বিরুবালা রাভা, Chapter – 8, Class – 6, SEBA, New syllabus

বিরুবালা রাভা

বিরুবালা রাভা থেকে সমস্ত প্রশ্নের উত্তর নিচে দেওয়া হলো। পাঠ 8

পাঠভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর (Page 3-4)

১। নীচের প্রশ্নসমূহ থেকে শুদ্ধ উত্তরটি বেছে সঠিক বৃত্তটি পূর্ণ করো-

১)কার শরীরে পরি প্রবেশ করেছে বলে ওরা গণনা করে বলেছিলেন?
(ক) ধর্মেশ্বর রাভার শরীরে

২)অসম ডাইনি অপরাধ (প্রতিরোধ নিষেধাজ্ঞা ও সুরক্ষা) আইন কবে প্রণয়ন করা হয়েছিল?
(গ) ২০১৫ খ্রিস্টাব্দে


২। নীচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লেখো-

ক। বিরুবালা রাভার কেমন ধরনের স্বভাব সকলকে আকৃষ্ট করেছিল?
Ans.বিরুবালা রাভার বিনয়ী স্বভাব সকলকে আকৃষ্ট করেছিল। এছাড়াও তিনি সাহসী ছিলেন এবং খেলাধুলা করতে পছন্দ করতেন।

খ। বিরুবালা কেন শিক্ষকদের প্রিয় ছিলেন?
Ans.স্কুলে পড়ার সময় বিরুবালার নেতৃত্বের গুণাবলি প্রকাশ পায়। তিনি তাঁর পড়াশোনা এবং স্কুলের যে-কোনো ক্রিয়াকলাপে অগ্রগামী ছিলেন, তাই তিনি শিক্ষকদের প্রিয় হয়ে ওঠেন।

গ। বিরুবালা রাভার সঙ্গে ডাইনি বিশ্বাস বিরোধী অভিযানে অংশগ্রহণকারী সংগঠনটির নাম কী ছিল?
Ans.বিরুবালা রাভার সঙ্গে ডাইনি বিশ্বাস বিরোধী অভিযানে অংশগ্রহণকারী সংগঠনটির নাম ছিল অসম মহিলা সমিতি।

ঘ। বিরুবালা রাভার ‘মিশন বিরুবালা’ অভিযানকে অসম সরকার কী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল?
Ans.বিরুবালা রাভার ‘মিশন বিরুবালা’ অভিযানকে অসম সরকার রাজ্যিক মিশন হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল।

ঙ।  রাজ্য সরকার বিরুবালাকে কী পুরস্কারে ভূষিত করেছিল?
Ans.রাজ্য সরকার বিরুবালাকে ‘সতী সাধনী’ পুরস্কারে ভূষিত করেছিল।

চ। ভারত সরকার বিরুবালাকে কী সম্মান প্রদান করে?
Ans.ভারত সরকার বিরুবালাকে ‘পদ্মশ্রী’ উপাধিতে ভূষিত করে।


৩। আলোচনা করে বলো-

ক। বিরুবালা রাভা ডাইনি বিশ্বাসের কবল থেকে সমাজকে মুক্ত করার পণ কেন করেছিলেন?
Ans.বিরুবালা রাভা ডাইনি বিশ্বাসের কবল থেকে সমাজকে মুক্ত করার পণ করেছিলেন কারণ তাঁর বড়ো ছেলে ধর্মেশ্বরের মানসিক অসুস্থতার সময় গণক ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে সে পরীর সাথে বিয়ে হওয়ায় মারা যাবে। বিরুবালা সেই গণকের কথা বিশ্বাস না করে ছেলেকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান এবং ছেলে সুস্থ হয়ে ওঠে। এই ঘটনা তাঁর জীবনে গভীর প্রভাব ফেলেছিল এবং তিনি নিশ্চিত হন যে ওঝার কথা মিথ্যা। তিনি বুঝতে পারেন যে জাদুবিদ্যা সম্পর্কে কুসংস্কার মানুষকে বিপদে ফেলে। তাই তিনি সমাজকে এ ধরনের কুসংস্কার থেকে মুক্ত করার অঙ্গীকার করেন।

খ। ‘মিশন বিরুবালা’ অভিযানে ডাইনি বিশ্বাসের বিরুদ্ধে কী ধরনের কাজ করা হয়েছিল?
Ans.’মিশন বিরুবালা’ অভিযানে ডাইনি বিশ্বাসের বিরুদ্ধে নিম্নলিখিত ধরনের কাজ করা হয়েছিল:

এই প্রচারাভিযানের মাধ্যমে ডাইনি বিশ্বাসের কুসংস্কারের ও অন্ধবিশ্বাসের শিকার পঞ্চাশেরও বেশি মানুষের জীবন বাঁচানো হয়েছিল।

এটি ছিল একটি ডাইনি-বিশ্বাস বিরোধী আন্দোলন।

এই অভিযানের ফলে অসমের মানুষের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়, যার ফলস্বরূপ অসম সরকার ২০১৫ খ্রিস্টাব্দে অসম ডাইনি অপরাধ (প্রতিরোধ, নিষেধাজ্ঞা ও সুরক্ষা) আইন প্রণয়ন করে।



৪। বিরুবালা রাভার জীবন সম্পর্কে দশটি বাক্য লেখো।

Ans.বিরুবালা রাভা ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দের ৫ ফেব্রুয়ারি গোয়ালপাড়া জেলার ঠাকুরবিলায় জন্মগ্রহণ করেন।

তিনি পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা লাভ করেন।

শৈশবে বাবাকে হারানোর কারণে গৃহস্থালির কাজে মাকে সাহায্য করতে তাঁকে অল্প বয়সেই পড়াশোনা শেষ করতে হয়েছিল।

তিনি ছোটোবেলা থেকেই বিনয়ী, সাহসী এবং খেলাধুলা ও ঘরের কাজে পারদর্শী ছিলেন।

১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি চণ্ডীচরণ রাভাকে বিয়ে করেন এবং তাঁদের তিন ছেলে ও এক মেয়ে ছিল।

তাঁর বড়ো ছেলে ধর্মেশ্বরের অসুস্থতায় গণকের মিথ্যা ভবিষ্যদ্বাণীর ঘটনা তাঁকে কুসংস্কারমুক্ত সমাজ গড়ার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ করে।

২০০১ খ্রিস্টাব্দে তিনি অসম মহিলা সমিতিতে যোগ দেন এবং ‘মিশন বিরুবালা’ নামে একটি অভিযান আরম্ভ করেন।

তাঁর এই অভিযানের মাধ্যমে তিনি ডাইনি বিশ্বাসের শিকার হওয়া ৫০-এরও বেশি মানুষের জীবন বাঁচিয়েছিলেন।

তিনি ২০০৫ খ্রিস্টাব্দে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হন এবং ২০২১ খ্রিস্টাব্দে ভারত সরকার কর্তৃক ‘পদ্মশ্রী’ উপাধিতে ভূষিত হন।

তিনি আজীবন বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে সমাজ সংস্কারের জন্য কাজ করেছেন এবং ১৩ মে ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।


৫। অন্ধবিশ্বাসের ফলে মানুষ কী ধরনের বিপদে পড়ে?

Ans.শারীরিক নির্যাতন ও মৃত্যু: ডাইনি প্রথা যেখানে প্রচলিত, সেখানে কোনো মহিলা বা পুরুষকে ডাইনি শনাক্ত করে নানাভাবে অত্যাচার করা হয়, যার ফলে নিরীহ মানুষটির মৃত্যু পর্যন্ত ঘটে।

অর্থনৈতিক ক্ষতি: অন্ধবিশ্বাসী মানুষ চিকিৎসার বদলে গণক ঠাকুর বা ওঝার কাছে গিয়ে অর্থ ও সময় নষ্ট করে।

চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হওয়া: অসুস্থতা বা রোগকে জাদু বা ডাইনির কাজ বলে বিশ্বাস করার কারণে মানুষ ডাক্তারের কাছে যাওয়া থেকে বিরত থাকে, ফলে সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে বিপদে পড়ে। বিরুবালা রাভার ছেলে ধর্মেশ্বরের ক্ষেত্রেও গণক ভুল ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল।

সামাজিক দুর্নাম ও বর্জন: যারা কুসংস্কারের বিরুদ্ধে কথা বলে বা যার পরিবারে বিপদ আসে, তাদের ‘ডাইনি’ বলে দুর্নাম দেওয়া হয় বা সমাজ থেকে বর্জন করা হয়।

মানসিক কষ্ট: আকস্মিক বিপদ বা ক্ষতিকে অন্ধবিশ্বাসের ফল মনে করে পরিবারে বিনামেঘে বজ্রপাতের মতো গভীর মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়।


ভাষা-অধ্যয়ন (Page 5)

৬। নীচের শব্দগুলো ভেঙে লেখো- (স্বরসন্ধি)

খ্রিস্টাব্দ = খ্রিস্ট + অব্দ (অ + অ = আ)

হিমালয় = হিম + আলয় (অ + আ = আ)

অতীত = অতি + ইত (ই + ই = ঈ)

স্বোচ্ছা = স্ব + ইচ্ছা (অ + ই = এ)

নবোদয় = নব + উদয় (অ + উ = ও)


৭। নীচের শব্দগুলোর সন্ধি বিচ্ছেদ করো- (ব্যঞ্জনসন্ধি)

তদুপরি = তদ্ + উপরি (দ্ + উ = দু)

দিগন্ত = দিক্ + অন্ত (ক্ + অ = গ)

জগজ্জননী = জগৎ + জননী (ত্ + জ = জ্জ)

সংগতি = সম্ + গতি (ম্ + গ = ং)

চলচ্চিত্র = চলৎ + চিত্র (ৎ + চ = চ্চ)


৮। নীচের দেওয়া শব্দগুলো সন্ধি অনুসারে তালিকাভুক্ত করো-

স্বরসন্ধি: মহাশয় (মহা + আশয়), প্রতীক্ষা (প্রতি + ইক্ষা), দেবালয় (দেব + আলয়), নীলোৎপল (নীল + উৎপল), চন্দ্রোদয় (চন্দ্র + উদয়)

ব্যঞ্জনসন্ধি: সচ্চরিত্র (সৎ + চরিত্র), সংহার (সম্ + হার), সজ্জন (সৎ + জন), সংযত (সম্ + যত), সম্ভাব (সম্ + ভাব)


৯। বাক্সের মধ্যে যে শব্দগুলি আছে সেগুলি অভিধানের মতো বর্ণানুক্রমিকভাবে লেখো-
কৃষি, কিছু, কারণ, দুঃখ, দেবতা, নব, বিপদ, বৃষ্টি, বিশ্ব, মা, রাতি, সাহস, সুলভ, সহজ, সমাজ

১০। নীচের শব্দগুলো ব্যবহার করে বাক্য রচনা করো-

হতাশ: পরীক্ষায় খারাপ ফল দেখে রাজু হতাশ হয়ে পড়ল।

দক্ষ: বিরুবালা রাভা শৈশব থেকেই ধান কাটার কাজে দক্ষ ছিলেন।

অশিক্ষিত: অশিক্ষিত মানুষের মনে কুসংস্কার সহজে বাসা বাঁধে।

গৌরব: ভারত সরকার তাঁকে ‘পদ্মশ্রী’ সম্মান দিয়ে দেশের গৌরব বৃদ্ধি করেছে।

বিশ্বাস: অন্ধ বিশ্বাস জীবনের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।

প্রিয়: বিরুবালা রাভা তাঁর পড়াশোনা ও নেতৃত্বের গুণে শিক্ষকদের প্রিয় হয়ে উঠেছিলেন।


লিঙ্গ নির্ণয় ও অন্যান্য (Page 6-7)

১১। নীচের শব্দগুলোর লিঙ্গ নির্ণয় করে তালিকাভুক্ত করো-

পুংলিঙ্গ: পুরুষ, অধ্যাপক

স্ত্রীলিঙ্গ: মা, রানি, শিক্ষয়িত্রী, ঠাকুমা, দেবী


১২। বর্ণ ও যুক্তাক্ষর শুদ্ধভাবে সাজিয়ে লেখা-

(ক) তা শহ = হতাশ (নিরাশ)

(খ) রাগ্যদুরো = দুরারোগ্য (সহজে আরোগ্য নয়)

(গ) বোকুষ্ঠাধ = সংকোচ (দ্বিধা)

(ঘ) য়ীন বি = বিনয়ী (নম্র, শান্ত, ভদ্র)

(ঙ) গামীগ্র অ = অগ্রগামী (কোনো কাজে এগিয়ে আসা ব্যক্তি)

(চ) চেপ্রষ্টা = প্রচেষ্টা (প্রয়াস, যত্ন)

(ছ) সীময়হী = মহীয়সী (মহান নারী)


১৩। বাগধারা ব্যবহার করে বাক্য রচনা করো-

অমাবস্যার চাঁদ (দুর্লভ বস্তু): এই গ্রামে একজন ভালো ডাক্তার পাওয়া যেন অমাবস্যার চাঁদ।

ছাইচাপা আগুন (প্রচ্ছন্ন প্রতিভা): বিরুবালার অদম্য সাহস ছিল ছাইচাপা আগুনের মতো, যা বিপদের সময় প্রকাশ পেয়েছিল।

যতক্ষণ শ্বাস ততক্ষণ আশ (শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আশাবাদী): ডাক্তাররাও যখন আশা ছেড়ে দিলেন, তখনও রোগীটির পরিবার বলল, “যতক্ষণ শ্বাস ততক্ষণ আশ।”

চাঁদের হাট (জ্ঞানী গুণীদের সমাবেশ): বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ডক্টরেট ডিগ্রিধারীদের নিয়ে চাঁদের হাট বসেছিল।

হাতে-কলমে (ব্যবহারিক অভিজ্ঞতা): অন্ধবিশ্বাস দূর করতে হলে মানুষকে হাতে-কলমে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি শেখাতে হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *