Class 10 Social Science Chapter 12 মুদ্রা এবং ব্যাঙ্ক ব্যবস্থা

অতি সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও

প্রশ্ন ১। বিনিময় প্রথা কী

উত্তরঃ একটি বস্তুর পরিবর্তে অন্য  বস্তু প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে পেলে বা গ্রহণ করলে তাকে বিনিময় প্রথা বলে । ।

প্রশ্ন ২। মুদ্রা কী ?

উত্তরঃ বিনিময়ের মাধ্যম হিসাবে যে বস্তু সাধারণভাবে গ্রহণযোগ্য এবং একই সঙ্গে যে মূল্যের পরিমাপ এবং মূল্যের ভাণ্ডার হিসাবে বা সঞ্চয়ের মাধ্যম হিসাবে কাজ করে তাকে মুদ্রা বলে ।

প্রশ্ন ৩। মুদ্রার একটি মুখ্য কার্য উল্লেখ করো  

উত্তরঃ মুদ্রা বিনিময়ের মাধ্যম হতে হবে ।

প্রশ্ন ৪। অবিহিত মুদ্রার একটি উদাহরণ দাও  

উত্তরঃ চেক ।

প্রশ্ন ৫। প্রতিনিধিত্বমূলক কাগজি মুদ্রা কী

উত্তরঃ কাগজী মুদ্রাই ধাতুগত মুদ্রার স্থান অধিকার করেছে । বিনিময়ের মাধ্যম হিসাবে কাগজী মুদ্রার ব্যবহার হয়েছে । পূর্বের কাগজী মুদ্রা সম মূল্যের সোনা বা রূপা হয়ে পরিবর্তিত হয়েছিল । এই ধরনের কাগজী মুদ্রাকে প্রতিনিধিত্বমূলক কাগজী মুদ্রা বলে।

প্রশ্ন ৬। ব্যাঙ্ক কী

উত্তরঃ যে প্রতিষ্ঠান মানুষকে টাকা – পয়সা এবং মূল্যবান বস্তু , যেমন— সোনা নিরাপদে জমা রাখার সুবিধা দেয় এবং দরকারী সময়ে মানুষকে টাকা ধার বা লোন দেয় তাকে ব্যাঙ্ক ব্যল ।

প্রশ্ন ৭। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া কোন সনে স্থাপিত হয়েছিল

উত্তরঃ ১৯৩৫ সনে ।

প্রশ্ন ৮। চলিত আমানত কী

উত্তরঃ ব্যাঙ্কে চলিত আমানতে সঞ্চয় করলে বা টাকা জমা রাখলে , সঞ্চয়কারী বা আমানতকারী নিজের সঞ্চয় যে কোন সময়ে চেকের মাধ্যমে ব্যাঙ্ক থেকে উঠিয়ে আনতে পারে । সাধারণত ব্যবসায়ীগণ চলিত আমানত ব্যাঙ্কে ব্যবহার করে ।

সংক্ষেপে উত্তর দাও 

প্রশ্ন ১। সংগতিবিহীন অভাব বিনিময় প্রথায় কীরূপে সমস্যার সৃষ্টি করে

উত্তরঃ একটি দ্রব্যের সঙ্গে অন্য দ্রব্যের বিনিময় করিতে হইলে উৎপাদনকারী দুইজনেরই একের অন্যের উৎপাদিত দ্রব্যের অভাব থাকিতে হইবে। অভাবে সঙ্গতিহীনতা বলিতে কোন ব্যক্তির একটি দ্রব্যের চাহিদা এবং অপর ব্যক্তির ঠিক একই দ্রব্যের চাহিদাকে বুঝায়। অভাবের মধ্যে অসঙ্গতি থাকিলে বিনিময় কার্য সম্পাদন হয় না।।

প্রশ্ন ২। মূল্যের ভাণ্ডার বলতে কী বোঝো

উত্তরঃ মুদ্রা মূল্যের ভাণ্ডার হিসাবে বা সঞ্চয়ের মাধ্যম হিসাবে কাজ করে।মুদ্রার সাহায্যে ক্রয়যোগ্য বস্তু ভবিষ্যতে সঞ্চয় করা যায় । কিন্তু বস্তু সঞ্চয় করা অপেক্ষা মুদ্রা পরিমাপে বস্তুর মূল্য সঞ্চয় করা বেশি সুবিধাজনক । আবার উৎপাদনের কাজে মুদ্রাকে নিয়োগ করলে ইহা মূলধন হিসাবে পরিগণিত হয় । মুদ্রা হল সা – সামগ্রীর মূল্যের ভাণ্ডার ।

প্রশ্ন ৩। মুদ্রার সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যটি কী এবং কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ

উত্তরঃ মুদ্রার সাধারণ গ্রহণযোগ্যতা থাকতে হবে , তা না হলে মুদ্রা বিনিময়ের মাধ্যম হতে পারবে না। মুদ্রার বৈশিষ্ট্যসমূহের মধ্যে এইটিই সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য ।

প্রশ্ন ৪। মুদ্রার তারল্য গুণ কী

উত্তরঃ মুদ্রার তারল্য গুণ থাকতে হবে । তারল্য গুণ যে কোন মুদ্রা সমমূল্যের সা – সামগ্রীতে তৎক্ষণাৎ এবং প্রত্যক্ষভাবে রূপান্তরিত হলেই মুদ্রার তারল্য গুণ আছে বলে বলতে হবে । মুদ্রা সামগ্রীতে তৎকালীনভাবে এবং প্রত্যক্ষভাবে রূপান্তরিত হয় ।

প্রশ্ন ৫। মুদ্রা জিনিসপত্রের মূল্যের ঐক্যযুক্ত মাপকাঠিব্যাখ্যা করো  

উত্তরঃ মুদ্রা সামগ্রীর মূল্যের মাপকাঠি হিসাবেও কার্য সম্পাদন করে । সকল আর্থিক সামগ্রীর মূল্য আছে । মুক্ত সামগ্রীর মূল্য থাকে না। যেমন— বাতাস , সূর্যের রশ্মি , নদীর জল ইত্যাদির জন্য মূল্য দিতে লাগে না । যেগুলি সামগ্রীর বাজারে বেচা – কেনা বা ক্রয় – বিক্রয় হয় সেইগুলি সামগ্রীর মূল্য আছে । মুদ্রার রূপে প্রকাশ করা সামগ্রীর বিনিময় মূল্যই হল সামগ্রীটির দাম । মুদ্রা সামগ্রীর মূল্যের উভয়েরই মাপকাঠি ।

,প্রশ্ন ৬। সসীম বিহিত অসীম বিহিত মুদ্রার পার্থক্য কী

উত্তরঃ যে বিহিত মুদ্রার সহায়তায় বা সাহায্যে সীমিত মূল্যের লেনদেন সম্পন্ন করা যায় সেই মুদ্রাকে সসীম বিহিত মুদ্রা বলা হয় ।

অপরদিকে অধিক মূল্যের মুদ্রা হবে অসীম বিহিত মুদ্রা । চেক মুদ্রা এই ক্ষেত্রে অসীম বিহিত মুদ্রা হতে পারে । এই মুদ্রার সহায়তায় অধিক মূল্যের লেনদেন সম্পাদন করতে পারা যায় । লাখ লাখ টাকার ব্যবসা এই মুদ্রার সহায়তায় হয় ।

প্রশ্ন ৭। আঞ্চলিক গ্রামীণ ব্যাঙ্ক কী কার্য সম্পাদন করে

উত্তরঃ ১৯৭৫ সনে প্রথমে পাঁচটি আঞ্চলিক গ্রাম্য ব্যাঙ্ক স্থাপন করা হয় । এই ব্যাঙ্কে সম্পাদন করা কাজ দুটি হল ―

( ১ ) ব্যবসায়ী , মহাজন থেকে অত্যধিক সুদ দিয়ে ঋণ নেওয়া গ্রামবাসীদেরকে অতি কম সুদে ঋণ প্রদান করে গরীব গ্রামবাসীকে সহায়তা করা ।

( ২ ) গ্রাম্য সঞ্চয় সংগ্রহ করে বিভিন্ন উৎপাদনমূলক কার্যে সেই সঞ্চয় ব্যয় করা । এই আঞ্চলিক গ্রামীণ ব্যাঙ্কগুলি কৃষি যোগানে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি লাভ করেছে ।

ভারতবর্ষে বর্তমানে ( ২০১৪ সন ) ৫৭ টি আঞ্চলিক গ্রাম্য ব্যাঙ্ক কার্যকরী হয়েছে ।

প্রশ্ন ৮। ব্যাঙ্কবিহীন প্রতিষ্ঠানাদি কোন অর্থে ব্যাঙ্ক থেকে পৃথক

উত্তরঃ যে সব বিত্তীয় প্রতিষ্ঠানে জমা রাখা মুদ্রা জমাকারী চেকের সহায়তায় উঠাতে পারে না এবং হস্তান্তর করতে পারে না সেগুলিকে অনা- ব্যাঙ্ক বিত্তীয় প্রতিষ্ঠান বলা হয় । যেমন — উদ্যোগিক ব্যাঙ্ক । অনা – ব্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠানসমূহে জমাকারীর বীমাকরণের সুবিধা থাকে না ।

অপর দিকে যে সব বিত্তীয় প্রতিষ্ঠানে জমা রাখা মুদ্রা জমাকারী চেকের সহায়তায় উঠাতে পারে বা হস্তান্তর করতে পারে , সেইগুলিকে ব্যাঙ্ক বলে গণ্য করা হয় । ব্যাঙ্কে জমাকারীর সঞ্চয়বীমা প্রথা থাকে ।

সবিস্তারে উত্তর লেখো 

প্রশ্ন ১। বিনিময় প্রথার চারটি অসুবিধে ব্যাখ্যা করো  

উত্তরঃ বিনিময় প্রথার চারটি অসুবিধা নীচে ব্যাখ্যা করা হল—

(১) অভাবের সংগতিহীনতা : একটি দ্রব্যের সঙ্গে অন্য দ্রব্যের বিনিময় করিতে হইলে উৎপাদনকারী দুইজনেরই একের অন্যের উৎপাদিত দ্রব্যের অভাব থাকিতে হইবে। অভাবের মধ্যে অসংগতি থাকিলে বিনিময়কার্য সম্পাদন হয় না।

(২) দ্রব্যের অবিভাজনীয়তা : অনেক দ্রব্য রহিয়াছে; যেমন—গরু, মহিষ, ঘোড়া, ছাগল প্রভৃতি যেগুলিকে বিভক্ত করিলে আর জীবন্ত থাকিবে না। দ্রব্যের এই অবিভাজনীয় দ্রব্যবিনিময়ে অসুবিধা সৃষ্টি করিয়া থাকে।।

(৩) উপযুক্ত পরিমাপের অভাব : দ্রব্যবিনিময়-প্রথার উপযুক্ত পরিমাপের অভাব বিদ্যমান। কোন কোন ক্ষেত্রে অনুমানভিত্তিক পরিমাপ সম্ভব হইলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে ইহা সম্ভব হয় না। যেমন—একজন একটি আপেলের পরিবর্তে দুইটি নারকেল পায়, আবার অন্য জন একটি আপেলের পরিবর্তে একটাই নারিকেল পায়।

(৪) সঞ্চয়ের অসুবিধা : দ্রব্যবিনিময়-প্রথার চতুর্থ অসুবিধা হইতেছেসঞ্চয়ের অসুবিধা। এই প্রথায় দ্রব্যবিনিময়ের কোন মাধ্যম না থাকায় মানুষ ভবিষ্যতের জন্য সকল প্রকার দ্রব্য সঞ্চয় করিয়া রাখিতে পারে না যেহেতু দ্রব্য পচনশীল।

 

প্রশ্ন ২। মুদ্রার যেকোনো চারটি প্রধান বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করো  

উত্তরঃ মুদ্রার চারটি প্রধান বৈশিষ্ট্য নীচে ব্যাখ্যা করা হল—

(১) সাধারণ গ্রহণযোগ্যতা : সাধারণ গ্রহণযোগ্যতা মুদ্রার একটি প্রধান। বৈশিষ্ট্য। সেই বই মুদ্রা যাহা দ্রব্য বিনিময়ের মাধ্যম হিসাবে সর্বজনগ্রাহ্য হয়। সুতরাং মুদ্রা হইতে হইলে বস্তুর সর্বজন গ্রাহ্যতা থাকা বাঞ্ছনীয়।

(2) বিভাজ্যতা : বিভাজ্যতা মুদ্রার একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য। মুদ্রাকে বিভিন্ন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মুদ্রাতে পরিণত করা যায়। ফলে লেনদেনের অনেক সুবিধা হয়।

(৩) সীমিত যোগান : মুদ্রার একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হইল ইহার যোগান সীমিত। যে বস্তুকে মুক্তভাবে পাওয়া যায় তাহাকে মুদ্রা বলা যায় না।

(৪) স্বীকার্যতা : স্বীকার্যত মুদ্রার একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য। ইহার অর্থ হইল মুদ্রাকে অন্যতম মুদ্রা বলিয়া সকলেই স্বীকার করিতে হইবে।

 

প্রশ্ন ৩। মুদ্রার যেকোনো চারটি প্রধান কার্য ব্যাখ্যা করো  

উত্তরঃ নিম্নে মুদ্রার চারটি কার্যাবলী আলোচনা করা হল—

(১) বিনিময়ের মাধ্যম : মুদ্রা বিনিময়ের সাধারণ মাধ্যম। সকল প্রকার দ্রব্য এবং শ্রম মুদ্রার মাধ্যমে ক্রয়-বিক্রয় করা যায়। মানুষ মুদ্রার মাধ্যমে ক্রয়-বিক্রয় করিতে পারে।

(২) মূল্যের মাপকাঠি : মুদ্রাকে দ্রব্যের মূল্যের মাপকাঠি হিসাবে ব্যবহার করা হয় এবং একটি দ্রব্যকে অন্য দ্রব্যের সঙ্গে মূল্যের মাপকাঠি দ্বারা তুলনা করা হয়।

(৩) স্থগিত লেনদেনের মানদণ্ড : মুদ্রার সাহায্যে স্থগিত দেনা-পাওনা অর্থাৎ কাহারও নিকট হইতে ঋণ গ্রহণ বা পরিশোধ করা যায়। ঋণ দেওয়া এবং ঋণ করার ক্ষেত্রে সুদের হারও মুদ্রার মাধ্যমে নির্ধারণ করা হয়।

(৪) সঞ্চয়ের ভাণ্ডার : সকল দ্রব্য সঞ্চয় করিয়া রাখা যায় না, পচনশীল দ্রব্য সহজেই নষ্ট হইয়া যায়। যেহেতু মুদ্রা সহজে নষ্ট হয় না এবং সকলের নিকটই ইহার গ্রহণযোগ্যতা রহিয়াছে সেইহেতু ভবিষ্যতের লেনদেনের জন্য মুদ্রাকে সঞ্চয় করা হয়, যাহা দ্বারা ভবিষ্যতে কোন কিছু ক্রয় করা সহজ হয়

প্রশ্ন ৪। চেক কি একটি মুদ্রা ? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি প্রদর্শন করো

উত্তরঃ প্রকৃতপক্ষে চেক মুদ্রা নয় ; চেক হল পরিশোধের আদেশপত্র । চেক একটির সাধারণ গ্রহণযোগ্যতা থাকে না । চেক হল একজন ব্যক্তি অন্য একজন ব্যক্তিকে এক নির্দিষ্ট পরিমাণের টাকা দেওয়ার জন্য ব্যাঙ্ককে দেওয়া আদেশপত্র । মুদ্রার ন্যায় চেকও জিনিসপত্র কেনা এবং অন্যান্য লেনদেনের ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারি । কিন্তু মুদ্রার ন্যায় চেকের গ্রহণযোগ্যতা নাই । সকল মানুষ চেক গ্রহণ করতে নাও পারে । মুদ্রা হল বিহিত বা আইনসম্মতভাবে গ্রহণযোগ্য ৷

প্রশ্ন ৫। মুদ্রা থেকে সৃষ্টি হতে পারে এমন চার প্রধান অসুবিধে ব্যাখ্যা করো  

উত্তরঃ মুদ্রার চারটি প্রধান অসুবিধা নীচে ব্যাখ্যা করা হল—

( ১ ) মুদ্রা মূল্যের স্থিরতা না থাকলে কতগুলি জটিল সমস্যার সৃষ্টি হয় । মুদ্রার মূল্য অবিরামভাবে হ্রাস হলে জনসাধারণের অসুবিধা হয় কারণ একই সামগ্রী কিনতে অধিক ব্যয় করতে হয় ।

( ২ ) মুদ্রা অর্থনৈতিক সম্পদ এবং আয় একত্রীকরণের একপ্রকার পদ্ধতি হতে পারে । ইহা সামাজিক বৈষম্য সৃষ্টি করে ।

( ৩ ) মুদ্রার প্রতি দুর্বলতাই সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কারণ হতে পারে ৷ দুর্নীতি , অনিয়ম , অবিচারের মূলেই মুদ্রা বলে বলা হলে অত্যুক্তি করা হবে না ।

( ৪ ) মুদ্রার থেকে কালা মুদ্রার বা টাকার সৃষ্টি হয়। কালামুদ্রা অর্থনৈতিক অপরাধ ( যেমন আয়কর ফাঁকি ) সঙ্গে জড়িত । এই ধরনের অপরাধের ফলে সরকারের রাজস্ব হারাতে হয় বা ক্ষতি হয় ।

প্রশ্ন ৬। কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের চারটি প্রধান কার্য ব্যাখ্যা করো  

উত্তরঃ (ক) মুদ্রা প্রচলন — কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের একটি প্রধান কার্য হইল কাগজী মুদ্রা। প্রচলন। কাগজী মুদ্রা প্রচলনের ক্ষমতা একমাত্র কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের আছে।

(খ) সরকারের ব্যাঙ্ক – কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক সরকারের ব্যাঙ্ক হিসাবে কাজ করে। প্রয়োজনানুযায়ী সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক হইতে ঋণ গ্রহণ করেন ও অর্থ সঞ্চয়। রাখেন।

(গ) ব্যাঙ্কের ব্যাঙ্ক — কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলির ব্যাঙ্ক হিসাবে কাজ করে। অন্যান্য বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কসমূহকে তাহাদের আমানতের কিছু অংশ কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কে জমা রাখিতে হয়।

(ঘ) ঋণ নিয়ন্ত্রণকারী – কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক অন্যান্য ব্যাঙ্কসমূহের ঋণের নিয়ন্ত্রণকারী। এই ঋণ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে অর্থের মূল্য এবং দামের স্থিতিশীলতা বজায় রাখে।

(ঙ) ঋণ সংগ্রহস্থল — কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক অন্যান্য ব্যাঙ্কসমূহের ঋণগ্রহণের শেষ আশ্রয়স্থল।

প্রশ্ন ৭। বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক সম্পাদিত দুটি প্রধান কার্য ব্যাখ্যা করো  

উত্তরঃ বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কে সম্পাদন করা দুটি প্রধান কার্য নীচে ব্যাখ্যা করা হল—

(ক) ঋণগ্রহণ করা বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক জনগণের প্রয়োজনে উদ্বৃত্ত অর্থ জমা রাখে এবং জমাকারীকে নির্দিষ্ট হারে সুদ প্রদান করে।

(খ) ঋণ সরবরাহ করা বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক জমি, সোনা, রূপা প্রভৃতি গচ্ছিত রাখিয়া ঋণগ্রহীতাদিগকে ঋণ সরবরাহ করে।।

 

প্রশ্ন ৮। নিম্নে উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানগুলো কী কার্য সম্পাদন করে তা সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করো

( ) আই . ডি . বি . আই  

( ) আঞ্চলিক গ্রামীণ ব্যাঙ্ক  

( ) কৃষি গ্রাম উন্নয়নের রাষ্ট্রীয় ব্যাঙ্ক  

( ) ভারতীয় ক্ষুদ্র শিল্প উন্নয়ন ব্যাঙ্ক  

উত্তরঃ আই . ডি . বি . আই ( ভারতীয় ঔদ্যোগিক উন্নয়ন ব্যাঙ্ক ) :- ১৯৬৪ সনে এই ব্যাঙ্ক স্থাপন করা হয় ।

এর মূল কার্যসমূহ হল  ঔদ্যোগিক উন্নয়নের সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রসারতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করা । এই ব্যাঙ্কটিই উদ্যোগসমূহে ঋণের রূপে প্রত্যক্ষভাবে আর্থিক সাহায্য প্রদান করে । ব্যাঙ্কটি পরোক্ষভাবেও উদ্যোগসমূহে সাহায্যপ্রদান করে । যেমন ব্যাঙ্কটি রাজ্যিক বিত্তীয় নিগম, ঔদ্যোগিক উন্নয়ন নিগম , বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কসমূহে বিত্তীয় সাহায্য প্রদান করে এবং এই অনুষ্ঠানসমূহে রাজ্যের ঔদ্যোগিক খণ্ডে বিত্তীয় সাহায্যপ্রদান করে ।

 ( ) আঞ্চলিক গ্রাম্য ব্যাঙ্ক :- ১৯৭৫ সনে প্রথমে ৫ টি আঞ্চলিক গ্রাম্য ব্যাঙ্ক স্থাপন করা হয় । এই ব্যাঙ্কে সম্পাদন করা মূল কাজ  হল— গ্রামবাসীদেরকে অতি কম সুদে ঋণ প্রদান করে গরীব গ্রামবাসীকে সহায়তা করা বা মুক্তি দেওয়া । গ্রাম্য সঞ্চয় সংগ্রহ করে বিভিন্ন উৎপাদন মূলক কার্যে সেই সঞ্চয় ব্যয় করা । এই আঞ্চলিক গ্রামীণ ব্যাঙ্কগুলি কৃষি যোগানে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি লাভ করেছে ।

 ( ) কৃষি গ্রাম্য উন্নয়নের রাষ্ট্রীয় ব্যাঙ্ক :- ১৯৮২ সনে নাবার্ড ( NABARD ) স্থাপন করা হয় । গ্রাম্য ঋণের ক্ষেত্রে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক যে কার্যগুলি সম্পাদন করেছিল সেই সকল কার্যগুলি নাবার্ডকে হস্তান্তর করা হয় । নাবার্ডে সম্পাদন করা মূল কার্যগুলি হল –  গ্রাম অঞ্চলের কৃষি , ক্ষুদ্রউদ্যোগ , কুটির ও গ্রামোদ্যোগ , হস্তশিল্প ও আনুষ্ঠানিক কার্যসমূহের উন্নয়ননের জন্য ঋণের যোগান দেওয়া নাবার্ডের একটি মুখ্য কাজ । ঋণ প্রদান প্রক্রিয়া , পরিকল্পনার পুনরীক্ষণ ও পর্যালোচনা , প্রশিক্ষণ ইত্যাদির সুদৃঢ়করণ কল্পে নাবার্ড ব্যবস্থা গ্রহণ করে ।

( খ ) ভারতীয় ক্ষুদ্র উদ্যোগ উন্নয়ন ব্যাঙ্ক ( Small Industries Development Bank of India বা SIDBI ) ; ১৯৮৯ সনে সিদ্‌বি আইন গৃহীত হয় ও ১৯৯০ সন হতে সিবি কার্যকরী হয়ে উঠে । সিবির মুখ্য কার্যালয় লক্ষ্ণৌতে অবস্থিত । সিবির মুখ্য কার্যাবলী হল ―ক্ষুদ্র উদ্যোগসমূহের জন্য উন্নত প্রযুক্তিবিদ্যা ও আধুনিকীরণের ব্যবস্থা করা । ক্ষুদ্র উদ্যোগ খণ্ডেউৎপাদিত সামগ্রীর জন্য বাজারের সুবিধা করে দেওয়া ।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *