পাঠ্যবইয়ের ভিতরের এবং অনুশীলনীর প্রশ্নোত্তর
মানব সম্পদ উন্নয়ন: উত্তর লেখো (পৃষ্ঠা ৮৪)
প্রশ্ন ১. কোন খ্রিস্টাব্দে আমাদের দেশে ‘শিক্ষার অধিকার আইন’ বলবৎ হয়েছে?
উত্তর ১. আমাদের দেশে ২০০৯ খ্রিস্টাব্দে ‘শিক্ষার অধিকার আইন’ বলবৎ হয়েছে।
প্রশ্ন ২. সুস্থ মনের জন্য মানুষের কীসের প্রয়োজন?
উত্তর ২. সুস্থ মনের জন্য মানুষের সুস্থ শরীরের প্রয়োজন।
প্রশ্ন ৩. মহাত্মা গান্ধি রাষ্ট্রীয় গ্রামীণ নিয়োগ নিশ্চিতকরণ প্রকল্প কোন অঞ্চলের মানুষের কর্মসংস্থানের জন্য গ্রহণ করা হয়েছে?
উত্তর ৩. মহাত্মা গান্ধি রাষ্ট্রীয় গ্রামীণ নিয়োগ নিশ্চিতকরণ প্রকল্প (MGNREGA) গ্রামাঞ্চলের মানুষের কর্মসংস্থানের জন্য গ্রহণ করা হয়েছে।
প্রশ্ন ৪. আমাদের মৌলিক চাহিদাগুলোর মধ্যে অন্যতম চাহিদাটি কী?
উত্তর ৪. আমাদের মৌলিক চাহিদাগুলোর মধ্যে অন্যতম চাহিদাটি হলো খাদ্য।
মানব সম্পদ উন্নয়ন: অনুশীলনী (পৃষ্ঠা ৮৫)
১। সংক্ষেপে উত্তর দাও –
প্রশ্ন ১. (ক) মানবসম্পদ উন্নয়নের বাধাসমূহ কী কী?
উত্তর ১. (ক) মানবসম্পদ উন্নয়নের বাধাসমূহ হলো—অধিক জনসংখ্যা—মূলধন বা পুঁজির অভাব—দারিদ্রতা—নিরক্ষরতা—অন্ধবিশ্বাস—কুসংস্কার—এবং বিভিন্ন ধরনের বৈষম্যতা।
প্রশ্ন ২. (খ) যেকোনো তিনপ্রকার বৈষম্যতার নাম উল্লেখ করো।
উত্তর ২. (খ) তিনপ্রকার বৈষম্যতার নাম হলো—ধর্মীয় বৈষম্যতা—ভাষাভিত্তিক বৈষম্যতা—এবং লিঙ্গ বৈষম্যতা।
প্রশ্ন ৩. (গ) বর্তমানে অসমে কয়টি চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় আছে?
উত্তর ৩. (গ) বর্তমানে অসমে ছয়টি চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় আছে।
প্রশ্ন ৪. (ঘ) অসমের রাষ্ট্রীয় কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি কোথায় অবস্থিত?
উত্তর ৪. (ঘ) অসমের রাষ্ট্রীয় কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি শিলচর-এ অবস্থিত।
প্রশ্ন ৫. (ঙ) সুস্থ শরীরের জন্য মানুষের কীসের প্রয়োজন হয়?
উত্তর ৫. (ঙ) সুস্থ শরীরের জন্য মানুষের পুষ্টিকর খাদ্য এবং উন্নত স্বাস্থ্য ব্যবস্থার প্রয়োজন হয়।
২। আলোচনা করো-
প্রশ্ন ১. (ক) মানব সম্পদ উন্নয়নের অসুবিধাসমূহ দূর করার জন্য কয়টি উল্লেখযোগ্য পরামর্শ।
উত্তর ১. (ক) মানব সম্পদ উন্নয়নের অসুবিধাসমূহ দূর করার জন্য কয়েকটি উল্লেখযোগ্য পরামর্শ হলো:
* জনসংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ: জনসংখ্যা বৃদ্ধির দ্রুত হার হ্রাস করতে হবে।
* শিক্ষা ও প্রশিক্ষণে গুরুত্ব: উপযুক্ত এবং বিজ্ঞানসম্মত শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করে নিরক্ষরতা দূর করতে হবে—এবং বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ মানব সম্পদ সৃষ্টি করতে হবে।
* স্বাস্থ্য ও খাদ্য সুরক্ষা নিশ্চিতকরণ: উন্নত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও পুষ্টিকর খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে—বিশেষত দারিদ্র সীমারেখার নীচে থাকা লোকেদের জন্য।
* কুসংস্কার ও অন্ধবিশ্বাস দূরীকরণ: বিজ্ঞান ও পরিবর্তনশীল চিন্তাধারা প্রসারের মাধ্যমে সমাজের অন্ধবিশ্বাস দূর করতে হবে।
* কর্মসংস্থান সৃষ্টি: কর্মসংস্থানমূলক প্রকল্প গ্রহণ করে বেকার সমস্যা লাঘব করতে হবে।
প্রশ্ন ২. (খ) মানব সম্পদ উন্নয়নে সরকারের ভূমিকা।
উত্তর ২. (খ) মানব সম্পদ উন্নয়নে সরকারের ভূমিকা অপরিসীম। সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে:
* শিক্ষাক্ষেত্রে: শিক্ষার অধিকার আইন বলবৎ করা এবং সর্বশিক্ষা অভিযান—রাষ্ট্রীয় মাধ্যমিক শিক্ষা অভিযান ইত্যাদির মাধ্যমে প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত উন্নত শৈক্ষিক পরিকাঠামো (বিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয়, কারিগরি প্রতিষ্ঠান) গড়ে তোলে।
* স্বাস্থ্য ও খাদ্যক্ষেত্রে: রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য অভিযান মিশনের অধীনে স্বাস্থ্যকেন্দ্র, হাসপাতাল স্থাপন করে উন্নত চিকিৎসা সেবা প্রদান—এবং খাদ্য সুরক্ষার জন্য সার্বজনীন বিতরণ ব্যবস্থার মাধ্যমে সুলভে খাদ্য সামগ্রী যোগান দেওয়া।
* কর্মসংস্থান ক্ষেত্রে: MGNREGA বা প্রধানমন্ত্রী কর্মসংস্থান নিশ্চিতকরণ কর্মসূচি (PMEGP)-এর মতো নিয়োগজনিত কর্মসূচি গ্রহণ করা।
* স্বাবলম্বীকরণ: বৃত্তিমূলক কর্মশালার আয়োজন—এবং ঋণদান বা প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণের মাধ্যমে জনসাধারণকে স্বাবলম্বী করে তোলা।
প্রশ্ন ৩. (গ) দারিদ্রতা এবং মানব সম্পদ উন্নয়নের মধ্যে সম্পর্ক।
উত্তর ৩. (গ) দারিদ্রতা মানব সম্পদ উন্নয়নের একটি অন্যতম বাধা।
* দারিদ্রতার কারণে দেশের দরিদ্র লোকেরা শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাদ্য এবং উপযুক্ত শিক্ষা লাভ করতে পারে না।
* ফলে তারা কর্মশক্তিতে দুর্বল হয়—আত্মমর্যাদা হারিয়ে ফেলে এবং উন্নত মানব সম্পদ হিসেবে গড়ে ওঠার মানসিকতা হারায়—যা দারিদ্রতা থেকে মুক্তির পথকে কঠিন করে তোলে।
প্রশ্ন ৪. (ঘ) নিরক্ষরতা কীভাবে মানবসম্পদ বিকাশে বাধার সৃষ্টি করে?
উত্তর ৪. (ঘ) নিরক্ষরতা জ্ঞান—উপযুক্ততা—দক্ষতা—কারিগরি কুশলতা ইত্যাদি বৃদ্ধিতে বাধার সৃষ্টি করে—যা মানুষকে মানব সম্পদ হিসেবে গড়ে ওঠার ক্ষেত্রে অন্তরায় স্বরূপ। নিরক্ষর লোকেরা সহজেই বিভিন্ন ধরনের শোষণের বলি হয়—যার ফলে আর্থ-সামাজিক বৈষম্য প্রকট হয়ে ওঠে এবং সামগ্রিক মানব সম্পদ বিকাশের পথ রুদ্ধ হয়।
প্রশ্ন ৫. (ঙ) অন্ধবিশ্বাস তথা কুসংস্কার মানব সম্পদের বিকাশে কীভাবে প্রভাব ফেলে?
উত্তর ৫. (ঙ) অন্ধবিশ্বাস মানব সম্পদ উন্নয়নের পথে একটি উল্লেখযোগ্য বাধা। অন্ধবিশ্বাসী লোকেরা বৈজ্ঞানিক এবং পরিবর্তনশীল চিন্তাধারার পরিপন্থী—তারা বৈজ্ঞানিক জ্ঞান গ্রহণ করতে পারে না—ফলে আধুনিক প্রযুক্তিগত দক্ষতা বা কুশলতা অর্জন করতে পারে না—যা উন্নত মানব সম্পদ হিসেবে গড়ে উঠতে বাধা দেয়। যেমন ডাইনি হত্যা অন্ধবিশ্বাসের কারণে সামাজিক প্রগতিতে বাধা সৃষ্টি করে।
৩। শূন্যস্থান পূর্ণ করো-
প্রশ্ন ১. (ক) মানব সম্পদ উন্নয়নের অন্যতম প্রয়োজন হচ্ছে শিক্ষা স্বাস্থ্য এবং বিভিন্ন পৌর সুবিধা।
প্রশ্ন ২. (খ) নিরক্ষর লোকেরা অতি সহজে বিভিন্ন ধরনের শোষণের বলি হয়।
প্রশ্ন ৩. (গ) শিক্ষার অধিকার আমাদের অন্যতম মৌলিক অধিকার।
প্রশ্ন ৪. (ঘ) ২০০৯ খ্রিস্টাব্দ থেকেই আমাদের দেশে শিক্ষার অধিকার আইন বলবৎ হয়েছে।
প্রশ্ন ৫. (ঙ) সরকারের গৃহীত ও প্রবর্তিত সঠিক পরিকল্পনাই মানবসম্পদ উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত করে।
প্রশ্ন ৬. (চ) উপযুক্ত শৈক্ষিক পরিবেশ গড়ে তোলাটা একটি দেশের সরকারের অন্যতম দায়িত্ব।
৪। তোমাদের আশে পাশে বসবাসকারী চার/পাঁচজন মানুষের জীবনে সংঘটিত অন্ধবিশ্বাসের চাক্ষুস কোনো ঘটনার অভিজ্ঞতা সংগ্রহ করো। অন্ধবিশ্বাস দূর করার জন্য তুমি কী কী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে তা বর্ণনা করো।
উত্তর ৪. এটি একটি প্রকল্পভিত্তিক প্রশ্ন—ছাত্র-ছাত্রীদের নিজেদের অভিজ্ঞতা এবং স্থানীয় পরিবেশের ভিত্তিতে উত্তর দিতে হবে।
অন্ধবিশ্বাস দূর করার জন্য ব্যবস্থা:
* সচেতনতা বৃদ্ধি: বিজ্ঞান ও যুক্তির ভিত্তিতে সমাজের সব স্তরের মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা।
* শিক্ষার প্রসার: বিশেষত গ্রামীণ ও পিছিয়ে পড়া অঞ্চলে শিক্ষার গুরুত্ব বাড়ানো—কারণ নিরক্ষরতা অন্ধবিশ্বাসে উৎসাহ যোগায়।
* বৈজ্ঞানিক চিন্তাধারা প্রচার: কুসংস্কারের পরিবর্তে বৈজ্ঞানিক এবং পরিবর্তনশীল চিন্তাধারার প্রচার করা।
* সামাজিক অংশগ্রহণ: অন্ধবিশ্বাস দূর করার জন্য গঠিত সামাজিক সংগঠন বা সরকারি কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করা।
