অনুজীব সমূহ: মিত্র ও শত্রু, Chapter -2, Science, Class-8 ,SEBA
১) শূন্যস্থান পূর্ণ করো।
(a) অনুজীবগুলোকে অনুবীক্ষণ যন্ত্রের এর সাহায্যে দেখা যায়।
(b) নীলাভ সবুজ শৈবাল মাটির উর্বরতা বৃদ্ধির জন্য বায়ু থেকে সরাসরি নাইট্রোজেন আবদ্ধ করে।
(c) এলকোহল ইস্ট র সাহায্যে উৎপন্ন হয়।
(d) কলেরা ব্যাক্টেরিয়ার -র দ্বারা সৃষ্টি হয়।
২) শুদ্ধ উত্তরটিতে ‘✔’ চিহ্ন দাও
(a) (ii) এলকোহল প্রস্তুতিতে ইস্ট ব্যবহার করা হয়।
(b) নীচে দেওয়া কোনটি জীবাণু প্রতিরোধী পদার্থ
(ii) স্ট্রেপটোমাইসিন
(c) ম্যালেরিয়া রোগ সৃষ্টিকারী প্রোটোজোয়ার বাহক হল।
(i) স্ত্রী এনোফিলিস মশা
(d) সংক্রামক রোগগুলোর সবচেয়ে সাধারণ বাহক হল
(ii) মাছি
(e) রুটি বা ইডলির ময়দার তাল ফোলে ওঠার কারণ হল।
(iii) ইস্ট কোষসমূহের বৃদ্ধি
(f) চিনি থেকে এলকোহলে পরিণত হওয়া প্রক্রিয়াটিকে বলা হয়
(iii) কিণ্বন
৩) স্তম্ভ ‘A’ এর জীবগুলোর সংগে স্তম্ভ ‘B’ এ তাদের ক্রিয়াগুলো মেলাও।
| স্তম্ভ ‘A’ | স্তম্ভ ‘B’ |
| (i) ব্যাক্টেরিয়া | (e) কলেরা রোগ সৃষ্টিকারী |
| (ii) রাইজোবিয়াম | (a) নাইট্রোজেন স্থিতিকরণ |
| (iii) ল্যাক্টোবেসিলাস | (b) দৈ তৈরি |
| (iv) ইস্ট | (c) রুটি বেকিং করা |
| (v) কোন একটি প্রোটোজোয়া | (d) ম্যালেরিয়া রোগ |
| (vi) কোন একটি ভাইরাস | (f) এইট্স রোগ সৃষ্টিকারী |
৪) খালি চোখে অনুজীবকে দেখা যাবে কি? যদি দেখা না যায় তাহলে সেগুলোকে কীভাবে দেখা যেতে পারে।
না, অনুজীবগুলোকে খালি চোখে দেখা যায় না। এদেরকে দেখতে হলে অনুবীক্ষণ যন্ত্রের (Microscope) সাহায্য প্রয়োজন হয়। তবে কিছু অনুজীব, যেমন পাউরুটির ওপর জন্মানো ছত্রাক, আতস কাচের (Magnifying glass) সাহায্যে দেখা যায়।
৫) অনুজীবের প্রধান শ্রেণিগুলো কি কি?
অনুজীবগুলোকে প্রধান চারটি শ্রেণিতে বিভক্ত করা যায়। এই শ্রেণিগুলো হলো:
* ব্যাক্টেরিয়া (Bacteria)
* ছত্রাক (Fungi)
* প্রটোজোয়া (Protozoa)
* কতগুলো শৈবাল (Algae)
এগুলো ছাড়াও ভাইরাসও (Viruses) অনুবীক্ষণিক, তবে তারা অন্যান্য অনুজীব থেকে পৃথক।
৬) বায়ুমণ্ডলীয় নাইট্রোজেনকে মাটিতে আবদ্ধ করে রাখতে পারে এমন অনুজীবগুলোর নাম লিখো।
কতকগুলো ব্যাক্টেরিয়া, যেমন রাইজোবিয়াম (Rhizobium), এবং নীলাভ সবুজ শৈবাল (Blue-green algae) বায়ুমণ্ডল থেকে সরাসরি নাইট্রোজেন গ্রহণ করে মাটিতে আবদ্ধ করতে পারে। এদেরকে জৈবিক নাইট্রোজেন স্থিতিকারী (Biological nitrogen fixers) বলা হয়।
৭) আমাদের জীবনে অনুজীবগুলোর উপকারিতা সম্পর্কে ১০ টি লাইন লিখো।
আমাদের জীবনে অনুজীবের উপকারিতাগুলি হলো:
* ল্যাক্টোবেসিলাস (Lactobacillus) নামক ব্যাক্টেরিয়া দুধকে দইয়ে পরিণত করতে সাহায্য করে।
* ইস্ট (Yeast) নামক অনুজীব পাউরুটি, পেস্ট্রি এবং কেক তৈরি করতে ব্যবহৃত হয়।
* বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে অ্যালকোহল, মদ এবং ভিনেগার (অ্যাসেটিক অ্যাসিড) উৎপাদনে ইস্ট ব্যবহার করা হয়।
* ব্যাক্টেরিয়া চিজ (Cheese), আচার (Pickles) এবং অন্যান্য খাদ্য সামগ্রী প্রস্তুতেও সাহায্য করে।
* ব্যাক্টেরিয়া ও ছত্রাক থেকে বিভিন্ন জীবাণু প্রতিরোধী ঔষধ বা অ্যান্টিবায়োটিক (Antibiotics) তৈরি করা হয়।
* রোগ প্রতিরোধের জন্য টিকা (Vaccine) প্রস্তুতিতেও অনুজীব ব্যবহার করা হয়।
* কতকগুলো ব্যাক্টেরিয়া ও নীলাভ সবুজ শৈবাল নাইট্রোজেন স্থিতিকরণের মাধ্যমে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে।
* অনুজীবগুলো পরিবেশ শোধনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
* এরা মৃত উদ্ভিদ, প্রাণীদেহ ও জৈব বর্জ্য পদার্থ (Organic Wastes) বিয়োজিত করে সেগুলোকে সরল পদার্থে পরিণত করে।
* এই বিয়োজনের ফলে উৎপন্ন পুষ্টিকারক দ্রব্য উদ্ভিদ পুনরায় গ্রহণ করতে পারে এবং পরিবেশও পরিচ্ছন্ন থাকে।
৮) অনুজীব সমূহের দ্বারা হওয়া ক্ষতিকারক দিকগুলো সম্পর্কে একটি ছোট অনুচ্ছেদ লিখো।
কিছু অনুজীব আমাদের জীবনে নানাভাবে ক্ষতি করে। কতকগুলো অনুজীব মানুষ, উদ্ভিদ এবং অন্যান্য প্রাণীর দেহে মারাত্মক রোগ সৃষ্টি করে। এই রোগ সৃষ্টিকারী অনুজীবগুলোকে রোগকারক (Pathogens) বলা হয়। মানুষের দেহে ব্যাক্টেরিয়াঘটিত যক্ষ্মা ও কলেরা এবং ভাইরাসঘটিত পোলিও ও গুটি বসন্তের মতো রোগ হয়। প্রাণীদের ক্ষেত্রে এনথ্রাক্স এবং উদ্ভিদের ক্ষেত্রে গমের মরিচা বা লেবুর ক্যাঙ্কার রোগ হয়, যা ফসলের উৎপাদন কমিয়ে দেয়। এছাড়া, অনুজীব আমাদের খাদ্যবস্তু, বস্ত্র এবং চামড়াজাত দ্রব্যও নষ্ট করে ফেলে। খাদ্যের ওপর জন্মে এরা খাদ্যকে বিষাক্ত করে তোলে, যার ফলে ‘ফুড পয়জনিং’ (Food Poisoning) হতে পারে, যা কখনো কখনো জীবনহানিও ঘটায়।
৯) প্রতিজৈবিক বা জীবাণু প্রতিরোধী পদার্থ বলতে কি বুঝো? জীবাণু প্রতিরোধী পদার্থগুলো গ্রহণ কালে কী কী সতর্কতা অললম্বন করা উচিত।
প্রতিজৈবিক (Antibiotics):
যেসব ঔষধ রোগ সৃষ্টিকারী অনুজীব বা জীবাণুকে মেরে ফেলে অথবা তাদের বৃদ্ধি বন্ধ করে দেয়, সেগুলোকে জীবাণু প্রতিরোধী বা প্রতিজৈবিক ঔষধ (Antibiotics) বলা হয়। এই ঔষধগুলোর উৎস হলো অনুজীব, যেমন নির্দিষ্ট প্রকারের ব্যাক্টেরিয়া ও ছত্রাক। উদাহরণস্বরূপ, স্ট্রেপটোমাইসিন একটি প্রতিজৈবিক ঔষধ।
সতর্কতা:
প্রতিজৈবিক পদার্থ গ্রহণ করার সময় নিম্নলিখিত সতর্কতাগুলো অবলম্বন করা উচিত:
* সর্বদা একজন যোগ্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই এই ঔষধ গ্রহণ করা উচিত।
* চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ঔষধের সম্পূর্ণ মাত্রা (ডোজ) অবশ্যই গ্রহণ করা উচিত।
* বিনা প্রয়োজনে প্রতিজৈবিক ঔষধ গ্রহণ করা উচিত নয়। এতে ঔষধটি পরবর্তীকালে অকার্যকর হয়ে পড়তে পারে।
* অপ্রয়োজনে এই ঔষধ গ্রহণ করলে তা দেহের উপকারী ব্যাক্টেরিয়াগুলোকেও ধ্বংস করে ফেলতে পারে।
* সর্দি বা ইনফ্লুয়েঞ্জার (ফ্লু) মতো ভাইরাসজনিত রোগের বিরুদ্ধে প্রতিজৈবিক পদার্থ কাজ করে না, তাই এসব ক্ষেত্রে তা গ্রহণ করা অনুচিত।
