পাঠ – ১৫: শ্রীকৃষ্ণের মৃত্তিকা ভক্ষণ
পাঠ – ১৫: শ্রীকৃষ্ণের মৃত্তিকা ভক্ষণ (কবিতা)
১। পদ্যটি স্পষ্ট উচ্চারণে সুর, লয় ও ছন্দের সঙ্গে সবাই মিলে আবার করবে।
* উত্তর: (এটি একটি আবৃত্তিমূলক কাজ, যার উত্তর লেখা সম্ভব নয়। শিক্ষার্থীদের পদ্যটি সুর, লয় ও ছন্দের সঙ্গে আবৃত্তি করার জন্য বলা হয়েছে।)
২। শব্দ-সম্ভার বা অভিধান দেখে নীচের শব্দের অর্থগুলো খুঁজে নিজের খাতায় লেখো ও শেখো।
* উত্তর:
* মৃত্তিকা – মাটি
* রঙ্গ – তামাশা, মজা
* সম্বর – সামলানো
* নেতের অঞ্চল – কাপড়ের আঁচল
* ভক্ষ্য – খাওয়া যায় এমন খাদ্য
* ভোজ্য – খাওয়ার উপযুক্ত
* লেহ্য – লেহন করার যোগ্য যা
* পেয় – পান করার যোগ্য
* চর্ব্য – চিবিয়ে খেতে হয় এমন খাদ্য
* চুষ্য – চোষা হয় বা যায় এমন
* বদন – মুখ
* স্থাবর – অচল, স্থায়ী
* জঙ্গম – গতিশীল, গমনশীল
* শৈল – পাহাড়, পর্বত
* সাধ্যগণ – সাধন যোগ্য যারা
* বিদ্যাধর – দেবতা বিশেষ
* গন্ধর্ব্ব – হিন্দু পুরাণে কল্পিত দেবলোকের এক সুকণ্ঠ গায়ক জাতি/স্বর্গগায়ক
* কিন্নরী – স্বর্গগায়ক
* রোমাঞ্চিত – শিহরিত/পুলোকিত
* কদাচ – কখনো
* ধন্দ – ভুল, ধাঁধা লাগা
* সলিল – জল (শব্দ-সম্ভারে নেই, তবে সাধারণত জল অর্থে ব্যবহৃত)
* মার্জন – পরিষ্কার করা, মাজা
৩। উত্তর দাও।
(খ) যশোমতীকে শ্রীকৃষ্ণের ‘মৃত্তিকা ভক্ষণে’র কথা জানিয়েছিলেন?
* উত্তর: বলরাম গিয়ে মাতা যশোমতীকে শ্রীকৃষ্ণের মাটি খাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন।
(গ) যশোমতী কী দিয়ে শ্রীকৃষ্ণের ‘অঙ্গ মার্জন’ করেছিলেন?
* উত্তর: যশোমতী তাঁর নেতের অঞ্চল (কাপড়ের আঁচল) সলিলে (জলে) ভিজিয়ে শ্রীকৃষ্ণের অঙ্গ মার্জন করেছিলেন।
৪। কে, কখন, কাকে এবং কেন বলেছিলেন লেখো।
(ক) “তোমার ছেলের রঙ্গ দেখ গিয়ে রানি।
ধুলায় ধূসর দেখ হৈল অঙ্গখানি।।”
* উত্তর:
এই কথাগুলি শ্রীকৃষ্ণের বড় ভাই বলরাম বলেছিলেন।
শ্রীকৃষ্ণ যখন ধুলায় খেলতে খেলতে মাটি খাচ্ছিলেন, তখন বলরাম সেটি দেখে।
তিনি নন্দরানি যশোমতী দেবীকে এই কথাগুলি বলেছিলেন।
শ্রীকৃষ্ণ যে ধূলোয় খেলা করছেন, যার ফলে তাঁর সারা শরীর ধূসর হয়ে গেছে, এবং সে মাটি খাচ্ছে— এই শিশুর মতো দুষ্টুমি (রঙ্গ) দেখানোর জন্য, এবং এই কাজের সত্যতা নিরূপণ করার জন্য তিনি মাতা যশোদাকে ডাকেন।
(খ) “কিসের অভাব মোর আরে বাছাধন।
কি কারণে কর তুমি মৃত্তিকা ভক্ষণ।।”
Ans.এই কথাগুলি নন্দরানি যশোমতী তাঁর পুত্রকে বলেছিলেন।
বলরামের কাছে শ্রীকৃষ্ণের মাটি খাওয়ার কথা শুনে তিনি ছুটে আসেন, পুত্রকে কোলে তুলে নেন এবং তাঁর অঙ্গ মার্জন করার পর।
তিনি তাঁর পুত্র শ্রীকৃষ্ণকে বলেছিলেন।
যশোমতী শ্রীকৃষ্ণকে গভীর স্নেহের সঙ্গে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে, তাঁদের গৃহে ভক্ষ্য, ভোজ্য, লেহ্য, পেয়, চর্ব্য, চুষ্য — এই ধরনের কোনো খাবারেরই অভাব নেই। এতকিছু থাকতেও কেন সে মাটি খাচ্ছে, পুত্রের এই শিশুসুলভ কাজের কারণ জানতে চেয়ে তিনি এই কথাগুলি বলেছিলেন।
৫। উত্তর লেখো।
(ক) নন্দরানি শ্রীকৃষ্ণের মুখগহ্বরে কী দেখতে পেলেন?
উত্তর: নন্দরানি যশোদা শ্রীকৃষ্ণের মুখগহ্বর বিস্তৃত করলে সেখানে মাটির পরিবর্তে ত্রিভুবন (তিন ভুবন) বিরাজিত দেখতে পান। সেই মুখগহ্বরে তিনি কত কোটি ইন্দ্র, চন্দ্র, ব্রহ্মা, পঞ্চানন (শিব), স্থাবর, জঙ্গম, শৈল (পাহাড়), নদ, নদী, সরোবর, মানব, ভুজঙ্গ (সাপ), বনচর, জলচর, কীটাদি পতঙ্গ, দেব, দৈত্য, বিদ্যাধর, গন্ধর্ব্ব, কিন্নরী, যক্ষ, রক্ষ— এই সমস্ত কিছুকে দেখতে পান।
(খ) নন্দরানি চোখে ধাঁধা লাগল বলে কেন ভাবলেন?
* উত্তর: শ্রীকৃষ্ণের মুখগহ্বরে ত্রিভুবনের মহিমাময় দৃশ্য দেখে নন্দরানি প্রথমে অত্যন্ত বিস্ময় ও রোমাঞ্চ অনুভব করেন। কিন্তু পরমুহূর্তেই তিনি যখন আবার মুখ দেখেন, তখন দেখেন যে পূর্বের কোনো লক্ষণ আর নেই— মুখটি দুগ্ধের গন্ধযুক্ত সাধারণ এক শিশুর মুখের মতো। এই অলৌকিক দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি না হওয়ায় তিনি মনে মনে ভাবলেন যে যা তিনি দেখেছিলেন, তা হয়তো তাঁর মনোবিভ্রম (মনের ভুল) বা নয়নের ধাঁধা (চোখের ভুল)। তিনি নিজেকে হীন জ্ঞান করে ভাবলেন যে তাঁর দৃষ্টিতে কোনো বিপরীত বা ধন্দ লেগেছিল, কারণ তিনি মুখে মাটি দেখতে পাননি।
৬। শূন্যস্থান পূর্ণ করো।
(ক) একদিন নন্দরানি রাখিয়া গোপালে।
গৃহকর্ম হেতু তবে চলে কুতূহলে।।
হেথা প্রভু শ্রীনিবাস কৌতুক করিয়া।
ধুলায় খেলেন হরি হামাগুড়ি দিয়া।।
(খ) জননী গমন জানি দেব চক্রপাণি।
বদনে মৃত্তিকা প্রভু সম্বরে আপনি।।
যশোমতী দেখি তবে হায় হায় বলে।
ধুলায় ধূসর পুত্রে তুলে নিল কোলে।।
৭। ‘শ্রীকৃষ্ণের মৃত্তিকা ভক্ষণ’ পদ্যটির মূলভাব চলিত ভাষায় গদ্যরূপে লেখো।
* উত্তর:
শ্রীরাধামাধব ঘোষ রচিত ‘শ্রীকৃষ্ণের মৃত্তিকা ভক্ষণ’ পদ্যটিতে শ্রীকৃষ্ণের অলৌকিক মহিমা ও যশোদামায়ের বাৎসল্য রসের প্রকাশ ঘটেছে।
একদিন নন্দরানি যশোদা গোপালকে রেখে কৌতূহলে গৃহকর্মে মনোযোগ দেন। এই সুযোগে শ্রীকৃষ্ণ ধুলায় হামাগুড়ি দিয়ে খেলা করতে করতে মাটি খেয়ে ফেলেন। বড় ভাই বলরাম এই ঘটনা দেখতে পেয়ে ছুটে গিয়ে রানি যশোদাকে জানান যে তাঁর ছেলে খেলা করতে করতে মাটি খাচ্ছে এবং তার গা ধূলায় ধূসর হয়ে গেছে। বলরামের কথা শুনে রানি যশোদা দ্রুত শ্রীকৃষ্ণের কাছে যান। মায়ের আগমন বুঝতে পেরে দেব চক্রপাণি (শ্রীকৃষ্ণ) নিজে থেকেই মুখের মাটি লুকিয়ে ফেলেন।
যশোদা হায় হায় বলে ধূলায় ভরা পুত্রকে কোলে তুলে নেন এবং নেতের আঁচল জলে ভিজিয়ে তাঁর শরীর মুছে দেন। তিনি ছেলেকে বকা দিয়ে জিজ্ঞেস করেন, তাঁদের ঘরে সবরকমের খাবার (ভক্ষ্য, ভোজ্য, লেহ্য, পেয়, চর্ব্য, চুষ্য) থাকতেও কেন সে মাটি খাচ্ছে। এই কথা বলে তিনি কৃষ্ণের মুখ দেখতে চাইলে কৃষ্ণ তাঁর মুখটি প্রসারিত করেন।
মুখের ভেতর দৃষ্টি দিতেই যশোদা এক অলৌকিক দৃশ্য দেখেন— মাটির বদলে সেখানে বিরাজ করছে ত্রিভুবন (তিন জগৎ)। তিনি কোটি কোটি ইন্দ্র, চন্দ্র, ব্রহ্মা, শিব, সকল স্থাবর-জঙ্গম প্রাণী, পর্বত, নদী, মানুষ, কীটপতঙ্গ, দেব, দৈত্য, গন্ধর্ব্ব, কিন্নরীসহ সমগ্র সৃষ্টিকে কৃষ্ণের মুখের ভেতর দেখতে পান। এই দৃশ্য দেখে রানি বিস্ময়ে রোমাঞ্চিত হয়ে ওঠেন এবং মনে মনে ভাবেন— এ কী দেখলাম! তাঁর চোখে কি ধাঁধা লেগেছে? মুখ তো দুগ্ধের গন্ধযুক্ত এক শিশুর মতো।
দ্বিতীয়বার মুখ দেখে প্রথম দেখা দৃশ্যটির কোনো চিহ্ন না পাওয়ায় তিনি ভাবেন, নিশ্চয়ই তাঁর মনের ভুল বা চোখের ধাঁধা লেগেছিল। সব মিথ্যা বলে ধরে নিয়ে তিনি পুত্রকে কোলে নিয়ে তার বদনকমলে (মুখপদ্মে) শত শত চুম্বন দেন। এইভাবেই কবি ভক্তিতে মণ্ডিত করে শ্রীকৃষ্ণের বাল্যলীলার মহিমা প্রকাশ করেছেন।
৮। প্রসঙ্গের সঙ্গে সংগতি রেখে ব্যাখ্যা করো।
(ক) “রানি বলে কিবা ধন নাহিক আমার।
ভক্ষ্য ভোজ্য লেহ্য পেয় চর্ব্য চুষ্য আর।।
কিসের অভাব মোর আরে বাছাধন।
কি কারণে কর তুমি মৃত্তিকা ভক্ষণ।।”
* উত্তর:
প্রসঙ্গ: এই উক্তিটি নন্দরানি যশোদা তাঁর পুত্র শ্রীকৃষ্ণকে করেছিলেন যখন বলরামের কথা শুনে ছুটে এসে তিনি দেখলেন যে কৃষ্ণ মাটি খেয়েছেন।
ব্যাখ্যা: মাতা যশোদা পরম বাৎসল্যের সঙ্গে শ্রীকৃষ্ণকে ভর্ৎসনা করছেন। তিনি বলছেন যে তাঁদের ঘরে কোনো কিছুর অভাব নেই। ভক্ষ্য (যা কামড়ে বা টুকরো করে খাওয়া যায়), ভোজ্য (যা খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করা হয়), লেহ্য (যা চেটে খাওয়া যায়), পেয় (যা পান করা যায়), চর্ব্য (যা চিবিয়ে খাওয়া যায়) এবং চুষ্য (যা চুষে খাওয়া যায়)— অর্থাৎ সব ধরনের খাদ্যদ্রব্য মজুত আছে। এমন সমৃদ্ধ পরিবারে থাকা সত্ত্বেও তাঁর প্রিয় বাছাধন কেন মাটির মতো নিকৃষ্ট জিনিস খেল, সেই প্রশ্ন তিনি করেছেন। এই কথাগুলোর মাধ্যমে যশোদা আসলে কৃষ্ণের প্রতি তাঁর অপরিসীম স্নেহ এবং পুত্রের শারীরিক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কায় তাঁর মায়ের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
(খ) “মনে মনে ভাবে রানি করে অনুমান।
পূর্বে যাহা দেখিলাম হয়ে হীন জ্ঞান।।
নয়নেতে ধাঁধা কিবা আমার লাগিল।
কিবা মনভ্রম হয় তেমন দেখিল।।”
* উত্তর:
প্রসঙ্গ: এই কথাগুলো নন্দরানি যশোদা মনে মনে চিন্তা করছেন শ্রীকৃষ্ণের মুখের ভেতরে ত্রিভুবন-এর অলৌকিক দৃশ্য দেখার পর।
ব্যাখ্যা: শ্রীকৃষ্ণের মুখগহ্বরে একবার সমগ্র বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের দৃশ্য দেখার পর যখন তিনি দ্বিতীয়বার মুখ দেখলেন এবং তা দুগ্ধের গন্ধযুক্ত এক সাধারণ শিশুর মুখের মতো পেলেন, তখন রানি বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন। তিনি ভাবেন, পূর্বে যা দেখেছিলেন, তা তাঁর জ্ঞানহীনতার (হীণ জ্ঞান) কারণে ঘটেছিল। তিনি অনুমান করেন যে সেই মহিমাময় দৃশ্য হয়তো তাঁর চোখের ভ্রম (নয়নেতে ধাঁধা) বা মনের বিভ্রম (মনভ্রম) ছিল। তিনি এই অলৌকিক ঘটনাকে পুত্রের কোনো অলৌকিক লীলা বলে মেনে নিতে পারেননি, বরং এটিকে নিজের দুর্বলতা বা ভুল বলে ধরে নিয়েছিলেন। এর কারণ হলো বাৎসল্য প্রেম— মাতার কাছে ঈশ্বরও তাঁর শিশুপুত্র বৈ আর কিছু নন। এই উক্তিগুলো একজন মায়ের স্বাভাবিক মানবিক দ্বিধা ও পুত্রের প্রতি গভীর ভালোবাসাকে ফুটিয়ে তুলেছে, যা মহিমাময়কে সাধারণ শিশুর পর্যায়ে নামিয়ে এনেছে।
৯। নীচের শব্দগুলোতে প্রত্যয় যুক্ত করে শূন্যস্থান পূর্ণ করো। (শিক্ষক/শিক্ষয়িত্রী সাহায্য করবেন।)
(কৃৎ প্রত্যয়: ধাতুর সঙ্গে যে প্রত্যয় যুক্ত হয়ে শব্দ গঠন করে তাকে কৃৎ প্রত্যয় বলে।)
* উত্তর:
* কাঁদ + উনি = কাঁদনি
* রাজ + অন্ = রাজন
* মান্ + অত = মানত
* বস্ + অতি = বসতি
* বাহ্ + আই = বাছাই
* বাঁচ্ + আও = বাঁচাও
* পূজ + আরী/আরি = পূজারী
* গাহ্ + ইয়ে = গাইয়ে
* ডুব্ + উ = ডুবু
* দৃশ্ + তৃ/টা = দ্রষ্টা
* পা + য়/য = পেয়
* কৃ + তব্য = কর্তব্য
* বৃ + অনীয় = বরণীয়
* ভুজ + য = ভোজ্য
* দুহ্ + ধ/দ = দুগ্ধ
* ধা + য় = ধেয়
* উড় + অ = উড়ো
* ভাব্ + উক = ভাবুক
* ভক্ষ + য = ভক্ষ্য
* বদ + অন = বদন
* খেল + না = খেলনা
* বন্দ + অন = বন্দন
১০। নীচের সমস্ত পদগুলোকে ব্যাসবাক্যে পরিণত করো।
* উত্তর:
* পঞ্চানন – পঞ্চ (পাঁচ) আনন (মুখ) যাহার – (বহুব্রীহি সমাস)
* দুগ্ধজাত – দুগ্ধ হইতে জাত (উৎপন্ন) – (পঞ্চমী তৎপুরুষ সমাস)
* স্নেহাতুর – স্নেহ দ্বারা আতুর (কাতর) – (তৃতীয়া তৎপুরুষ সমাস)
* নীলবরন – নীল যে বরন (বর্ণ) – (কর্মধারয় সমাস)
* ভক্ষ্য-ভোজ্য – ভক্ষ্য ও ভোজ্য – (দ্বন্দ্ব সমাস)
* চক্রপাণি – চক্র পাণিতে (হাতে) যাহার – (বহুব্রীহি সমাস)
* সদ্গুরু – সৎ যে গুরু – (কর্মধারয় সমাস)
* প্রতিফল – ফলের বিপরীত – (নিত্য সমাস) অথবা ফলকে ফল – (অব্যয়ীভাব সমাস – তবে ‘প্রতিফল’ এখানে ‘ফলের বিপরীত’ অর্থেই অধিক প্রচলিত)
* ত্রিভুবন – ত্রি (তিন) ভুবনের সমাহার – (দ্বিগু সমাস)
১১। পদ-পরিবর্তন করো (বিশেষ্য থেকে বিশেষণ)। যেমন মুখ- মৌখিক।
* উত্তর:
* লেহন – লেহ্য
* ঈশ্বর – ঐশ্বরিক
* কথা – কথিত/কথ্য
* সুখ – সুখী
* সুন্দর – সৌন্দর্য/সৌন্দর্যময় (বিপরীত: সুন্দর-বিশেষণ, সৌন্দর্য-বিশেষ্য; প্রশ্নটি বিশেষ্য থেকে বিশেষণ, কিন্তু সুন্দর নিজেই বিশেষণ। যদি সৌন্দর্য থেকে পরিবর্তন করতে বলা হয়, তবে সুন্দর হবে।)
* ধন – ধনী
* বৈশাখ – বৈশাখী
১২। নীচের শব্দগুলোতে প্রত্যয় যুক্ত করে শূন্যস্থান পূর্ণ করো। (শিক্ষক/শিক্ষয়িত্রী সাহায্য করবেন।)
(তদ্ধিত প্রত্যয়: শব্দের শেষে যে প্রত্যয় যুক্ত হয়ে শব্দ গঠন করে তাকে তদ্ধিত প্রত্যয় বলে।)
* উত্তর:
* ভয় + আল = ভয়াল
* নীল + ইমা = নীলিমা
* পাত + আ = পাতা
* তিল + অ/য় = তৈল (তৈল < তৈল + অ/য়)
* বড় + আই = বড়াই
* মাতৃ + ক = মাতৃক
* ছেলে + মি = ছেলেমি
* লোক + ইক = লৌকিক
* রূপ + আলী/আলি = রূপালি
* রাম + আয়ন = রামায়ণ
* হামা + গুড়ি = হামাগুড়ি
* গুরু + ত্ব = গুরুত্ব (টেবিলে নেই, তবে শূন্যস্থান পূরণ করা হলো)
১৩। পাঠ থেকে অন্তমিলযুক্ত শব্দ খুঁজে বের করো।
* উত্তর:
* গোপালে – কুতূহলে
* করিয়া – দিয়া
* রাজন – ভক্ষণ
* পায় – তায়
* রানি – অঙ্গখানি
* না মানে – তখনে
* চক্রপাণি – আপনি
* বলে – কোলে
* সলিলে – কুতূহলে
* আমার – আর
* বাছাধন – ভক্ষণ
* বদন – তখন
* বদনে – ভুবনে
* পঞ্চানন – সাধ্যগণ
* ভুজঙ্গ – পতঙ্গ
* কিন্নরী – নেহারি
* রোমাঞ্চিত – বিপরীত
* বদনে – নয়নে
* বদন – লক্ষণ
* মুখে – কৌতুকে
* অনুমান – হীনজ্ঞান
* লাগিল – দেখিল
* কোলে – কমলে
১৪। নীচের শব্দের সংস্কৃত রূপকে তদ্ভব রূপে পরিবর্তন করো।
* উত্তর:
* মৃত্তিকা – মাটি
* পঞ্চ – পাঁচ
* অঞ্চল – আঁচল
* পতঙ্গ – পোকা/পতেং
* গৃহ – ঘর
* দুগ্ধ – দুধ
* মার্জন – মাজা/মাঞ্জন
* সম্বর – সামলানো/সামাল
১৫। কাল নির্ণয় করো।
(ক) আমি ঈশ্বরে বিশ্বাস করি। – সাধারণ বর্তমান কাল
(খ) যখন মা ঘরের কাজে ব্যস্ত ছিলেন, তখন কৃষ্ণ মাটি খাচ্ছিলেন। – নিত্যবৃত্ত অতীত কাল/ঘটমান অতীত কাল (প্রথম অংশ: নিত্যবৃত্ত অতীত; দ্বিতীয় অংশ: ঘটমান অতীত)
(গ) উপাখ্যানমূলক গল্প বোধ হয় তুমি তোমার ঠাকুমার কাছ থেকে শুনে থাকবে। – পুরাঘটিত ভবিষ্যৎ কাল
(ঘ) হজরত মহম্মদ ইসলাম ধর্ম প্রচার করেন। – সাধারণ অতীত কাল (বা ঐতিহাসিক বর্তমান, তবে অতীত কালেই বেশি প্রচলিত)
১৬। পাঠে তোমরা ‘হায় হায়’, ‘মনে মনে’ ইত্যাদি যুগ্মশব্দগুলো পেয়েছ। সেরকম আরও পাঁচটি যুগ্ম শব্দ ভেবে তোমার খাতায় লেখো এবং বাক্য রচনা করো।
* উত্তর:
* যুগ্মশব্দ:
১. বনে বনে (অব্যয়ীভাবের যুগ্মশব্দ)
২. ধীরে ধীরে (অব্যয়ীভাবের যুগ্মশব্দ)
৩. আদর-সোহাগ (সমার্থক যুগ্মশব্দ)
৪. ছোটো-বড়ো (বিপরীতার্থক যুগ্মশব্দ)
৫. জল-টল (সহচর বা অনুকার যুগ্মশব্দ)
* বাক্য রচনা:
১. বনে বনে ঘুরে বেড়াতে আমার খুব ভালো লাগে।
২. ছেলেটি ধীরে ধীরে হেঁটে শ্রেণিকক্ষের দিকে গেল।
৩. মা তার ছেলেকে আদর-সোহাগে লালন-পালন করেন।
৪. এই অনুষ্ঠানে ছোটো-বড়ো সকলেরই প্রবেশাধিকার আছে।
৫. গরমকালে একটু জল-টল পেলেই শান্তি।
১৭। বাক্যে নিম্নরেখ পদগুলোর কারক-বিভক্তি নির্ণয় করো।
(ক) যেইজন ধর্ম রাখে, তারে ধর্ম রাখে।
* ধর্ম – কর্ম কারকে ‘শূন্য’ বিভক্তি (যেইজন -কর্তা, রাখে -ক্রিয়া, কী রাখে? – ধর্ম – কর্ম)
(খ) মাঠে মাঠে কাঁদে কৃষ্ণ নাম বলে।
* মাঠে মাঠে – অধিকরণ কারকে ‘এ’ বিভক্তি (কোথায় কাঁদে? – মাঠে মাঠে – স্থান/অধিকরণ)
(গ) চাবুক মেরে শায়েস্তা করব।
* চাবুক মেরে – করণ কারকে ‘শূন্য’ বিভক্তি (‘মেরে’ শব্দটি ক্রিয়া বিশেষণ রূপে আছে, তবে চাবুক হলো যন্ত্র, যার দ্বারা শায়েস্তা করা হবে— করণ কারক)
(ঘ) জলে কুমুদের বাস, চাঁদের আকাশে।
* জলে – অধিকরণ কারকে ‘এ’ বিভক্তি (কোথায় বাস? – জলে – স্থান)
* আকাশে – অধিকরণ কারকে ‘এ’ বিভক্তি (কোথায় চাঁদ? – আকাশে – স্থান)
(ঙ) গঙ্গাজলে গঙ্গাপূজা করি।
* গঙ্গাজলে – করণ কারকে ‘এ’ বিভক্তি (কী দিয়ে পূজা করি? – গঙ্গাজলে – উপকরণ/করণ)
১৮। বিপরীতার্থক শব্দ লেখো।
* উত্তর:
* জ্ঞান – অজ্ঞান/মূর্খতা
* মিথ্যা – সত্য
* পূর্বে – পরে/পশ্চাতে
* জলচর – স্থলচর/বনচর
* স্থাবর – জঙ্গম/অস্থাবর
* মানব – দানব/অমানব/অমানুষ
১৯। এসো, মহাভারতের রচয়িতা কবি কাশীরাম দাসের রচিত উপাখ্যানমূলক পদ্য ‘গুরুভক্তি’ সবাই মিলে আবৃত্তি করি।
* উত্তর: (এটি আবৃত্তিমূলক কাজ। শিক্ষার্থীদের পদ্যটি আবৃত্তি করতে বলা হয়েছে।)
২০। তুমি ২০ টি তৎসম শব্দ সংগ্রহ করে অভিধান ক্রমে একটি তালিকা প্রস্তুত করো এবং সেগুলোর পাশে অর্থ লেখো।
* উত্তর: (শিক্ষার্থীদের নিজে এই তালিকা প্রস্তুত করতে বলা হয়েছে। নীচে একটি উদাহরণ তালিকা দেওয়া হলো।)
২০টি তৎসম শব্দের তালিকা (অভিধানক্রমে)
| নিচে ২০টি তৎসম শব্দ ও তাদের অর্থের তালিকা দেওয়া হলো:
তৎসম শব্দ ও অর্থ (অভিধানক্রমে)
১. অঙ্গ – শরীর, দেহ
২. অঞ্চল – কাপড়ের প্রান্ত/আঁচল
৩. আকাশ – শূন্যলোক, গগন
৪. আজ্ঞা – আদেশ, হুকুম
৫. ঈশ্বর – ভগবান, প্রভু
৬. উপদেশ – পরামর্শ, শিক্ষা
৭. কর্তব্য – যা করণীয়, কাজ
৮. কারণ – হেতু, মূল
৯. গৃহ – বাড়ি, আলয়
১০. চক্র – চাকা
১১. জল – সলিল, বারি
১২. ধর্ম – কর্তব্য, পুণ্য
১৩. নয়ন – চোখ, অক্ষি
১৪. নদী – তটিনী, স্রোতস্বিনী
১৫. পুস্তক – বই, গ্রন্থ
১৬. ফল – গাছের শস্য, ফলাফল
১৭. বদন – মুখ
১৮. বিদ্যা – জ্ঞান, শিক্ষা
১৯. স্বর্ণ – সোনা, হেম
২০. হৃদয় – মন, অন্তর
