হৈমবতীর আত্মবিশ্বাস , Chapter -5, Class – 8, SEBA New Syllabus



পাঠ–৫: হৈমবতীর আত্মবিশ্বাস (প্রশ্ন ও উত্তর)




ক – পাঠভিত্তিক (Text-based)

২। উত্তর দাও।

(ক) হৈমবতী কেন রুষ্ট হয়েছিলেন?
– উত্তর: ‘জয়মতী মহিলা সমিতি’র বাকি সদস্যদের অনুপস্থিতি ও কাজে নিষ্ঠাহীনতা দেখে হৈমবতী মনে মনে রুষ্ট হয়েছিলেন।

(খ) বিমলা কী বোনে?
– উত্তর: বিমলা এণ্ডির চাদর বোনে। সে এণ্ডি-মুগার কাপড় বুনে বেশ নাম করেছে।

(গ) বিমলা হতাশ কণ্ঠে কী জানিয়েছে?
– উত্তর: বিমলা হতাশ কণ্ঠে জানিয়েছে যে, সমিতির তহবিলে বেশি টাকা নেই।

(ঘ) জবাবে হৈমবতী কী বলেছেন?
– উত্তর: জবাবে হৈমবতী বলেছেন যে, বিমলার কথাটি ঠিক, তবে তিনি ইতিমধ্যে ব্যাঙ্কঋণের জন্য আবেদন জানিয়েছেন এবং সরকারও আশ্বাস দিয়েছেন।

(ঙ) হাতে বোনা কাপড়কে কী বলে?
– উত্তর: হাতে বোনা কাপড়কে তাঁতে বোনা কাপড় বা এক প্রকারের কুটিরশিল্পজাত সামগ্রী বলা যেতে পারে।

(চ) গীতা কী জানতে চেয়েছে?
– উত্তর: গীতা আমতা আমতা করে জানতে চেয়েছে যে, হৈমবতী একদিন বলেছিলেন তাদের আরও বেশি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবেন কি না।

(ছ) ‘স্বাবলম্বী’ বলতে কী বোঝ?
– উত্তর: ‘স্বাবলম্বী’ বলতে সেই অবস্থাকে বোঝায় যখন কোনো ব্যক্তি নিজের ওপর নির্ভর করে চলে, অর্থাৎ অন্যের সাহায্যের অপেক্ষা না করে নিজের চেষ্টায় আর্থিক স্বাধীনতা লাভ করে এবং জীবনধারণ করে।




৩। শূন্যস্থানগুলো পূর্ণ করো।

(ক) সঙ্গে সঙ্গে বিক্রির উপযোগী জিনিসপত্র তৈরি করতেও উৎসাহ দেওয়া হয়।
(খ) একদিন নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে এই গৌরবময় ঐতিহ্য।
(গ) কিছুক্ষণের মধ্যে কর্মচঞ্চল হয়ে ওঠে সমিতি।
(ঘ) নিজেকে স্বাবলম্বী করতে আজ ওরা প্রচুর খাটছে এখানে।
(চ) ভারতীয় নারীরা কোনো অর্থেই পিছিয়ে নেই।




৪। উত্তর লেখো।

(ক) হৈমবতী গীতাকে কী বলেছিলেন?
– উত্তর: হৈমবতী গীতাকে বলেছিলেন যে, আজকাল দক্ষিণ ভারতে তৈরি মেখলা-চাদর ও গামছায় অসমের বাজার ছেয়ে গেছে। হাতে বোনা মেখলা ও অসমিয়া গামছা এখন প্রায় দুর্লভ। তিনি সতর্ক করেছিলেন যে, সতর্ক ও নিষ্ঠাবান না-হলে অসমের এই গৌরবময় ঐতিহ্য একদিন নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।

(খ) এণ্ডি-মুগার কাপড় কীভাবে বোনা হয়?
– উত্তর: এণ্ডি-মুগার কাপড় এক ধরনের রেশম-পোকা থেকে সৃষ্ট সুতো দিয়ে তৈরি হয়। অসমিয়া নারীরা তাঁতে এই কাপড় বোনে।

(গ) ‘জয়মতী মহিলা সমিতি’তে কী কী জিনিস বানানো হয়?
– উত্তর: ‘জয়মতী মহিলা সমিতি’তে তাঁতে কাপড় বোনা ছাড়াও নানা জিনিস বানানো হয় –
– খাবার: আচার, পাঁপড়, ভুজিয়া, মুখশুদ্ধি।
– পোশাক ও কারুশিল্প: উলের পোশাক, বাঁশ-বেতের আসবাব, জাপি, রুমাল, টেবিল-ঢাকনি, পাটি, মণিপুরি খেশ, দখনা, এণ্ডির চাদর, গামছা, মেখলা।

(ঘ) ব্যক্তিগত উদ্যোগ ও সমবায় উদ্যোগের মধ্যে পার্থক্য কী?
– উত্তর:
– ব্যক্তিগত উদ্যোগ: এটি হলো কোনো একজন ব্যক্তি বা ছোট একটি গোষ্ঠীর নিজের প্রচেষ্টায় কাজ করা। এখানে লাভের ভাগ কেবল উদ্যোগীর কাছেই যায় এবং এটি সীমিত পরিসরে চলে। যেমন – বিমলা ঘরে বুনেও রোজগার করছে।
– সমবায় উদ্যোগ: এটি হলো একটি সুপরিকল্পিত বিপণন ব্যবস্থা, যেখানে অনেকে মিলে একটি সমিতি বা সংস্থা তৈরি করে সম্মিলিতভাবে জিনিস তৈরি ও বিক্রি করে। এর মাধ্যমে সকলের উপকার হয় এবং এটি বৃহত্তর পরিসরে কাজ করতে পারে।

(ঙ) সমিতির মেয়েদের নিপুণ ও অভিজ্ঞ করে তোলার জন্য কী পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে?
– উত্তর: সমিতির মেয়েদের আরও দক্ষ করে তোলার জন্য কয়েকদিনের মধ্যে তাদের সরকারি হস্ততাঁত ও কারুশিল্প প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পাঠানো হবে।

(চ) হৈমবতী যে-কথাটি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেছিলেন তা নিজের ভাষায় লেখো।
– উত্তর: হৈমবতী আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেছিলেন যে, আজ ভারতীয় নারীরা কোনো অর্থেই পিছিয়ে নেই। তাঁরা আর দুর্বল বা অন্যের ওপর নির্ভরশীল নন। পুরুষদের পাশাপাশি তাঁরাও দৃঢ় প্রত্যয়ে এগিয়ে চলেছেন। তাঁদের বহুদিনের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হতে চলেছে এবং তাঁদের গরিমা এখন বিশ্বজোড়া।




৫। প্রসঙ্গের সঙ্গে সংগতি রেখে ব্যাখ্যা করো।

(ক) আমরা সতর্ক আর নিষ্ঠাবান না-হলে একদিন নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে এই গৌরবময় ঐতিহ্য।
– ব্যাখ্যা: এই কথাটি হৈমবতী সমিতির মেয়েদের অসমের তাঁতশিল্পের ঐতিহ্য সম্পর্কে বলেছিলেন। দক্ষিণ ভারতে তৈরি সস্তা কাপড়ে বাজার ভরে গেছে, ফলে হাতে বোনা অসমিয়া কাপড় দুর্লভ হয়ে উঠেছে। তাই তিনি সতর্ক করেছিলেন যে, যদি তাঁরা নিষ্ঠা ও সতর্কতার সঙ্গে কাজ না করেন, তবে এই ঐতিহ্য বিলুপ্ত হয়ে যাবে।

(খ) আমরা আজ আর হীনবল নই, নই পরমুখাপেক্ষী; গার্গী, মৈত্রেয়ী, লক্ষ্মীবাইয়ের দেশের নারী আমরা।
– ব্যাখ্যা: এই উক্তির মাধ্যমে হৈমবতী সমিতির মেয়েদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস জাগিয়েছিলেন। তিনি বলেছেন, ভারতীয় নারীরা আর দুর্বল নন এবং অন্যের সাহায্যের ওপর নির্ভরশীলও নন। তিনি প্রাচীন যুগের গার্গী, মৈত্রেয়ী ও রানি লক্ষ্মীবাইয়ের নাম উল্লেখ করে নারীদের ঐতিহ্যগত শক্তি ও গৌরবের কথা স্মরণ করিয়ে দেন।

(গ) আমাদের বহুদিনের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হতে চলেছে।
– ব্যাখ্যা: হৈমবতী এই কথাটি নারীদের স্বাবলম্বী হওয়ার প্রসঙ্গে বলেছিলেন। ‘জয়মতী মহিলা সমিতি’র মেয়েরা এখন নিজস্ব জীবিকা খুঁজে পেয়েছে, সরকারি প্রশিক্ষণও পাচ্ছে। তাই বহুদিনের তাদের আকাঙ্ক্ষা পূরণের পথে।




খ – ভাষা অধ্যয়ন (ব্যবহারিক ব্যাকরণ)

৬। অর্থের পার্থক্য বুঝে বাক্য রচনা করো।
– নারী: নারী আজ সমাজে পুরুষের সঙ্গে সমান তালে এগিয়ে চলেছে।
– নাড়ী: ডাক্তার রোগীর নাড়ী টিপে পরীক্ষা করছেন।

৭। সন্ধি করো।
– দুঃ + লভ = দুর্লভ
– স্ব + অবলম্বন = স্বাবলম্বন
– নিঃ + চিহ্ন = নিশ্চিহ্ন
– মুখ + ছবি = মুখচ্ছবি
– হর্ষ + উল্লাস = হর্ষোল্লাস

৮। বিপরীতার্থক শব্দ পাঠ থেকে খুঁজে লেখো।
– অসফল – সফল
– অসতর্ক – সতর্ক
– অপরিকল্পিত – সুপরিকল্পিত
– পাকা – কাঁচা
– পুরাতন – নতুন
– শান্ত – কর্মচঞ্চল
– পরাধীনতা – স্বাধীনতা
– অপকার – উপকার

৯। এক কথায় প্রকাশ করো।
– যে অন্যের ওপর নির্ভর করে চলে – পরমুখাপেক্ষী
– যে নিজের ওপর নির্ভর করে চলে – স্বাবলম্বী
– যে অপরকে হিংসা করে না – অহিংস
– যে নিজের স্বার্থের কথা চিন্তা করে – স্বার্থপর
– যে নিজের ওপর বিশ্বাস রাখে – আত্মবিশ্বাসী

১০। যুক্তবর্ণ দিয়ে শব্দ লেখো।
– ন্ধ – অন্ধ, বন্ধ, সন্ধ্যা
– ন্দ – আনন্দ, বন্দনা, বৃন্দা
– স্ত – ব্যস্ত, বস্তু, সুস্থ
– ল্প – অল্প, সংকল্প, কল্পনা

১১। উপসর্গ বসিয়ে নতুন শব্দ গঠন করো।
– প্র – প্রশিক্ষণ, প্রভাব, প্রগতি
– অপ – অপবাদ, অপকার, অপসারণ
– পরা – পরাস্ত, পরাক্রম, পরামুখ
– অতি – অতিবৃষ্টি, অতিশয়, অতিমান
– উপ – উপকার, উপদেশ, উপস্থিত

১২। লিঙ্গ পরিবর্তন করো।
– অধ্যক্ষা → অধ্যক্ষ
– মহীয়সী → মহীয়ান
– পুরুষ → নারী

১৫। দ্বিতীয়া বিভক্তি প্রয়োগ করে বাক্য রচনা করো।
– সে ভাইকে ডেকেছিল।
– রমাকে দিয়ে বইটি লিখিয়ে নিও।
– সে ভাত খায়।
– হৈমবতী তাঁত ছেড়ে ঘুরে ঘুরে দেখেন।




গ – জ্ঞান সম্প্রসারণ (Knowledge Expansion)

১৬। আলোচনা করে লেখো।

(ক) বাড়িতে বসে হাতের সাহায্যে কী কী জিনিস বানানো যায়?
– উত্তর: উলের পোশাক, মাফলার, রুমাল, মেখলা, গামছা, বাঁশ-বেতের ঝুড়ি, আসবাব, পাটি, আচার, পাঁপড়, ভুজিয়া ইত্যাদি।

(খ) হাতে বানানো সেই জিনিসগুলো যদি সুন্দর হয় তাহলে নিশ্চয় কাউকে উপহার দেওয়া যাবে। এ ছাড়া আর কী করা যাবে?
– উত্তর: হাতে বানানো সুন্দর জিনিসগুলো বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করা যায়, প্রদর্শনীতে দেখানো যায়, ঐতিহ্য সংরক্ষণ করা যায়, এবং নিজের দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আত্মতৃপ্তি পাওয়া যায়।

(গ) লেখা-পড়ার ফাঁকে ফাঁকে হাতের কাজ শিখলে ভবিষ্যৎ জীবনে তা কীভাবে উপকারে আসতে পারে?
– উত্তর: এতে অতিরিক্ত উপার্জনের পথ তৈরি হয়, মনোসংযোগ বাড়ে, সৃজনশীলতা বৃদ্ধি পায়, এবং জীবিকার বিকল্প উৎস পাওয়া যায়।

১৭। বিস্তারিতভাবে লেখো।

(ক) নারী কী কী উপায়ে স্বাবলম্বী হতে পারে?
– উত্তর: নারী শিক্ষা গ্রহণ, কারিগরি প্রশিক্ষণ, বৃত্তিমূলক কাজ, সমবায় গঠন, ক্ষুদ্রঋণ সংগ্রহ, এবং আত্মবিশ্বাস ও দৃঢ় প্রত্যয়ে সমাজে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার মাধ্যমে স্বাবলম্বী হতে পারে।

(খ) ভারতীয় মহিলাদের পিছিয়ে থাকার কারণ কী?
– উত্তর: দীর্ঘদিন ধরে নারী শিক্ষার অভাব, সামাজিক বাধা, অর্থনৈতিক নির্ভরশীলতা, ঘরোয়া দায়িত্বে সীমাবদ্ধতা এবং সুযোগের অভাবই তাদের পিছিয়ে থাকার প্রধান কারণ।




Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *