১.বিজ্ঞানের আশীর্বাদ না অভিশাপ
ভূমিকা:
আধুনিক যুগ বিজ্ঞানের যুগ। বিজ্ঞান মানব সভ্যতাকে উন্নতির শিখরে পৌঁছে দিয়েছে। আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্র আজ বিজ্ঞানের আলোয় আলোকিত। কিন্তু মুদ্রার অপর পিঠের মতো বিজ্ঞানের কিছু অন্ধকার দিকও রয়েছে। তাই প্রশ্ন জাগে, বিজ্ঞান কি সত্যিই মানবজাতির জন্য কেবলই আশীর্বাদ, নাকি এর মধ্যে অভিশাপও লুকিয়ে আছে?
বিজ্ঞানের আশীর্বাদ:
বিজ্ঞানের কল্যাণকর দিক অপরিসীম। চিকিৎসার ক্ষেত্রে এর অবদান অবিস্মরণীয়। পেনিসিলিন, এক্স-রে, এবং বিভিন্ন জীবনদায়ী ঔষধ আবিষ্কারের ফলে মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে বিজ্ঞান এক যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছে। টেলিফোন, মোবাইল এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমে আজ পৃথিবী আমাদের হাতের মুঠোয়। শিক্ষা, কৃষি, শিল্প—সব ক্ষেত্রেই বিজ্ঞানের জয়যাত্রা অব্যাহত।
বিজ্ঞানের অভিশাপ:
বিজ্ঞানের অপপ্রয়োগ মানব সভ্যতাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে দাঁড় করিয়েছে। পারমাণবিক বোমা, যা হিরোশিমা ও নাগাসাকির মতো শহরে মুহূর্তের মধ্যে লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন কেড়ে নিয়েছিল, তা বিজ্ঞানের ভয়ংকরতম প্রয়োগ। শিল্পবিপ্লবের ফলে পরিবেশ দূষণ এক ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। বিজ্ঞানের অতিরিক্ত ব্যবহার মানুষকে অলস করে তুলছে এবং মোবাইল ও ইন্টারনেটের প্রতি আসক্তি তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্যৎ নষ্ট করছে।
উপসংহার:
আসলে, বিজ্ঞান নিজে আশীর্বাদ বা অভিশাপ কোনোটিই নয়। এটি একটি শক্তি, যার প্রয়োগের ওপর এর ফলাফল নির্ভর করে। মানুষ যদি এই শক্তিকে সৃষ্টির কাজে লাগায়, তবে এটি আশীর্বাদ। আর যদি ধ্বংসের কাজে ব্যবহার করে, তবে তা অভিশাপে পরিণত হয়।
২.ছাত্রজীবনে ইন্টারনেটের প্রভাব
ভূমিকা:
বর্তমান যুগ তথ্যপ্রযুক্তির যুগ, আর এই যুগের সবচেয়ে বড় আবিষ্কার হলো ইন্টারনেট। ছাত্রজীবনে ইন্টারনেটের প্রভাব অপরিসীম। এটি যেমন জ্ঞানের বিশাল ভান্ডার খুলে দিয়েছে, তেমনই এর অপব্যবহারের কিছু ঝুঁকিও রয়েছে।
সুফল:
ইন্টারনেট ছাত্রছাত্রীদের জন্য এক অসাধারণ সহায়ক। যেকোনো বিষয়ে তথ্য খোঁজার জন্য এখন আর বইয়ের পাতায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব্যয় করতে হয় না; এক ক্লিকেই সমস্ত তথ্য হাতের মুঠোয় চলে আসে। অনলাইন ক্লাস, শিক্ষামূলক ভিডিও এবং বিভিন্ন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীরা ঘরে বসেই পড়াশোনা করতে পারে। ই-মেইল এবং বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যমে তারা শিক্ষক ও বন্ধুদের সঙ্গে সহজেই যোগাযোগ রাখতে পারে।
কুফল:
ইন্টারনেটের অতিরিক্ত ব্যবহার ছাত্রছাত্রীদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। সোশ্যাল মিডিয়া, অনলাইন গেমস এবং অপ্রয়োজনীয় বিষয়ে সময় নষ্ট করার ফলে তাদের পড়াশোনার মারাত্মক ক্ষতি হয়। একটানা স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকার ফলে চোখের সমস্যা, ঘুমের অভাব এবং অন্যান্য শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়া, সাইবার বুলিং এবং ক্ষতিকারক বিষয়বস্তুর সংস্পর্শে আসার ঝুঁকিও থাকে।
উপসংহার:
ইন্টারনেট একটি ধারালো ছুরির মতো, যা সাবধানে ব্যবহার করতে হয়। ছাত্রছাত্রীদের উচিত পড়াশোনার প্রয়োজনে ইন্টারনেট ব্যবহার করা এবং এর ক্ষতিকর দিকগুলো থেকে নিজেকে দূরে রাখা। শিক্ষক ও অভিভাবকদের তত্ত্বাবধানে এর সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলে এটি ছাত্রজীবনের এক অমূল্য সম্পদ হতে পারে।
৩.দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান
ভূমিকা:
আমরা এক বিজ্ঞানময় যুগে বাস করি। সকালে ঘুম থেকে ওঠা থেকে শুরু করে রাতে ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত আমাদের জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত বিজ্ঞানের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বিজ্ঞান ছাড়া আমাদের জীবন আজ অকল্পনীয়।
বিজ্ঞানের প্রয়োগ:
আমাদের দিন শুরু হয় অ্যালার্ম ঘড়ির শব্দে, যা বিজ্ঞানেরই অবদান। এরপর টুথব্রাশ, টুথপেস্ট, সাবান—সবই বিজ্ঞানের দান। রান্নাঘরে গ্যাস ওভেন, ফ্রিজ, মাইক্রোওয়েভ আমাদের জীবনকে সহজ করে দিয়েছে। यातायातের জন্য বাস, ট্রেন, গাড়ি আমাদের সময় বাঁচায়। বিনোদনের জন্য টেলিভিশন, রেডিও, মোবাইল ফোন আমাদের অবসরের সঙ্গী। বিদ্যুৎ আবিষ্কার না হলে আধুনিক সভ্যতা হয়তো অন্ধকারেই থেকে যেত। ফ্যান, লাইট, কম্পিউটার—সবই বিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীল। কৃষিক্ষেত্রে ট্রাক্টর, উন্নত সার ও কীটনাশক ব্যবহার করে আজ খাদ্য উৎপাদন বহুগুণ বেড়েছে।
উপসংহার:
বিজ্ঞান আমাদের জীবনযাত্রাকে আরামদায়ক, দ্রুত এবং সুরক্ষিত করেছে। এটি আমাদের দিয়েছে উন্নত স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং স্বাচ্ছন্দ্য। এককথায়, বিজ্ঞান আমাদের দৈনন্দিন জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে।
৪.মোবাইল ফোনের ভালো-মন্দ
ভূমিকা:
আধুনিক বিজ্ঞানের এক বিস্ময়কর আবিষ্কার হলো মোবাইল ফোন। এটি আজ কেবল কথা বলার যন্ত্র নয়, বরং আমাদের জীবনের এক অপরিহার্য অংশ। তবে এর যেমন অনেক ভালো দিক আছে, তেমনি কিছু মন্দ দিকও রয়েছে।
ভালো দিক:
মোবাইল ফোনের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো দ্রুত যোগাযোগ। এর মাধ্যমে আমরা পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে থাকা মানুষের সঙ্গে মুহূর্তে কথা বলতে পারি। ইন্টারনেট সংযোগযুক্ত স্মার্টফোন আজ একটি ছোট কম্পিউটার। এর সাহায্যে পড়াশোনা, বিনোদন, ব্যাঙ্কিং, এবং তথ্য সংগ্রহ—সবই করা সম্ভব। বিপদের সময় দ্রুত সাহায্য চাইতে বা নিজের অবস্থান জানাতেও এটি অত্যন্ত কার্যকরী।
মন্দ দিক:
মোবাইল ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার, বিশেষ করে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে, এক বড় সমস্যা। পড়াশোনার সময় নষ্ট করে সোশ্যাল মিডিয়া বা গেমসে মগ্ন থাকা তাদের ভবিষ্যতের জন্য ক্ষতিকর। একটানা মোবাইল ব্যবহার চোখের ক্ষতি করে এবং ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়। এর মাধ্যমে সাইবার অপরাধ এবং ভুল তথ্যের বিস্তারও খুব সহজে হয়। মোবাইল ফোনের প্রতি আসক্তি মানুষকে পরিবার ও সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করে তোলে।
উপসংহার:
মোবাইল ফোন একটি অত্যন্ত দরকারি যন্ত্র, কিন্তু এর ব্যবহার নিয়ন্ত্রিত হওয়া উচিত। আমাদের উচিত এর ভালো দিকগুলোকে কাজে লাগানো এবং মন্দ দিকগুলো সম্পর্কে সচেতন থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখা।
৫.পরিবেশ দূষণ ও তার প্রতিকার
ভূমিকা:
আমাদের চারপাশের মাটি, জল, বায়ু, গাছপালা নিয়েই আমাদের পরিবেশ। সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য একটি নির্মল পরিবেশ অপরিহার্য। কিন্তু মানুষের বিভিন্ন কার্যকলাপের ফলে আজ আমাদের পরিবেশ মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে।
দূষণের কারণ ও প্রকারভেদ:
পরিবেশ দূষণ মূলত চার প্রকারের—বায়ু দূষণ, জল দূষণ, মাটি দূষণ এবং শব্দ দূষণ। কলকারখানা ও যানবাহনের ধোঁয়া বায়ুকে দূষিত করে। কারখানার রাসায়নিক বর্জ্য ও নর্দমার ময়লা জলে মিশে জলকে দূষিত করে। প্লাস্টিক ও রাসায়নিক সারের অতিরিক্ত ব্যবহার মাটির উর্বরতা নষ্ট করে। গাড়ির হর্ন ও মাইকের উচ্চ আওয়াজ শব্দ দূষণ ঘটায়।
প্রতিকারের উপায়:
এই ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে পরিবেশকে রক্ষা করা আমাদের সকলের দায়িত্ব। এর জন্য বেশি করে গাছ লাগাতে হবে, কারণ গাছ বাতাসকে शुद्ध রাখে। কলকারখানা ও যানবাহনের দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে। প্লাস্টিক ও পলিথিনের ব্যবহার কমাতে হবে। সর্বোপরি, পরিবেশ রক্ষার জন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।
উপসংহার:
আমাদের পৃথিবী আমাদের মা। এই পৃথিবীকে দূষণের হাত থেকে বাঁচানো আমাদের নৈতিক কর্তব্য। সরকার এবং সাধারণ মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমেই একটি সুন্দর ও দূষণমুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলা সম্ভব।
৬.অসমের বন্যা সমস্যা ও তার সমাধান
ভূমিকা:
অসম “নীল পাহাড় আর লাল নদীর দেশ” হিসেবে পরিচিত। ব্রহ্মপুত্র ও বরাক নদীর অববাহিকায় অবস্থিত এই সুন্দর রাজ্যটি প্রতি বছর এক ভয়ংকর প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হয়, যার নাম বন্যা। বন্যা অসমের এক অন্যতম প্রধান সমস্যা।
বন্যার কারণ:
অসমে বন্যার প্রধান কারণ হলো মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে হওয়া প্রবল বৃষ্টিপাত। এর ফলে ব্রহ্মপুত্র ও তার উপনদীগুলো ফুলেফেঁপে ওঠে এবং দুই কূল প্লাবিত করে। ব্যাপক হারে বনভূমি ধ্বংসের ফলে মাটি ক্ষয় বাড়ছে, যা নদীর তলদেশ ভরাট করে দিচ্ছে এবং নদীর নাব্যতা কমিয়ে দিচ্ছে।
ফলাফল ও সমাধান:
বন্যার কারণে অসমের মানুষের জীবন ও জীবিকা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। হাজার হাজার হেক্টর কৃষিজমি ও ঘরবাড়ি জলের তলায় চলে যায়। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা প্রয়োজন। নদীগুলোর নিয়মিত খনন করে পলি অপসারণ করতে হবে। নদীর তীরে মজবুত ও উঁচু বাঁধ নির্মাণ করা আবশ্যক। পার্বত্য অঞ্চলে ব্যাপক হারে বৃক্ষরোপণ করে মাটির ক্ষয় রোধ করতে হবে।
উপসংহার:
বন্যা অসমের এক অভিশাপ। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান না হলে রাজ্যের সার্বিক উন্নতি সম্ভব নয়। তাই একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে এই দুর্যোগ মোকাবিলা করা অত্যন্ত জরুরি।
৭.ছাত্রসমাজ ও শৃঙ্খলা
ভূমিকা:
ছাত্রজীবন হলো ভবিষ্যৎ জীবনের প্রস্তুতির সময়। এই সময়ে শৃঙ্খলা বা নিয়মানুবর্তিতার গুরুত্ব অপরিসীম। শৃঙ্খলা হলো সঠিক সময়ে সঠিক কাজটি করা এবং নিয়মকানুন মেনে চলা।
শৃঙ্খলার গুরুত্ব:
শৃঙ্খলা ছাত্রছাত্রীদের চরিত্র গঠনে সহায়তা করে। এটি তাদের সময়ানুবর্তী, পরিশ্রমী এবং দায়িত্ববান হতে শেখায়। একজন শৃঙ্খলাবদ্ধ ছাত্র পড়াশোনায় ভালোভাবে মনোযোগ দিতে পারে এবং পরীক্ষায় ভালো ফল করে। খেলাধুলা, ব্যায়াম এবং সময়মতো পড়াশোনা—এই সবকিছুই শৃঙ্খলার অংশ। শৃঙ্খলার অভাবেই জীবনে বিশৃঙ্খলা ও ব্যর্থতা নেমে আসে।
উপসংহার:
শৃঙ্খলা ছাড়া সাফল্য লাভ করা প্রায় অসম্ভব। তাই প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীর উচিত শৈশব থেকেই শৃঙ্খলার অভ্যাস গড়ে তোলা, যা তাদের একটি সুন্দর ও সফল ভবিষ্যৎ গঠনে সহায়তা করবে।
৮.বিশ্ব উষ্ণায়ন (Global Warming)
ভূমিকা:
বিশ্ব উষ্ণায়ন বা গ্লোবাল ওয়ার্মিং হলো পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা ধীরে ধীরে বেড়ে যাওয়া। এটি বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে গুরুতর পরিবেশগত সমস্যাগুলোর মধ্যে অন্যতম।
কারণ ও ফলাফল:
বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রধান কারণ হলো গ্রিনহাউস গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধি। কলকারখানা, যানবাহন থেকে নির্গত কার্বন ডাইঅক্সাইড, মিথেন ইত্যাদি গ্যাস পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে একটি চাদরের মতো স্তর তৈরি করে, যা সূর্যের তাপকে আটকে রাখে। এর ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়ছে। বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে বরফ গলে সমুদ্রের জলস্তর বাড়ছে, যার ফলে উপকূলীয় অঞ্চলগুলো ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
প্রতিকার:
এই সমস্যা মোকাবিলা করার জন্য जीवाश्म জ্বালানির ব্যবহার কমাতে হবে এবং সৌরশক্তি, বায়ুশক্তির মতো বিকল্প শক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। প্রচুর পরিমাণে গাছ লাগাতে হবে, কারণ গাছ কার্বন ডাইঅক্সাইড শোষণ করে। এই বিষয়ে বিশ্বজুড়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করা অত্যন্ত জরুরি।
উপসংহার:
বিশ্ব উষ্ণায়ন মানব সভ্যতার অস্তিত্বের জন্য এক বড় হুমকি। এই পৃথিবীকে রক্ষা করার জন্য আমাদের সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে।
৯.তোমার জীবনের লক্ষ্য
ভূমিকা:
জীবনে লক্ষ্য না থাকলে তা অর্থহীন হয়ে পড়ে। লক্ষ্যহীন জীবন অনেকটা হালবিহীন নৌকার মতো। তাই প্রতিটি মানুষের জীবনে একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকা উচিত। আমার জীবনেও একটি লক্ষ্য আছে, আর তা হলো একজন আদর্শ শিক্ষক হওয়া।
লক্ষ্য নির্ধারণের কারণ:
শিক্ষক হলেন একজন মানুষ গড়ার কারিগর। তিনি জাতির মেরুদণ্ড তৈরি করেন। একজন আদর্শ শিক্ষকই পারেন ছাত্রছাত্রীদের মনে জ্ঞান, নৈতিকতা এবং মনুষ্যত্বের আলো জ্বালিয়ে দিতে। আমি আমার শিক্ষকদের মতোই আগামী প্রজন্মকে সঠিক পথে চালিত করে দেশ ও দশের সেবা করতে চাই।
লক্ষ্য পূরণের প্রস্তুতি:
আমি জানি, আমার এই লক্ষ্য পূরণের পথ সহজ নয়। এর জন্য প্রয়োজন কঠোর পরিশ্রম এবং গভীর জ্ঞান। আমি বর্তমানে পড়াশোনায় সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়েছি, যাতে ভবিষ্যতে উচ্চশিক্ষা লাভ করতে পারি।
উপসংহার:
আমার জীবনের একমাত্র স্বপ্ন হলো একজন আদর্শ শিক্ষক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা। আমি বিশ্বাস করি, কোনো কাজ যদি সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে করা যায়, তবে সাফল্য আসবেই।
১০.একটি স্মরণীয় ভ্রমণ
ভূমিকা:
ভ্রমণ মানুষের জ্ঞান বৃদ্ধি করে এবং মনকে সতেজ করে তোলে। আমার জীবনেও এমন একটি ভ্রমণের অভিজ্ঞতা আছে, যা আমি কখনো ভুলব না। গত শীতে আমি আমার পরিবারের সঙ্গে মেঘালয়ের রাজধানী শিলং ও চেরাপুঞ্জি বেড়াতে গিয়েছিলাম।
ভ্রমণের অভিজ্ঞতা:
গুয়াহাটি থেকে পাহাড়ি পথে শিলং যাওয়ার দৃশ্য ছিল অসাধারণ। পাইন গাছে ঘেরা আঁকাবাঁকা রাস্তা দিয়ে আমাদের গাড়ি এগিয়ে চলছিল। শিলং-কে কেন ‘প্রাচ্যের স্কটল্যান্ড’ বলা হয়, তা সেখানে পৌঁছেই বুঝতে পারলাম। আমরা এলিফ্যান্ট ফলস, শিলং পিক এবং সুন্দর উমিয়াম লেক দেখলাম। সবচেয়ে ভালো লেগেছিল চেরাপুঞ্জির যাত্রা। সেখানকার নোহকালিকাই জলপ্রপাত এবং মাওসমাই গুহার অভিজ্ঞতা ছিল রোমাঞ্চকর। মেঘের মধ্যে দিয়ে হাঁটার অনুভূতি ছিল অবিশ্বাস্য।
উপসংহার:
এই ভ্রমণটি আমার জীবনে এক স্মরণীয় অধ্যায় হয়ে থাকবে। পাহাড়ের শান্ত ও নির্মল পরিবেশ আমার মনকে আনন্দে ভরিয়ে দিয়েছিল। প্রকৃতির এত কাছাকাছি যাওয়ার সুযোগ পেয়ে আমি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি।
১১.তোমার প্রিয় ঋতু
ভূমিকা:
ষড়ঋতুর দেশ আমাদের ভারতবর্ষ। প্রতিটি ঋতুরই নিজস্ব রূপ ও সৌন্দর্য আছে। তবে আমার সবচেয়ে প্রিয় ঋতু হলো শরৎ।
শরৎকালের বর্ণনা:
বর্ষার ঘন কালো মেঘ কেটে গিয়ে শরতের আকাশে পেঁজা তুলোর মতো সাদা মেঘ ভেসে বেড়ায়। ঝলমলে রোদে চারদিক ভরে ওঠে। এই সময় আবহাওয়া খুব মনোরম থাকে; না গরম, না ঠান্ডা। নদীর ধারে এবং গ্রামের মাঠে মাঠে সাদা কাশফুলের দোলা মনকে আনন্দে ভরিয়ে তোলে। শিউলি ফুলের মিষ্টি গন্ধে বাতাস ম ম করে।
উৎসবের ঋতু:
শরৎকাল মূলত উৎসবের ঋতু। এই সময়েই বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। পূজার আনন্দে ছোট-বড় সবাই মেতে ওঠে। নতুন পোশাক, মণ্ডপে মণ্ডপে ঘোরা এবং বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা—সব মিলিয়ে এক অসাধারণ পরিবেশ তৈরি হয়।
উপসংহার:
শরতের এই স্নিগ্ধ ও উৎসবমুখর রূপের জন্যই এটি আমার সবচেয়ে প্রিয় ঋতু। এই ঋতু আমার মনে শান্তি ও আনন্দ নিয়ে আসে।
১২.সংবাদপত্রের প্রয়োজনীয়তা
ভূমিকা:
সংবাদপত্রকে বলা হয় সমাজের দর্পণ। এটি প্রতিদিন আমাদের কাছে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন খবর পৌঁছে দেয়। জ্ঞান অর্জনের জন্য এবং পারিপার্শ্বিক জগৎ সম্পর্কে অবগত থাকার জন্য সংবাদপত্রের গুরুত্ব অপরিসীম।
গুরুত্ব ও ভূমিকা:
সংবাদপত্র আমাদের রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক খবর জানায়। এটি সরকারের কাজকর্মের ওপর নজর রাখে এবং জনগণের মতামত প্রকাশ করে। সম্পাদকীয় কলামে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করা হয়, যা আমাদের চিন্তাভাবনাকে উন্নত করে। ছাত্রছাত্রীদের জন্য সংবাদপত্র জ্ঞান অর্জনের এক বড় উৎস। এছাড়া, খেলাধুলা, বিনোদন, এবং চাকরির খবরও আমরা সংবাদপত্রের মাধ্যমে পাই।
উপসংহার:
যদিও বর্তমানে টেলিভিশন এবং ইন্টারনেটের যুগে সংবাদপত্রের জনপ্রিয়তা কিছুটা কমেছে, তবুও এর গুরুত্বকে অস্বীকার করা যায় না। একটি নিরপেক্ষ ও নির্ভীক সংবাদপত্র গণতন্ত্রের এক অপরিহার্য অঙ্গ।
