পৃথিবীর অভ্যন্তর ভাগ, শ্রেণী – ০৭, পাঠ -০২ SEBA

পৃথিবীর অভ্যন্তর ভাগ, শ্রেণী – ০৭, পাঠ -০২ https://utsaho.in/?p=3389&preview=true

অনুশীলনীর সমাধান

 

১। শুদ্ধ উত্তরটি বেছে লেখো: (পৃষ্ঠা ২৯)

 

প্রশ্ন শুদ্ধ উত্তর
(ক) পৃথিবীর পৃষ্ঠ থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত ৪/৩/২ টি স্তরে বিভক্ত। টি স্তরে বিভক্ত।  

(খ) ভূ-ত্বক গড়ে প্রায় ২০/৩০/২৫ কিলোমিটার পুরু। গড়ে প্রায় ২০ কিলোমিটার পুরু।

(গ) পৃথিবীর গর্ভ মানে হল- ভূ-ত্বক/গুরুমণ্ডল/কেন্দ্রমণ্ডল। কেন্দ্রমণ্ডল  

(ঘ) জীবাশ্ম সাধারণত পাললিক শিলা/আগ্নেয়শিলা/রূপান্তরিত শিলাতে পাওয়া যায়। পাললিক শিলাতে  

(ঙ) সবচেয়ে কঠিন খনিজটি হল সোনা/হিরা/দস্তা। হিরা  


 

২। শূন্যস্থান পূর্ণ করো: (পৃষ্ঠা ২৯)

 

প্রশ্ন উত্তর
(ক) ভূ-পৃষ্ঠ থেকে অভ্যন্তর ভাগ পর্যন্ত ক্রমান্বয়ে উষ্ণতা বেড়ে যেতে থাকে।

উষ্ণতা

 

(খ) ভূ-ত্বক স্তরকে শিলামণ্ডল বলেও জানা যায়।

শিলামণ্ডল
(গ) মাটি জৈবিক এবং অজৈবিক পদার্থতে গঠিত।

জৈবিক এবং অজৈবিক
(ঘ) ম্যাগমার থেকে উৎপত্তি হওয়া শিলাকে আগ্নেয় শিলা বলে।

আগ্নেয়
(ঙ) খনিজগুলো সাধারণত কঠিন পদার্থ।

কঠিন

 

৩। সংক্ষিপ্ত উত্তর লেখো: (৩০টি শব্দের মধ্যে) (পৃষ্ঠা ২৯)

 

(ক) ভূ-ত্বক বলতে কী বোঝ?

উত্তরঃ  পৃথিবীর উপরিভাগের কঠিন আবরণটিকে ভূ-ত্বক বলা হয় এটি গড়ে প্রায় ২০ কিলোমিটার পুরু এবং পাহাড়-পর্বত, সমভূমি, সাগর ইত্যাদি ভূ-অবয়বসমূহ ভূ-ত্বকে অবস্থিত

(খ) আগ্নেয় শিলা কাকে বলে?

উত্তরঃ পৃথিবীর অন্তর্ভাগে থাকা গলিত, উত্তপ্ত পদার্থ (ম্যাগমা) শীতল ও কঠিন হয়ে যে শিলাতে পরিণত হয়, তাকে আগ্নেয় শিলা বলে এটিকে প্রাথমিক শিলাও বলা হয়

(গ) মাটি বলতে কী বোঝো?

উত্তরঃ ভূ-ত্বকের শিলাগুলো শীত, তাপ, বায়ু, বৃষ্টিপাত ইত্যাদির প্রভাবে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে এবং জৈবিক ও অজৈবিক পদার্থ দিয়ে গঠিত কোমল স্তরটিকে মাটি বলে

(ঘ) খনিজ কী?

উত্তরঃ পৃথিবীর খোলস বা আবরণে প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্টি হওয়া অজৈবিক কঠিন পদার্থসমূহ হল খনিজ এদের কিছু নির্দিষ্ট ধর্ম (যেমন: বর্ণ, কাঠিন্য) আছে

(ঙ) ‘হিউমাস’ কাকে বলে?

উত্তরঃ ঘাস-বন, লতা-পাতা, জীবজন্তুর মৃতদেহ ইত্যাদি জৈবিক পদার্থ পচে এবং অণুজীবের প্রভাবে বিয়োজিত হয়ে গাঢ় রঙের যে উপাদানের সৃষ্টি করে, তাকে ‘হিউমাস’ বলা হয়


 

৪। উত্তর লেখো- (১০০টি শব্দের মধ্যে) (পৃষ্ঠা ৩০)

 

(ক) পৃথিবীর পৃষ্ঠ থেকে অভ্যন্তর ভাগ পর্যন্ত প্রধান স্তর কয়টি এবং কী কী? ছবি সহ বুঝিয়ে লেখো।

পৃথিবীর অভ্যন্তর ভাগকে পদার্থগুলোর ভিন্নতা ও গুণাগুণের ভিত্তিতে তিনটি প্রধান স্তরে ভাগ করা হয়েছে:

১. ভূ-ত্বক (Crust): পৃথিবীর উপরিভাগের সবচেয়ে পাতলা কঠিন আবরণ

২. গুরুমণ্ডল (Mantle): ভূ-ত্বকের ঠিক নীচের স্তর, যা প্রায় ২,৯০০ কিলোমিটার পুরু

৩. কেন্দ্রমণ্ডল (Core): গুরুমণ্ডলের নীচে কেন্দ্রকে বেষ্টন করে থাকা গভীরতম স্তর, যা প্রায় ৩,৪৮৬ কিলোমিটার পুরু এবং উত্তপ্ত গলিত অবস্থায় আছে

Shutterstock

(খ) শিলা কয়প্রকার এবং কী কী বুঝিয়ে লেখো।

উৎপত্তি অনুযায়ী শিলাকে প্রধানত তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়:

১. আগ্নেয় শিলা (Igneous Rock): পৃথিবীর অভ্যন্তরের গলিত ম্যাগমা শীতল ও কঠিন হয়ে এই শিলার সৃষ্টি করে । (যেমন: গ্র্যানাইট)।

২. পাললিক শিলা (Sedimentary Rock): আগ্নেয় শিলা ভেঙে সৃষ্ট চূর্ণবিচূর্ণ অংশ স্তরে স্তরে জমাট বেঁধে এই শিলা তৈরি করে । (যেমন: চুনাপাথর)।

৩. রূপান্তরিত শিলা (Metamorphic Rock): আগ্নেয় ও পাললিক শিলা অধিক চাপ ও তাপের প্রভাবে পরিবর্তিত হয়ে এই শিলার সৃষ্টি করে । (যেমন: মার্বেল)।


(গ) শিলা এবং মাটির পার্থক্যগুলি লেখো।

শিলা (Rock) মাটি (Soil)
শিলা হল কঠিন এবং অজৈবিক পদার্থ দ্বারা গঠিত।

মাটি হল কোমল এবং জৈবিক ও অজৈবিক পদার্থ দ্বারা গঠিত।

এটি শিলামণ্ডলের মূল আবরণ এটি শিলা চূর্ণবিচূর্ণ হওয়ার ফলে সৃষ্ট ভূ-ত্বকের উপরের স্তর

শিলা গঠিত হতে দীর্ঘ সময় লাগে এবং সহজে পরিবর্তিত হয় না। মাটি গঠিত হওয়া একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া যা জলবায়ু ও জৈবিক উপাদানের প্রভাবে ক্রমাগত পরিবর্তিত হয়।


(ঘ) “মাটি ছাড়া গাছপালা, জীব-জন্তু বেঁচে থাকতে পারে না”- উক্তিটি বুঝিয়ে লেখো।

উত্তরঃ  এই উক্তিটি সম্পূর্ণ সঠিক, কারণ উদ্ভিদ জগৎ ও প্রাণী জগৎ উভয়েরই টিকে থাকার জন্য মাটি অপরিহার্যউদ্ভিদ মাটি থেকেই জল ও প্রয়োজনীয় পুষ্টি (খনিজ ও হিউমাস) সংগ্রহ করে বেঁচে থাকে উদ্ভিদ হল খাদ্যশৃঙ্খলের ভিত্তি, তাই উদ্ভিদ ধ্বংস হলে তৃণভোজী এবং মাংসাশী সকল প্রাণীই খাদ্যের অভাবে বিলুপ্ত হবে এছাড়াও, মানুষের বাসস্থান নির্মাণ এবং খাদ্য উৎপাদন সরাসরি মাটির উর্বরতার ওপর নির্ভরশীল


(ঙ) মাটি গঠনে জলবায়ুর প্রভাব অপরিহার্য” কথাটি বুঝিয়ে লেখো।

উত্তরঃ  মাটি গঠনে জলবায়ুর প্রভাব অপরিহার্য কারণ শিলা ভেঙে চূর্ণবিচূর্ণ (বিচূর্ণীভবন) হয়ে মাটিতে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়া জলবায়ুর উপাদান দ্বারা নিয়ন্ত্রিত শীত, তাপ, বায়ু ও বৃষ্টিপাতের কারণে শিলাতে সংকোচন-প্রসারণ হয়ে ফাটল ধরে এবং তা ভেঙে চূর্ণ হয় এরপর বায়ু, নদী ও হিমবাহ এই চূর্ণ অংশগুলিকে বহন করে জমা করে । এভাবে জলবায়ুর বিভিন্ন কারক একযোগে কাজ করে দীর্ঘকাল ধরে মাটির সৃষ্টি করে।


(চ) ভূ-ত্বকে পাওয়া শিলা, খনিজ এবং মাটির মধ্যে সম্বন্ধ বিচার করো।

উত্তরঃ  ভূ-ত্বকে প্রাপ্ত শিলা, খনিজ ও মাটি একে অপরের সঙ্গে নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত:

  • খনিজ থেকে শিলা: শিলা হলো খনিজের (যেমন: কোয়ার্টজ, সিলিকন) সমষ্টি। শিলা গঠিত হয় এই খনিজ উপাদানগুলি দ্বারা
  • শিলা থেকে মাটি: শিলা জলবায়ুর প্রভাবে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে তার সাথে জৈবিক পদার্থ (হিউমাস) মিশে মাটি তৈরি করে
  • মাটি ও খনিজ: শিলা থেকে সৃষ্টি হওয়ায়, মাটিতেও শিলার খনিজ উপাদানগুলি পাওয়া যায়, যা উদ্ভিদের পুষ্টি যোগায় । সুতরাং, শিলা ও খনিজ মাটির মূল উপাদান, আর মাটি হলো জীবজগতের ভিত্তি

 

৫। নীচের তালিকায় বিভিন্ন ধরনের শিলার নাম দেওয়া আছে। সেগুলি নীচের তালিকাতে দেওয়া ধরনে শ্রেণিভুক্ত করো। (পৃষ্ঠা ৩২)

 

আগ্নেয় শিলা পাললিক শিলা রূপান্তরিত শিলা
গ্রেনাইট
বালিপাথর
মার্বেল  

 

ব্যাসল্ট কয়লা স্লেট  

গ্রেব্রো চুনাপাথর

নিস  

কংলোমারেট সিস্ট  

কাদাশিলা (Shale) কোয়ার্টজাইট  


 

৬। দলগত ভাবে আলোচনা করে লেখো: (পৃষ্ঠা ৩২)

 

(ক) মাটির সাথে উদ্ভিদ এবং প্রাণী জগতের সম্মন্ধ কী?

উত্তরঃ   মাটি উদ্ভিদ ও প্রাণী জগতের অবিচ্ছেদ্য অংশএটি উদ্ভিদের পুষ্টি ও জল সরবরাহের প্রধান মাধ্যম, এবং উদ্ভিদ থেকেই প্রাণীজগতের খাদ্যশৃঙ্খল শুরু হয়। এছাড়া, মাটি মানুষের কৃষিকাজ ও বাসস্থান সহ সকল জীবনের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে

(খ) যদি পৃথিবীর উপরিভাগের উর্বর মাটি শেষ হয়ে যায় তখন কী হবে?

উত্তরঃ  যদি উর্বর মাটি শেষ হয়ে যায়, তবে খাদ্য উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাবে এর ফলে তীব্র খাদ্য সংকট দেখা দেবে এবং উদ্ভিদ ও প্রাণীর জীবন বিপন্ন হবে । এটি বসবাসের সমস্যা সৃষ্টি করবে এবং সামগ্রিকভাবে জীবজগতের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *