পাঠ-৪: বসতি: গ্রাম্য ও শহুরে জীবন সম্পর্কিত প্রশ্ন ও উত্তর (পৃষ্ঠা ৩০-৩৬)
পৃষ্ঠা ৩০-এর প্রশ্ন
উত্তর লেখো-
১. গ্রামাঞ্চলের লোকেরা কী কী কার্যের দ্বারা জীবন নির্বাহ করে লেখো।
Ans. গ্রামাঞ্চলের লোকেরা প্রধানত নিম্নলিখিত কার্যের দ্বারা জীবন নির্বাহ করে:
* কৃষিকার্য: ধান, পাট, সরিষা, তিল, ডাল এবং বিভিন্ন শাক-সবজির চাষ করে। সাধারণত প্রায় ৭৫ শতাংশ বা ততোধিক মানুষ কৃষিকার্যে নিয়োজিত থাকে।
* অন্যান্য প্রাথমিক বৃত্তি: মাছ শিকার, মাটির বাসন তৈরি করা, জীব-জন্তু পোষা।
* ক্ষুদ্র ব্যবসা ও চাকরি: ছোটো-খাটো ব্যবসা ও চাকরি ইত্যাদির সাহায্যেও অনেকে জীবন নির্বাহ করে।
১. অসমের কৃষিকার্য কিসের উপর নিভরশীল?
Ans. অসমের কৃষিকার্য প্রধানত প্রকৃতির উপর নির্ভরশীল।
২. গ্রামের অধিকাংশ লোক কৃষিকার্যের সঙ্গে জড়িত হওয়ার কারণ কী আলোচনা করো।
Ans. গ্রামের অধিকাংশ লোক কৃষিকার্যের সঙ্গে জড়িত থাকার কারণগুলি হলো:
* ঐতিহ্যগত জীবিকা: কৃষিকার্য শুরু হওয়ার সঙ্গেই মানুষ স্থায়ীভাবে বসবাস করে গ্রামের সৃষ্টি করেছিল। এটি তাদের ঐতিহ্যগত প্রধান জীবিকা।
* ভূমির সহজলভ্যতা: গ্রামের বসতি অঞ্চলটি সাধারণত কৃষিকাজের জন্য উর্বর এবং উপযোগী হয়।
* আত্মনির্ভরতা: চাষ-বাসের মাধ্যমে তারা নিজেদের খাদ্যের যোগান দিতে পারে এবং জীবন নির্বাহ করে।
পৃষ্ঠা ৩৪-এর প্রশ্ন
ক্রিয়াকলাপ
১. নদীর ধারে একটি শহর অবস্থিত হলে কী ধরনের সুবিধা হয় আলোচনা করো।
Ans. নদীর ধারে শহর অবস্থিত হলে নিম্নলিখিত সুবিধাগুলো পাওয়া যায়:
* জলের যোগান: শহরের বাসিন্দাদের জন্য পানীয় জল ও অন্যান্য দৈনন্দিন কাজের জন্য জলের যোগান সহজ হয়।
* পরিবহন সুবিধা: নদী জলপথ হিসাবে ব্যবহৃত হতে পারে। এটি সবচেয়ে সস্তা বা কম খরচের পরিবহন ব্যবস্থা। গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্রসহ অনেক নদীর তীরে শহর অবস্থিত।
* উর্বর জমি: নদীর তীরবর্তী অঞ্চল বা প্লাবনভূমিতে উর্বর মাটি পাওয়া যায়, যা কৃষিকাজের জন্য উপযোগী।
* ইতিহাস ও সংস্কৃতি: পৃথিবীর বহু ঐতিহাসিক শহর নদীর তীরে অবস্থিত। নদীকে কেন্দ্র করে সংস্কৃতি ও ব্যবসা-বাণিজ্য বিকশিত হয়।
*
পৃষ্ঠা ৩৫-এর প্রশ্ন
১। উত্তর লেখো-
(ক) বসতিকে কয়টি ভাগে ভাগ করা যায়?
(খ) গ্রামাঞ্চলের কত শতাংশ লোক কৃষিকার্যের সঙ্গে জড়িত?
(গ) শহরের কেন্দ্রীয় অঞ্চলটি মুখ্যত কী কার্যের সঙ্গে জড়িত?
(ঘ) উৎপত্তি কালের ভিত্তিতে ভারতবর্ষের শহরসমূহকে কয়টি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে?
(ঙ) লোকগণনা বিভাগের দ্বারা নির্দিষ্ট মতানুসারে ভারতবর্ষের কোনো একটি শহরের প্রাথমিক জনসংখ্যা কত হওয়া উচিত?
(চ) পৌরনিগম পরিচালিত অসমের একমাত্র মহানগরটির নাম কী?
উত্তর:
(ক) বসতিকে প্রধানত দুটি ভাগে ভাগ করা যায়- গ্রাম্য বা গেঁয়ো বসতি এবং শহর বা পৌর বসতি।
(খ) গ্রামাঞ্চলের প্রায় ৭৫ শতাংশ বা ততোধিক লোক কৃষিকার্যের সঙ্গে জড়িত।
(গ) শহরের কেন্দ্রীয় অঞ্চলটি মুখ্যত ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্র বিন্দু হিসাবে জড়িত থাকে।
(ঘ) উৎপত্তি কালের ভিত্তিতে ভারতবর্ষের শহরসমূহকে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে- প্রাচীন শহর, মধ্যযুগীয় শহর এবং আধুনিক শহর।
(ঙ) লোকগণনা বিভাগের দ্বারা নির্দিষ্ট মতানুসারে ভারতবর্ষের কোনো একটি শহরের প্রাথমিক জনসংখ্যা ৫,৫০০ জন হওয়া উচিত।
(চ) পৌরনিগম পরিচালিত অসমের একমাত্র মহানগরটির নাম গুয়াহাটি।
পৃষ্ঠা ৩৬-এর প্রশ্ন
২। শুদ্ধ/অশুদ্ধ লেখো-
(ক) শহরের বসতি থেকে গ্রামের বসতিতে জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি। – অশুদ্ধ
(খ) গ্রাম্য বসতির অধিক সংখ্যক লোক চাকরির সঙ্গে জড়িত। – অশুদ্ধ
(গ) নতুন দিল্লি এক প্রশাসনিক মহানগর। – শুদ্ধ
(ঘ) আগ্রা একটি নদীর তীরে অবস্থিত শহর। – শুদ্ধ (যমুনা নদীর তীরে)
(ঙ) শিলচর বরাক নদীর তীরে অবস্থিত। – শুদ্ধ
পৃষ্ঠা ৩৬-এর প্রশ্ন
৩। সংক্ষেপে উত্তর দাও-
(ক) গ্রাম্য অঞ্চলের বৃত্তি:
Ans. গ্রামাঞ্চলের মানুষের প্রধান বৃত্তি হলো কৃষিকার্য। এছাড়াও মাছ শিকার, পশুপালন, মাটির বাসন তৈরি করা, বনজ দ্রব্য সংগ্রহ এবং ছোটো-খাটো ব্যবসা ও চাকরি ইত্যাদি বৃত্তির দ্বারা তারা জীবন নির্বাহ করে।
(খ) শহরে বসতির সুবিধা:
Ans. শহরে নিম্নলিখিত সুবিধাগুলো পাওয়া যায়:
* নিয়োগের সুবিধা: উদ্যোগ, কল-কারখানা, সরকারি-বেসরকারি কার্যালয় ইত্যাদি থাকার জন্য নিয়োগের সুবিধা বেশি।
* উন্নত পরিষেবা: শিক্ষা, চিকিৎসা, যাতায়াত এবং আমোদ-প্রমোদের সুবিধা বেশি।
* প্রশাসন ব্যবস্থা: পৌর নিগম, নগর পালিকার মতো স্থানীয় প্রশাসন ব্যবস্থা থাকে।
(গ) শহরে বসতি ঘন হওয়ার কারণ কী?
Ans. শহরে বসতি ঘন হওয়ার প্রধান কারণগুলো হলো:
* অর্থনৈতিক আকর্ষণ: ব্যবসা-বাণিজ্য, উদ্যোগ এবং বিভিন্ন সেবামূলক কাজের জন্য অধিক লোক শহরের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে জড়ো হয়।
* কর্মসংস্থান: উন্নত কর্মসংস্থান এবং উচ্চ উপার্জনের সুযোগ।
* সুযোগ-সুবিধা: উন্নত শিক্ষা, চিকিৎসা এবং যাতায়াত ব্যবস্থার সুবিধা।
(ঘ) মেগ্যালোপলিশ কাকে বলে?
Ans. একটি অতি মহানগরকে (Metropolis- এক নিযুত থেকে পাঁচ নিযুত জনসংখ্যা) কেন্দ্র করে তার উপকণ্ঠ অঞ্চলের বেশ কিছু ছোটো-বড়ো শহর এক হয়ে যে শহরপুঞ্জের সৃষ্টি করে, তাকে মেগ্যালোপলিশ (Megalopolis) বলে।
পৃষ্ঠা ৩৬-এর প্রশ্ন
৪। শহরের সুবিধা এবং সমস্যা সম্পর্কে দুটো আলাদা তালিকা প্রস্তুত করো।
উত্তর:
শহরের সুবিধা
* নিয়োগের সুযোগ বেশি, উপার্জনের পথ উন্মুক্ত।
* শিক্ষা, চিকিৎসা এবং যাতায়াতের উন্নত ব্যবস্থা।
* আমোদ-প্রমোদ এবং অবসর বিনোদনের সুবিধা (যেমন- থিয়েটার, উদ্যান)।
* পৌর প্রশাসন ব্যবস্থা দ্বারা পরিচালিত এবং নিয়ন্ত্রিত হয়।
শহরের সমস্যা
* দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে সীমিত ভূমিভাগের ওপর চাপ।
* যান-জট এবং যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি।
* জল নিষ্কাশনে অসুবিধা এবং অল্প বৃষ্টিতে কৃত্রিম বন্যা।
* খোলা জায়গার অভাব এবং পরিবেশের অবনতি।
* উদ্যোগ এবং মোটরগাড়ি থেকে নির্গত ধোঁয়া ও শব্দের কারণে দূষণ।
* বিশুদ্ধ পানীয় জলের অভাব।
পৃষ্ঠা ৩৬-এর প্রশ্ন
৫। ভূচিত্রাবলি দেখে অসমের ১০ টি শহরের নাম লেখো এবং সেগুলো কোন জেলাতে অবস্থিত উল্লেখ করো।
উত্তর:
ভূচিত্রাবলি দেখে অসমের ১০ টি শহর ও সংশ্লিষ্ট জেলার নাম:
১. গুয়াহাটি – কামরূপ মহানগর
২. ডিব্রুগড় – ডিব্রুগড়
৩. তেজপুর – শোণিতপুর
৪. যোরহাট – যোরহাট
৫. শিলচর – কাছাড়
৬. নগাঁও – নগাঁও
৭. ধুবুড়ি – ধুবুড়ি
৮. তিনসুকিয়া – তিনসুকিয়া
৯. রঙিয়া – কামরূপ
১০. ডিফু – কার্বি আংলং
