ভারতের শাসন ব্যবস্থার গঠন , Chapter -13, Class -6, SEBA, New Book
ভারতের শাসন ব্যবস্থার গঠন , Chapter -13, Class -6, SEBA, New Book
অনুশীলনী – ১ (পৃষ্ঠা ১০৬)
১। নীচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও-
* (ক) বাড়িতে বা বিদ্যালয়ে কোনো নীতি-নিয়ম না থাকলে কী হবে?
Ans. বাড়িতে বা বিদ্যালয়ে কোনো নীতি-নিয়ম না থাকলে বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে এবং কাজকর্মে অসুবিধা হতে পারে। এর ফলে সমাজ অকেজো হয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে।
* (খ) শাসন ব্যবস্থাটা কী?
Ans. সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা, সামাজিক জীবনকে বিভিন্ন নীতি-নিয়মের দ্বারা পরিচালিত করা এবং সেই নীতি-নিয়মগুলো সকলে মেনে চলছে কিনা তা নিশ্চিত করার প্রক্রিয়াকেই শাসন ব্যবস্থা (Governance) বলা হয়।
* (গ) সরকারই বা কী?
Ans. যে ব্যবস্থা নীতি-নিয়মগুলো গড়ে তোলে এবং সেগুলো সকলকে মেনে চলতে বাধ্য করে, সেই ব্যবস্থাটাই হল সরকার (Government)।
অনুশীলনী – ২ (পৃষ্ঠা ১০৮)
১। নীচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও-
* (ক) একটি সরকারের প্রধান অঙ্গগুলো কী কী?
Ans. একটি সরকারের প্রধান তিনটি অঙ্গ হল – বিধানমণ্ডল (Legislature), কার্যপালিকা (Executive), এবং ন্যায়পালিকা (Judiciary)।
* (খ) একটি সরকারের তিনটি অঙ্গ কীভাবে কাজ করে?
Ans. সরকারের তিনটি অঙ্গ একে অপরের থেকে পৃথক থেকে একে অপরের সাথে সঙ্গতি রেখে কাজ করে। বিধানমণ্ডল নতুন আইন প্রণয়ন করে বা পুরোনো আইনের সংশোধন করে। কার্যপালিকা বিধানমণ্ডলে প্রস্তুত করা আইনসমূহ কার্যকরী করে। ন্যায়পালিকা আইন ভঙ্গকারীকে বিচার করে এবং আইনের সঠিক ব্যাখ্যা প্রদান করে।
* (গ) কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য স্তরে একটি সরকারের তিনটি অঙ্গের গঠন কী ধরনের হয়?
Ans. কেন্দ্রীয় স্তরে:
* বিধানমণ্ডল (সংসদ): লোকসভা (নিম্নসদন) ও রাজ্যসভা (উচ্চসদন) নিয়ে গঠিত।
* কার্যপালিকা: রাষ্ট্রপতি (নামমাত্র প্রধান), প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিপরিষদ (প্রকৃত প্রধান)।
* ন্যায়পালিকা: তম ন্যায়ালয় (Supreme Court)।
* রাজ্য স্তরে:
* বিধানমণ্ডল: বিধান সভা (নিম্নসদন) এবং কিছু রাজ্যে বিধান পরিষদ (উচ্চসদন)।
* কার্যপালিকা: রাজ্যপাল (নামমাত্র প্রধান), মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিপরিষদ (প্রকৃত প্রধান)।
* ন্যায়পালিকা: উচ্চ ন্যায়ালয়।
* (ঘ) ক্ষমতার পৃথকীকরণ বলতে কী বোঝো?
Ans. সংবিধান ভারত সরকারের তিনটি অঙ্গ – কার্যপালিকা, বিধানমণ্ডল ও ন্যায়পালিকার ক্ষমতা এবং কার্যাবলী পৃথক করে দিয়েছে। বিধানমণ্ডলে তৈরি আইন কেবল কার্যপালিকা কার্যকরী করতে পারে। আইন কার্যকরী হওয়ার পর কোনো সমস্যা হলে তার আইনগত সমাধান কেবল ন্যায়পালিকা দিতে পারে। প্রতিটি অঙ্গের ক্ষমতা আলাদা হলেও, তারা নিজ নিজ কার্যাবলী দ্বারাই বিভক্ত। এই ব্যবস্থাকেই ক্ষমতার পৃথকীকরণ (Separation of power) বলে।
* (ঙ) ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ ও ভারসাম্য বলতে কী বোঝায়?
Ans. ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ ও ভারসাম্য (Checks and Balances) হল এমন একটি ব্যবস্থা যা সরকারের তিনটি অঙ্গের মধ্যে ক্ষমতার সমতা বজায় রাখে। যদি সরকারের কোনো একটি অঙ্গ প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ক্ষমতা প্রয়োগ করে বা সংবিধান বহির্ভূত কাজ করে, তবে অন্য দুটি অঙ্গ তার বিচার করে ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষা করে।
অনুশীলনী – ৩ (পৃষ্ঠা ১১০)
১। নীচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও-
* (ক) গণতন্ত্র শব্দটি কোন ভাষা থেকে এসেছে?
Ans. গণতন্ত্র (Democracy) শব্দটি গ্রিক শব্দ ‘Demos’ (জনসাধারণ) এবং ‘Kratos’ (শাসন বা ক্ষমতা) থেকে এসেছে।
* (খ) গণতন্ত্রের আভিধানিক অর্থ কী?
Ans. গণতন্ত্রের আভিধানিক অর্থ হল জনসাধারণের শাসন বা জনসাধারণের ক্ষমতা।
* (গ) ভারত ছাড়া গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থাযুক্ত অন্য দুটি দেশের নাম লেখো এবং সেই দেশগুলোর রাজধানীর নাম উল্লেখ করো। প্রতিটি দেশের ভৌগোলিক অবস্থিতি মানচিত্র বা গোলকে খুঁজে বের করো।
Ans. ভারত ছাড়া গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থাযুক্ত দুটি দেশ হল:
* আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র (রাজধানী: ওয়াশিংটন, ডি.সি.)
* যুক্তরাজ্য (রাজধানী: লন্ডন)
* (মানচিত্র বা গোলকে এদের অবস্থান খুঁজে বের করার কাজটি ছাত্রছাত্রীদের নিজেদের করতে হবে।)
* (ঘ) প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্র কী?
Ans. আধুনিক যুগে জনসংখ্যা বেশি হওয়ায় জনসাধারণ সরাসরি শাসনকার্যে অংশ নিতে পারে না। তাই তারা ভোট দিয়ে কিছু প্রতিনিধি নির্বাচন করে, যারা জনসাধারণের হয়ে সরকার চালায়। এই ব্যবস্থাকেই প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্র (Representative Democracy) বলে।
* (ঙ) প্রত্যক্ষ গণতন্ত্র এবং পরোক্ষ গণতন্ত্র কী?
v Ans. প্রত্যক্ষ গণতন্ত্র: যেখানে নাগরিকরা কোনো প্রতিনিধি ছাড়াই সরাসরি সরকারি সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে। (যেমন প্রাচীন গ্রীসের কিছু নগর-রাষ্ট্রে ছিল বা বর্তমানে সুইজারল্যান্ডের কিছু ক্যান্টনে দেখা যায়)।
* পরোক্ষ গণতন্ত্র: যেখানে নাগরিকরা প্রতিনিধি নির্বাচন করেন এবং সেই নির্বাচিত প্রতিনিধিরা সরকারের হয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। একে প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্রও বলা হয়। ভারতের শাসন ব্যবস্থা পরোক্ষ গণতন্ত্রের উদাহরণ।
* (চ) তৃণমূল গণতন্ত্র কী?
Ans. জনসাধারণ যখন স্থানীয় প্রশাসনে (যেমন গ্রাম পঞ্চায়েত বা পৌরসভায়) প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করে বা সহায়তা করে, তখন তাকে তৃণমূল গণতন্ত্র (Grassroots Democracy) বলা হয়। এই ব্যবস্থায় সাধারণ মানুষের নিজস্ব মতামতের গুরুত্ব থাকে।
