ভু অবয়ব এবং মানুষ, Chapter 3, Class -6, SEBA New Syllabus
ভু অবয়ব এবং মানুষ, Chapter 3, Class -6, SEBA New Syllabus
অনুশীলনী – ১ (পৃষ্ঠা ২৩)
১। নীচের প্রশ্নগুলোর সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও-
* (ক) পৃথিবীর কোন অংশে প্রধান ভূ-অবয়বগুলো দেখা যায়?
Ans. প্রধান ভূ-অবয়বগুলো পৃথিবীর উপরিভাগে দেখা যায়। সচরাচর চোখে পড়া ভূ-অবয়বের দুটি প্রধান ভাগ হল জলভাগ ও স্থলভাগ।
* (খ) স্থলভাগের প্রধান ভূ-অবয়বগুলোর নাম লেখো।
Ans. স্থলভাগের কয়েকটি প্রধান ভূ-অবয়ব হল পাহাড়-পর্বত, মালভূমি, সমভূমি এবং উপত্যকা।
* (গ) পর্বত এবং মালভূমির মধ্যে পার্থক্য উল্লেখ করো।
Ans. পাহাড়-পর্বতের সঙ্গে মালভূমির পার্থক্য হল, পাহাড়-পর্বতে উঁচু এবং খাড়া শিখর বা শৃঙ্গ থাকে। অন্যদিকে মালভূমির উপরিভাগ চওড়া এবং প্রায় সমতল হয়।
* (ঘ) সমভূমি কীভাবে গঠিত হয়?
Ans. নদ-নদী, পুকুর বা ঝরনার প্রবাহমান জল উঁচু ভূমি থেকে শিলা, বালি, মাটি ইত্যাদি ভাসিয়ে নিয়ে নিম্নভূমি অঞ্চলে জমা করে। বহু বছর ধরে এই কাজ চলার ফলে উচ্চভূমিসমূহ ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে সমভূমির সৃষ্টি হতে পারে।
* (ঙ) মরুভূমি অঞ্চলের বৈশিষ্ট্য কী?
Ans. মরুভূমি অঞ্চলে বছরে ২৫০ মিলিমিটার থেকেও কম বৃষ্টি হয়, ফলে এখানে অতি শুষ্ক পরিবেশ দেখা যায়। এই অঞ্চলে দিনের বেলায় তাপমাত্রা অত্যন্ত বেশি থাকে এবং রাতের বেলায় তাপমাত্রা অত্যন্ত কমে যায়। মরুভূমির ভূ-ভাগ সাধারণত বালুময় এবং শিলাময় হয়।
* (চ) পার্বত্য অঞ্চলের জনবসতি কম কেন?
Ans.পাহাড়-পর্বত ইত্যাদি উচ্চভূমিগুলো সাধারণত শিলাময় এবং খাড়া ঢালযুক্ত হয়। এই অঞ্চলগুলোতে কৃষিকাজ এবং বাড়িঘর নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় সমতল অঞ্চলের অভাব দেখা যায়। আর তাই এই সমস্ত অঞ্চলে জনবসতি কম হয়।
২। পাহাড়-পর্বত কীভাবে মানুষকে সাহায্য করে লেখো।
Ans.পাহাড়-পর্বত নানাভাবে মানুষের জীবন-যাপনে অবদান রাখে।
* জলের উৎস: পৃথিবীর অধিকাংশ প্রধান নদীর উৎসস্থল হল পর্বতের হিমবাহ এবং ঝরনা। তাই পাহাড়-পর্বতকে মানুষের ব্যবহারের উপযোগী জলের ভাণ্ডার বলা যেতে পারে।
* কৃষিকাজ: পাহাড়ের ঢালু অঞ্চলে ধাপ কেটে মানুষ ধান, গম, আলু, ফল-মূল ইত্যাদি চাষ করে।
* বনজ সম্পদ: পাহাড়ি বনাঞ্চল থেকে মানুষেরা জ্বালানি কাঠ, খাদ্যবস্তু, গৃহ নির্মাণের সামগ্রী এবং ঔষধি গুণযুক্ত উদ্ভিদ সংগ্রহ করে।
* পর্যটন: পাহাড়-পর্বতের কিছু কিছু স্থান স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপযোগী, তাই এই স্থানগুলো পর্যটনস্থল হিসেবেও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
৩। নদী, পাহাড় ইত্যাদি ভূ-অবয়বগুলো চিহ্নিত করে একটি ছবি আঁকো।
Ans.এটি একটি অঙ্কনমূলক কাজ, যা আপনাকে নিজে করতে হবে।
অনুশীলনী – ২ (পৃষ্ঠা ২৮)
১। নীচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও-
* (ক) জলমণ্ডল কাকে বলে?
Ans.সাগর-মহাসাগর, উপসাগর, নদ-নদী, হ্রদ—এই সকলকে একসঙ্গে জলভাগ বা জলমণ্ডল বলা হয়।
* (খ) পৃথিবীর গভীরতম অংশের নাম কী?
Ans.প্রশান্ত মহাসাগরের গভীরতম অংশের নাম হল মেরিয়ানা খাদ (Trance), যার গভীরতা ১০৯৮৪ মিটার।
* (গ) মহাদেশের মধ্যভাগে অবস্থিত একটি সাগরের নাম লেখো।
Ans.মহাদেশের মধ্যভাগে বা অভ্যন্তরে অবস্থিত সাগরের উদাহরণ হল- কাস্পিয়ান সাগর বা আরল সাগর।
* (ঘ) নদীর উৎস কাকে বলে?
Ans. যে স্থান থেকে নদীর জলধারা শুরু হয়, তাকে নদীর উৎস (Source) বলে।
* (ঙ) শাখা নদী কী?
Ans.কোনো একটি নদী থেকে জলধারা বেরিয়ে এসে যদি অন্য কোনো নদী বা সেই একই নদীতে গিয়ে পড়ে, তবে তাকে শাখা নদী (Branch River) বলে।
২। সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো-
* (ক) সাগর-মহাসাগর
Ans. পৃথিবীর জলভাগের প্রধান অংশ হলো পাঁচটি মহাসাগর—প্রশান্ত মহাসাগর, আটলান্টিক মহাসাগর, ভারত মহাসাগর, উত্তর মহাসাগর এবং দক্ষিণ মহাসাগর। প্রশান্ত মহাসাগর হল পৃথিবীর বৃহত্তম এবং গভীরতম মহাসাগর। মহাসাগরের কিছু বিশেষ অংশকে সাগর বা উপসাগর বলা হয়, যেগুলো সাধারণত মহাদেশের গায়ে লেগে থাকে, যেমন—আরব সাগর বা বঙ্গোপসাগর। আবার কিছু সাগর মহাদেশের সম্পূর্ণ অভ্যন্তরেও থাকতে পারে, যেমন—কাস্পিয়ান সাগর।
* (খ) নদ-নদী
Ans.ভূ-পৃষ্ঠের উচ্চ ভূমি থেকে নিম্নভূমিতে বিশেষ পথ দিয়ে প্রবাহিত জলধারাকে নদী বলে। বৃষ্টি, বরফ গলা জল বা ভূ-গর্ভের জলধারা থেকে নদীর সৃষ্টি হয়। যে স্থান থেকে নদীর জলধারা শুরু হয় তাকে নদীর উৎস বলে। কোনো ছোটো নদী বড়ো নদীতে মিলিত হলে তাকে উপনদী বলে। আবার কোনো নদী থেকে জলধারা বেরিয়ে গেলে তাকে শাখা নদী বলে। নদী যখন কোনো হ্রদ বা সাগরে মিলিত হয়, সেই মিলনস্থলকে মোহনা বলে।
* (গ) সিক্তভূমি বা জলাভূমি
Ans.নদী উপত্যকা, পাহাড়-পর্বত বা মালভূমি অঞ্চলে দেখা যাওয়া ছোট-বড় জলাশয়কে আর্দ্রভূমি বা সিক্তভূমি (Wetland) বলা হয়। সাধারণত সমতল ভূমিতে অবস্থিত খাল, বিল, ডোবা, পুকুর ইত্যাদি এক একটি আর্দ্রভূমি। এই ভূমিগুলোর বেশিরভাগ সময়ই সিক্ত বা জলমগ্ন থাকে এবং এখানে প্রচুর জলজ উদ্ভিদ দেখা যায়। আর্দ্রভূমিগুলো পরিযায়ী পাখিদেরও আশ্রয়স্থল।
* (ঘ) হ্রদ
Ans. সাধারণত চারদিক স্থলভাগ দ্বারা বেষ্টিত জলভাগকে হ্রদ (Lake) বলা হয়। বৃষ্টি, হিমপ্রবাহ, জলপ্রপাত বা ভূ-গর্ভের জল থেকে হ্রদের সৃষ্টি হয়। রাশিয়ার বৈকাল হ্রদ পৃথিবীর সবচেয়ে গভীর হ্রদ। কিছু হ্রদের জল নির্মল ও সুস্বাদু হয়, আবার কিছু হ্রদের জল লবণাক্তও হতে পারে।
৩। মানুষের ওপর ভূ-অবয়বের প্রভাব বর্ণনা করো।
Ans.ভূ-অবয়ব মানুষের বসতি, অর্থনৈতিক কার্যকলাপ এবং বিচরণকে বহু পরিমাণে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। কোনো অঞ্চলের জনবসতি ঘন হবে না পাতলা হবে, তা মূলত সেই স্থানের ভূ-প্রকৃতি বা ভূ-অবয়বের ওপর নির্ভরশীল। এছাড়াও খনিজ দ্রব্যের উপস্থিতি, যাতায়াত ব্যবস্থার প্রসার এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের বিস্তারও ভূ-অবয়বের ওপর নির্ভর করে। মানুষ এই প্রাকৃতিক অবয়বগুলোর সঙ্গে খাপ খাইয়েই নিজের জীবন নির্বাহ করে আসছে।
