পাঠ – ৪: পেটুক দাসের স্বপ্ন, Class 5, Chapter 4, Bengali, SEBA New Book, Bengali Medium

ক – পাঠভিত্তিক (পৃষ্ঠা ২৯)
‘পেটুক দাসের স্বপ্ন’ কবিতাটি গদ্যরূপে বলো।
উত্তর: গদাইচরণ নামে এক পেটুক ছেলে পড়তে বসে ভাবছিল যে কী খেলে তার পেট ভরবে। সে সন্দেশ, রসগোল্লা, মুড়কি, কচুরি, রাবড়ি, পায়েস, পোলাও, লুচি—নানা রকম খাবারের কথা ভাবছিল। ভাবতে ভাবতে সে ঘুমিয়ে পড়ল এবং একটা স্বপ্ন দেখল। স্বপ্নে সে এক নতুন রাজ্যে পৌঁছেছে, যেখানে সবকিছুই খাবার দিয়ে তৈরি। সেখানে বাড়িগুলো ছানা দিয়ে গাঁথা, রাস্তা মোহনভোগের, পথের কাঁকর মুড়কি আর ইঁট হলো রফি। গাছে গাছে চন্দ্রপুলি, আস্কে, পাটিসাপ্টা ঝুলছে, যা ঝড়ের ঝাপটায় ঝরে পড়ছে। সেখানে দুধের নদী বইছে, সন্দেশ দিয়ে ঘাট বাঁধানো আর শরবতের ঝরনা ঝরছে। ক্ষীরের দিঘিতে পানতোয়া পদ্ম ফুটে আছে আর পদ্মপাতাগুলো সব ফুলকো লুচি। দই-পায়েসের স্রোতে নালা-বিল ভরে যাচ্ছে। এসব দেখে গদাই ভাবল, আগে ক্ষীর-দিঘিতে স্নান করে তারপর পেটপুরে খাবে। কিন্তু যেই সে স্নান করতে নেমেছে, অমনি মাস্টারমশাই এসে তার কান ধরলেন। তখন গদাইয়ের ঘুম ভেঙে গেল।
কখন, কোন প্রসঙ্গে গদাইচরণ নীচের কথাগুলো ভেবেছে?
(ক) ইচ্ছামতো খাবার খেয়ে ভরতে হবে পেটটা।
উত্তর: স্বপ্নে খাবার জিনিসের তৈরি এক আশ্চর্য রাজ্য দেখে গদাইচরণ খুব খুশি হয়েছিল। সে যখন দেখল ক্ষীরের দিঘি, দুধের নদী, সন্দেশের ঘাট—সবই মজুত, তখন সে ঠিক করল যে আগে ক্ষীর-দিঘিতে স্নান সেরে তারপর ইচ্ছামতো খাবার খেয়ে পেট ভরাবে।
(খ) উচিত মতো ভরতে পারে পেটটা তাহার কী খেলে।
উত্তর: পড়তে বসে গদাইচরণের খিদে পেয়েছিল এবং সে কী খাবে তা নিয়ে ভাবছিল। সন্দেশ, রসগোল্লা, কচুরি, পোলাও, লুচি ইত্যাদি নানা রকম সুস্বাদু খাবারের কথা মনে এলেও সে ঠিক করতে পারছিল না কোনটা খেলে তার পেট ‘উচিত মতো’ ভরবে।
(পৃষ্ঠা ৩০)
নীচের শব্দগুলোর অর্থ শব্দ-সম্ভার থেকে খুঁজে নিয়ে লেখো।
* আস্কে – চালের গুঁড়ো দিয়ে তৈরি এক ধরনের পিঠে
* আবেশ – ঘোর
* ভূমি – স্থান
* ছানি – (এখানে অর্থ) জমাট করা
* খাজা – ময়দার তৈরি ভাজা মিষ্টি বিশেষ
* সুরকি – ইটের গুঁড়ো
* অবিশ্রান্ত – অনবরত
কবিতাটিতে যে-যে খাদ্যবস্তুর নামের উল্লেখ আছে সেগুলোর একটি তালিকা তৈরি করো।
উত্তর:
* সন্দেশ
* রসগোল্লা
* মুড়কি
* গজা
* কচুরি
* রাবড়ি
* পায়েস
* পোলাও
* লুচি
* ছানা
* মোহনভোগ
* খাস্তা (খাজা)
* বুঁদে
* রফি
* মিহিদানা
* চন্দ্রপুলি
* আস্কে
* পাটি-সাপ্টা
* দুধ
* শরবত
* ক্ষীর
* পানতোয়া
* দই
উত্তর লেখো।
(ক) কী ভাবতে গিয়ে গদাইচরণের তন্দ্রা এল?
উত্তর: পড়তে বসে গদাইচরণ ভাবছিল যে সন্দেশ, রসগোল্লা, মুড়কি, গজা, কচুরি নাকি রাবড়ি, পায়েস, পোলাও, লুচি—কোনটা খেলে তার পেট ভরবে; এইসব খাবারের কথা ভাবতে ভাবতেই তার তন্দ্রা এল।
(খ) স্বপ্নে সে কোন রাজ্যে গিয়ে পৌঁছোলো?
উত্তর: স্বপ্নে সে এমন এক নতুন রাজ্যে গিয়ে পৌঁছোলো যেখানে সবকিছুই খাবার জিনিস দিয়ে তৈরি।
(গ) সেখানকার রাস্তা-ঘাট এবং ঘর-দুয়ার কীসের তৈরি?
উত্তর: সেখানকার ঘর-দুয়ার (বাড়ির সারি) ছানা দিয়ে গাঁথা ছিল এবং রাস্তা ছিল মোহনভোগের।
(ঘ) চোখ খুলে সে কী দেখতে পেল?
উত্তর: চোখ খুলে (ঘুম থেকে জেগে) সে দেখতে পেল যে, মাস্টারমশাই তার কান ধরে আছেন।
শূন্যস্থান পূর্ণ করো।
* গাছে গাছে চন্দ্রপুলি, আস্কে, পাটি-সাপ্টা
* পড়ছে ঝরে যেমনি জোরে লাগছে ঝড়ের ঝাপটা।
* সন্দেশেতে ঘাট বাঁধানো-দুধের নদী বয় রে-
* সরবতেরি ঝরনা ঝরে- আর কোথা কি হয়রে।
খ- ভাষা-অধ্যয়ন (ব্যবহারিক ব্যাকরণ) (পৃষ্ঠা ৩১)
এবার ‘ছানি’ ও ‘ঘাট’ শব্দ দুটি ব্যবহার করে তিনটি করে বাক্য রচনা করো।
ছানি
* ক) (জমাট করা) – মা কড়াইতে দুধের ছানি তৈরি করছেন।
* খ) (চোখের রোগ) – ঠাকুমার চোখে ছানি পড়েছে, তাই তিনি কম দেখেন।
* গ) (আস্তরণ) – ভোরের কুয়াশায় মাঠের ওপর একটা সাদা ছানি পড়েছে।
ঘাট
* ক) (নদীর) – মা গঙ্গার ঘাট থেকে জল এনেছেন।
* খ) (অভাব) – সংসারে তার কোনো ঘাট নেই।
* গ) (কবিতা অনুসারে) – গদাই স্বপ্নে সন্দেশেতে ঘাট বাঁধানো দেখেছিল।
(পৃষ্ঠা ৩২)
দলে আলোচনা করে শব্দগুলোর পার্থক্য বুঝে বাক্য রচনা করো।
* পদ্য (কবিতা) – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অনেক সুন্দর পদ্য লিখেছেন।
* পদ্ম (ফুল) – পুকুরে পদ্ম ফুটেছে।
* ভজন (স্তবগান) – মন্দিরে ভক্তরা ভজন গাইছে।
* ভোজন (খাওয়া) – আজ আমাদের বাড়িতে ভোজন পর্ব আছে।
নৌকো থেকে উপযুক্ত অব্যয় পদ খুঁজে নিয়ে নীচের বাক্যগুলো সম্পূর্ণ করো।
(ক) রমলা ও রহিমলা দুই বান্ধবী।
(খ) বিদ্যাই পরম ধন। তাই মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করবে।
(গ) একটি ঘর কিংবা চেয়ারের ছবি আঁকো।
(ঘ) মেয়েটি দেখতে সুন্দরী কিন্তু বিদ্যাহীন।
(ঙ) আমি আজ খেলতে যাব না; কেননা কাল আমার পরীক্ষা হবে।
গ- জ্ঞান-সম্প্রসারণ (পৃষ্ঠা ৩৩)
এসো, দলে আলোচনা করে লিখি।
(ক) তোমাদের ঘরে উৎসব পার্বণে কী কী খাবার জিনিস তৈরি করা হয়?
উত্তর: আমাদের ঘরে উৎসব পার্বণে নানা রকম খাবার জিনিস তৈরি করা হয়। যেমন, দুর্গাপূজায় লুচি, পায়েস, নাড়ু ও নানা রকম মিষ্টি তৈরি হয়। পৌষ সংক্রান্তিতে পাটি-সাপ্টা, পুলি পিঠে ও আস্কে পিঠে তৈরি হয়।
(খ) কবিতায় যে খাবার জিনিসের নাম আছে সেগুলো ছাড়া তোমরা আর কী কী খাবার জিনিসের নাম জানো?
উত্তর: কবিতায় উল্লেখ নেই এমন অনেক খাবার জিনিসের নাম জানি, যেমন – জিলিপি, অমৃতি, লাড্ডু, মোয়া, বরফি, পান্তুয়া, শিঙাড়া, নিমকি, রসমালাই ইত্যাদি।
ঘ – প্রকল্প (পৃষ্ঠা ৩৩)
যে কোনো একপ্রকার নাড়ু বা পিঠার প্রস্তুত প্রণালী বড়োদের জিজ্ঞেস করে নিজের খাতায় লেখো।
(তিলের নাড়ু বানানোর প্রণালী)
* উপকরণ: তিল (২৫০ গ্রাম), গুড় (২৫০ গ্রাম), সামান্য জল।
* প্রণালী: প্রথমে তিলগুলোকে শুকনো কড়াইতে হালকা করে ভেজে নিতে হবে।
* অন্য একটি পাত্রে গুড় ও সামান্য জল দিয়ে আঁচে বসাতে হবে।
* গুড় গলে গিয়ে যখন ঘন ও আঠালো হয়ে আসবে (পাক ধরা), তখন ভাজা তিলগুলো তার মধ্যে ঢেলে দিতে হবে।
* গুড় ও তিল ভালো করে মিশিয়ে আঁচ থেকে নামাতে হবে।
* মিশ্রণটি অল্প ঠান্ডা হলে (হাতে সহ্য করা যায় এমন গরম) হাতের তালুতে সামান্য ঘি
বা জল মাখিয়ে গোল গোল করে নাড়ুর আকারে পাকিয়ে নিতে হবে। ঠান্ডা হলে এটি শক্ত ও মুচমুচে হয়ে যাবে।
