অ্যান্টিবায়োটিক ও  পেনিসিলিনের কথা, Chapter- 10, Class-9, SEBA

অ্যান্টিবায়োটিক ও  পেনিসিলিনের কথা, Chapter- 10, Class-9, SEBA

অ্যান্টিবায়োটিক ও  পেনিসিলিনের কথা, Chapter- 10, Class-9, SEBA
১. সঠিক উত্তর নির্বাচন করো।
ক. চিকিৎসা বিজ্ঞানে বর্তমান যুগকে বলা হয়-
১. অ্যান্টিবায়োটিকের যুগ
২. পেনিসিলিনের যুগ
৩. ভিটামিনের যুগ
৪. থেরাপির যুগ।
উত্তর: ১. অ্যান্টিবায়োটিকের যুগ
খ. ‘অ্যান্টি’ কথার অর্থ কী?
১. বিরুদ্ধে
২. সপক্ষে
৩. সগোত্রে
৪. অগোত্রে।
উত্তর: ১. বিরুদ্ধে
গ. ‘বায়োটিক’ মানে-
১. বায়ু
২. জীবন
৩. মরণ
৪. জীবাণু।
উত্তর: ২. জীবন
ঘ. অ্যান্টিবায়োটিক সৃষ্টি হয়-
১. অণুজীবের দ্বারা
২. বায়ুর দ্বারা
৩. জলের দ্বারা
৪. প্রাণীর দ্বারা।
উত্তর: ১. অণুজীবের দ্বারা
২. সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও।
১. কাকে বলে অ্যান্টিবায়োটিক?
উত্তর: নানা রকম অণুজীব নিজেদের শরীর থেকে এমন সব রাসায়নিক জিনিস তৈরি করে যা অন্য ক্ষতিকর অণুজীবদের ধ্বংস করার ক্ষমতা রাখে। এই রাসায়নিক পদার্থের নাম অ্যান্টিবায়োটিক।
২. অণুজীবন কাকে বলে?
উত্তর: অণুজীবন বা অণুজীব হল একপ্রকার ক্ষুদ্র এককোষী বা বহুকোষী জীব, যাদের খালি চোখে দেখা যায় না।
৩. অণুজীবনের বৈশিষ্ট্য কী?
উত্তর: অণুজীবের প্রধান বৈশিষ্ট্য হল—এরা আকারে এত ছোট যে অনুবীক্ষণ যন্ত্র ছাড়া খালি চোখে এদের দেখা যায় না এবং এরা নিঃসঙ্গতা এড়িয়ে দলবদ্ধ হয়ে বেড়ে ওঠার চেষ্টা করে।
৪. অ্যান্টিবায়োটিকের কাজ কী?
উত্তর: অ্যান্টিবায়োটিকের কাজ হলো ক্ষতিকর অণুজীব বা রোগজীবাণুকে ধ্বংস করা বা সেগুলির প্রজননে বাধা প্রদান করা।
৫. অণুজীবের কাজ কী?
উত্তর: কিছু অণুজীব আছে যারা নানা ধরনের রোগের কারণ হয়, আবার অনেক অণুজীব নিজেদের শরীর থেকে অ্যান্টিবায়োটিক নামক রাসায়নিক পদার্থ তৈরি করে যা অন্য ক্ষতিকর অণুজীবদের ধ্বংস করতে পারে।
৬. পাঁচটি অ্যান্টিবায়োটিকের নাম লেখো।
উত্তর: পাঁচটি অ্যান্টিবায়োটিক হল—পেনিসিলিন, স্ট্রেপটোমাইসিন, নিওমাইসিন, অরিওমাইসিন ও গ্যারামাইসিন।
৭. পেনিসিলিন থেকে প্রস্তুত অ্যান্টিবায়োটিকের নাম লেখো।
উত্তর: পেনিসিলিন থেকে রাসায়নিক পদ্ধতিতে প্রস্তুত অ্যান্টিবায়োটিকের নাম হল ‘অ্যামপিসিলিন’।
৮. মানব শরীরে অ্যান্টিবায়োটিক কীভাবে কাজ করে?
উত্তর: মানব শরীরে অ্যান্টিবায়োটিক কীভাবে ক্ষতিকর জীবাণুদের বৃদ্ধি বন্ধ করে তার সঠিক উত্তর এখনও জানা যায়নি। তবে বিজ্ঞানীদের ধারণা, জীবাণুদের বেড়ে ওঠার জন্য যে-সব খাদ্যের প্রয়োজন হয়, অ্যান্টিবায়োটিক সেই খাদ্যের জোগান বন্ধ করে দেয়।
৩. অতি সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও।
১. অ্যান্টিবায়োটিক কীভাবে সৃষ্ট হয়?
উত্তর: অ্যান্টিবায়োটিক অণুজীবন (Micro-organisms) দ্বারা সৃষ্ট হয়।
২. বায়োটিক কথার অর্থ কী?
উত্তর: ‘বায়োটিক’ কথার অর্থ হল জীবন।
৩. আমাদের রোগের প্রধান কারক কী?
উত্তর: অনেক অণুজীব আমাদের নানা ধরনের রোগের কারণ।
৪. পাউরুটিতে যে ছাতা পড়ে তা কী?
উত্তর: পাঁউরুটিতে যে ছাতা পড়ে, তা এক রকম অণুজীবের কলোনি।
৫. একটি ছত্রাকের নাম লেখো।
উত্তর: একটি ছত্রাকের নাম হল পেনিসিলিয়াম নোটেটাম।
৬. পেনিসিলিনের ব্যবহার শুরু হয়েছিল কবে?
উত্তর: প্রকৃত পেনিসিলিনের ব্যবহার শুরু হয়েছিল ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে।
৪. শূন্যস্থান পূরণ করো।
১. পাউরুটিতে যে ছাতা পড়ে, তা একরকম অণুজীবের কলোনি।
২. এই পৃথিবী অনুজীবে পূর্ণ। (পৃষ্ঠা ১)
৩. অ্যান্টিবায়োটিক অণুজীবন দ্বারা সৃষ্ট।
৪. অ্যামপিসিলিন তৈরি পেনিসিলিন থেকে।
৫. লাইসোজাইম রয়েছে আমাদের চোখের জলে।
৬. ড. ফ্লোরি পেশায় ছিলেন একজন প্যাথলজির অধ্যাপক।
৫. সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও।
১. অণুজীব আমাদের কীভাবে উপকৃত করে?
উত্তর: কিছু অণুজীব নিজেদের শরীর থেকে অ্যান্টিবায়োটিক নামক রাসায়নিক জিনিস তৈরি করে, যা অন্য ক্ষতিকর অণুজীবদের ধ্বংস করে আমাদের উপকৃত করে।
২. অ্যান্টিবায়োটিক কী?
উত্তর: অ্যান্টিবায়োটিক হল অণুজীব দ্বারা সৃষ্ট এমন এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ, যা অন্য ক্ষতিকর অণুজীবদের ধ্বংস করার ক্ষমতা রাখে।
৩. অণুজীবের উপকারিতা কী?
উত্তর: অণুজীবের উপকারিতা হল এই যে, কিছু অণুজীব এমন রাসায়নিক পদার্থ (অ্যান্টিবায়োটিক) তৈরি করে যা ক্ষতিকর জীবাণুদের ধ্বংস করতে পারে।
৪. অ্যামপিসিলিন কী?
উত্তর: অ্যামপিসিলিন হল পেনিসিলিনের থেকে আরো বেশি শক্তিশালী একটি অ্যান্টিবায়োটিক।
৫. এটি কী বস্তু থেকে তৈরি হয়?
উত্তর: এটি পেনিসিলিন থেকে রাসায়নিক পদ্ধতিতে তৈরি হয়।
৬. আলেকজান্ডার ফ্লেমিং কীসের ওপর গবেষণা করেন? এবং কত সালে?
উত্তর: স্যার আলেকজান্ডার ফ্লেমিং ১৯২৮ সালে স্ট্যাফাইলোকক্কাস নামে এক ধরনের জীবাণু নিয়ে গবেষণা করছিলেন।
৭. পেট্রিডিস কী?
উত্তর: পেট্রিডিস হল এক ধরনের বিশেষ কাচের প্লেট, যা গবেষণাগারে জীবাণু নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার কাজে ব্যবহৃত হয়।
৮. পেনিসিলিয়াম নোটেটাম-এর কাজ কী?
উত্তর: পেনিসিলিয়াম নোটেটাম-এর কাজ হল জীবাণু ধ্বংস করা।
৯. কক্কাস জীবাণু ধ্বংসকারী পদার্থটির নাম কী লেখো।
উত্তর: কক্কাস জীবাণু ধ্বংসকারী ছত্রাকটি হল পেনিসিলিয়াম নোটেটাম, যা থেকে পেনিসিলিন নামক অ্যান্টিবায়োটিক তৈরি হয়।
১০. লাইসোজাইম কে আবিষ্কার করেন?
উত্তর: আলেকজান্ডার ফ্লেমিং লাইসোজাইম আবিষ্কার করেছিলেন।
১১. লাইসোজাইম কী?
উত্তর: লাইসোজাইম হল এক ধরনের বস্তু যা রোগ জীবাণুকে দ্রবীভূত করে শেষ করে দিতে পারে।
১২. আমাদের চোখ সব-সময় ভেজা থাকে কেন?
উত্তর: বাতাস অথবা ধূলিকণার মাধ্যমে রোগ জীবাণু যাতে দেহে প্রবেশ করতে না পারে, সেইজন্য চোখ সর্বদা ভেজা ভেজা অবস্থায় থাকে।
১৩. মানব শরীরের কোথায় কোথায় জীবাণু ধ্বংসকারী পদার্থ রয়েছে? (প্রশ্নের ক্রমিক নং ১২)
উত্তর: মানব শরীরের চোখের জলে, মুখের লালা, নাক ও গলার শ্লেষ্মা এবং ঘামে জীবাণু ধ্বংসকারী পদার্থ রয়েছে।
৬. রচনাধর্মী উত্তর লেখো।
ক. অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কারের কাহিনি লেখো।
উত্তর: অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কারের ঘটনাটি ঘটে আকস্মিকভাবে। স্যার আলেকজান্ডার ফ্লেমিং ১৯২৮ সালে স্ট্যাফাইলোকক্কাস নামক এক ধরনের জীবাণু নিয়ে গবেষণাগারের পেট্রিডিসে (বিশেষ কাচের প্লেট) পরীক্ষা করছিলেন। একদিন তিনি লক্ষ্য করেন, তাঁর গবেষণা পাত্রের উপর বাতাস থেকে কিছু একটা উড়ে এসে পড়েছে এবং কক্কাস জীবাণুর উপর সবুজ রঙের ছাতা গজিয়েছে। তিনি পাত্রটি ফেলে না দিয়ে টেবিলের এক পাশে সরিয়ে রাখেন।
কয়েকদিন পর ফ্লেমিং আশ্চর্য হয়ে দেখলেন যে, ঐ সবুজ ছ্যাতলার নীচের দুরন্ত কক্কাস জীবাণুগুলি সম্পূর্ণ গলে গিয়েছে। যে জীবাণুকে মারার জন্য তিনি এতদিন চেষ্টা করছিলেন, এক অদৃশ্য বস্তু এসে সহজেই তা করে ফেলল। এই ছত্রাকটিই ছিল ‘পেনিসিলিয়াম নোটেটাম’। ফ্লেমিং ১৯২৮ সালে এটি পর্যবেক্ষণ করলেও, এর জীবাণু-ধ্বংসী ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে প্রকৃত পেনিসিলিনের ব্যবহার শুরু হয় ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে।
খ. পেনিসিলিন কী? মানবজীবনে পেনিসিলিনের ভূমিকা বর্ণনা করো।
উত্তর:  পেনিসিলিন হল ‘পেনিসিলিয়াম নোটেটাম’ নামক একপ্রকার ছত্রাক থেকে তৈরি বিটা ল্যাক্টাম-জাতীয় একপ্রকার অ্যান্টিবায়োটিক। এটিই প্রথম আবিষ্কৃত অ্যান্টিবায়োটিক।

মানবজীবনে পেনিসিলিনের ভূমিকা: মানবজীবনে পেনিসিলিনের ভূমিকা অপরিসীম। এটি একটি অ্যান্টিবায়োটিক যা রোগজীবাণু ধ্বংস করে। এটি কোনো বিশেষ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই মানুষের অনেক রোগ সারাতে সক্ষম। মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর রোগ চিকিৎসায় অ্যান্টিবায়োটিকের (যেমন পেনিসিলিন) ব্যবহার ব্যাপক। উদাহরণস্বরূপ, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আহত সৈনিকদের চিকিৎসায় পেনিসিলিন ওষুধ ‘ধন্বন্তরি’-এর মতো কাজ দিয়েছিল।
গ. অ্যান্টিবায়োটিক কীভাবে মানুষের উপকার সাধন করে বিশদ করো।
উত্তর:  আমাদের পরিবেশে এমন অনেক অণুজীব আছে যা মানুষের নানা ধরনের রোগের কারণ হয়। অ্যান্টিবায়োটিক হল এমন এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ, যা এই সব ক্ষতিকর অণুজীব বা জীবাণুদের ধ্বংস করার ক্ষমতা রাখে।
বিজ্ঞানীরা এই অ্যান্টিবায়োটিককে ওষুধ হিসেবে কৌশলে ব্যবহার করেন। যখন কোনো ক্ষতিকর জীবাণু মানুষের দেহে প্রবেশ করে রোগ সৃষ্টি করে, তখন অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করা হয়। বিজ্ঞানীদের ধারণা, অ্যান্টিবায়োটিক শরীরে প্রবেশ করে ওই ক্ষতিকর জীবাণুদের বেড়ে ওঠার জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্যের জোগান বন্ধ করে দেয়। ফলে জীবাণুরা আর বাড়তে পারে না এবং ধ্বংস হয়ে যায়।
এভাবে, রোগজীবাণুকে ধ্বংস করে বা তাদের প্রজননে বাধা দিয়ে অ্যান্টিবায়োটিক মানুষের রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে। আধুনিক চিকিৎসাশাস্ত্রে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার অত্যন্ত ব্যাপক এবং এর ফলে বহু মানুষের প্রাণ রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *