পাঠ-২ জীব ও পরিবেশ , Class 5,  Chapter 2,

পাঠ-২ জীব ও পরিবেশ , Class 5, Environment Chapter 2, SEBA, Bengali Medium

Next Chapter 

অনুশীলনী
১। উত্তর লেখো-
(ক) পরিবেশে জৈবিক ও অজৈবিক উপাদানগুলো কী কী?
উত্তর- পরিবেশে জৈবিক উপাদানগুলো হলো উদ্ভিদ, প্রাণী, পাখি, অণুজীব ইত্যাদি এবং অজৈবিক উপাদানগুলো হলো বায়ু, জল, মাটি, তাপ, আলো ইত্যাদি।
(খ) উদ্ভিদকে কেনো উৎপাদক বলা হয়?
উত্তর- উদ্ভিদ নিজের খাদ্য নিজে প্রস্তুত করতে পারে বলেই তারা হচ্ছে উৎপাদক।
(গ) উপভোক্তা কতো প্রকার ও কী কী?
উত্তর- উপভোক্তা প্রধানত তিন প্রকারের হয়। সেগুলি হলো:
* প্রাথমিক উপভোক্তা (যারা উদ্ভিদ খায়)
* গৌণ বা দ্বিতীয় শ্রেণির উপভোক্তা (যারা প্রাথমিক উপভোক্তাকে খায়)
* তৃতীয় শ্রেণির উপভোক্তা (যারা গৌণ উপভোক্তাকে খায়)
   (এছাড়াও কিছু প্রাণী সর্বভোজী হয়, যারা উৎপাদক এবং উপভোক্তা উভয়কেই খায়)।
(ঘ) বিয়োজক আমাদের কীভাবে সাহায্য করে?
উত্তর- বিয়োজক (যেমন ব্যাক্টেরিয়া ও ছত্রাক) মৃত উদ্ভিদ ও প্রাণীদেহের অংশগুলোর বিয়োজন ঘটিয়ে সেগুলিকে পচে গলে যেতে সাহায্য করে। এই পচে গলে যাওয়া অংশের অবশিষ্টাংশ জৈবিক সার হিসাবে মাটির সঙ্গে মিশে যায়, যা গাছের মূল শোষণ করে এবং উদ্ভিদের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
(ঙ) তিনটি পরিস্থিতি তন্ত্রের নাম লেখো।
উত্তর- তিনটি পরিস্থিতি তন্ত্রের নাম হলো- তৃণভূমি, পুকুর এবং শস্য ক্ষেত।
২। শূন্যস্থান পূরণ করো-
(ক) শামুক হল- প্রাথমিক -উপভোক্তা।
(খ) একের চেয়ে অধিক খাদ্যশৃঙ্খল – মিলে খাদ্যজাল সৃষ্টি হয়।
(গ) ঈগল পাখি হল- তৃতীয় শ্রেণির উপভোক্তা। (এটি সাপকে খায়, যা ইঁদুরকে খায়)।
(ঘ) খাদ্যজালে একের চেয়ে অধিক খাদ্যশৃঙ্খল থাকে।
৩। শুদ্ধ উত্তর বেছে বের করো-
(ক) খাদ্যশৃঙ্খলের শুরুতে সবসময় উদ্ভিদ/প্রাণী/অণুজীব থাকে।
উত্তর- খাদ্যশৃঙ্খলের শুরুতে সবসময় উদ্ভিদ থাকে।
(খ) বিয়োজক/উৎপাদক/ উপভোক্তা খাদ্য প্রস্তুত করে।
উত্তর- উৎপাদক খাদ্য প্রস্তুত করে।
(গ) উৎপাদক/বিয়োজক/ উপভোক্তা মৃতদেহ পচে গলে যেতে সাহায্য করে।
উত্তর- বিয়োজক মৃতদেহ পচে গলে যেতে সাহায্য করে।
৪। খাদ্যশৃঙ্খল কী? উদাহরণসহ বুঝিয়ে লেখো।
উত্তর- জীবগুলো একটি অন্যটিকে খাদ্য হিসাবে গ্রহণ করে। এভাবে একটি প্রাণী অপরটিকে ভক্ষণ করে যে শৃঙ্খল গঠন করে, তাকে খাদ্য শৃঙ্খল বলে। খাদ্য শৃঙ্খলের শুরুতে সবসময় উদ্ভিদ (উৎপাদক) থাকে, উদ্ভিদকে তৃণভোজী প্রাণী (প্রাথমিক উপভোক্তা) ভক্ষণ করে এবং তৃণভোজী প্রাণীকে মাংসভোজী প্রাণী (গৌণ বা তৃতীয় শ্রেণির উপভোক্তা) ভক্ষণ করে।
উদাহরণস্বরূপ: ঘাসকে ফড়িং খায়, ফড়িংকে ব্যাঙ খায়, ব্যাঙকে সাপ খায় এবং সাপকে ঈগল পাখি খায়।
৫। পুকুর একটি পরিস্থিতি তন্ত্র কী না তা যুক্তি সহকারে বুঝিয়ে লেখো।
উত্তর- হ্যাঁ, পুকুর একটি পরিস্থিতি তন্ত্রের উত্তম উদাহরণ।
যুক্তি: একটি পরিস্থিতি তন্ত্রে জৈবিক ও অজৈবিক উপাদানগুলো একে অপরের ওপর নির্ভর করে। পুকুরেও এই নির্ভরশীলতা দেখা যায়।
* অজৈবিক উপাদান: পুকুরের জল, সূর্যের আলো ইত্যাদি।
* উৎপাদক: পুকুরের জলজ জীব, যেমন- শৈবাল, কচুরিপানা ইত্যাদি সূর্যের আলোকের সাহায্যে খাদ্য প্রস্তুত করে।
* উপভোক্তা: সেই উৎপাদককে খায় কীট পতঙ্গ, ছোটো মাছ, শামুক (প্রাথমিক উপভোক্তা)। সেগুলোকে খায় বড়ো বড়ো মাছ, ব্যাঙ (গৌণ উপভোক্তা)। আবার সেগুলোকে ভক্ষণ করে সাপ বা বক (তৃতীয় শ্রেণির উপভোক্তা)।
   এভাবে পুকুরের জৈবিক ও অজৈবিক উপাদানগুলো পরস্পরের ওপর নির্ভরশীল থেকে একটি পরিস্থিতি তন্ত্র গঠন করে।
৬। সালোকসংশ্লেষণ বলতে কী বোঝো?
উত্তর- সবুজ উদ্ভিদ পাতার হরিৎকণার সাহায্যে সৌরশক্তি, বায়ু থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড এবং শিকড় দিয়ে মাটি থেকে জল শোষণ করে যে প্রক্রিয়ায় খাদ্য প্রস্তুত করে, তাকেই সালোক সংশ্লেষণ বলে।
৭। পার্থক্য লেখো-
(ক) উৎপাদক ও বিয়োজক।
উত্তর-
* উৎপাদক: উৎপাদক (যেমন সবুজ উদ্ভিদ) নিজের খাদ্য নিজে প্রস্তুত করতে পারে। এরা সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় সৌরশক্তি, জল ও বায়ু ব্যবহার করে খাদ্য তৈরি করে।
* বিয়োজক: বিয়োজক (যেমন ব্যাক্টেরিয়া ও ছত্রাক) মৃত উদ্ভিদ ও প্রাণীর দেহে বিয়োজন ঘটায়। এরা মৃতদেহকে পচিয়ে জৈব সার হিসাবে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়।
(খ) তৃণভোজী ও মাংসভোজী প্রাণী।
উত্তর-
* তৃণভোজী প্রাণী: যে সব প্রাণী প্রত্যক্ষভাবে সবুজ উদ্ভিদ থেকে খাদ্য আহরণ করে, তাদের তৃণভোজী প্রাণী বলে। এরা প্রাথমিক উপভোক্তা। যেমন- গোরু, ছাগল, হরিণ ইত্যাদি।
* মাংসভোজী প্রাণী: যে সব প্রাণী অন্য প্রাণীকে (যেমন তৃণভোজী প্রাণীকে) খাদ্য হিসাবে গ্রহণ করে বেঁচে থাকে, তাদের মাংসভোজী প্রাণী বলে। এরা গৌণ বা দ্বিতীয় শ্রেণির উপভোক্তা। যেমন- বাঘ, সিংহ, শেয়াল ইত্যাদি।
(গ) খাদ্যশৃঙ্খল ও খাদ্যজাল।
উত্তর-
* খাদ্যশৃঙ্খল: একটি প্রাণী যখন অপর একটি প্রাণীকে ভক্ষণ করে, তখন একটি খাদ্য শৃঙ্খল গঠিত হয়। এটি খাদ্যের একটি সরল প্রবাহ দেখায় (যেমন: ঘাস -> ফড়িং -> ব্যাঙ)।
* খাদ্যজাল: একটি পরিস্থিতি তন্ত্রে যখন অনেকগুলো খাদ্যশৃঙ্খল পরস্পর জুড়ে গিয়ে একটি জালের সৃষ্টি করে, তখন তাকে খাদ্যজাল বলে। এটি ঘটে কারণ একটি জীব একাধিক খাদ্যশৃঙ্খলে অংশ নিতে পারে।
৮। পরিস্থিতি তন্ত্রে প্রথম শ্রেণির উপভোক্তা না থাকলে কী হবে?
উত্তর- প্রথম শ্রেণির উপভোক্তা বা তৃণভোজী প্রাণী না থাকলে, তাদের ওপর নির্ভরশীল গৌণ বা দ্বিতীয় শ্রেণির উপভোক্তারা (মাংসভোজী প্রাণী) খাদ্য পাবে না। এর ফলে মাংসভোজী প্রাণীর সংখ্যা কমে যাবে এবং পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হবে।
৯। খাদ্যজাল কেনো সৃষ্টি হয়?
উত্তর- একটি পরিস্থিতি তন্ত্রে কোনো জীব শুধু একটি খাদ্যশৃঙ্খলের অংশ থাকে না। একই প্রাণী একের চেয়েও অধিক খাদ্যশৃঙ্খলে ভাগ নেয় (যেমন, ঈগল পাখি খরগোশ, ইঁদুর, সাপ ইত্যাদি খায়)। এভাবে অনেকগুলো খাদ্যশৃঙ্খল একে অপরের সাথে জুড়ে গিয়ে খাদ্যজালের সৃষ্টি হয়।
১০। মাটিতে মৃত জীবগুলো অনেক দিন ধরে পড়ে থাকলে কেনো পচে গলে যায়?
উত্তর- মাটিতে মৃত জীবগুলো পড়ে থাকলে তা পচে গলে যায় কারণ মাটিতে থাকা বিয়োজক, যেমন ব্যাক্টেরিয়া ও ছত্রাক, সেই মৃত উদ্ভিদ ও প্রাণীদেহের অংশগুলোর বিয়োজন ঘটায় এবং সেগুলিকে পচিয়ে ফেলে।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *