জনসংখ্যার বৃদ্ধি এবং বিতরণ, ভূগোল Chapter -2,Class -8


পাঠ-২: জনসংখ্যার বৃদ্ধি এবং বিতরণ সম্পর্কিত প্রশ্ন ও উত্তর (পৃষ্ঠা ১৩-২১)

পৃষ্ঠা ১৪-এর প্রশ্ন
উত্তর লেখো-
১. জনসংখ্যা বৃদ্ধি বলতে কী বোঝ?
Ans.জনসংখ্যার বৃদ্ধি বলতে একটি নির্ধারিত সময়ের ভেতরে ঘটা জনসংখ্যার সংখ্যাগত পরিবর্তনকে বোঝায়। যেমন, ২০০১ খ্রিস্টাব্দ থেকে ২০১১ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে আসামের জনসংখ্যায় যে সংখ্যাগত বৃদ্ধি হয়েছিল, তাকেই জনসংখ্যা বৃদ্ধি বলে।
২. জনসংখ্যার গুণগত বিকাশ বলতে কী বোঝ?
Ans. কর্মকুশলতা, উৎপাদনমুখী দক্ষতা, জ্ঞান-বুদ্ধি ইত্যাদি মানব সম্পদের কয়েকটি গুণগত বৈশিষ্ট্য। এই মানব সম্পদকে উপযুক্তভাবে গড়ে তোলাকে মানব সম্পদের উন্নয়ন বা বিকাশ বলা হয়। অর্থাৎ, মানব সম্পদের গুণগত উৎকর্ষ সাধনই হলো এর বিকাশ। জনসংখ্যার গুণগত বিকাশ হলে মানব সম্পদের বিকাশ হয়েছে বলে বোঝা যায়।
৩. জনসংখ্যা বৃদ্ধি কী ধরনের সমস্যার সৃষ্টি করে?
Ans. একটি দেশে অভাবনীয়ভাবে জনসংখ্যা বৃদ্ধি হলে নিম্নলিখিত সমস্যাগুলোর উদ্ভব হয়:
* খাদ্য, পানীয় জলের সমস্যা এবং বাসস্থানের অভাব দেখা দেয়।
* মূল্যবৃদ্ধি এবং প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর মানুষের চাপ বৃদ্ধি পায়।
* শিক্ষা, স্বাস্থ্য ইত্যাদি সব দিকেই নানা ধরণের সমস্যার উদ্ভব হয়।
* পরিবেশ নষ্ট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভবিষ্যতে সম্পদের অভাবও নিশ্চিত হয়ে পড়ে।
পৃষ্ঠা ১৫-এর প্রশ্ন
ক্রিয়াকলাপ –
১. জনসংখ্যার বিতরণ বলতে কী বোঝ?
Ans.পৃথিবীর কয়েকটি বিশেষ অঞ্চলে মানুষের বসতি গড়ে উঠেছে এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষ পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছে। পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে মানুষ ঘন অথবা পাতলা ভাবে বসতি স্থাপন করেছে, এই বিন্যাস বা অবস্থাকেই জনসংখ্যার বিতরণ বলা হয়।
২. জনসংখ্যার বিতরণের ওপরে কোন কারণগুলো প্রভাব বিস্তার করে উল্লেখ করো?
Ans. জনসংখ্যার বিতরণের ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত কারণগুলো প্রভাব বিস্তার করে:
* প্রাকৃতিক কারণ: পর্যাপ্ত পরিমাণে জলের অবস্থিতি, স্থলভাগের গঠন বা আকৃতি, অঞ্চলটির জলবায়ু এবং মাটির স্বাভাবিক উর্বরতা, প্রাকৃতিক সম্পদের প্রাচুর্য।
* মানবসৃষ্ট কারণ: নগরীকরণ, শাসন প্রণালী এবং ধর্ম নিরপেক্ষ নীতি।
পৃষ্ঠা ১৬-এর প্রশ্ন
উত্তরে লেখো

১. জনবসতির কেন্দ্রীভবন বলতে কী বোঝ উদাহরণ সহ লেখো।
Ans. কোনো কোনো অঞ্চলে প্রাকৃতিক বা মানব সৃষ্ট সুবিধার জন্য মানুষের বসতি একই জায়গায় অতি ঘন হয়ে কেন্দ্রীভূত হতে শুরু করে। এই প্রক্রিয়াকেই জনসংখ্যার কেন্দ্রীভবন বলা হয়।
উদাহরণ: গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার সমভূমি অঞ্চল কৃষি-কার্য এবং বসবাসের জন্য উপযোগী, তাই এখানে বসতি ঘন বা কেন্দ্রীভূত।
২. সাধারণত কী কী সুযোগ-সুবিধার ভিত্তিতে জনবসতির কেন্দ্রীভবন ঘটে?
Ans. সাধারণত নিম্নলিখিত সুযোগ-সুবিধাগুলোর ভিত্তিতে জনবসতির কেন্দ্রীভবন ঘটে:
* প্রাকৃতিক সুবিধা: জলের সুবিধা, উর্বর ভূমি, স্বাস্থ্যকর জলবায়ু, প্রাকৃতিক সম্পদের প্রাচুর্য ইত্যাদি।
* মানবসৃষ্ট সুবিধা: ঔদ্যোগীকরণ, নগরীকরণ, উন্নত শিক্ষা, যাতায়াত, চিকিৎসা ব্যবস্থা, ব্যাঙ্ক ব্যবস্থা, জল সরবরাহ, বাজার এবং বিনোদনের সুযোগ-সুবিধা।
* কর্মসংস্থান: এধরনের ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলে নিয়োগের সম্ভাবনাও বেশি থাকে।
পৃষ্ঠা ১৭-এর প্রশ্ন
ক্রিয়াকলাপ –

১. ঘনবসতির জন্য উদ্ভব হওয়া সমস্যাগুলো দূর করার জন্য কী ধরনের বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করো।
Ans. জনসংখ্যার কেন্দ্রীভবনের ফলে উদ্ভব হওয়া সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য উন্নত দেশসমূহে নিম্নলিখিত ব্যবস্থাগুলো নেওয়া হয়েছে:
* বহুতল ভবন নির্মাণ: জায়গার অভাবে বাড়ি-ঘর, সরকারি কার্যালয় ইত্যাদির জন্য বহুতল ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে।
* সুড়ঙ্গ পথ নির্মাণ: পরিবহণের চাপ সামলানোর জন্য মাটির নীচে সুড়ঙ্গ পথ নির্মাণ করে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করা হচ্ছে।
পৃষ্ঠা ১৮-এর প্রশ্ন
ক্রিয়াকলাপ –
১. জন-প্রব্রজন বলতে কী বোঝ?
Ans. কর্মসূত্রে বা অন্য কোনো কারণে কিছু সংখ্যক লোক এক স্থান থেকে অন্য স্থানে গিয়ে স্থায়ী বা সাময়িকভাবে বসতির কার্যকে জন-প্রব্রজন বলে।
২. কী কী কারণে প্রব্রজন ঘটে লেখো।
Ans.জন-প্রব্রজন ঘটার প্রধান কারণগুলো হলো:
* প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও সংকট: যুদ্ধ-বিগ্রহ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ (যেমন বন্যা, নদী ভাঙন), মহামারি, খাদ্য সংকট ইত্যাদি।
* অর্থনৈতিক ও সামাজিক কারণ: উন্নত শিক্ষাগ্রহণ, কর্মসংস্থান, নিরাপদ জীবন-যাপন, এবং উৎস স্থানের তুলনায় লক্ষ্যস্থানে জীবন-নির্বাহের বেশি সুবিধা থাকা।
* গ্রামীণ থেকে শহরাঞ্চলে প্রব্রজন: উদ্যোগ, নির্মাণ কার্য, কারখানা ইত্যাদিতে সংস্থাপণের লক্ষ্যে গ্রামাঞ্চল থেকে শহরাঞ্চলে প্রব্রজন ঘটে।
৩. প্রব্রজনের উৎসস্থান এবং লক্ষ্যস্থান বলতে কী বোঝ লেখো।
Ans. উৎসস্থান (Place of origin): যে স্থান থেকে কোনো ব্যক্তি প্রব্রজন করে, সেই স্থানকে প্রব্রজনের উৎসস্থান বলা হয়।
* লক্ষ্যস্থান (Place of destination): যে নতুন স্থানটিতে গিয়ে ব্যক্তি বসবাস করতে শুরু করে, সেই স্থানকে প্রব্রজনের লক্ষ্যস্থান বলা হয়।
পৃষ্ঠা ১৯-এর প্রশ্ন
উত্তর লেখো-

১. জনসংখ্যার বিস্ফোরণ কী বুঝিয়ে লেখো।
Ans. চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতি এবং অসুখ-বিসুখ উন্নত চিকিৎসার দ্বারা নিরাময় হওয়ার ফলে মানুষের মৃত্যুর হার কমে এসেছে। এর ফলে উনবিংশ শতকের প্রথম থেকেই জনসংখ্যা দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। জনসংখ্যার এই ধরনের অভাবনীয় পরিবর্তনকে জনসংখ্যার বিস্ফোরণ বলা হয়।
২. জনসংখ্যার বিস্ফোরণের ফলে সৃষ্ট সমস্যাগুলো কী কী?
Ans. জনসংখ্যার বিস্ফোরণের ফলে সৃষ্ট সমস্যাগুলো নিম্নরূপ:
* পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হওয়া।
* খাদ্য সংকট, অনগ্রসরতা এবং মূল্যবৃদ্ধি।
* সংস্থাপনহীনতা, বাসস্থানের অভাব।
* শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যের অভাব।
* মানব সম্পদ উন্নয়নেও সমস্যার সৃষ্টি হয়।
পৃষ্ঠা ১৯-এর প্রশ্ন
ক্রিয়াকলাপ –

১. কী কী গুণ থাকলে মানুষকে মানব সম্পদ বলা যায়?
Ans. নিম্নলিখিত গুণগুলো থাকলে মানুষকে মানব সম্পদ বলা যায়:
* শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ ও কর্মক্ষম হয়ে সমাজ তথা দেশের উন্নয়নে অবদান যোগানোর সামর্থ্য থাকা।
* বুদ্ধি বৃত্তি, কারিগরি কৌশল, কর্মদক্ষতা এবং শিক্ষা।
* উৎপাদনমুখী দক্ষতা ও জ্ঞান-বুদ্ধি থাকা।
২. সুদক্ষ মানব সম্পদের অভাব একটি দেশকে কোন কোন ক্ষেত্রে দুর্বল করে?
Ans. প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ হলেও মানব সম্পদে দুর্বল একটি দেশ নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে দুর্বল হতে পারে:
* অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে: দেশের অর্থনৈতিক বা ঔদ্যোগিক ক্ষেত্রে অগ্রগতি সম্ভব হয় না।
* উন্নয়নমূলক কার্যে: উৎপাদনমুখী কার্যে অবদান যোগাতে পারে না, ফলে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ব্যাহত হয়।
* সম্পদ ব্যবহারে: প্রাকৃতিক সম্পদসমূহের আহরণ এবং ব্যবহারের মূলে থাকা বুদ্ধি ও কৌশলের অভাবে সম্পদ ব্যবহারের প্রক্রিয়া দুর্বল হয়।
৩. অন্যসব সম্পদ থেকে মানব সম্পদকে কেন শ্রেষ্ঠ আখ্যা দেওয়া হয়েছে?
Ans. প্রকৃতির বিভিন্ন উপাদানকে সম্পদে রূপান্তরিত করার সামর্থ্য, উৎপাদনের সামর্থ্য এবং আবিষ্কারের সামর্থ্যের জন্য অন্য সব সম্পদের তুলনায় মানুষকে শ্রেষ্ঠ সম্পদ হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য সম্পদকে কাজে লাগানোর জন্য মানুষের জ্ঞান, বুদ্ধি ও দক্ষতার প্রয়োজন হয়।
পৃষ্ঠা ২০-এর প্রশ্ন
ক্রিয়াকলাপ –
১. আমাদের দেশের মানব সম্পদ উন্নয়নের জন্য কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করো।
Ans. আমাদের দেশের সরকার মানব সম্পদ উন্নয়নের জন্য নিম্নলিখিত ব্যবস্থাগুলো গ্রহণ করেছে:
* খাদ্য, বাসগৃহের সুবিধা প্রদান।
* বিনামূল্যে গুণগত শিক্ষা প্রদান।
* উপযুক্ত কর্মসংস্থাপন এবং চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা।
২. আমাদের দেশের মানব সম্পদের মধ্যে অন্য দেশে যাওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণ কী বলে ভাব তা লেখো।
Ans. আমাদের দেশের মানব সম্পদের মধ্যে অন্য দেশে যাওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধির প্রধান কারণ হলো:
* উচ্চ শিক্ষা এবং কর্মসংস্থান: উচ্চ শিক্ষা লাভ এবং ভালো বেতনের বা উন্নত কর্মসংস্থানের সুযোগের সন্ধানে।
* কারিগরি দক্ষতার চাহিদা: বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে বহুজাতিক বাণিজ্যিক গোষ্ঠীগুলো কারিগরি ক্ষেত্রে পারদর্শী ব্যক্তিদের নিয়োগ করে, যা দক্ষ মানব সম্পদকে আকর্ষণ করে।
* উন্নত জীবনযাত্রার মান: উন্নত দেশগুলোতে অধিক সুযোগ-সুবিধা এবং উন্নত জীবনযাত্রার মানের প্রতি আকর্ষণ।
পৃষ্ঠা ২১-এর অনুশীলনী
১। শুদ্ধ উত্তরটি লেখো-
(ক) কোন অঞ্চলে জনসংখ্যা সবচেয়ে বেশি-
(১) নিরক্ষীয় অঞ্চল, (২) উত্তর মেরু, (৩) পূর্ব এশিয়া,
(৪) আফ্রিকার সাহারা মরুভূমি।
Ans.(৩) পূর্ব এশিয়া,

(খ) কোন মহাদেশের জনসংখ্যা সর্বাধিক-
(১) ইউরোপ, (২) আফ্রিকা, (৩) এশিয়া,(৪) অস্ট্রেলিয়া।
Ans.(৩) এশিয়া

(গ) ২০১১ খ্রিস্টাব্দে অসমের জনসংখ্যা ছিল-
(১) ২.২৪ কোটি, (২) ৩.১২ কোটি, (৩) ২.৩৫ কোটি, (৪) ২.৪৬ কোটি।
Ans.(২) ৩.১২ কোটি,

(ঘ) নীচের কোন মহাদেশে মানুষের স্থায়ী বসতি নেই-
(১) এশিয়া, (২) দক্ষিণ আমেরিকা, (৩) কুমেরু বা আন্টার্কটিকা, (৪) ইউরোপ।
Ans.৩) কুমেরু বা আন্টার্কটিকা

পৃষ্ঠা ২১-এর অনুশীলনী
২। শূন্য স্থান পূর্ণ করো-
(ক) জনসংখ্যার বৃদ্ধি শব্দটি কোন অঞ্চলে সংখ্যাগত বৃদ্ধিকে বোঝায়।
(খ) পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষই উত্তর গোলার্ধে বাস করে।
(গ) প্রতি বর্গ কিলোমিটার এলাকায় যত সংখ্যক লোক বাস করে সেটাই ঘনত্ব সেটাই সেই অঞ্চলটির জনসংখ্যার।
(ঘ) একটি অঞ্চল ত্যাগ করে কোনো একটি নতুন অঞ্চলে গিয়ে বসতি স্থাপন করলে নতুন অঞ্চলটিকে প্রব্রজনের লক্ষ্যস্থান বলে।
পৃষ্ঠা ২১-এর অনুশীলনী
৩। সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো-
(ক) মানব সম্পদের উন্নয়ন – মানব সম্পদের উন্নয়ন বা বিকাশ হলো মানব সম্পদ হিসেবে মানুষের গুণগত উৎকর্ষ সাধন। কর্মকুশলতা, উৎপাদনমুখী দক্ষতা, জ্ঞান-বুদ্ধি এবং উন্নত স্বাস্থ্য এই উন্নয়নের মূল ভিত্তি। সমাজের সব শ্রেণির লোকের জন্য শিক্ষা, সুস্বাস্থ্য, উপযুক্ত কর্মসংস্থাপন ইত্যাদির ব্যবস্থা নিশ্চিত করাটাই মানব সম্পদ উন্নয়নের মূল শর্ত। মানব সম্পদের যত উন্নয়ন হয়, তত দেশ উৎপাদন কার্যে সফলতা লাভ করে এবং রাষ্ট্রীয় আয় বৃদ্ধি হয়।
(খ) জনসংখ্যার কেন্দ্রীভবন – পৃথিবীর কয়েকটি বিশেষ অঞ্চলে প্রাকৃতিক বা মানব সৃষ্ট সুবিধার জন্য মানুষের বসতি একই জায়াগায় অতি ঘন হয়ে কেন্দ্রীভূত হতে শুরু করে, এই প্রক্রিয়াকেই জনসংখ্যার কেন্দ্রীভবন বলে। যেমন, নদী উপত্যকা এবং উপকূলীয় সমভূমি অঞ্চলের উর্বর মাটি এবং জলের সুবিধার জন্য জনবসতি কেন্দ্রীভূত হয়। এছাড়া শিল্প, উন্নত শিক্ষা, চিকিৎসা এবং যাতায়াত ব্যবস্থার মতো সুবিধাগুলোও কেন্দ্রীভবনে উৎসাহ যোগায়। পৃথিবীর চারটি প্রধান ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চল হল- পূর্ব এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, পশ্চিম এবং মধ্য ইউরোপ এবং আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পূর্ব উপকূলীয় অঞ্চল।
(গ) জনসংখ্যার বিস্ফোরণ – চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রগতি এবং রোগজনিত মৃত্যুর হার কমে আসার ফলে উনবিংশ শতকের প্রথম থেকেই বিশ্বের জনসংখ্যা দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। জনসংখ্যার এই ধরনের অভাবনীয় পরিবর্তনকে জনসংখ্যার বিস্ফোরণ বলা হয়। ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের পর থেকে এই বৃদ্ধির হার আরও দ্রুত হয়েছে। এই দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধি খাদ্য সংকট, বাসস্থানের অভাব, সংস্থাপনহীনতা, পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হওয়াসহ দেশের সার্বিক উন্নয়নের পথে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পৃষ্ঠা ২১-এর অনুশীলনী
৪। বিশদভাবে লেখো (৮০ টি শব্দের মধ্যে)

১. জন-প্রব্রজন কাকে বলে? এর কারণগুলো কী কী? জন-প্রব্রজনের ফলাফলগুলো কী ধরনের?
Ans. কর্মসূত্রে বা অন্য কোনো কারণে কিছু সংখ্যক লোক এক স্থান থেকে অন্য স্থানে গিয়ে স্থায়ী বা সাময়িকভাবে বসতি স্থাপন করলে তাকে জন-প্রব্রজন বলে। প্রব্রজনের প্রধান কারণগুলো হলো: যুদ্ধ-বিগ্রহ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মহামারি, খাদ্য সংকট, উন্নত শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ। প্রব্রজনের ফলাফল হলো: লক্ষ্যস্থানে হঠাৎই জনসংখ্যা দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাওয়ায় ভূমি এবং অন্যান্য সম্পদের মাথাপিছু পরিমাণ হ্রাস পায়। এছাড়াও কখনও কখনও লক্ষ্যস্থানে রাজনৈতিক, ভাষা-সংস্কৃতির সংকট দেখা দিতে পারে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *