অসম, Chapter -9, Class -7, SEBA board

এখানে পাঠ্যপুস্তকের অসম পাঠের প্রশ্ন ও উত্তরগুলি দেওয়া হল।

পৃষ্ঠা নং – ৭৬

২। উত্তর বলো।

(ক) লেখক কোন স্থানকে স্বর্গের চেয়েও প্রিয় বলে অভিহিত করেছেন?

উত্তর: লেখক আমাদের জন্মভূমি অসমকে স্বর্গের চেয়েও প্রিয় বলে অভিহিত করেছেন।

(খ) প্রাচীন কালে আমাদের রাজ্যের কোন অঞ্চলকে সৌমার পীঠ বলা হত?

উত্তর: প্রাচীন কালে আমাদের সুবিস্তৃত কামরূপ রাজ্যের উজান অঞ্চলকে সৌমার পীঠ বলা হত।

(গ) ইতিহাসবিদদের মতে কাদের রাজত্বকালে আমাদের রাজ্যটির নাম অসম বা আহোম হয়েছিল?

উত্তর: ইতিহাসবিদদের মতে, অসম বা আহোমদের রাজত্বকালে আমাদের রাজ্যটির নাম অসম হয়েছিল।

(ঘ) আমাদের সব শক্তি কীসের সেবায় লাগাতে হবে?

উত্তর: আমাদের সব শক্তি স্বদেশের সেবায় লাগাতে হবে।

(ঙ) ইংরেজ কর্তৃপক্ষ প্রথমে এই দেশের নাম ইংরাজিতে কী লিখেছিলেন?

উত্তর: ইংরেজ কর্তৃপক্ষ প্রথমে এই দেশের নাম ইংরাজিতে ASAM লিখেছিলেন।

(চ) অসমকে কারা ‘অসমের দেশ’ বলে অভিহিত করেছিলেন?

উত্তর: মুসলমান ঐতিহাসিকেরা অসমকে ‘অসমের দেশ’ বলে অভিহিত করেছিলেন।

৩। উত্তর লেখো।

(ক) প্রাচীন কামরূপে দক্ষিণ সীমা কতদূর বিস্তৃত ছিল?

উত্তর: প্রাচীন কামরূপে দক্ষিণ সীমা বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।

(খ) সৌম্য রাজ্যের আর্য সন্তানদেরকে কী বলা হত?

উত্তর: সৌম্য রাজ্যের আর্য সন্তানদেরকে সৌম্য বা সোম বলা হত।

(গ) সৌমারের সোমরা শান জাতীয় লোকদের কী বলে ডাকতেন?

উত্তর: সৌমারের সোমরা শান জাতীয় লোকদেরকে ‘আসোম’ বা ‘অসম’ বলে ডাকতেন।

(ঘ) চুকাফা কোন পর্বত পার হয়ে উজান অসম অধিকার করেছিলেন?

উত্তর: চুকাফা পাটকাই পর্বত পার হয়ে উজান অসম অধিকার করেছিলেন।

৪। ‘ক’ অংশের বাক্সের শব্দগুলোর অর্থ খুঁজে ‘খ’ অংশের বাক্সে লেখো।

 * চিরস্মরণীয় – সর্বদা মনে রাখার যোগ্য

 * কীর্তিকলাপ – ভালো কাজের পরিচয়সূচক কার্যাবলি

 * প্রাণপণে – অতি কঠোর/যথাসাধ্য

 * অনুসন্ধান – গভীরভাবে তথ্য খোঁজা

 * স্বতন্ত্র – স্বাধীন

 * সন্তোষ – আনন্দ, হর্ষ, পরিতৃপ্তি

পৃষ্ঠা নং – ৭৭

৫। উত্তর লেখো।

(ক) অসম নামের উৎপত্তি কীভাবে হয়েছিল?

উত্তর: শান জাতীয় রাজা চুকাফা যখন পাটকাই পর্বত পার হয়ে উজান অসম বা সৌমার পীঠ দখল করেন, তখন সেখানকার স্থানীয় সোম অধিবাসীরা শানদের ‘আসোম’ বা ‘অসম’ (অর্থাৎ অদ্বিতীয়) বলে অভিহিত করেন। পরবর্তীকালে এই ‘আসোম’ শব্দটিই শান জাতির মুখে ‘আহোম’ বা ‘অসম’ রূপে রূপান্তরিত হয় এবং তাদের শাসিত দেশটির নাম ‘অসম’ হয়।

(খ) বর্তমানের এই রাজ্য কীভাবে গঠিত হয়েছে?

উত্তর: আর্য ও অনার্যের সংমিশ্রণে এবং অনেক জাতি ও উপজাতির মিলনে বর্তমানের এই রাজ্য গঠিত হয়েছে।

(গ) অসমকে অনুপমা করে তুলতে হলে আমাদের কী করা উচিত?

উত্তর: অসমকে অনুপমা করে তুলতে হলে আমাদের ভাষা ও সাহিত্যের উন্নতি করতে হবে, সাধারণ শিক্ষার প্রসার ঘটাতে হবে এবং ধর্মনীতির আলোকে দেশকে আলোকিত করতে হবে।

(ঘ) অসমের গৌরব বাড়ানোর জন্য আমাদের কী কী কাজ করতে হবে?

উত্তর: অসমের গৌরব বাড়ানোর জন্য প্রত্যেক অসমবাসীর প্রাণপণে কাজ করা উচিত। শিক্ষিত যুবকদের অসমের ভাষা, সাহিত্য, ইতিহাস, লোকসংস্কৃতি ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা ও অনুসন্ধান করতে হবে এবং পুরোনো ঐতিহ্য ও কীর্তিগুলি সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করতে হবে।

৬। বিভিন্ন সময়ে অসমকে কী কী নামে জানা যেত, ডানদিকের শব্দের সঙ্গে মেলাও।

 * ইংরেজ শাসনের প্রথম পর্বে – ASAM

 * বৈদিক যুগে – প্রাগী দেশ

 * পৌরাণিক যুগে – প্রাগজ্যোতিষ

 * তান্ত্রিক যুগে – কামরূপ

 * বর্তমান যুগে – অসম

 * মুসলমানের শাসনকালে – অসমের দেশ

৭। নীচের বাক্যগুলোর তাৎপর্য লেখো।

(ক) ‘প্রথমে নিজেকে একটি পর্বতের ক্ষুদ্র ঝরনার মতো মনে করে তা থেকে ধীরে ধীরে একটি বড়ো বেগবতী নদী হতে পারলে সেই ক্ষুদ্র ঝরনাটি নিজেই একদিন সাগরের সঙ্গে মিলিত হতে পারবে।’

উত্তর: এই বাক্যটির তাৎপর্য হল—উন্নতির সূচনা হয় ক্ষুদ্র পরিসর থেকে। নিজের দেশ বা সমাজকে কেন্দ্র করে ছোট ছোট কাজ শুরু করলে, সেই শক্তি ধীরে ধীরে বিকশিত হয়ে বৃহৎ আকার ধারণ করে এবং অবশেষে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে (সাগরের মতো বিশাল পরিধিতে) পৌঁছানো যায়।

(খ) ‘নম্র-বিনয়ী হয়েই সংসার পার করা যায়। অহংকার আর আলস্যের দ্বারা উন্নতি অসম্ভব।’

উত্তর: এই বাক্যটির তাৎপর্য হল—জীবনে চলার পথে নম্রতা ও বিনয় হল শ্রেষ্ঠ গুণ। অহংকার ও অলসতা মানুষের উন্নতির পথে সবচেয়ে বড় বাধা। তাই সফল হতে হলে এই দুটি বদগুণ ত্যাগ করা আবশ্যক।

৮। ‘অসম’ পাঠটি থেকে নীচের শব্দগুলোর বিপরীত শব্দ খুঁজে বের করে লেখো।

 * পরাধীন – স্বাধীন

 * অসন্তোষ – সন্তোষ

 * বিদেশ – স্বদেশ

 * অনুচিত – উচিত

 * নিরানন্দ – আনন্দ

 * বর্জন – গ্রহণ

পৃষ্ঠা নং – ৭৮

৯। সন্ধি গঠন করো এবং সন্ধি বিচ্ছেদ করো।

 * সন্ধি গঠন:

   * যথা + অর্থ = যথার্থ

   * হিম + আলয় = হিমালয়

   * উৎ + যাপন = উদযাপন

 * সন্ধি বিচ্ছেদ:

   * দেবালয় = দেব + আলয়

   * নরেন্দ্র = নর + ইন্দ্র

   * উন্নতি = উৎ + নতি

১০। তোমরা নীচের শব্দগুলোর প্রত্যয়গুলো ভেঙে দেখাও।

 * শারীরিক = শরীর + ইক (ষ্ণিক্)

 * দৈহিক = দেহ + ইক (ষ্ণিক্)

 * মৌখিক = মুখ + ইক (ষ্ণিক্)

 * সামাজিক = সমাজ + ইক (ষ্ণিক্)

১১। নীচের শব্দগুলো দিয়ে একটি করে বাক্য গঠন করো।

 * অসম – অসম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর একটি রাজ্য।

 * জন্মভূমি – আমার জন্মভূমি আমার কাছে স্বর্গের সমান।

 * অনুসন্ধান – বিজ্ঞানীরা চাঁদে জলের অনুসন্ধান করছেন।

 * সংগ্রহ – আমার পুরোনো দিনের ডাকটিকিট সংগ্রহ করার শখ আছে।

 * সংসার – সততার সাথে সংসার ধর্ম পালন করা উচিত।

 * ক্ষুদ্র – ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা থেকেই বড় সাফল্য আসে।

পৃষ্ঠা নং – ৭৯

১২। দেশের সেবা মানে দেশের জন্য সব ধরনের ছোটো বড়ো কাজ করা। তোমরা বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী হিসেবে কীভাবে দেশের সেবা করবে?

উত্তর: বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী হিসেবে আমরা নানাভাবে দেশের সেবা করতে পারি। যেমন—

১. মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করে নিজেদের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা।

২. বিদ্যালয় ও বাড়ির চারপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা।

৩. গাছ লাগিয়ে পরিবেশ রক্ষা করা।

৪. শিক্ষক ও গুরুজনদের সম্মান করা এবং তাঁদের কথা মেনে চলা।

৫. দেশের আইনকানুন মেনে চলা এবং অন্যকেও মানতে উৎসাহিত করা।

১৩। আহোম রাজাদের কী কী কীর্তি চিহ্ন আমরা এখনও দেখতে পাই, সেগুলোর নাম লেখো।

উত্তর: আহোম রাজাদের অনেক কীর্তি চিহ্ন আমরা এখনও দেখতে পাই। তাঁদের সর্বশ্রেষ্ঠ কীর্তি হল আমাদের রাজ্যটির ‘অসম’ নামটি। এছাড়া তাঁদের নির্মিত বিভিন্ন স্থাপত্য ও কীর্তি হল—শিবসাগরের শিবদৌল, রংপুর-এর কারেং ঘর ও তলাতল ঘর, জয়সাগর পুষ্করিণী ইত্যাদি।

১৪। এই পাঠটির এবং “অ’ মোর আপনার দেশ” গীতটির লেখকের নাম লিখে তাঁর দেশসেবার বিষয়ে কয়েকটি লাইন লেখো।

উত্তর: এই পাঠটির এবং “অ’ মোর আপনার দেশ” গীতটির লেখকের নাম হল সাহিত্যরথী লক্ষ্মীনাথ বেজবরুয়া।

তিনি অসমিয়া ভাষা ও সাহিত্যের প্রাণপুরুষ ছিলেন। কবিতা, উপন্যাস, ছোটগল্প, নাটক ইত্যাদি রচনার মাধ্যমে তিনি অসমিয়া সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন এবং অসমের মানুষের মধ্যে জাতীয়তাবোধ ও আত্মমর্যাদা জাগিয়ে তুলেছেন। অসমিয়া সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে বিশ্বের দরবারে প্রতিষ্ঠা করাই ছিল তাঁর দেশসেবার মূল লক্ষ্য।

১৬। ছবি দুটি লক্ষ করো এবং প্রতিটি ছবির বিষয় নিয়ে টীকা লেখো।

 * প্রথম ছবি (চা বাগান): এই ছবিতে অসমের একটি চা বাগান দেখানো হয়েছে। মহিলারা পিঠে ঝুড়ি নিয়ে চা পাতা তুলছেন। অসম তার উন্নতমানের চা-এর জন্য বিশ্বজুড়ে বিখ্যাত এবং চা শিল্প রাজ্যের অর্থনীতির একটি প্রধান ভিত্তি। এই ছবি অসমের চা-শ্রমিকদের কঠোর পরিশ্রম এবং রাজ্যের সবুজ প্রকৃতির প্রতীক।

 * দ্বিতীয় ছবি (বন্যা): এই ছবিতে অসমের বন্যার এক ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। একটি ছোট নৌকায় কিছু মানুষ তাঁদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে যাচ্ছেন। বন্যার জলে তাদের ঘরবাড়ি ডুবে গেছে। অসমের ব্রহ্মপুত্র ও তার শাখানদীগুলির বন্যা প্রতি বছর বহু মানুষের জীবন ও সম্পত্তির ক্ষতি করে, যা এই রাজ্যের একটি অন্যতম প্রধান সমস্যা।

 *

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *