দ্রব্যের পৃথকীকরণ , Chapter -6, Science, Class-6 ,SEBA
প্রশ্নাবলি
১. শুদ্ধ উত্তরের বৃত্তটি কালো করো
(i) নীচের কোন্ মিশ্রণকে হাত দিয়ে পৃথক করা যাবে?
(a) লবণ এবং বালি
(b) কাঠের গুড়া এবং লোহার গুড়া
(c) চাল এবং নুড়িপাথর
(d) কপূর এবং বালি
উত্তর: (c) চাল এবং নুড়িপাথর।
(ii) ডাল বা অন্য কোনো শস্য ধোয়ার সময় আমরা কোন পদ্ধতি ব্যবহার করি?
(a) মাড়াই
(b) হাত দিয়ে বাছা
(c) চালনি দিয়ে চালা
(d) আস্রাবণ
উত্তর: (d) আস্রাবণ।
(iii) লোহা এবং কয়লার গুড়ো পৃথকীকরণের জন্য উপযুক্ত পদ্ধতি হলো-
(a) বাষ্পীভবন
(b) মাড়াই
(c) চুম্বকীয় পৃথকীকরণ
(d) আস্রাবণ
উত্তর: (c) চুম্বকীয় পৃথকীকরণ।
(iv) কোন পদ্ধতির দ্বারা আমরা চা থেকে চাপাতা পৃথক করতে পারি?
(a) শস্য মাড়াই
(b) হাত দিয়ে বেছে
(c) চালনী দিয়ে
(d) পরিস্রাবণ
উত্তর: (d) পরিস্রাবণ।
২. নিম্নলিখিতগুলো মেলাও
a) কাদা (জলে) – পরিস্রাবণ
(b) কাদাজলে থাকা ফিটকিরি – আস্রাবণ
(c) উচ্চ বেগে মিশ্রণটি ঘোরানো – মন্থন
(d) বাদামের তেল এবং জল – আস্রাবণ
(e) বালি এবং লোহার গুড়া – চুম্বকীয় পৃথকীকরণ
(f) জলে দ্রবীভূত লবণ – বাষ্পীভবন
(g) চালে থাকা তুষ – ঝাড়াই
৩. শূন্যস্থান পূর্ণ করো
(a) আবর্জনার স্তুপ থেকে লোহার টুকরা পৃথক করার জন্য চুম্বকীয় পৃথকীকরণ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।
(b) দুটি মিশ্রিত না হওয়া তরল দ্রব্য আস্রাবণ পদ্ধতির সাহায্যে পৃথক করা যায়।
(c) আটা এবং ভুসি চালনি দিয়ে চালা পদ্ধতি দ্বারা পৃথক করা যায়।
(d) শস্য মাড়াই পদ্ধতির দ্বারা খড়ের থেকে গম পৃথক করা যায়।
(e) বালি-জলের একটি মিশ্রণ পৃথক করার সময়, জলের কণিকাগুলো ফিল্টার কাগজের ছিদ্রগুলোর মধ্য দিয়ে বেরিয়ে যায় কারণ জলের কণাগুলো ছোটো এবং বালির কণাগুলো বড়ো।
৪. নীচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও
(a) লবণ এবং বালির একটি মিশ্রণ কীভাবে পৃথক করবে?
উত্তর: লবণ এবং বালির মিশ্রণ পৃথক করতে নিম্নলিখিত তিনটি ধাপ ব্যবহার করা হবে:
* দ্রবীভূতকরণ: প্রথমে মিশ্রণটিতে জল যোগ করা হবে। লবণ জলে দ্রবীভূত হয়ে যাবে, কিন্তু বালি অদ্রবণীয় থেকে যাবে।
* পরিস্রাবণ: এরপর মিশ্রণটিকে একটি ফিল্টার কাগজ বা কাপড় দিয়ে ছাঁকা হবে (পরিস্রাবণ)। বালি ফিল্টার কাগজে আটকে যাবে এবং লবণাক্ত জল (পরিস্রুত) পাত্রে জমা হবে।
* বাষ্পীভবন: শেষে, লবণাক্ত জলটিকে উত্তপ্ত করে বাষ্পীভবন ঘটানো হবে। জল বাষ্পীভূত হয়ে উড়ে যাবে এবং পাত্রে বিশুদ্ধ লবণ অবশিষ্ট থাকবে।
(b) নারকেল তেল এবং জলের মিশ্রণ পৃথকীকরণের জন্য একটি পদ্ধতি উত্থাপন করো।
উত্তর: নারকেল তেল এবং জল পরস্পর মিশ্রিত হয় না (অমিশ্রণীয় তরল)। এই মিশ্রণটি অবক্ষেপণ এবং আস্রাবণ পদ্ধতি ব্যবহার করে পৃথক করা যায়।
মিশ্রণটিকে কিছুসময় স্থিরভাবে রেখে দিলে (অবক্ষেপণ), তেল হালকা হওয়ায় জলের ওপরে একটি আলাদা স্তর তৈরি করবে। এরপর পাত্রটিকে সাবধানে হেলিয়ে ওপরের তেলের স্তরটি অন্য পাত্রে ঢেলে (আস্রাবণ) জল থেকে পৃথক করা যাবে।
(c) লবণাক্ত জল থেকে তুমি কীভাবে লবণ পৃথক করবে?
উত্তর: লবণাক্ত জল থেকে লবণ পৃথক করার জন্য বাষ্পীভবন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।
লবণাক্ত জলকে একটি পাত্রে নিয়ে উত্তপ্ত করলে, জল বাষ্পীভূত হয়ে উড়ে যায়, কিন্তু লবণ বাষ্পীভূত হয় না। সম্পূর্ণ জল বাষ্পীভূত হয়ে গেলে পাত্রের তলায় কঠিন লবণ জমা থাকবে।
৫. নীচের মিশ্রণগুলোতে থাকা উপাদানগুলো কোন্ কোন্ ধর্মের জন্য তাদের পৃথক করতে পারবে?
(a) লবণ এবং চকের গুড়া: দ্রবণীয়তা (Solubility)। লবণ জলে দ্রবণীয় কিন্তু চকের গুড়া অদ্রবণীয়।
(b) ধান এবং খড়: ওজন (Weight)। ধানের দানা ভারী এবং খড় হালকা, যা ‘ঝাড়াই’ (Winnowing) পদ্ধতিতে পৃথক করা যায়।
(c) চক এবং কয়লা: আকার, আকৃতি বা রং (Size, Shape or Colour)। এই ধর্মগুলোর ওপর ভিত্তি করে ‘হাত দিয়ে বাছা’ (Handpicking) পদ্ধতিতে পৃথক করা যায়।
(d) লোহার টুকরা এবং কাঠের গুড়া: চুম্বকীয় ধর্ম (Magnetic property)। লোহা চুম্বক দ্বারা আকৃষ্ট হয় (চুম্বকীয় পদার্থ), কিন্তু কাঠের গুড়া হয় না (অচুম্বকীয় পদার্থ)।
(e) বালি এবং চাল: আকার (Size)। চালের দানা এবং বালির কণার আকারের পার্থক্য থাকলে ‘চালনি দিয়ে চালা’ (Sieving) পদ্ধতি ব্যবহার করা যায়।
৬. সাগরের জল থেকে লবণ কীভাবে আহরণ করা হয়?
উত্তর: সাগরের জল থেকে বাষ্পীভবন পদ্ধতির সাহায্যে লবণ আহরণ করা হয়।
সাগরের জলকে ছোটো ছোটো গর্তে বা অগভীর জলাধারে জমিয়ে রাখা হয়। সূর্যের তাপে সেই জল ধীরে ধীরে বাষ্পীভূত হয়ে উড়ে যায়। জল সম্পূর্ণ বাষ্পীভূত হয়ে গেলে, কঠিন লবণ (অন্যান্য দ্রব্যের সাথে মিশ্রিত অবস্থায়) সেই গর্তগুলোতে পড়ে থাকে। পরে এই লবণকে বিশুদ্ধকরণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে খাওয়ার উপযোগী করা হয়।
৭. একটি মিশ্রণের থেকে উপাদানগুলো পৃথক করার জন্য উপযুক্ত পদ্ধতি কীভাবে নির্ধারণ করা হয়?
উত্তর: একটি মিশ্রণের উপাদানগুলো পৃথক করার পদ্ধতি নির্ধারণ করা হয় উপাদানগুলোর ভৌতিক ধর্মের (Physical properties) ওপর ভিত্তি করে।
উপাদানগুলোর মধ্যে যে ধর্মের পার্থক্য থাকে (যেমন – আকার, আকৃতি, বর্ণ, ওজন, জলে দ্রবণীয়তা, বা চুম্বকীয় ধর্ম), সেই বিশেষ ধর্মটিকে কাজে লাগিয়ে উপযুক্ত পৃথকীকরণ পদ্ধতি (যেমন – হাত দিয়ে বাছা, ঝাড়াই, পরিস্রাবণ, বাষ্পীভবন, বা চুম্বকীয় পৃথকীকরণ) বেছে নেওয়া হয়।
৮. নদীর কাদাজলের থেকে পরিষ্কার জল লাভ করার জন্য ব্যবহারযোগ্য সবগুলি পদ্ধতির নাম লেখো।
উত্তর: নদীর কাদাজলের থেকে পরিষ্কার জল পাওয়ার জন্য নিম্নলিখিত পদ্ধতিগুলো পর্যায়ক্রমে ব্যবহার করা যেতে পারে:
* অবক্ষেপণ (Sedimentation): কাদাজলকে একটি পাত্রে কিছু সময় স্থিরভাবে রেখে দিলে ভারী কাদা, বালি ইত্যাদি কণাগুলো পাত্রের তলায় জমা হয়।
* আস্রাবণ (Decantation): তলায় কণাগুলো জমার পর, ওপরের অপেক্ষাকৃত পরিষ্কার জল সাবধানে অন্য পাত্রে ঢেলে নেওয়া হয়।
* পরিস্রাবণ (Filtration): আস্রাবণের পরেও জলে কিছু সূক্ষ্ম কাদা মিশে থাকতে পারে। এই জলকে ফিল্টার কাগজ বা সূক্ষ্ম কাপড় দিয়ে ছেঁকে নিলে (পরিস্রাবণ) আরও পরিষ্কার জল পাওয়া যায়।
৯. উপযুক্ত চিত্রসহকারে পরিস্রাবণ পদ্ধতিটি ব্যাখ্যা করো।
উত্তর:
পরিস্রাবণ (Filtration): এটি এমন একটি পদ্ধতি যার সাহায্যে কোনো তরল পদার্থে অদ্রবণীয় (মিশে না থাকা) কঠিন দ্রব্যকে পৃথক করা হয়।
পদ্ধতি: এই পদ্ধতিতে একটি মিশ্রণকে ‘ফিল্টার’ (যেমন: ফিল্টার কাগজ বা ছাঁকনি) এর মধ্য দিয়ে চালনা করা হয়। ফিল্টারে থাকা সূক্ষ্ম ছিদ্রগুলো তরল পদার্থকে (যেমন: জল) পার হতে দেয়, কিন্তু অদ্রবণীয় কঠিন কণাগুলোকে (যেমন: কাদা বা চা-পাতা) আটকে দেয়। যে পরিষ্কার তরলটি ফিল্টার ভেদ করে নীচে জমা হয়, তাকে পরিস্রুত (Filtrate) বলে।
উদাহরণ: ছাঁকনি দিয়ে চা থেকে চা-পাতা আলাদা করা বা ফিল্টার কাগজ ব্যবহার করে কাদাজল থেকে কাদা পৃথক করা।
চিত্র:
(চিত্রের বর্ণনা: পাঠ্যবইয়ের চিত্র 6.10(c) অনুযায়ী, একটি স্ট্যান্ডে একটি চুঙ্গি (Funnel) আটকানো আছে। চুঙ্গির মধ্যে একটি ফিল্টার কাগজ শঙ্কু (Cone) আকারে রাখা আছে। একটি কাচের দণ্ডের সাহায্যে কাদাজল ধীরে ধীরে চুঙ্গিতে ঢালা হচ্ছে। ফিল্টার কাগজে কাদা আটকে যাচ্ছে এবং নীচের গ্লাসে পরিষ্কার জল বা পরিস্রুত জমা হচ্ছে।)
১০. পাঠের কার্যকলাপ ৬.২ অনুযায়ী, সম্ভাব্য সকল ধরনের মিশ্রণের জন্য প্রযোজ্য পৃথকীকরণ পদ্ধতিগুলো উল্লেখ করো।
(দ্রষ্টব্য: প্রশ্নটি সম্ভবত ক্রিয়াকলাপ 6.1 হবে, কারণ সেখানেই দ্রব্যগুলো (জল, লবণ, বালি, সরিষার তেল) উল্লেখ করা হয়েছে।)
উত্তর: 1) লবণ, জল – কঠিন ও তরল – দ্রবণীয় – বাষ্পীভবন
(2) বালি, জল – কঠিন ও তরল – অদ্রবণীয় – অবক্ষেপণ ও আস্রাবণ বা পরিস্রাবণ
(3) সরিষার তেল, জল – তরল ও তরল – অদ্রবণীয় (অমিশ্রণীয়) – অবক্ষেপণ ও আস্রাবণ
(4) লবণ, বালি – কঠিন ও কঠিন – (জলে একটি দ্রবণীয়, অন্যটি অদ্রবণীয়) – (জল যোগ করে) পরিস্রাবণ ও বাষ্পীভবন
(5) লবণ, সরিষার তেল – কঠিন ও তরল – অদ্রবণীয় – পরিস্রাবণ
(6) বালি, সরিষার তেল – কঠিন ও তরল – অদ্রবণীয় – অবক্ষেপণ ও আস্রাবণ বা পরিস্রাবণ
