পিপলান্ত্রি গ্রাম”, Chapter- 9, Class-9, SEBA
“পিপলান্ত্রি গ্রাম”, Chapter- 9, Class-9, SEBA
ক) অতি সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও।
* ক। রাজস্থানের রাজধানীর নাম কী?
উত্তর: রাজস্থানের রাজধানীর নাম জয়পুর।
* খ। পিপলান্ত্রি গ্রামটি জয়পুর থেকে কত কিলোমিটার দূরে অবস্থিত?
উত্তর: পিপলান্ত্রি গ্রামটি জয়পুর থেকে ৩৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
* গ। পিপলান্ত্রি গ্রামটি রাজস্থানের কোন জেলার অন্তর্গত?
উত্তর: পিপলান্ত্রি গ্রামটি রাজস্থানের রাজসমন্দ জেলার অন্তর্গত।
* ঘ। পিপলান্ত্রি গ্রামের নাম গিনিজ বুক অফ ওয়ার্লড রেকর্ডসে কেন উঠেছিল?
উত্তর: মার্বেল পাথরের জন্য পিপলান্ত্রি গ্রামের নাম গিনিজ বুক অফ ওয়ার্লড রেকর্ডসে উঠেছিল।
* ঙ। গ্রামটিকে পুনরুজ্জীবিত করে তুলতে কে প্রধান ভূমিকা পালন করেছিলেন?
উত্তর: শ্যামসুন্দর পালিওয়াল গ্রামটিকে পুনরুজ্জীবিত করে তুলতে প্রধান ভূমিকা পালন করেছিলেন।
* চ। পৃথিবীর কোন দেশের শিক্ষা পাঠক্রমে পিপলান্ত্রি গ্রামের কাহিনি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে?
উত্তর: ডেনমার্কের প্রাথমিক শিক্ষার পাঠ্যক্রমে পিপলান্ত্রি গ্রামের কাহিনি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
* ছ। আর্জেন্টিনার একটি দল ভারতে এসে এই গ্রামটিকে নিয়ে যে সিনেমা নির্মাণ করেছে সেই সিনেমাটির নাম কী?
উত্তর: সিনেমাটির নাম ‘Tree Sister’।
* জ। শ্যামসুন্দর পালিওয়াল কত সালে গ্রামের কোন দায়িত্ব পালন করেন?
উত্তর: শ্যামসুন্দর পালিওয়াল ২০০৫ সালে (২০০৫-২০১০ সাল পর্যন্ত) গ্রামপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেন।
* ঝ। শ্যামসুন্দর পালিওয়ালের কন্যার নাম কী ছিল?
উত্তর: শ্যামসুন্দর পালিওয়ালের কন্যার নাম ছিল কিরণ।
* ঞ। কন্যা সন্তানের জন্ম হলে গ্রামে কতটা গাছ লাগাতে হয়?
উত্তর: কন্যা সন্তানের জন্ম হলে গ্রামে ১১১টি চারা গাছ লাগাতে হয়।
* ট। রাখিবন্ধনের দিন গ্রামের মানুষ কী করেন?
উত্তর: রাখিবন্ধনের দিন গ্রামের কন্যা এবং মহিলারা গাছে রশি বেঁধে গাছ ও মানুষের সম্পর্ককে আরও গভীর ও অর্থবহ করে তোলেন।
* ঠ। ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া পিপলান্ত্রি গ্রামের ছেলেমেয়েদের পড়াশুনার জন্য কত টাকা দান করেছে?
উত্তর: ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া ৬০ লক্ষ টাকা দান করেছে।
খ) সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও।
* ক। পিপলান্ত্রি গ্রামে পরিবেশ দূষণের ফলে কী হয়েছিল?
উত্তর: পরিবেশ দূষণের ফলে পিপলান্ত্রি গ্রামে বিশুদ্ধ বাতাসের অভাব দেখা দেয়, গাছপালা কমে যাওয়ায় বৃষ্টিপাত হ্রাস পায় এবং কৃষিকাজে জলের তীব্র সংকট তৈরি হয়। জলাশয়ের জল দূষিত হয়ে পড়ে, যা ব্যবহারে রোগের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। ভূগর্ভের জলের স্তর অনেক নীচে নেমে যায়, কৃষিজমির উর্বরা শক্তি হ্রাস পায়, পশুপাখির সংখ্যা কমতে থাকে এবং দারিদ্র্যের কারণে গ্রামের যুবকরা কাজের খোঁজে শহরমুখী হতে বাধ্য হয়।
* খ। পিপলান্ত্রি গ্রামে কেন পরিবেশ দূষণ দেখা দিয়েছিল?
উত্তর: পিপলান্ত্রি গ্রামে বড় বড় ব্যবসায়ীরা বিশাল বিশাল মার্বেল পাথরের খনি শুরু করে। এই খনিগুলিতে মার্বেল পাথর তোলার জন্য দিনরাত কাজ চলার ফলে পিপলান্ত্রি গ্রামের পরিবেশ মারাত্মকভাবে দূষিত হয়ে পড়েছিল এবং প্রকৃতি ধ্বংস হচ্ছিল।
* গ। পিপলান্ত্রি গ্রামকে নিয়ে কোথায় কোথায় কী হয়েছে লেখো।
উত্তর: পিপলান্ত্রি গ্রামের সাফল্য ও কাজকর্মের বিষয় ডেনমার্কের প্রাথমিক শিক্ষার পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। রাজস্থান সরকারের শিক্ষা বিভাগও সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির পাঠ্যক্রমে এই গ্রামের কথা অন্তর্ভুক্ত করেছে। আর্জেন্টিনার একটি দল এই গ্রামকে নিয়ে ‘Tree Sister’ নামের একটি সিনেমা নির্মাণ করেছে। এছাড়া গ্রামটিকে নিয়ে শতাধিক তথ্যচিত্র এবং ‘পিপলান্ত্রি’ নামে একটি হিন্দি ছায়াছবিও তৈরি হয়েছে।
* ঘ। অকালপ্রয়াত কন্যার জন্যে শ্যামসুন্দর কী করেছিলেন?
উত্তর: অকালপ্রয়াত কন্যা কিরণের মৃত্যুতে ম্রিয়মান শ্যামসুন্দর পালিওয়াল, ঘটনাটিকে নিয়তির ইচ্ছা মনে করে কন্যার স্মৃতিতে একটি চারাগাছ রোপণ করেছিলেন।
* ঙ। শ্যামসুন্দর গ্রামের প্রতিটি মানুষকে কয়টি দায়িত্ব অর্পণ করেন এবং কী কী?
উত্তর: শ্যামসুন্দর পালিওয়াল গ্রামের প্রতিটি লোককে চারটি দায়িত্ব অর্পণ করেছিলেন। সেই চারটি দায়িত্ব হলো—
১. কন্যা সন্তানকে পুত্র সন্তানের মতোই ভালোভাবে প্রতিপালন করে বড় করতে হবে।
২. জল সংরক্ষণ করতে হবে।
৩. গাছপালা রোপণ করে প্রতিপালন করতে হবে।
৪. কৃষিকাজ করে নিজের প্রয়োজন পূরণ করতে হবে।
* চ। কন্যা সন্তানের প্রতি সাধারণত আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি কী? শ্যামসুন্দর এতে কী পরিবর্তন এনেছিলেন?
উত্তর: আমাদের দেশের বিভিন্ন রাজ্যে এখনও কন্যাসন্তানের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়। অনেকে কন্যাভ্রূণ হত্যা করতেও দ্বিধা করে না।
শ্যামসুন্দর পালিওয়াল এই মানসিকতার পরিবর্তন ঘটাতে সফল হন। তাঁর নির্দেশে, পিপলান্ত্রি গ্রামে কন্যাসন্তানের জন্ম হলে দুঃখ করার পরিবর্তে আনন্দ-উল্লাস করা হয়, উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয় এবং সেই কন্যাসন্তানের নামে ১১১টি চারাগাছ রোপণ করা হয়।
* ছ। কন্যা সন্তানের জন্ম হলে গ্রামবাসীরা কীভাবে টাকা জমান? এবং সেই টাকা পরে কীভাবে খরচ করা হয়?
উত্তর: কন্যাসন্তানের জন্ম হলে গ্রামবাসীরা ২১,০০০ টাকা চাঁদা তুলে এবং সন্তানের পিতা-মাতার কাছ থেকে ১০,০০০ টাকা নিয়ে মোট ৩১,০০০ টাকা উক্ত কন্যাসন্তানটির নামে ব্যাঙ্কে ‘ফিক্সড ডিপোজিট’ করে রাখে। এই টাকা পড়াশুনা করে কন্যা যখন বিয়ের উপযুক্ত বয়সে (অথবা শিক্ষার প্রয়োজনে) উপনীত হয়, একমাত্র তখনই তোলা যায়। ততদিনে সেই টাকা লক্ষাধিক টাকায় পরিণত হয়, যা কন্যার বিয়ে বা শিক্ষায় খরচ করা হয়।
* জ। শ্যামসুন্দরের এই উদ্যোগের ফলে গ্রামে বর্তমানে কী কী পরিবর্তন লক্ষ করা যায়?
উত্তর: শ্যামসুন্দরের উদ্যোগে গাছ লাগানোর ফলে গ্রামটি ধীরে ধীরে সুন্দর সবুজ হয়ে উঠেছে। গাছপালার সংখ্যা বাড়ায় পশুপাখি ও জীবজন্তুর আগমন ঘটেছে। দূষিত বায়ু কমে গিয়ে বিশুদ্ধ বায়ু প্রবাহিত হচ্ছে, উষ্ণতার প্রকোপ কমেছে এবং সময়মতো বৃষ্টিপাত হওয়ায় ভূগর্ভের জলের স্তর উপরে উঠে এসেছে। পুকুর-জলাশয় জলে ভরে যাওয়ায় কৃষিকাজের জন্য পর্যাপ্ত জল পাওয়া যাচ্ছে এবং গ্রামে সুখ-সমৃদ্ধি ফিরে এসেছে।
* ঝ। কত সালে পিপলান্ত্রি গ্রাম রাষ্ট্রপতি পুরস্কারে সম্মানিত হয়?
উত্তর: ২০০৭ সালে পিপলান্ত্রি গ্রাম রাষ্ট্রপতি পুরস্কারে সম্মানিত হয়।
গ) দীর্ঘ উত্তর লেখো।
* ক। পিপলান্ত্রি গ্রামে যে ভয়ঙ্কর পরিবেশ দূষণ দেখা দিয়েছিল সে সম্পর্কে আলোচনা করো।
উত্তর: একসময় পিপলান্ত্রি গ্রাম পরিবেশ দূষণের কবলে পড়ে অত্যন্ত শোচনীয় অবস্থায় পৌঁছেছিল। মার্বেল পাথরের জন্য বিখ্যাত হওয়ায় বড় বড় ব্যবসায়ীরা এখানে বিশাল খনি স্থাপন করে। এই খনিগুলিতে দিনরাত কাজ চলার ফলে প্রকৃতি ধ্বংস হওয়ার পাশাপাশি পরিবেশ মারাত্মকভাবে দূষিত হয়ে পড়ে। গ্রামে বিশুদ্ধ বাতাসের হাহাকার দেখা দেয়। গাছপালার সংখ্যা দ্রুতগতিতে কমতে থাকায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ হ্রাস পায়, ফলে কৃষিকাজের জন্য তীব্র জলসংকট দেখা দেয়। মার্বেল খনির দূষণে নদী-পুকুরের জলও বিষাক্ত হয়ে পড়ে, সেই জল ব্যবহার করে মানুষের মধ্যে রোগের প্রকোপ বাড়ে। ভূগর্ভের জলস্তর ৮০০ ফুট নীচে নেমে গিয়েছিল, মাটির উর্বরা শক্তিও হ্রাস পায়। পশুপাখি ও জীবজন্তুর সংখ্যা কমে যায় এবং নিদারুণ দারিদ্র্যের ফলে গ্রামের যুবকরা কাজের খোঁজে গ্রাম ছাড়তে শুরু করে, গ্রামটি দ্রুত ধ্বংসের মুখে এগিয়ে যায়।
* খ। পিপলান্ত্রি গ্রামের উজ্জীবনে শ্যামসুন্দরের অবদান আলোচনা করো।
উত্তর: পিপলান্ত্রি গ্রামের ধ্বংসের মুখে দাঁড়িয়ে ২০০৫ সালে শ্যামসুন্দর পালিওয়াল গ্রামপ্রধানের দায়িত্ব নেন। তাঁর অকালপ্রয়াত কন্যা কিরণের স্মৃতিতে একটি চারাগাছ রোপণের ঘটনা তাঁকে নতুন পথের দিশা দেখায়। তিনি ‘কিরণ নিধি যোজনা’ চালু করেন এবং নিয়ম প্রবর্তন করেন যে, গ্রামে জন্মানো প্রতিটি কন্যার নামে ১১১টি চারাগাছ রোপণ করতে হবে।
শ্যামসুন্দরের অবদান কেবল বৃক্ষরোপণে সীমাবদ্ধ ছিল না। তিনি গ্রামবাসীকে চারটি প্রধান দায়িত্ব পালনে উদ্বুদ্ধ করেন— কন্যা প্রতিপালন, জল সংরক্ষণ, বৃক্ষরোপণ ও কৃষিকাজ। তিনি কন্যাসন্তানের প্রতি সামাজিক বৈষম্য দূর করতে যুগান্তকারী পদক্ষেপ নেন। তিনি কন্যাভ্রূণ হত্যা ও বাল্যবিবাহ নিষিদ্ধ করেন, কন্যাদের শিক্ষা বাধ্যতামূলক করেন এবং প্রতিটি কন্যার নামে ৩১,০০০ টাকা ব্যাঙ্কে ফিক্সড ডিপোজিট করার নিয়ম চালু করে তাদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করেন। তাঁর এই সঠিক পরিকল্পনা, অক্লান্ত পরিশ্রম এবং মহৎ প্রচেষ্টাই পিপলান্ত্রি গ্রামকে পুনরুজ্জীবিত করে তোলে, গ্রামকে সবুজে ভরিয়ে তোলে এবং জলসংকট দূর করে সমৃদ্ধি ফিরিয়ে আনে ।
* গ। ‘কিরণ নিধি যোজনা’ কী? সে সম্পর্কে বিস্তৃত লেখো।
উত্তর: ‘কিরণ নিধি যোজনা’ হলো পিপলান্ত্রি গ্রামের প্রাক্তন প্রধান শ্যামসুন্দর পালিওয়ালের এক যুগান্তকারী উদ্যোগ।তাঁর অকালপ্রয়াত কন্যা কিরণের স্মৃতিতে তিনি এই যোজনা শুরু করেন।
এই যোজনার মূল উদ্দেশ্য ছিল প্রকৃতি সংরক্ষণ এবং কন্যাসন্তানের সুরক্ষা ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা। এই যোজনার প্রধান নিয়মটি হলো, গ্রামে যখনই কোনো কন্যাসন্তানের জন্ম হবে, তখন তার নামে ১১১টি মূল্যবান প্রজাতির চারাগাছ রোপণ করতে হবে। এই গাছগুলিকে কেবল রোপণ করলেই হবে না, কন্যাসন্তানের মতোই স্নেহ-মমতা ও যত্নের মাধ্যমে সেগুলিকে প্রতিপালন করতে হবে এবং এই গাছগুলিকে গ্রামের সম্পত্তি হিসাবে গণ্য করা হয়।
এর পাশাপাশি, যোজনার আর্থিক দিকটিও রয়েছে। কন্যাসন্তানের জন্ম হলে গ্রামবাসীরা ২১,০০০ টাকা এবং সন্তানের পিতা-মাতা ১০,০০০ টাকা দেন। এই মোট ৩১,০০০ টাকা ওই কন্যার নামে ব্যাঙ্কে ‘ফিক্সড ডিপোজিট’ হিসাবে সঞ্চিত রাখা হয়। এই টাকা কন্যাটি পড়াশুনা করে বিয়ের উপযুক্ত বয়সে উপনীত হলে তবেই তার শিক্ষা বা বিয়ের কাজে খরচ করা যায়। এই যোজনা একইসাথে পিপলান্ত্রি গ্রামের পরিবেশ ও অর্থনীতির আমূল পরিবর্তন ঘটিয়েছে।
* ঘ। শ্যামসুন্দর পালিওয়াল গ্রামে যে নিয়মগুলো চালু করেছিলেন তা উল্লেখ করো।
উত্তর: শ্যামসুন্দর পালিওয়াল পিপলান্ত্রি গ্রামকে পুনরুজ্জীবিত করতে কয়েকটি কঠোর ও সুনির্দিষ্ট নিয়ম চালু করেছিলেন। এই নিয়মগুলি পালনের জন্য গ্রামবাসীকে স্ট্যাম্প পেপারে স্বাক্ষর করে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হতো। প্রধান নিয়মগুলি হলো:
* বৃক্ষরোপণ: গ্রামে প্রতিটি কন্যাসন্তানের জন্ম হলে তার নামে ১১১টি চারাগাছ রোপণ করা বাধ্যতামূলক।
* কন্যাভ্রূণ হত্যা নিষিদ্ধ: গ্রামের কেউ কন্যাভ্রূণ হত্যা করতে পারবেন না।
* প্রতিপালন: রোপণ করা চারাগাছগুলিকে নিজের কন্যার মতোই যত্ন ও স্নেহ-মমতার মাধ্যমে প্রতিপালন করে বড় করতে হবে।
* শিক্ষা: কোনো কন্যাকেই শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা যাবে না।
* বাল্যবিবাহ রোধ: কোনো পরিস্থিতিতেই কন্যার বাল্যবিবাহ দেওয়া চলবে না।
* আর্থিক সুরক্ষা: কন্যার নামে ব্যাঙ্কে ৩১,০০০ টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করতে হবে, যা নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত তোলা যাবে না।
* গাছের মালিকানা: রোপণ করা গাছগুলি কন্যার পরিবারের নয়, বরং গ্রামের সম্পত্তি হিসাবে গণ্য হবে।
* মৃতের স্মৃতিতে বৃক্ষরোপণ: বর্তমানে গ্রামের কোনো লোক মারা গেলেও তাঁর স্মৃতিতে ১১টি চারাগাছ রোপণ করা হয়।
* ঙ। শ্যামসুন্দরের দ্বারা গৃহীত উদ্যোগে গ্রামের বর্তমান পরিবশ কীভাবে সজীব হয়ে উঠেছে তা আলোচনা করো।
উত্তর: শ্যামসুন্দর পালিওয়ালের গৃহীত ‘কিরণ নিধি যোজনা’ এবং অন্যান্য পরিবেশবান্ধব পদক্ষেপের ফলে পিপলান্ত্রি গ্রামের পরিবেশ বর্তমানে সম্পূর্ণ সজীব ও প্রাণবন্ত। ২০০৫ সাল থেকে কন্যাসন্তানের নামে ১১১টি করে মূল্যবান প্রজাতির চারাগাছ রোপণ করার ফলে গ্রামটি ধীরে ধীরে সুন্দর ও সবুজে ভরে উঠেছে।
গাছপালার সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় মাটির ক্ষয়রোধ হয়েছে, মাটি সজীব হয়ে উঠেছে এবং পুনরায় গ্রামে পাখিপাখালি ও জীবজন্তুর আগমন ঘটেছে। খনিজনিত দূষিত বায়ু কমে গিয়ে এখন গ্রামে মুক্ত এবং বিশুদ্ধ বায়ু প্রবাহিত হয়। সবুজায়নের ফলে অত্যধিক উষ্ণতার তীব্র প্রকোপও কমে গেছে। সময়মতো বৃষ্টিপাত হওয়ায় ভূগর্ভের জলের স্তর, যা একসময় ৮০০ ফুট নীচে নেমে গিয়েছিল, তা এখন আবার উপরে উঠে এসেছে। গ্রামের পুকুর ও অন্যান্য জলাশয়গুলি জলে ভরে গেছে, যার ফলে কৃষিকাজের জন্য জনগণ পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পাচ্ছে। এভাবেই শ্যামসুন্দরের উদ্যোগে গ্রামের পরিবেশ আবার সজীব হয়ে উঠেছে।
* চ। পিপলান্ত্রি গ্রাম কীভাবে সারা ভারতবর্ষ তথা পৃথিবীকে পরিবেশ রক্ষার আন্দোলনে অনুপ্রাণিত করেছে আলোচনা করো।
উত্তর: পিপলান্ত্রি গ্রাম বর্তমানে শুধুমাত্র ভারতের নয়, সারা পৃথিবীর মধ্যে একটি বিখ্যাত ও আদর্শ গ্রাম রূপে পরিগণিত হয়েছে। এই গ্রাম প্রমাণ করেছে যে সঠিক পরিকল্পনা, ধৈর্য, একাগ্রতা এবং সম্মিলিত প্রচেষ্টা থাকলে পরিবেশ দূষণের মতো ভয়ঙ্কর সমস্যাকেও প্রতিহত করে সমৃদ্ধি ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
গ্রামটির এই অসামান্য সাফল্য বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। প্রতিবছর বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ, গবেষক এবং সরকারি প্রতিনিধিরা এই গ্রাম দেখতে আসেন। ডেনমার্কের মতো উন্নত দেশ তাদের প্রাথমিক শিক্ষার পাঠ্যক্রমে পিপলান্ত্রির এই সাফল্যের কাহিনি অন্তর্ভুক্ত করেছে। আর্জেন্টিনার একটি দল গ্রামটিকে নিয়ে ‘Tree Sister’ নামে সিনেমা নির্মাণ করেছে এবং শতাধিক তথ্যচিত্রও নির্মিত হয়েছে। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের প্রতিনিধিরাও এই মডেল অনুসরণ করতে উদ্যোগী হয়েছেন; যেমন দিল্লির উপ-মুখ্যমন্ত্রী এখানে সাতদিন থেকে তথ্য সংগ্রহ করে দিল্লিতে তা রূপায়িত করার চেষ্টা করেছেন। রাজস্থানের অন্যান্য স্থানেও এই আদর্শ গ্রহণ করা হয়েছে। দেশের প্রতিটি সংবাদমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়াতে (ইউটিউব, ফেসবুক) এর কাহিনি প্রচারিত হয়েছে। এভাবেই পিপলান্ত্রি গ্রাম আজ বিশ্বকে পরিবেশ রক্ষা ও কন্যাসন্তানের মর্যাদা প্রতিষ্ঠার এক জীবন্ত উদাহরণ হিসাবে অনুপ্রাণিত করে চলেছে।
* ছ। তোমার গ্রামে এ ধরনের কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা যায় কি না সে সম্পর্কে একটি প্রকল্প প্রস্তুত করো।
উত্তর: (এটি একটি প্রকল্প-ভিত্তিক কাজ। ছাত্রদের নিজেদের গ্রামের পরিস্থিতি অনুযায়ী এই প্রকল্পটি প্রস্তুত করতে হবে। নিচে একটি রূপরেখা দেওয়া হলো, যা অনুসরণ করে প্রকল্পটি তৈরি করা যেতে পারে।)
প্রকল্পের রূপরেখা:
* প্রকল্পের নাম: “সবুজ বাঁচাই, গ্রাম সাজাই: পিপলান্ত্রির পথে আমাদের গ্রাম”
* ভূমিকা: পিপলান্ত্রি গ্রামের আদর্শ ও তার থেকে প্রাপ্ত অনুপ্রেরণার সংক্ষিপ্ত উল্লেখ।
* উদ্দেশ্য:
* গ্রামের পরিবেশ দূষণ হ্রাস করা।
* বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে সবুজায়ন বৃদ্ধি করা।
* জল সংরক্ষণ সম্পর্কে সচেতনতা গড়া।
* সামাজিক প্রথার (যেমন কন্যাসন্তানের প্রতি অবহেলা) বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়া।
* গ্রামের বর্তমান সমস্যা: (এখানে ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের গ্রামের সমস্যাগুলি লিখবে। যেমন – গাছপালার অভাব, জলসংকট, পুকুর ভরাট, প্লাস্টিক দূষণ ইত্যাদি।)
* প্রস্তাবিত পরিকল্পনা (পিপলান্ত্রির মডেলে):
* বৃক্ষরোপণ: গ্রামের প্রতিটি শিশুর জন্মের পর (বিশেষত কন্যাসন্তান) তার নামে অন্তত ১০টি ফলদ বা মূল্যবান গাছ রোপণ করার প্রস্তাব।
* জল সংরক্ষণ: বর্ষার জল ধরে রাখার জন্য পুরনো পুকুর/জলাশয় সংস্কারের উদ্যোগ।
* বর্জ্য ব্যবস্থাপনা: প্লাস্টিক বর্জন এবং জৈব বর্জ্য থেকে সার তৈরির ব্যবস্থা।
* সচেতনতা শিবির: গ্রাম পঞ্চায়েত ও বিদ্যালয়ের সাহায্যে পরিবেশ রক্ষা ও কন্যাশিশুর সুরক্ষা বিষয়ে আলোচনাচক্রের আয়োজন।
* রূপায়ণের পদ্ধতি: (কীভাবে কাজটি করা হবে? যেমন – গ্রামপ্রধান, বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ছাত্রদের নিয়ে একটি “পরিবেশ রক্ষা কমিটি” গঠন; চাঁদা বা সরকারি সহায়তায় চারাগাছ সংগ্রহ; প্রতি মাসে পরিচ্ছন্নতা অভিযান ইত্যাদি।)
* উপসংহার: এই প্রকল্প সফল হলে গ্রামের পরিবেশের উন্নতির পাশাপাশি মানুষের জীবনযাত্রার মানও উন্নত হবে।
১০. ভাষা বিষয়ক (ব্যাকরণ)
(ক) বাক্যরচনা করো। (নিজে করো অংশ)
* শব্দহীন: গভীর রাতে চারিদিক শব্দহীন হয়ে পড়লে অদ্ভুত মনে হয়।
* বাক্যহীন: শিক্ষকের বকুনি শুনে ছাত্রটি বাক্যহীন হয়ে দাঁড়িয়ে রইল।
* ঊষর: ক্রমাগত রাসায়নিক সার ব্যবহারে জমি ঊষর হয়ে যেতে পারে।
* অভিনয়: লোকটির কথাবার্তা শুনে মনে হলো সে পুরোটাই অভিনয় করছে।
* উচ্ছ্বাস: পরীক্ষায় প্রথম হয়ে সে আনন্দে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ল।
* প্রলয়-কল্লোল: কালবৈশাখীর প্রলয়-কল্লোলে গ্রামের অনেক ক্ষতি হয়েছে।
* ভয়ংকর: সুন্দরবনের ভয়ংকর বাঘের গল্প আমরা সবাই শুনেছি।
(খ) পদান্তর করো। (নিজে করো অংশ)
* ঈশ্বর: ঐশ্বরিক
* বন্ধু: বন্ধুত্ব
* সুন্দর: সৌন্দর্য
* দর্শন: দার্শনিক
* সত্য: সত্যতা
* উত্তেজনা: উত্তেজিত
* চুরি: চোরা
* উচ্ছ্বসিত: উচ্ছ্বাস
* নির্বাসন: নির্বাসিত
* অবসন্ন: অবসাদ
* রোমাঞ্চ: রোমাঞ্চিত
* প্রতারণা: প্রতারিত / প্রতারক
* প্রভু: প্রভুত্ব
(গ) বাক্য পরিবর্তন করো।
১) এখন তুমি মুক্ত (অস্ত্যর্থক)
উত্তর: এখন তুমি বন্দী নও (নাস্ত্যর্থক)
২) তোমার অভিসন্ধি বুঝতে পারা আমার সাধ্য নয় (নাস্ত্যর্থক)
উত্তর: তোমার অভিসন্ধি বোঝা আমার অসাধ্য (অস্ত্যর্থক)
৩) এইরূপ দৃশ্য কখনও আমি দেখিনি (নাস্ত্যর্থক)
উত্তর: এরূপ দৃশ্য আমার অদেখা (অস্ত্যর্থক)
৪) আজ আমি ধনি নই (নাস্ত্যর্থক)
উত্তর: আজ আমি বড় নির্ধন (অস্ত্যর্থক)
(ঘ) প্রতিবেদন লেখো।
বিষয়: অসমের গণ্ডার
অসমের গর্ব: বিপন্ন গণ্ডার ও সংরক্ষণের প্রচেষ্টা
নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি, ২০ অক্টোবর ২০২৫:
অসমের নাম বললেই যে প্রাণীটির কথা সর্বপ্রথম মনে আসে, তা হলো একশৃঙ্গ গণ্ডার। এই বিরল প্রাণীটি আজ সমগ্র বিশ্বের কাছে অসমের গর্ব ও পরিচিতির প্রতীক। কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যান, পবিতোরা অভয়ারণ্য এবং ওরাং জাতীয় উদ্যান এই গণ্ডারদের প্রধান বিচরণভূমি।
তবে এই গর্বের প্রাণীটি আজ নানা কারণে বিপন্ন। চোরাশিকারিদের উপদ্রব গণ্ডার সংরক্ষণের পথে প্রধান অন্তরায়। গণ্ডারের শৃঙ্গের লোভে অতীতে বহু গণ্ডারকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়াও প্রতি বছর বর্ষার বিধ্বংসী বন্যা গণ্ডারদের বাসস্থানের প্রভূত ক্ষতি করে এবং অনেক সময় গণ্ডার শাবকরাও জলে ভেসে যায়।
অবশ্য আশার কথা এই যে, অসম সরকার এবং বিভিন্ন পরিবেশপ্রেমী সংগঠনের নিরন্তর প্রচেষ্টায় গণ্ডার নিধন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে। বনরক্ষীদের আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত করা, ড্রোনের মাধ্যমে নজরদারি এবং স্থানীয় মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি গণ্ডার সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এই সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফলেই সম্প্রতি গণ্ডারের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। অসমের এই অমূল্য সম্পদকে রক্ষা করা কেবল সরকারের নয়, প্রতিটি নাগরিকের কর্তব্য।
(ঙ) প্রধান শিক্ষকের নিকট ছুটির আবেদন-পত্র লেখো।
বিষয়: ফুটবল বা ক্রিকেট ম্যাচ।
মাননীয় প্রধান শিক্ষক,
[বিদ্যালয়ের নাম]
[বিদ্যালয়ের ঠিকানা]
বিষয়: আন্তঃবিদ্যালয় ফুটবল/ক্রিকেট ম্যাচে অংশগ্রহণের জন্য ছুটির আবেদন।
মহাশয়,
সবিনয় নিবেদন এই যে, আমি [নিজের নাম], আপনার বিদ্যালয়ের [শ্রেণি] শ্রেণির [বিভাগ] বিভাগের একজন ছাত্র। আগামী [তারিখ] তারিখে [স্থানের নাম]-এ অনুষ্ঠিতব্য আন্তঃবিদ্যালয় ফুটবল/ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় আমি আমাদের বিদ্যালয় দলের হয়ে অংশগ্রহণ করতে চলেছি।
উক্ত ম্যাচে অংশগ্রহণের জন্য আমাকে [তারিখ] তারিখে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকতে হবে।
অতএব, মহাশয়ের নিকট আমার বিনীত প্রার্থনা, আমাকে উক্ত দিনটির জন্য ছুটি মঞ্জুর করে বাধিত করবেন।
ধন্যবাদান্তে,
আপনার একান্ত অনুগত ছাত্র,
[নিজের নাম]
শ্রেণি:
বিভাগ:
রোল নং:
[তারিখ]
(চ) সন্ধি বিচ্ছেদ করো।
* নির্ভর: নিঃ + ভর
* পরিচ্ছন্ন: পরি + ছন্ন
* দুর্লভ: দুঃ + লাভ
* শতক: শত + এক
* যথেষ্ট: যথা + ইষ্ট
* তেজস্ক্রিয়: তেজঃ + ক্রিয়
(ছ) বাক্যরচনা করো।
* বায়ুমণ্ডল: কলকারখানার ধোঁয়ায় বায়ুমণ্ডল দূষিত হচ্ছে।
* অস্তিত্ব: বিজ্ঞানীরা মঙ্গলে প্রাণের অস্তিত্ব খুঁজছেন।
* নিরাপত্তা: সীমান্তে সেনারা দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
* আক্রান্ত: শিশুটি জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে।
* উৎকর্ষ: শিক্ষার উৎকর্ষ সাধনে সরকার সচেষ্ট।
* শ্রুতিগোচর: গভীর রাতে একটি চিৎকার আমার শ্রুতিগোচর হলো।
* প্রাবল্য: বন্যার জলের প্রাবল্য সব ভাসিয়ে নিয়ে গেল।
* আলোচনাচক্র: বিদ্যালয়ে একটি আলোচনাচক্র অনুষ্ঠিত হয়।
* জনস্ফীতি: জনস্ফীতি দেশের বড় সমস্যা।
* মতদ্বৈধ: এই বিষয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে মতদ্বৈধ দেখা দিল।
