মানুষের জীবন প্রণালীর বিকাশ, Chapter -7, Class-6, SEBA, New Syllabus
মানুষের জীবন প্রণালীর বিকাশ, Chapter -7, Class-6, SEBA, New Syllabus
অনুশীলনী – ১ (পৃষ্ঠা ৫৮)
১। নীচের প্রশ্নগুলোর সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও-
* (ক) আদিম মানুষ কী কী বস্তু খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করেছিল?
Ans.আদিম মানুষ গাছ থেকে পড়ে থাকা ফল, বীজ, পাতা, পোকা-মাকড় ইত্যাদি সংগ্রহ করে কাঁচাই খেয়েছিল। তারা জীব-জন্তুর শিকারও করত।
* (খ) আদিম মানুষদের আশ্রয়স্থলগুলো কেমন ছিল?
Ans. আদিম মানুষ রোদ, বাতাস, বর্ষা এবং বন্য জীব-জন্তুর আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে পাথরের গুহা এবং গাছের কাণ্ডের ভেতরে থাকা ফাঁপা জায়গায় আশ্রয় নিত।
* (গ) আদিম যুগের সরঞ্জামগুলি কী ছিল? সেগুলো কীভাবে প্রস্তুত করা হতো?
Ans. আদিম যুগের সরঞ্জামগুলির মধ্যে ছিল মাছ ধরা ও শিকারের জন্য পাথর, গাছের ডাল, এবং বড়ো জন্তুর হাড় থেকে তৈরি করা সরঞ্জাম। তারা পাথর ঘষে বা ভেঙে ধারালো করে সরঞ্জাম তৈরি করত।
* (ঘ) আগুনের আবিষ্কার কীভাবে হয়েছিল?
Ans. আদিম মানুষ দেখেছিল যে প্রচণ্ড বেগে গড়িয়ে আসা পাথর অন্য একটি পাথরে ঘষা খেলে আগুনের স্ফুলিঙ্গ বের হয় এবং সেই স্ফুলিঙ্গ শুকনো ঘাস বা পাতায় লাগলে আগুন জ্বলে ওঠে। তারপর থেকেই তারা পাথর ঘষে আগুন জ্বালাতে শিখেছিল।
২। সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো-
* (ক) আদিম মানুষের খাদ্যাভাস
Ans. আদিম মানুষ যাযাবরের জীবন যাপন করত। তারা বেঁচে থাকার জন্য জীব-জন্তুর শিকার করার পাশাপাশি উদ্ভিদ থেকেও খাদ্য সংগ্রহ করত। প্রথমদিকে তারা আগুনের ব্যবহার জানত না, তাই গাছ থেকে পাওয়া ফল, বীজ, পাতা, পোকা-মাকড় ইত্যাদি কাঁচাই খেত। সময়ের সাথে সাথে তারা জীব-জন্তুর আচরণ লক্ষ করে শিকার করতে শেখে, প্রথমে ছোট জন্তু এবং পরে দল বেঁধে বড় জন্তু শিকার করত। আগুন আবিষ্কারের পর তারা খাদ্য আগুনে পুড়িয়ে খেতে শেখে।
* (খ) আদিম মানুষের আশ্রয়স্থল
Ans. আদিম মানুষ প্রাকৃতিক প্রতিকূলতা যেমন রোদ, বাতাস, বর্ষা এবং হিংস্র বন্য জন্তুর আক্রমণ থেকে নিজেদের রক্ষা করার জন্য আশ্রয়ের ব্যবস্থা করত। তারা প্রধানত পাথরের গুহা এবং বড় গাছের কাণ্ডের ভিতরের ফাঁপা অংশকে আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহার করত।
৩। আগুনের আবিষ্কার আদিম মানুষের জীবনে কেমন ধরনের পরিবর্তন এনেছিল বিস্তৃতভাবে লেখো।
Ans.আগুনের আবিষ্কার মানব সভ্যতার একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এটি আদিম মানুষের জীবনে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছিল:
* খাদ্যাভাসে পরিবর্তন: মানুষ খাদ্য আগুনে পুড়িয়ে খেতে শেখে, যা খাবারকে নরম, সুস্বাদু এবং হজমযোগ্য করে তোলে।
* আত্মরক্ষা: বন্য জীব-জন্তুর আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আগুন একটি কার্যকর হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হতে শুরু করে।
* শীত থেকে রক্ষা: শীতকালে আগুন নিজেদের শরীর গরম রাখতে সাহায্য করত।
* সরঞ্জাম তৈরি: যদিও পাঠে সরাসরি উল্লেখ নেই, তবে আগুন পরবর্তীকালে সরঞ্জাম তৈরিতেও ভূমিকা রেখে থাকতে পারে।
* সামাজিক জীবন: আগুনকে ঘিরে সম্ভবত মানুষের সামাজিক কার্যকলাপ বৃদ্ধি পেয়েছিল। আগুন জ্বালিয়ে রাখা এবং তা নিভতে না দেওয়া একটি দলগত দায়িত্ব ছিল।
অনুশীলনী – ২ (পৃষ্ঠা ৫৯)
১। নীচের প্রশ্নগুলোর সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও-
* (ক) মানুষের প্রতিপালন করা প্রথম জন্তু কী ছিল?
Ans. অনেক পণ্ডিতের মতে, মানুষ প্রথম যে জন্তুটি পোষ মানিয়েছিল তা হল কুকুর।
* (খ) পশুপালন যুগের সূচনা কীভাবে হয়েছিল?
Ans. মানুষ বহু বছর ধরে জীবজন্তুর আচরণ নিরীক্ষণ করার পর তাদের পালন-পোষণ করতে শিখেছিল। কুকুর পোষ মানানোর পর, সময়ের সাথে সাথে তারা গরু, ছাগল, ঘোড়া ইত্যাদি জীবজন্তুকেও পালন করতে শেখে, এভাবেই পশুপালন যুগের সূচনা হয়।
২। কৃষির সূচনা এবং বিকাশের বিষয়ে সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো।
Ans.আদিম যুগে পুরুষেরা শিকার করত এবং মহিলারা ফল-মূল, গাছের শেকড় ইত্যাদি সংগ্রহ করত। তারা দীর্ঘদিন ধরে লক্ষ করে যে ফলমূলের বীজ যেখানে ফেলা হয়, সেখানেই আবার নতুন গাছ জন্মায় এবং ফল ধরে। খাদ্যের সন্ধানে ঘোরার সময় এই পর্যবেক্ষণ থেকে তারা বীজ থেকে গাছ জন্মানোর বিষয়টি শেখে। এই জ্ঞান থেকেই তারা নিজেদের প্রয়োজন মেটাতে গাছের বীজ রোপণ করতে শুরু করে, এভাবেই চাষ বা কৃষির সূচনা হয়। চাষাবাদ শুরু করার পর শস্য রক্ষা করার জন্য এবং প্রতিপালিত পশুদের দেখাশোনার সুবিধার জন্য মানুষ স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে, যা কৃষির আরও বিকাশে সাহায্য করে।
অনুশীলনী – ৩ (পৃষ্ঠা ৬১)
১। নীচের প্রশ্নগুলোর সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও-
* (ক) আদিম মানুষ কখন থেকে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে শুরু করে?
Ans. আদিম মানুষ যখন চাষাবাদ শুরু করে, তখন জীবজন্তুদের হাত থেকে ফসল রক্ষা করার জন্য খেতের সামনে স্থায়ীভাবে বাস করতে শুরু করে।
* (খ) বর্তমান সময়েও খাদ্য সংগ্রহ করে এবং শিকার করে জীবন-যাপন করা একটি জনগোষ্ঠীর নাম লেখো।
Ans.আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের ‘জারোয়া’ নামের একটি জনগোষ্ঠী এখনো খাদ্য সংগ্রহ ও শিকার করে জীবন নির্বাহ করছে।
* (গ) গ্রামের সূচনা কীভাবে হয়েছিল?
Ans. চাষাবাদ এবং পশুপালনের জন্য জলের প্রয়োজন ছিল অপরিহার্য। সেই সময়ে জল বহন করে আনার সুবিধা না থাকায়, মানুষ জলের উৎসের (যেমন নদী বা ঝরনা) কাছাকাছি স্থায়ীভাবে বসতি স্থাপন করতে শুরু করে। এভাবেই নদী বা ঝরনার পাশে গ্রামগুলো গড়ে উঠেছিল।
* (ঘ) মানুষ প্রথমে কেমন ধরনের পাত্র ব্যবহার করেছিল?
Ans. মানুষ প্রথমে সঞ্চিত শস্য সংরক্ষণ করার জন্য বা খাদ্য প্রস্তুত করার জন্য গাছের পাতা, বাঁশ ইত্যাদি দিয়ে পাত্র তৈরি করে তাতে মাটির লেপ লাগিয়ে ব্যবহার করত।
* (ঙ) আদিম মানুষের জীবনে চাকার ব্যবহার কীভাবে প্রভাব ফেলেছিল?
Ans. চাকার আবিষ্কারের পর মানুষ মাটির পাত্র তৈরি করার ক্ষেত্রে এর ব্যবহার শুরু করে, যার ফলে পাত্রগুলো ক্রমশ মসৃণ হতে থাকে। পরে বস্তুর আদান-প্রদান এবং যাতায়াতের জন্য চাকার ব্যবহার শেখে। এর ফলে জিনিসপত্র আদান-প্রদানে মানুষের কষ্ট কমে যায় এবং সময়েরও সাশ্রয় হয়।
অনুশীলনী – ৪ (পৃষ্ঠা ৬১)
নীচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও-
* (ক) আদিম মানুষদের মধ্যে বিনিময়ের সূচনা কীভাবে হয়েছিল?
Ans.সময়ের সাথে সাথে মানুষ প্রয়োজনের চেয়ে বেশি শস্য উৎপাদন করতে শুরু করে। কিছু মানুষ কৃষিকাজ ছাড়াও পাত্র তৈরি বা পশুপালনের মতো অন্য কাজে নিযুক্ত হয়। তখন প্রয়োজনের অতিরিক্ত উৎপাদিত শস্য তারা অন্যান্য সামগ্রী প্রস্তুতকারী মানুষদের সাথে বিনিময় করার সুযোগ পায়। এভাবেই বিনিময়ের সূচনা হয়েছিল।
* (খ) অতীতে প্রথম বাণিজ্য কেন্দ্রগুলো কীভাবে গড়ে উঠেছিল?
Ans. বিনিময় ব্যবস্থা শুরু হওয়ার পর ব্যবসা-বাণিজ্যের বিকাশ ঘটে। মানুষ সামগ্রী বিনিময়ের জন্য ধীরে ধীরে কতগুলো সুবিধাজনক স্থান বেছে নেয়। সেই স্থানগুলোই পরে ব্যবসায়ী কেন্দ্র হিসেবে গড়ে ওঠে।
* (গ) আদিম যুগের অবশিষ্ট উদ্ধার হওয়া ভারতের কয়েকটি স্থানের নাম উল্লেখ করো।
Ans. আদিম যুগের অবশিষ্ট উদ্ধার হওয়া ভারতের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য স্থান হল- ভীমবেটকা (মধ্যপ্রদেশ), বেলান উপত্যকা (উত্তর প্রদেশ), মির্জাপুর (উত্তর প্রদেশ), বাগোর (রাজস্থান), এবং বুর্জহোম (কাশ্মীর)।
