আমাদের উৎসব, chapter-8, Class -4, SEBA, EVS New Book

আমাদের উৎসব


পৃষ্ঠা ৬০ (পাঠ-৮ আমাদের উৎসব)
ক্রিয়াকলাপ: ছবি পর্যবেক্ষণ ও আলোচনা
  প্রশ্ন: ছবিগুলোতে কী দেখতে পাচ্ছো?
   উত্তর: ছবিগুলোতে বিভিন্ন উৎসব পালনের দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। যেমন— বিহু নাচ, মেজি জ্বালানো, হোলি খেলা, দীপাবলি, ইদ এবং বড়দিন (ক্রিস্টমাস)।
  প্রশ্ন: প্রত্যেকটি ছবিতে কি ধরনের কার্যকলাপ দেখতে পাচ্ছো?
   উত্তর: প্রত্যেকটি ছবিতে আনন্দ-উল্লাসের কার্যকলাপ দেখা যাচ্ছে। যেমন— দলবদ্ধভাবে নাচ করা, আগুনের চারপাশে আনন্দ করা, একে অপরকে রং মাখানো, প্রদীপ জ্বালানো, কোলাকুলি করা এবং সাজানো গাছের চারপাশে আনন্দ করা।
প্রশ্ন: এই এই কাজগুলো কোন সময় এবং কেনো করা হয়?
   উত্তর: এই কাজগুলো বিভিন্ন উৎসব-পার্বণের সময় করা হয়। এগুলো বিভিন্ন জাতি-জনগোষ্ঠী এবং ধর্মাবলম্বী মানুষের পরম্পরাগত আচার-অনুষ্ঠান, যা উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে পালন করা হয়।
  প্রশ্ন: তোমাদের পালিত কয়েকটি উৎসবের নাম লেখো।
    উত্তর: (পাঠ্যপুস্তকে উল্লিখিত উৎসব অনুযায়ী) আমাদের পালিত কয়েকটি উৎসব হলো— বিহু, দুর্গাপূজা, দীপাবলী, ইদ, বড়দিন, সরস্বতী পূজা এবং ফাগুয়া বা হোলি।
পৃষ্ঠা ৬১ (বিহু)
ক্রিয়াকলাপ: দলগতভাবে আলোচনা করে লেখো
  প্রশ্ন: তোমাদের অঞ্চলে গোরু বিহুর দিনে গোরুর শরীর ধোয়ানো ছাড়া আর কি কি করা হয়।
   উত্তর: গোরু বিহুর দিনে গোরুর শরীরে ডাল-হলুদ ঘষে ধুইয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া, সন্ধ্যায় গোরুকে নতুন রশিতে বাঁধা হয়, প্রদীপ জ্বালানো হয়, ধূপধুনো জ্বালিয়ে নতুন পাখা দিয়ে বাতাস করা হয় এবং গোয়ালঘরে ধোঁয়া দেওয়া হয়। এভাবেই গোরুর শ্রীবৃদ্ধি কামনা করা হয়।
পৃষ্ঠা ৬২ (ভোগালী বিহু ও কাতি বিহু)
ক্রিয়াকলাপ: দলগতভাবে আলোচনা করে লেখো
  প্রশ্ন: তোমরা মকর সংক্রান্তি কিভাবে পালন করো?
   উত্তর: মকর সংক্রান্তির দিন মাঘ বিহু পালন করা হয়। এই বিহুকে ভোগালী বিহুও বলে। এর আগের রাতটিকে উরুকা বলা হয়, সেদিন সবাই মিলে ভেলাঘরে একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করে। পরদিন সকালে স্নান করে ভেলাঘর বা মেজি জ্বালিয়ে অগ্নিকে প্রণাম করা হয়। এই সময় বাড়িতে সান্দহ, দৈ-চিড়া এবং নানা ধরনের পিঠে-পুলি তৈরি করা হয়।
প্রশ্ন: তোমরা বিভিন্ন পিঠে-পুলির নামের একটি তালিকা প্রস্তুত করো।
   উত্তর: (পাঠ্যপুস্তকে ‘সান্দহ (গুড়ির পিঠা)’-এর উল্লেখ আছে। অন্যান্য পিঠে-পুলির নাম শিক্ষার্থীদের নিজেদের অভিজ্ঞতা থেকে লিখতে হবে। যেমন: তিলের পিঠা, নারকেলের পিঠা, ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা ইত্যাদি।)
পৃষ্ঠা ৬৪ (পোঙ্গল উৎসব)
ক্রিয়াকলাপ: এসো, খুঁজে দেখি
  প্রশ্ন: কেরল এবং তামিলনাডু রাজ্য ভারতের মানচিত্রের কোন জায়গায় আছে খুঁজে দেখো।
    উত্তর: (পৃষ্ঠা ৭৯-এর মানচিত্র অনুযায়ী) কেরল রাজ্য ভারতের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তে আরব সাগরের তীরে অবস্থিত। তামিলনাডু রাজ্য ভারতের দক্ষিণ প্রান্তে, কেরলের পূর্বে বঙ্গোপসাগরের তীরে অবস্থিত।
পৃষ্ঠা ৬৫ (জনগোষ্ঠীর উৎসব)
ক্রিয়াকলাপ: ছবি দেখে উৎসব চেনা
প্রশ্ন: নীচে বিভিন্ন উৎসবের ছবি দেওয়া হয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষয়িত্রীর সাহায্যে দলগতভাবে আলোচনা করে কোন জনগোষ্ঠীর কোন উৎসব তা খুঁজে বের করো-
    উত্তর: (এটি একটি ছবি শনাক্তকরণ কাজ। শিক্ষার্থীদের পৃষ্ঠা ৬৪-তে দেওয়া তালিকা এবং ছবিগুলো মেলাতে হবে। যেমন, ছবি দেখে মিসিং জনগোষ্ঠীর ‘আলি-আয়ে-নৃগাং’, বোড়ো জনগোষ্ঠীর ‘বৈশাগু’ বা চা-জনগোষ্ঠীর ‘করম পরব’ ইত্যাদি শনাক্ত করতে হবে।)
পৃষ্ঠা ৬৬ (দীপাবলি ও ইদ)
ক্রিয়াকলাপ: আলোচনা
প্রশ্ন: দীপাবলিতে ফুলঝুরি, পটকা ইত্যাদি পুড়িয়ে আতশবাজি করতে… এই বিষয়ে তোমরা শিক্ষক/শিক্ষয়িত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে জেনে নেবে।
    উত্তর: (এটি একটি আলোচনাভিত্তিক কাজ।)
   আলোচনার বিষয়: আতশবাজির ফলে বায়ু প্রদূষণ এবং আলো প্রদূষণ হয়, যা জীবজগতের ক্ষতি করে। পটকার প্রচণ্ড শব্দের ফলে প্রাণী এবং পাখিদের খুব অসুবিধা হয়, এমনকি তাদের মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে। তাই আমাদের আতশবাজি সাবধানে এবং কম ব্যবহার করা উচিত।
পৃষ্ঠা ৬৮ (গুরুনানক জয়ন্তী ও ফাগুয়া)
ক্রিয়াকলাপ: জেনে লেখো
  প্রশ্ন: অসমে কোন কোন জেলায় দৌল উৎসবকে ভক্তিভাবে এবং উৎসাহ উদ্দীপনায় পালন করা হয়?
    উত্তর: (এই তথ্যটি পাঠ্যপুস্তকের এই অংশে দেওয়া নেই। পাঠ্যপুস্তকে কেবল উল্লেখ আছে যে হোলি উৎসবকে অসমে দৌল বা দোল উৎসব বলা হয়।)
পৃষ্ঠা ৬৯ (অনুশীলনী – পাঠ ৮)
১। সংক্ষেপে উত্তর লেখো –
  (ক) শিখ ধর্মাবলম্বী লোকেদের পালিত উৎসবটির নাম কী?
    উত্তর: শিখ ধর্মাবলম্বী লোকেদের পালিত উৎসবটির নাম গুরুনানক জয়ন্তী।
  (খ) কোন ধর্মাবলম্বী লোকেরা বড়দিন পালন করে?
   উত্তর: খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী লোকেরা বড়দিন পালন করে।
  (গ) অসমের কোন উৎসবের সঙ্গে পোঙ্গল উৎসবের মিল আছে?
    উত্তর: অসমের ভোগালী বিহুর সঙ্গে পোঙ্গল উৎসবের মিল আছে।
  (ঘ) বুদ্ধ পূর্ণিমা কখন পালন করা হয়?
  উত্তর: বৈশাখ মাসের পূর্ণিমার দিনটি বুদ্ধ পূর্ণিমা রূপে পালন করা হয়।
  (ঙ) সর্বভারতীয় রং এর উৎসবটির নাম কী?
    উত্তর: সর্বভারতীয় রং এর উৎসবটির নাম ফাগুয়া বা হোলি উৎসব।
২। শুদ্ধ উত্তরটিতে ‘✓’ চিহ্ন দাও –
  (ক) গুরুনানক বৌদ্ধধর্ম / শিখ ধর্ম ✓ / খ্রিস্টান ধর্মের প্রবর্তক।
(খ) বিহু ✓ / হোলি / দীপাবলি এক কৃষিভিত্তিক উৎসব।
(গ) রঙালি বিহু / কাঙালি বিহু / ভোগালী বিহুতে ✓ ভেলাঘর তৈরি করা হয়।
৩। তুমি ভালোবাসো এমন একটি উৎসবের বিষয়ে পাঁচটি বাক্য লেখো।
  উত্তর: (এটি শিক্ষার্থীদের নিজস্ব উত্তর। ‘ভোগালী বিহু’-এর উপর ভিত্তি করে একটি নমুনা উত্তর নিচে দেওয়া হলো।)
    আমার প্রিয় উৎসব ভোগালী বিহু, যা মাঘ মাসে পালন করা হয়।
    এই বিহুকে ‘ভোগের বিহু’ও বলা হয় কারণ এই সময় সবার ভাঁড়ার শস্যে পরিপূর্ণ থাকে।
    ভোগালী বিহুর আগের রাতে ‘উরুকা’ পালন করা হয় এবং সবাই মিলে ভেলাঘরে ভোজ খাওয়া হয়।
    পরদিন সকালে স্নান করে মেজি জ্বালিয়ে অগ্নিকে প্রণাম করা হয়।
    এই সময় বাড়িতে দৈ-চিড়া এবং নানা ধরনের পিঠে-পুলি তৈরি করা হয়।
৪। উৎসব বলতে কী বোঝো? লেখো।
  উত্তর: উৎসব বলতে সাধারণত আনন্দ-উল্লাস, নতুন কাপড় পরা, নানারকম খাবার খাওয়া, নাচ-গান ইত্যাদিকে বোঝায়। এটি বিভিন্ন জাতি-জনগোষ্ঠী এবং ধর্মাবলম্বী লোকদের পরম্পরাগতভাবে পালিত আচার-অনুষ্ঠান, যা সবাই মিলে উৎসাহ-উদ্দীপনায় পালন করা হয়।
৫। কেন আমাদের উৎসবসমূহ পালন করা দরকার?
উত্তর: আমাদের উৎসবসমূহ পালন করা দরকার কারণ উৎসবের মাধ্যমেই আমাদের মধ্যে মেলামেশা, প্রেম-প্রীতি ও একতার ভাব গড়ে ওঠে। উৎসব সমাজে প্রচলিত সংস্কৃতি বজায় রাখে এবং আমাদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ, রাষ্ট্রীয় ঐক্য এবং সংহতি গড়ে তুলতে সাহায্য করে।
৬। ফাগুয়া বা হোলি উৎসব কীভাবে পালন করা হয়?
  উত্তর: ফাগুয়া বা হোলি একটি সর্বভারতীয় উৎসব যা ফাল্গুন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে পালন করা হয়। ভারতের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ধরনে এই উৎসব পালিত হয়। এই উৎসবে লোকেরা একে অপরকে রং মাখিয়ে আনন্দ করে (পৃষ্ঠা ৬০-এর ছবি অনুযায়ী)।
৭। মাঘ বিহুতে কী কী করা হয় পাঁচটি বাক্যতে লেখো।
  উত্তর:
    মাঘ বিহু পৌষ এবং মকর সংক্রান্তির দিন পালন করা হয়।
    এই সময় শস্য খেত থেকে শস্য এনে ভাঁড়ার ভরে তোলা হয়।
   উরুকার রাতে সবাই মিলে খড় দিয়ে তৈরি ভেলাঘরে একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করে।
    পরদিন সকালে স্নান করে ভেলাঘর বা মেজি জ্বালিয়ে অগ্নিকে প্রণাম করা হয়।
    বাড়িতে সান্দহ, দৈ-চিড়া এবং নানা ধরনের পিঠে-পুলি তৈরি করা হয়।
৮। গোরু বিহুর দিনে গোরুর শরীর ধোঁয়ানো ছাড়া আরো কী কী করা হয়?
  উত্তর: গোরু বিহুর দিনে গোরুর শরীর ধোয়ানো ছাড়া সন্ধ্যায় গোরুকে নতুন রশি দিয়ে বাঁধা হয়, প্রদীপ জ্বালানো হয়, ধূপধুনো জ্বালানো হয়, নতুন পাখা দিয়ে বাতাস করা হয় এবং গোয়ালঘরে ধোঁয়া দেওয়া হয়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *