জলের বিভিন্ন অবস্থা”  Chapter -11, Science, Class-6 ,SEBA

জলের বিভিন্ন অবস্থা”  Chapter -11, Science, Class-6 ,SEBA

অনুশীলনী
1. শুদ্ধ উত্তরের বৃত্তটি সঠিকভাবে পূর্ণ করো
I. মেঘ সৃষ্টি হওয়ার মূল কারণটি হলো-
(a) বাষ্পীভবন
(b) ঘনীভবন
(c) অধঃক্ষেপণ
(d) বাষ্পীভবন এবং ঘনীভবন
উত্তর: (b) ঘনীভবন


II. ঘনীভবনের ফলে কী হয়?
(a) জল থেকে জলীয়বাষ্প
(b) জলীয় বাষ্প থেকে জলের কণা
(c) জলের কণা থেকে মেঘ
(d) মেঘের থেকে বৃষ্টি
উত্তর: (b) জলীয় বাষ্প থেকে জলের কণা

III. বাষ্পীভবনের ফলে কী হয়?
(a) জলীয় বাষ্পের থেকে জল
(b) জল থেকে জলীয় বাষ্প
(c) জল থেকে বরফ
(d) জলের কণা থেকে মেঘ
উত্তর: (b) জল থেকে জলীয় বাষ্প

2. শূন্যস্থান পূর্ণ করো
(I) রোদে ভেজা কাপড় শুকানোর প্রক্রিয়াটি হলো- বাষ্পীভবন
(II) জলের কঠিন অবস্থা হলো- বরফ এবং গ্যাসীয় অবস্থা হলো জলীয় বাষ্প
(III) বায়ুমণ্ডল অনেক শীতল হলে জলের ছোটো কণাগুলো বরফে পরিণত হয়।
(IV) আকৃতির পরিবর্তন না হওয়া জলের অবস্থাটির নাম হলো বরফ (কঠিন অবস্থা)
(V) ঘনীভবন-প্রক্রিয়ার ফলে শিশিরের সৃষ্টি হয়।

3. নীচে উল্লেখ করা ঘটনাগুলো কোন্ প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত (বাষ্পীভবন, ঘনীভবন)
(I) একটি উত্তপ্ত লোহার দণ্ডে জল ছেটালে জলের ভাপ বের হয়।
উত্তর: বাষ্পীভবন (তাপের ফলে জল বাষ্পে পরিণত হয়।)
(II) বরফ ঠান্ডা জলের গ্লাসের পৃষ্ঠে জলের কণার সৃষ্টি হয়।
উত্তর: ঘনীভবন (বায়ুর জলীয় বাষ্প ঠান্ডা গ্লাসের সংস্পর্শে এসে জলে পরিণত হয়।)
(III) মাটির পাত্রে বা মাটির পাত্রের কুলাবে জল বা অন্যান্য বস্তু রাখলে তা অনেকদিন ভালো থাকে।
উত্তর: বাষ্পীভবন (মাটির পাত্র থেকে জল চুইয়ে বাষ্পীভূত হয়, যা শীতলীকরণ প্রভাব সৃষ্টি করে।)
(IV) মাটির কলসে রাখা জল, ধাতুর পাত্রে রাখা জলের থেকে অধিক শীতল।
উত্তর: বাষ্পীভবন (মাটির কলসের ছিদ্র দিয়ে জল চুইয়ে বাষ্পীভূত হয় এবং জলকে ঠান্ডা রাখে।)

4. নীচে দেওয়া উক্তিগুলোর কারণ ব্যাখ্যা করো।
(I) বৃষ্টি হতে থাকা অবস্থায় বা শীতকালে চার চাকার বাহনের জানালা বন্ধ রেখে বাহনটি চালালে সামনের এবং জানালার কাঁচগুলি ধোঁয়াটে দেখায়।
উত্তর: মানুষের নিঃশ্বাসের সাথে জলীয় বাষ্প বের হয়, যা গাড়ির ভেতরের বায়ুকে আর্দ্র করে তোলে। শীতকালে বা বৃষ্টির দিনে গাড়ির কাঁচগুলি বাইরে থেকে ঠান্ডা থাকে। এই ঠান্ডা কাঁচের সংস্পর্শে এসে গাড়ির ভেতরের উষ্ণ জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে কাঁচের ওপর ছোটো ছোটো জলের বিন্দুর সৃষ্টি করে, ফলে কাঁচ ধোঁয়াটে দেখায়।
(II) শীতকালে বৃষ্টি কম হয় বা হয় না।
উত্তর: বৃষ্টিপাতের জন্য মেঘ সৃষ্টির প্রয়োজন, এবং মেঘ সৃষ্টির জন্য বাষ্পীভবন প্রক্রিয়ায় জলীয় বাষ্পের প্রয়োজন হয়। বাষ্পীভবনের হার উষ্ণতার উপর নির্ভর করে। শীতকালে উষ্ণতা কম থাকে, ফলে নদী, পুকুর, সাগর ইত্যাদি থেকে জল বাষ্পীভবনের হারও অনেক কমে যায়। বায়ুমণ্ডলে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ কম থাকায় মেঘ কম সৃষ্টি হয়, ফলে বৃষ্টিপাতও কম হয় বা হয় না।
(III) ভেজা কাপড় ইস্ত্রি করলে জলের ভাপ বের হয়।
উত্তর: ইস্ত্রি খুব গরম থাকে। এই তাপ যখন ভেজা কাপড়ে থাকা জলের সংস্পর্শে আসে, তখন জল দ্রুত তাপ গ্রহণ করে বাষ্পীভবন প্রক্রিয়ায় জলীয় বাষ্পে (ভাপ) পরিণত হয়। এই জলীয় বাষ্পই ভাপ আকারে বেরিয়ে আসতে দেখা যায়।
(IV) তাওয়াতে রুটি বানানোর সময় তা ফুলে ওঠে।
উত্তর: রুটি বানানোর জন্য মাখা আটাতে জল থাকে। যখন রুটি গরম তাওয়াতে সেঁকা হয়, তখন আটার ভেতরের জল তাপে গরম হয়ে জলীয় বাষ্পে পরিণত হয়। এই জলীয় বাষ্প বাইরে বেরিয়ে আসতে চাওয়ার সময় চাপ সৃষ্টি করে, যার ফলেই রুটিটি ফুলে ওঠে।
(V) ফ্যানের নীচে ভেজা কাপড় রেখে দিলে তা শুকোয়।
উত্তর: ফ্যান চালালে বাতাসের গতি বৃদ্ধি পায়। বাতাসের গতি বাড়লে বাষ্পীভবনের হারও বৃদ্ধি পায়। এই দ্রুত বাষ্পীভবনের ফলেই ফ্যানের নীচে রাখা ভেজা কাপড় থেকে জল বাষ্পীভূত হয়ে শুকিয়ে যায়।

5. কারণ ব্যাখ্যা করো-
(I) রেফ্রিজারেটারে রাখা জলের বোতল তার বাইরে রাখলে বোতলের বাইরে জলের কণা জমা হয়।
উত্তর: রেফ্রিজারেটর থেকে বের করা জলের বোতল খুব ঠান্ডা থাকে। আমাদের চারপাশের বায়ুতে জলীয় বাষ্প থাকে। এই জলীয় বাষ্প যখন ঠান্ডা বোতলের পৃষ্ঠের সংস্পর্শে আসে, তখন তা শীতল হয়ে ঘনীভূত হয় এবং জলের ছোটো ছোটো বিন্দুতে পরিণত হয়। এই কারণেই বোতলের বাইরে জলের কণা জমা হয়।
(II) বাষ্পীভবন এবং ঘনীভবন ছাড়া জলচক্র হয় না।
উত্তর: জলচক্র হলো পৃথিবীর ভূ-পৃষ্ঠ এবং বায়ুমণ্ডলের মধ্যে জলের একটি ক্রমাগত চক্রাকার পরিবর্তন। এই চক্রে, বাষ্পীভবন প্রক্রিয়ায় ভূ-পৃষ্ঠের (যেমন সাগর, নদী) জল সূর্যের তাপে জলীয় বাষ্প হয়ে বায়ুমণ্ডলের ওপরে উঠে যায়। এরপর, ঘনীভবন প্রক্রিয়ায় সেই জলীয় বাষ্প ঠান্ডা হয়ে জলের কণায় পরিণত হয় ও মেঘ সৃষ্টি করে। এই মেঘ থেকেই বৃষ্টিরূপে জল আবার ভূ-পৃষ্ঠে ফিরে আসে। তাই এই দুটি প্রক্রিয়া ছাড়া জলচক্র সম্ভব নয়।
6. শীতকালে গাছের পাতাতে বিন্দু দেখা যায় কেন?
উত্তর: শীতকালে বায়ুমণ্ডল ঠান্ডা থাকে, বিশেষ করে ভোরের দিকে। তখন বায়ুতে থাকা জলীয় বাষ্প ঠান্ডা গাছের পাতা বা ঘাসের পৃষ্ঠের সংস্পর্শে এসে ঘনীভূত হয় এবং জলের ছোটো ছোটো বিন্দুতে পরিণত হয়। এই জলের বিন্দুগুলিকেই শিশির বলে।
7. সূর্যালোকে ভূ-পৃষ্ঠের জলভাগ শুকিয়ে যায় কেন?
উত্তর: সূর্যের আলো বা তাপের প্রভাবে ভূ-পৃষ্ঠের জল গরম হয়। এই তাপের ফলে জল বাষ্পীভবন প্রক্রিয়ায় তরল অবস্থা থেকে জলীয় বাষ্পে (গ্যাসীয় অবস্থা) পরিণত হয়। এই জলীয় বাষ্প বায়ুমণ্ডলে মিশে যায়, ফলে জলভাগ শুকিয়ে যায় বা কমে যায়।
8. জলের মতন তিনটি অবস্থায় পাওয়া যায় এমন একটি পদার্থের নাম লেখো।
উত্তর: মোম (বা ঘি/তেল)। (মোম তাপে গলে তরল হয় এবং ঠান্ডা হলে কঠিন অবস্থায় ফিরে আসে, আর মোমবাতি জ্বালালে কিছু মোম বাষ্পীভূতও হয়।)

9. বাষ্পীভবনকে প্রভাবিত করা কারকগুলি কী কী?
উত্তর: বাষ্পীভবনকে প্রভাবিত করা কারকগুলি হলো:
* জলের উন্মুক্ত এলাকা (পাত্রের আয়তন): উন্মুক্ত এলাকা যত বেশি হয়, বাষ্পীভবন তত দ্রুত হয়।
* উষ্ণতা: উষ্ণতা বাড়লে বাষ্পীভবনের হার বাড়ে।
* বাতাস (বায়ুর গতি): বাতাসের গতি বাড়লে বাষ্পীভবনের হার বাড়ে।
* আর্দ্রতা (বায়ুতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ): আর্দ্রতা বেশি থাকলে বাষ্পীভবনের হার কমে যায়।

10. হাতে স্যানিটাইজার লাগালে ঠান্ডা অনুভব হয় কেন?
উত্তর: স্যানিটাইজার (যাতে অ্যালকোহল থাকে) খুব দ্রুত বাষ্পীভূত হয়। বাষ্পীভবনের জন্য তাপের প্রয়োজন হয়। স্যানিটাইজার এই প্রয়োজনীয় তাপ আমাদের হাত থেকেই শোষণ করে। হাত থেকে তাপ শোষিত হওয়ার ফলেই বাষ্পীভবনের শীতলীকরণ প্রভাব দেখা দেয় এবং আমাদের হাতে ঠান্ডা অনুভব হয়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *