উদ্ভিদের প্রজনন,  Chapter-12, Class -7, Science,SEBA

উদ্ভিদের প্রজনন,  Chapter-12, Class -7, Science,SEBA

উদ্ভিদের প্রজনন,  Chapter-12, Class -7, Science,SEBA

১) শূণ্যস্থান পূর্ণ করো
(ক) মূল গাছের দৈহিক প্রজনন থেকে নতুন গাছের সৃষ্টি হওয়াকে অঙ্গজ বংশ বিস্তার বলে।
(খ) যে ফুলে শুধু পুরুষ বা স্ত্রী প্রজনন অঙ্গ থাকে সেই ফুলগুলোকে এক লিঙ্গী ফুল বলে।
(গ) যখন পরাগরেণু একই গাছের অন্য একটি ফুলের গর্ভকেশরে পতিত হয় তাকে ইতর পরাগযোগ বলে।
(ঘ) পুং ও স্ত্রীজনন কোষের মিলনকে নিষেচন বলে।
(ঙ) বাতাস, জল এবং প্রাণীর – এর মাধ্যনে বীজের বিস্তার হয়।

২) অযৌন প্রজননের বিভিন্ন উপায়গুলো বর্ণনা করো। উদাহরণ দাও।
উত্তর: অযৌন প্রজনন প্রক্রিয়ায় বীজ ছাড়াই নতুন গাছের সৃষ্টি হয়। এর বিভিন্ন উপায়গুলি হলো:
* অংগজ বা দৈহিক বংশ বিস্তার (Vegetative Propagation): এটি একটি অযৌন প্রজনন প্রক্রিয়া যেখানে মূল, কাণ্ড, পাতা বা মুকুল (Bud) থেকে নতুন গাছের সৃষ্টি হয়।
   * উদাহরণ (কাণ্ড): গোলাপ বা চম্পার শাখা কলম, আলুর চোখ (মুকুল), আদা বা হলুদের গ্রন্থি।
   * উদাহরণ (পাতা): পাথরকুচি পাতার কিনারায় থাকা মুকুল থেকে।
   * উদাহরণ (মূল): মিষ্টি আলু এবং ডালিয়া।
* মুকুলন/মুকুলোদ্গম (Budding): এই প্রক্রিয়ায় মূল কোষ থেকে ছোট ছোট কন্দ বা মুকুল (Bud) বেরিয়ে আসে। এই মুকুলগুলি ধীরে ধীরে বড় হয়ে মূল কোষ থেকে খসে পড়ে এবং নতুন কোষের জন্ম দেয়।
   * উদাহরণ: ইষ্ট।
* বিভাজন (Fragmentation): এই প্রক্রিয়ায় একটি জীব দুই বা ততোধিক টুকরোতে বিভাজিত হয়। প্রতিটি টুকরো থেকে একটি নতুন জীবের জন্ম হয়।
   * উদাহরণ: শৈবাল (যেমন স্পাইরোগাইরা)।
* রেণু গঠন (Spore formation): এই অযৌন প্রজনন প্রক্রিয়ায় উদ্ভিদ রেণু (Spore) সৃষ্টি করে। রেণুগুলো শক্ত আবরণের দ্বারা আবৃত থাকে এবং অনুকুল আবহাওয়ায় অঙ্কুরিত হয়ে নতুন উদ্ভিদের জন্ম দেয়।
   * উদাহরণ: ছত্রাক (যেমন পাউরুটিতে), ভূমি শৈবাল (মস) এবং ফার্ন।
  
৩) যৌন প্রজনন বলতে কী বোঝায় ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: যৌন প্রজনন হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে বীজ থেকে নতুন গাছের সৃষ্টি হয়। এই প্রক্রিয়ায় ফুল উদ্ভিদের প্রজনন অঙ্গ হিসেবে কাজ করে। ফুলে থাকা পুংকেশর পুংজনন কোষ (Male gamete) এবং স্ত্রীকেশর স্ত্রীজনন কোষ (Female gamete) সৃষ্টি করে। যৌন প্রজনন প্রক্রিয়ায় এই পুংজনন কোষ ও স্ত্রীজনন কোষ একত্রে মিলে জাইগোট বা যোজন কোষ (Zygote) সৃষ্টি করে, যা পরবর্তীকালে ভ্রূণে এবং বীজে পরিণত হয়।

৪) অযৌন এবং যৌন প্রজননের পার্থক্য উল্লেখ করো।
উত্তর: অযৌন এবং যৌন প্রজননের মধ্যে প্রধান পার্থক্যগুলি হলো:
| বৈশিষ্ট্য | অযৌন প্রজনন | যৌন প্রজনন |

1| বীজের ভূমিকা | বীজ ছাড়াই নতুন গাছের সৃষ্টি হয়। | বীজ থেকে নতুন গাছের সৃষ্টি হয়। |
2| জনন কোষ | পুং ও স্ত্রী জনন কোষের মিলনের প্রয়োজন হয় না। | পুং ও স্ত্রী জনন কোষের মিলন হয় (নিষেচন)। |
3| জনক উদ্ভিদ | নতুন গাছ শুধুমাত্র একটি গাছ (জনক) থেকেই সৃষ্টি হয়। | সাধারণত পুং ও স্ত্রী জনন কোষের মিলনের প্রয়োজন হয়, যা একই বা ভিন্ন গাছ থেকে আসতে পারে। |
4| নতুন প্রজন্ম | নতুন গাছগুলো দেখতে হুবহু ওদের মা বাবার (জনক উদ্ভিদের) মতো হয়। | নতুন গাছে মা বাবার (উভয়) গুণগুলো ফুটে উঠে। |
5| ব্যবহৃত অঙ্গ | উদ্ভিদের অঙ্গজ অংশ যেমন মূল, কাণ্ড, পাতা বা মুকুল থেকে প্রজনন হয়। | উদ্ভিদের জনন অঙ্গ অর্থাৎ ফুলের মাধ্যমে প্রজনন হয়। |

৫) ফুলের প্রজননের অংশগুলো ছবি এঁকে দেখাও।
উত্তর: (যেহেতু আমি ছবি আঁকতে পারি না, তাই পাঠ্যপুস্তক অনুসারে অংশগুলির বর্ণনা দেওয়া হলো):
ফুলের প্রজনন অঙ্গগুলি হলো পুংকেশর এবং স্ত্রীকেশর।
* পুংকেশর (Stamen): এটি পুংজনন অঙ্গ। এর দুটি অংশ রয়েছে (চিত্র 12.9 (ক) অনুযায়ী):
   * পরাগকোষ (Anther): এটি পরাগরেণু (Pollen grains) ধারণ করে, যা থেকে পুংজনন কোষ সৃষ্টি হয়।
   * পুংদণ্ড (Filament):
* স্ত্রীরকেশর (Pistil): এটি স্ত্রী জনন অঙ্গ। এর তিনটি অংশ রয়েছে (চিত্র 12.9 (খ) অনুযায়ী):
   * গর্ভমুণ্ড (Stigma): এটি পরাগরেণু গ্রহণ করে।
   * গর্ভদণ্ড (Style):
   * গর্ভাশয় বা ডিম্বাশয় (Ovary): এর ভেতরে এক বা একাধিক ডিম্বানু (Ovule) থাকে। এই ডিম্বানুতে স্ত্রীজনন কোষ (Female gamete) সৃষ্টি হয়।
  
৬) স্বপরাগযোগ এবং ইতর পরাগযোন এর পার্থক্য উল্লেখ করো।
উত্তর: স্বপরাগযোগ এবং ইতর পরাগযোগের মধ্যে পার্থক্য হলো:
* স্বপরাগযোগ (Self Pollination): যখন পরাগরেণু একই ফুলের গর্ভকেশরে পতিত হয়, তখন তাকে স্ব-পরাগযোগ বলা হয়।
* ইতর পরাগযোগ (Cross Pollination): যখন পরাগরেণু একই গাছের অন্য একটি ফুলের গর্ভকেশরে বা অন্য গাছের ফুলের গর্ভকেশরে পতিত হয়, তখন তাকে ইতর পরাগযোগ বলা হয়।

৭) ফুলে নিষেচন প্রক্রিয়া কীভাবে হয় বর্ণনা করো।
উত্তর: ফুলে নিষেচন প্রক্রিয়াটি নিম্নলিখিত ধাপে সম্পন্ন হয়:
* প্রথমে, পরাগযোগের (Pollination) মাধ্যমে পুংকেশর থেকে পরাগরেণু ফুলের গর্ভমুণ্ডে (Stigma) স্থানান্তরিত হয়।
* পরাগরেণু থেকে পুংজনন কোষ (Male gamete) এবং গর্ভাশয়ের ডিম্বানুর (Ovule) মধ্যে স্ত্রীজনন কোষ (Female gamete) সৃষ্টি হয়।
* পুংজনন কোষ ও স্ত্রীজনন কোষের মিলনের ফলে যে কোষের সৃষ্টি হয়, তাকে যোজন কোষ (Zygote) বলা হয়।
* যোজন কোষ সৃষ্টির ক্ষেত্রে পুংজনন কোষ ও স্ত্রীজনন কোষের এই মিলনকে নিষেচন (Fertilisation) বলা হয়। এই যোজন কোষটিই পরে ভ্রূণে (embryo) বিকশিত হয়।

৮) বীজের বিস্তার কী কী ভাবে হয় ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: বীজের বিস্তার (Seed dispersal) হলো প্রকৃতিতে একই গাছের প্রজাতিকে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়তে সাহায্য করার একটি প্রক্রিয়া। বীজের বিস্তার প্রধানত নিম্নলিখিত উপায়ে হয়:
* বাতাস: কিছু বীজ খুব হালকা হয় বা তাদের পাখা বা লোমের মতো অংশ থাকে, যা তাদের বাতাসের সাহায্যে বহুদূর বিস্তার লাভ করতে সাহায্য করে। উদাহরণ: সজনে (Drumstick), মেপল (Maple), মাদারের বীজ এবং সূর্যমুখীর ফল।
* জল: কিছু বীজ বা ফলের আবরণ স্পঞ্জের মতো বা তন্তুময় হয়, যা তাদের জলে ভাসতে এবং জলের দ্বারা বিস্তার লাভ করতে সাহায্য করে। উদাহরণ: নারকেল।
* প্রাণী: কিছু বীজে আঁকশির মতো কাঁটা থাকে যা প্রাণীর দেহে আঁকড়ে থাকে এবং তাদের বহুদূর পর্যন্ত নিয়ে যায়। উদাহরণ: জেনথিয়াম (Xanthium) এবং ইউরেনা (Urena)।
* ফেটে যাওয়া (Bursting): কিছু গাছের ফল পেকে গেলে হঠাৎ ফেঁটে যায় এবং বীজগুলি মূল গাছ থেকে অনেক দূরে ছড়িয়ে পড়ে। উদাহরণ: বালসাম ও কেষ্টর গাছ।

৯) 1নং স্তম্ভর সঙ্গে 2নং স্তম্ভ মেলাও:
উত্তর:
| ক নং স্তম্ভ | খ নং স্তম্ভ |

| (ক) মুকুল | (iii) ইষ্ট |
| (খ) চোখ | (v) আলু |
| (গ) বিভাজন | (ii) স্পাইরোগাইরা |
| (ঘ) পাখা | (i) মেপল |
| (ঙ) রেণু | (iv) পাউরুটীর ছত্রাক |


১০) শুদ্ধটিতে (✓) চিহ্ন দাও:
(ক) গাছের যৌন অঙ্গগুলো হল-
(i) পাতা (ii) কাণ্ড (iii) মূল (iv) ফুল
উত্তর: (iv) ফুল
(খ) পুং ও স্ত্রীজনন কোষের মিলনকে বলে?
(i) নিষেচন (ii) পরাগযোগ (iii) প্রজনন (iv) বীজের সৃষ্টি
উত্তর: (i) নিষেচন
(গ) পোক্ত গর্ভাশয় সৃষ্টি করে
(i) বীজ (ii) পুংদণ্ড (iii) পাপড়ি (iv) ফল
উত্তর: (iv) ফল
(ঘ) বীজকণা (রেণু) সৃষ্টিকারী গাছ হল –
(i) গোলাপ (ii) পাউরুটীর ছত্রাক (iii) আলু (iv) আদা
উত্তর: (ii) পাউরুটীর ছত্রাক
(ঙ) পাথরকুচির প্রজনন হয়-
(i) কাণ্ড (ii) পাতা (iii) মূল (iv) ফুল থেকে
উত্তর: (ii) পাতা

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *