সামুদ্রিক প্রাণীর প্রধান খাদ্য—প্লবকগুলো অগভীর জলে পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায়—শীতল এবং উষ্ণ জলের স্রোত মিলিত হওয়া স্থানে প্লবকের প্রাচুর্য থাকে—তাই এধরনের স্থান পৃথিবীর উৎকৃষ্ট মৎস্যক্ষেত্র হিসেবে পরিগণিত হয়েছে।

প্রশ্ন ১৫. কয়েক প্রকার সামুদ্রিক মাছের নাম লেখো।
উত্তর ১৫. কয়েকটি সামুদ্রিক মাছের নাম হল—হেরিং—সারডিন—কড—টুনা—সামন—ম্যাকারেল—হেডক।

সাগর-মহাসাগর: অনুশীলনী (পৃষ্ঠা ৪৪ – ৪৫)
১। নিম্নলিখিত প্রশ্নগুলোর উত্তর লেখো:
প্রশ্ন ১. (ক) মহাসাগরীয় স্রোত সৃষ্টির কারণগুলো কী কী?
উত্তর ১. (ক) মহাসাগরীয় স্রোত সৃষ্টির কারণগুলো হল—
* পৃথিবীর আবর্তন গতি।
* নিয়ত বায়ু প্রবাহ।
* জলের উষ্ণতা, লবণের পরিমাণ এবং চাপের তারতম্য।

প্রশ্ন ১. (খ) গরম জলের স্রোত বলতে কী বোঝ?
উত্তর ১. (খ) উষ্ণমণ্ডল (নিরক্ষীয় অঞ্চল) থেকে গরম ও পাতলা সমুদ্রের জল—উপরে উপরে পৃষ্ঠপ্রবাহ রূপে শীতমণ্ডলের (মেরু অঞ্চলের) দিকে প্রবাহিত হয়—একেই উষ্ণ বা গরম জলের স্রোত বলে।

প্রশ্ন ১. (গ) সাগরের জীবসমূহ কত প্রকারের? কীসের ভিত্তিতে এই শ্রেণি বিভাজন করা হয়েছে?
উত্তর ১. (গ) সাগরের জীবসমূহ তিন প্রকারের—এরা হল: প্ল্যাঙ্কটন (প্লবক)—বেনথোজ—এবং নেকটন—এদের চলাচল ও বসতিস্থলের উপর ভিত্তি করে এই শ্রেণি বিভাজন করা হয়েছে।

প্রশ্ন ১. (ঘ) সাগরের কোন অঞ্চলে সাধারণত মৎস্য ক্ষেত্র গড়ে উঠেছে?
উত্তর ১. (ঘ) শীতল এবং উষ্ণ জলের স্রোত মিলিত হওয়া স্থানে—অগভীর জলে, যেখানে মাছের খাদ্য প্ল্যাঙ্কটন বা প্লবক যথেষ্ট পরিমাণে পাওয়া যায়—সেই অঞ্চলে সাধারণত মৎস্য ক্ষেত্র গড়ে উঠেছে।

২। কারণ দেখাও
প্রশ্ন ২. (ক) মরা জোয়ার বাসন্তী জোয়ারের মত শক্তিশালী হয় না।
উত্তর ২. (ক) মরা জোয়ার সপ্তমী ও অষ্টমী তিথিতে সৃষ্টি হয়—এই দুই দিনে পৃথিবী, চন্দ্র এবং সূর্য সমকোণে অবস্থান করে—ফলে চন্দ্রের আকর্ষণ এবং সূর্যের আকর্ষণ পরস্পরকে কাটাকাটি করে—এর ফলে জোয়ারের ঢেউ শক্তিশালী হয় না।

প্রশ্ন ২. (খ) আজকাল পৃথিবীর সব জায়গাতেই সাগরের মাছ কিনতে পাওয়া যায়।
উত্তর ২. (খ) সাগরের মাছ শীতলীকরণ ব্যবস্থার মাধ্যমে সংরক্ষণ করে টিনে/কৌটোয় ভরে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে রপ্তানি করা হয়—এছাড়া মাছ ধরা এবং সংরক্ষণের ক্ষেত্রে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারও এর একটি কারণ।

প্রশ্ন ২. (গ) জাপানে ঘন ঘন সুনামি হয়।
উত্তর ২. (গ) জাপান দেশটি প্রশান্ত মহাসাগরীয় আগ্নেয় বলয়ে (Ring of Fire) অবস্থিত—এই বলয়টি পৃথিবীর প্রধান ভূমিকম্প প্রবণ অঞ্চল—তাই এখানে ঘন ঘন ভূমিকম্প হয় এবং তার ফলেই সুনামির সৃষ্টি হয়।

প্রশ্ন ২. (ঘ) সূর্য আকারে বিশাল হওয়া সত্ত্বেও জোয়ারের সৃষ্টিকারী শক্তি কম।
উত্তর ২. (ঘ) সূর্য আকারে বিশাল হওয়া সত্ত্বেও—পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্ব চন্দ্রের দূরত্বের তুলনায় অনেক বেশি—তাই দূরত্বের কারণে সূর্যের জোয়ার সৃষ্টিকারী মাধ্যাকর্ষন শক্তি চন্দ্রের থেকে তুলনামূলকভাবে কম।

প্রশ্ন ২. (ঙ) বৈদেশিক বাণিজ্যের জন্য জাহাজ পরিবহন ব্যবস্থা উৎকৃষ্ট।
উত্তর ২. (ঙ) জাহাজ পরিবহন হচ্ছে সবচাইতে সস্তা বা কম খরচের পরিবহন ব্যবস্থা—জলের স্বাভাবিক ধর্মের জন্যই জাহাজে ভারী এবং বৃহৎ পরিমাণের সামগ্রী সহজে পরিবহন করা যায়—ফলে বৈদেশিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এটি উৎকৃষ্ট।

৩। শুদ্ধ উত্তরটিতে চিহ্ন দাও
প্রশ্ন ৩. (ক) সাধারণত শীতল জলের স্রোত উৎপত্তি হয়-
উত্তর ৩. (ক) মেরু অঞ্চলে
প্রশ্ন ৩. (খ) দিনের মধ্যে দুবার সাগরের জল ওঠা-নামাকে-
উত্তর ৩. (খ) জোয়ার-ভাটা
প্রশ্ন ৩. (গ) সুনামি শব্দের অর্থ হল-
উত্তর ৩. (গ) পোতাশ্রয়ের ঢেউ
প্রশ্ন ৩. (ঘ) সাঁতার কাটতে পারে এই শ্রেণির সাগরের প্রাণী হচ্ছে-
উত্তর ৩. (ক) নেক্টন

৪। ‘ক’ অংশের সঙ্গে ‘খ’ অংশ মেলাও

সংশোধিত মেলাও (সঠিক উত্তর অনুযায়ী)
| ‘ক’ অংশ | ‘খ’ অংশ (সঠিক মিল) |
|—|—|
| ক) ডায়েটম | গ) একপ্রকার উদ্ভিদ প্ল্যাঙ্কটন। |
| খ) নিরক্ষীয় অঞ্চল | ঙ) জলের ঘনত্ব কম। |
| গ) মরা জোয়ার | খ) মরা জোয়ার হয়। |
| ঘ) সপ্তমী এবং অষ্টমী তিথিতে | খ) মরা জোয়ার হয়। |
| ঙ) মৎস্য ক্ষেত্রসমূহ | ক) উদ্ভিদ প্ল্যাঙ্কটন যেখানে থাকে সেখানে গড়ে উঠে। |

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *